আপনি যদি আপনার স্ত্রীকে রানির মর্যাদা দিতে পারেন, তবে আপনিও পাবেন রাজার মর্যাদা। . সাফিয়্যা (রা.) ছিলেন নবিজির অন্যতম স্ত্রী। তিনি কিছুটা খাটো ছিলেন, ফলে উটের পিঠে আরোহন করতে কষ্ট হতো। তাই রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে সাহায্য করার জন্যে নিজের হাঁটু পেতে দিতেন। সাফিয়্যা […]
আপনি যদি আপনার স্ত্রীকে রানির মর্যাদা দিতে পারেন, তবে আপনিও পাবেন রাজার মর্যাদা।
.
সাফিয়্যা (রা.) ছিলেন নবিজির অন্যতম স্ত্রী। তিনি কিছুটা খাটো ছিলেন, ফলে উটের পিঠে আরোহন করতে কষ্ট হতো। তাই রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে সাহায্য করার জন্যে নিজের হাঁটু পেতে দিতেন। সাফিয়্যা (রা.) সেই হাঁটুতে পা রেখে উটের হাওদায় ওঠে বসতেন [ইমাম বুখারি, আস-সহিহ: ৪২১১]
.
সাফিয়্যা (রা.) বলেন, ‘একবার রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রীদের সাথে হজ্বে যাচ্ছিলেন। যাত্রাপথে আমার উট বসে পড়লো। কারণ ওটা ছিলো সবচেয়ে দুর্বল উট, তাই আমি কেঁদে ফেললাম। নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাছে আসলেন এবং আমার চোখের পানি নিজের জামা ও হাত দিয়ে মুছে দিলেন।’ [ইমাম আহমাদ, আল-মুসনাদ: ৬/৩৩৭]
.
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষ হয়েও নবিজি তাঁর স্ত্রীকে সাহায্য করতে নিজের হাঁটু বিছিয়ে দিয়েছেন আর সেই হাঁটুতে পা দিয়ে ভর করে স্ত্রী উটের পিঠে চড়ে বসেছেন! আবার স্ত্রীর চোখের পানি নিজের জামা ও হাত দিয়ে পরম মমতায় মুছে দিয়েছেন। অন্য হাদিসে এসেছে, সাফিয়্যাহ (রা.) উঠের পিঠে থাকা অবস্থায় ঘুম চলে আসতো, তাই কিছুটা তন্দ্রালু হয়ে যেতেন। তখন নবিজি তাঁর মাথা ধরে রাখতেন!
.
এভাবেই নবিজি তাঁর স্ত্রীদের গুরুত্ব দিতেন।
.
পক্ষান্তরে, একজন স্ত্রী হিসেবে সাফিয়্যা (রা.) নিজ স্বামী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কীভাবে মূল্যায়ন করতেন? কতটুকু ভালবাসতেন? এটি বুঝতে একটি হাদিসই যথেষ্ট হতে পারে।
.
হাদিসে এসেছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে মৃত্যুশয্যায় কষ্টকর অবস্থায় ছিলেন, তাঁর স্ত্রীরা তাঁর চারপাশে জড়ো হলেন। তখন সাফিয়্যা (রা.) বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহর শপথ! আপনার জায়গায় যদি আমি থাকতে পারতাম!’ (অর্থাৎ, আপনার কষ্টটা আপনার না হয়ে যদি আমার হতো!) তাঁর কথা শুনে অন্য স্ত্রীগণ ঈর্ষান্বিত হয়ে মুখটিপে হাসলেন। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁদের দেখে ফেললেন এবং বললেন, ‘‘তোমাদের মুখ ধুয়ে ফেলো।’’ তাঁরা বলল, ‘হে আল্লাহর রাসুল! কেনো?’ তিনি জবাবে বললেন, ‘‘কারণ তোমরা তাঁকে বিদ্রুপ করেছো। আল্লাহর শপথ! সে সত্য বলেছে।’’ [ইমাম ইবনু সা’দ, আত-ত্ববাকাতুল কুবরা: ৮/১০১]
.
এটিই বাস্তবতা। জ্ঞানীগণ বলেন, নারীকে আপনি যেটুকু ভালবাসা ও সম্মান দেবেন, সে বিনিময়ে তারচেয়ে বেশি ভালবাসা ও সম্মান আপনাকে ফিরিয়ে দেবে। আবার তাকে যতটুকু ঘৃণা দেবেন, বিনিময়ে সে তারচেয়েও বেশি ঘৃণা ফিরিয়ে দেবে। (এই বিষয়টি আপেক্ষিক এবং এটি একটি পর্যবেক্ষণ মাত্র)
.
তাই, স্ত্রীকে ভালবাসুন; সম্মান দিন। বিনিময়ে সেও সমানভাবে কিংবা আরও বেশি করে তা ফিরিয়ে দেবে। তাকে রানির মতো ট্রিট করলে, সেও আপনাকে রাজার মতো ট্রিট করবে, যেমনটি আমরা দেখেছি সাফিয়্যা (রা.) ও নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনে।
বহু বছর ধরে, বাঙালীরা তাদের আত্মীয়-স্বজন এবং বিবাহের ঘটকদের মাধ্যমে তাদের পুত্র-কন্যাদের বিয়ের জন্য পাত্র-পাত্রীর সন্ধান করতেন । তারপর এলো সংবাদপত্রের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে খোঁজার চল। অতি সম্প্রতি, বিভিন্ন ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে পাত্র-পাত্রীরা নিজে বা তাদের পরিবারের সদস্যরা মিলে খোঁজ করে থাকেন, আর এই ওয়েবসাইট […]
বহু বছর ধরে, বাঙালীরা তাদের আত্মীয়-স্বজন এবং বিবাহের ঘটকদের মাধ্যমে তাদের পুত্র-কন্যাদের বিয়ের জন্য পাত্র-পাত্রীর সন্ধান করতেন । তারপর এলো সংবাদপত্রের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে খোঁজার চল। অতি সম্প্রতি, বিভিন্ন ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে পাত্র-পাত্রীরা নিজে বা তাদের পরিবারের সদস্যরা মিলে খোঁজ করে থাকেন, আর এই ওয়েবসাইট গুলোকেই আমরা ম্যাট্রিমোনিয়াল ওয়েবসাইট বা বিবাহের জন্য ওয়েবসাইট হিসেবে জানি ।
এই ওয়েবসাইটগুলি তরুণ বাঙালীদের মধ্যে জীবন সঙ্গী সন্ধানের একটি বৃহৎ চিত্র তুলে ধরে । তাদের প্রোফাইলগুলির বিশদ বিশ্লেষণ করে বিবাহ, প্রেম এবং ছেলে ও মেয়ে উভয়ের ভূমিকায় পরিবর্তন ও তাদের ধারণার ব্যাপারে বেশ অসাধারণ অন্তর্দৃষ্টি দেয় । ব্যক্তিগত তথ্য সম্বলিত লক্ষ লক্ষ প্রোফাইল ইন্টারনেটের মাধ্যমে সবাই দেখতে পাচ্ছে – এটা প্রমাণ করে যোগাযোগ মাধ্যম, সামাজিক মাধ্যম এবং গণমাধ্যমের ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ । মিডিয়া অত্যন্ত ব্যক্তিগত একটি ডোমেইন হয়ে বিশদ সামাজিক পরিবর্তনের অংশ হয়ে গিয়েছে ।
অনেকে মনে করেন, ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইট গুলো অনেকটা সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল এর মতোই । কারণ অবশ্য যুক্তিযুক্ত বটে । এখানে নিজের বা যিনি পাত্র বা পাত্রী তার ব্যাপারে সব ধরণের তথ্য দিতে হয় । তার উচ্চতা থেকে শুরু করে ধর্মীয় মতাদর্শ, শিক্ষাগত যোগ্যতা, জীবন সঙ্গী হিসেবে কেমন মানুষ পছন্দ, পারিবারিক বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সহ আরো কিছু খুঁটিনাটি বিষয় যা না জানলেই নয় ।
ওয়েবসাইট গুলো আরো কয়েক বছর আগে যেমনি থাকুক, এখন এগুলো অনেকটাই ইউজার-ফ্রেন্ডলি হয়েছে । তাই তো এখন পাত্র বা পাত্রীর মা-বাবার অনায়াসেই সাইট গুলোতে প্রোফাইল খুলে তথ্য দিতে পারছেন, সেখানে এ যুগের ছেলে-মেয়েদের কথা বলাই বাহুল্য, কেননা তারা তো সব ধরণের প্রযুক্তিতে অভ্যস্ত ।
পারিবারিকবিবাহেরঅনলাইনরূপ
আমাদের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে পারিবারিক ভাবে বিবাহের চল এখনো বহুল প্রচলিত । তবে অনলাইন ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইট এর যুগে, এটি ঘটে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে । সাইট গুলোতে পাত্র/পাত্রীর প্রোফাইল তাদের মা বাবারাই তৈরী করে থাকেন নিজের ছেলে বা মেয়ের সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য দিয়ে । এটা অনেকটা পত্রিকায় পাত্র-পাত্রী সন্ধানের বিজ্ঞাপনের মতোই । অনেকে বিশের কোঠার মাঝামাঝি তে গিয়ে মনে করেন যে, বাবা-মায়ের সিদ্ধান্ততেই বিয়ে করবেন, তাদের জন্য ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইট গুলো অনেক সহযোগী হয় ।
নিজেইনিজেরসঙ্গীখোঁজারমাধ্যম
পশ্চিমা দেশের ডেটিং এপ গুলোর মতো ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইট গুলোতে অনেকেই নিজের সঙ্গীকে খুঁজে পেয়েছেন, তবে তা গড়িয়েছে পরিণয়তে, অর্থাৎ বিয়েতে । এক্ষেত্রে পাত্র বা পাত্রী সন্ধানীরা নিজেরাই নিজেদের প্রোফাইল বানিয়ে আপলোড করেন । সোশ্যাল মিডিয়া সাইট গুলোর মতো নিজের সম্পর্কে অনেক রকমের তথ্য দেন যেগুলা ওয়েবসাইট এর এলগোরিদম অনুযায়ী তার সাথে মাইল এমন মানুষের সাজেশনে আসবে ।
বর্তমানে ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইট গুলো অনেক বড় সহায়ক হিসেবে কাজ করছে বিবাহের ক্ষেত্রে । গ্লোবালাইজেশন এর এই যুগে যখন দেশের অনেকেই বিদেশ পাড়ি জমান, বিশেষ করে তাদের জন্য স্বদেশী কাউকে খুঁজে পেতে ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইট গুলোর জুড়ি মেলা ভার ।
বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রীর প্রথম সাক্ষাতের মধুময় সময়টা হচ্ছে বাসর রাত। লাভ ম্যারেজ বা অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ দুটো ক্ষেত্রেই স্বামী-স্ত্রী বাসর রাত নিয়ে বেশ চিন্তিত এবং একই সাথে মনে মনে বেশ রোমাঞ্চ অনুভব করেন। একজন মুসলিম হিসেবে বাসর রাত এ নব দম্পতির কিছু করণীয় রয়েছে যেগুলো নিয়ে […]
বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রীর প্রথম সাক্ষাতের মধুময় সময়টা হচ্ছে বাসর রাত। লাভ ম্যারেজ বা অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ দুটো ক্ষেত্রেই স্বামী-স্ত্রী বাসর রাত নিয়ে বেশ চিন্তিত এবং একই সাথে মনে মনে বেশ রোমাঞ্চ অনুভব করেন। একজন মুসলিম হিসেবে বাসর রাত এ নব দম্পতির কিছু করণীয় রয়েছে যেগুলো নিয়ে আজকের পোস্টে আলোচনা করছি।
বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রীর সর্বপ্রথম কাজ হবে, বিয়ের মাধ্যমে নিজেদেরকে হারাম কাজ থেকে বেঁচে থাকার নিয়ত করা। বাসর রাত এর বাকি কাজগুলো নিচে আলোচনা করলাম।
বাসর রাত এ নফল নামাজ পড়া
বিয়ের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে নব দম্পতি বাসর রাত এ যখন প্রথমবার সাক্ষাত করবেন তখন কিছু আদব আছে। যদি স্ত্রী আগে থেকেই ঘরে থাকে তাহলে স্বামী শব্দ করে সালাম দিয়ে কক্ষে প্রবেশ করবে। স্ত্রী সালামের উত্তর দেবেন এবং যথাসম্ভব মুসাফাহা করে শয্যায় বসাবেন। আর যদি স্বামী আগে থেকেই ঘরে থাকে, স্ত্রী যদি পরে ঘরে প্রবেশ করে, তাহলে স্ত্রী সালাম দিবেন। আর স্বামী সালামের জবাব দিবেন।
শুরুতেই আল্লাহ্ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য দুই রাকাআত নফল নামাজ পড়বেন। নামাজে স্বামী আগে দাঁড়াবেন এবং স্ত্রী একটু পেছনে দাঁড়াবেন। দুই রাকআত নামাজ যেকোনো সূরা দিয়ে হতে পারে। তবে যদি পারেন তাহলে সূরা ইয়াসিন দিয়ে দুই রাকাত নামাজ আদায় করা সবচেয়ে উত্তম।
তবে এটাও জেনে রাখা ভালো যে, বিয়ের পর বাসর রাত এ স্বামী-স্ত্রীর একসাথে নামাজ পড়া আবশ্যক নয়। এ নামাজ নবদম্পতির জন্য মোস্তাহাব আমল। সুতরাং বাসর রাত এ নামাজ পড়তেই হবে, না পড়লে গোনাহ হবে বা বিয়ে হবে না; বিষয়টি এমন নয়।
নামাজের পর দোয়া করা
বাসর রাত এ দুই রাকআত নফল নামাজ আদায়ের পর আপনার স্ত্রীর কপালে হাতে রেখে এই দোয়া পড়ুন-
‘আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকা খাইরাহা ওয়া খাইরা মা জাবালতাহা আলাইহি ওয়াউযুবিকা মিন শাররিহা ওয়া শারির মা জাবালতাহা আলাইহি।’অর্থঃ ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট তার মঙ্গল চাই এবং তার সেই কল্যাণময় স্বভাব প্রার্থনা করি, যার ওপর তুমি তাকে সৃষ্টি করেছো। আর আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাই তার অনিষ্ট হতে এবং সেই মন্দ স্বভাবের অনিষ্ট থেকে যা দিয়ে তুমি তাকে সৃষ্টি করেছো।’
রাসূল (সা) বলেছেন-
‘তোমাদের কেউ যখন কোনো মহিলাকে বিয়ে করবে, সে যেন তার কপাল ধরে এবং আল্লাহ্ তাআলার নাম পড়ে এবং বরকতের দোয়া করে।’
অর্থঃ ‘হে আল্লাহ! আপনি আমার জন্য আমার পরিবারে বরকত দিন এবং আমার ভিতরেও বরকত দিন পরিবারের জন্য। হে আল্লাহ! আপনি তাদের থেকে আমাকে রিজিক দিন আর আমার থেকে তাদেরকেও রিজিক দিন। হে আল্লাহ! আপনি আমাদের যতদিন একত্রে রাখেন কল্যাণের সঙ্গেই একত্রে রাখুন। আর আমাদের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে দিলে কল্যাণের পথেই বিচ্ছেদ ঘটান।’
স্ত্রীর কপালে হাত রেখে দোয়া করা সুন্নত। এভাবে দোয়া করলে দুজনের মধ্যে ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়। আর এই নির্দিষ্ট দোয়াগুলো ছাড়াও স্বামী-স্ত্রী বাসর রাত এ নিজেদের দাম্পত্য জীবনের কল্যাণ ও বরকতের জন্য আল্লাহ্র দরবারে মন খুলে দোয়া করতে পারেন।
বাসর রাত এ সহবাস বা যৌন মিলন
বিয়ের পর প্রথম সাক্ষাতেই স্বামী-স্ত্রী সহবাস বা যৌন মিলন করতে পারবেন, এতে ইসলামের কোনো বাঁধা নেই। কেননা বিয়ের মাধ্যমে তারা উভয়ে একে অপরের জন্য হালাল হয়েছেন। নামাজের পর স্বামী-স্ত্রী দুজনে ভালোবাসাপূর্ণ পরিবেশ তৈরী করার জন্য কিছুটা সময় নিয়ে ভালোবাসা ও হৃদ্যতাপূর্ণ কথাবার্তা বলবেন, নিজেদের মধ্যে ভাব বিনিময় করবেন।
সহবাস বা যৌন মিলনের আগে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই শয়তানের আক্রমণ থেকে বেঁচে থাকার জন্য এই দোয়াটি পড়ে নিবেন-
’বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শায়তানা ওয়া জান্নিবিশ শায়তানা মা রাযাক্বতানা।’
অর্থঃ আল্লাহর নামে শুরু করছি, হে আল্লাহ! আমাদের উভয়কে শয়তানের হাত (কুনজর-আক্রমণ) থেকে রক্ষা করুন। আমাদের (এ মিলনে) যদি কোনো সন্তান দান করেন তাকেও শয়তানের হাত (কুনজর-আক্রমণ) থেকে রক্ষা করুন।’
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সহবাসের কিছু নিয়ম উল্লেখ করছি-
বাসর রাত এ নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকা
আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা) বলেছেন যে-
‘যে ব্যক্তি কোনো ঋতুবতী (পিরিয়ড চলাকালীন) নারীর সঙ্গে কিংবা স্ত্রীর মলদ্বারে সঙ্গম করে অথবা গনকের কাছে যায় এবং তার কথায় বিশ্বাস করে, সে যেন আমার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তা অস্বীকার করলো।’ এর থেকে বোঝা যায় যে, মেয়েদের (স্ত্রীর) ঋতু চলাকালীন সময়ে তাদের সঙ্গে সহবাস বা যৌন মিলন থেকে দূরে থাকতে হবে।
তবে সহবাস ছাড়া অন্য সব আচরণের অনুমতি আছে। পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে স্ত্রীর পাশে থাকা, তার সঙ্গে সময় কাটানো, দুজনে গল্প করাতে কোনো সমস্যা হবে না।
আর সহবাস করার সময় পুরোপুরি উলঙ্গ হয়ে যৌন মিলন করা যাবে না। বিবস্ত্র হয়ে সঙ্গম করলে সন্তান নির্লজ্জ হয়ে জন্মগ্রহণ করে। তাই সহবাসের সময় অবশ্যই গায়ের ওপর কোনো পাতলা চাদর বা অন্য কোনো বস্ত্র ব্যবহার করা উচিত।
বাসর রাত এ সহবাসের কিছু সুন্নত নিয়ম
সহবাস বা যৌন মিলনের সময় নব দম্পতিকে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। প্রথমত মনে রাখবেন, কেবলামুখী হয়ে সহবাস করা যাবে না। সেক্স করার আগে দুজনেই ভালোভাবে অযু করবেন এবং পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন হবেন। যৌন মিলনের আগে বিসমিল্লাহ্ বলে সহবাস শুরু করবেন। সেক্স করার সময় স্বামী-স্ত্রী দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি করার জন্য গায়ে সুগন্ধি বা আতর লাগিয়ে নিবেন। আর সবশেষে বীর্যপাত হয়ে পরও বেশ কিছু সময় স্ত্রীর উপর শুয়ে থাকবেন। এরপর আস্তে আস্তে দুজনেই আলাদা হতে পারেন।
প্রথমবার সহবাস করার পর যদি আবার সহবাস করতে ইচ্ছা হয় তাহলে দ্বিতীয়বার সেক্স করার আগে ওযু করে নেওয়া ভালো। সহবাসের সময় স্বামী-স্ত্রীর একে অপরের সমস্ত দেহের দিকে তাকানো এবং যৌনাঙ্গের দিকে তাকানো জায়েজ। অনেকের মধ্যে যে কুসংস্কার আছে, স্ত্রীর যৌনাঙ্গের দিকে তাকালে স্বামীর চোখের জ্যোতি কমে যায়, আসলে একথার কোনো ভিত্তি নেই।
সহবাস এর পর ফরজ গোসল
বাসর রাত এ যৌন মিলন করার পর অযূ বা গোসল করে ঘুমানো উত্তম। অবশ্য গোসল করাই উত্তম। গোসলের সময় প্রথমে লজ্জাস্থানে লেগে থাকা নাপাকি ধুয়ে ফেলবেন। তারপর সাবান দিয়ে দুই হাতের কব্জি পর্যন্ত ধুয়ে নিবেন। এরপর নামাজের মতো পূর্ণাঙ্গ অযু করবেন, পানি দিয়ে মাথা ভিজিয়ে নিবেন। তারপর প্রথমে শরীরের ডান অংশে এবং পরে বাম অংশে পানি ঢালবেন। সবশেষে সারা দেহে পানি ঢালবেন।
বাসর রাত এ কি যৌন মিলন করা আবশ্যক?
অনেকেই প্রশ্ন করেন যে বাসর রাত এ যৌন মিলন বা সহবাস করা আবশ্যক কিনা? স্বাভাবিকভাবেই স্বামী এবং স্ত্রী দুজনের মধ্যেই বাসর রাত এ সেক্স নিয়ে চূড়ান্ত পর্যায়ের চিন্তা ও উত্তেজনা বিরাজ করে। অনেকে মনে করেন যে বাসর রাত এ যৌন মিলন করতেই হবে।
তবে বাসর রাত এ সহবাস করা আবশ্যক নয়, বাসর রাত এ সেক্স করতেই হবে এমন কোনো আইন নেই। আপনি আর আপনার স্ত্রী কীভাবে বাসর রাত কাটাবেন সেটা আপনাদের দুজনের ব্যক্তিগত ব্যাপার। বিয়ের কয়েকদিন আগে থেকে শুরু করে বিয়ের দিন পর্যন্ত পাত্র-পাত্রী দুজনকেই নানারকম কাজের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এ কারণে দেখা যায়, বিয়ের দিনে বর এবং কনে সবচেয়ে বেশি ক্লান্ত থাকে। এই ক্লান্ত শরীরে অনেকেই যৌন মিলন করতে আগ্রহী হন না।
সেক্স করার মতো এনার্জি না থাকলে বাসর রাত এ দুজন দুজনের সাথে খুব ভালো ভাবে গল্প করতে পারেন। এভাবে কথা বলতে বলতে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাতে পারেন। পরের দিন সকালবেলায় একসাথে দুজনে একে অপরকে ঘুম থেকে আদর করে তুলতে পারেন। এরপর আপনারা বিয়ের পরের দিন অনায়াসে যৌন মিলন করতে পারেন।
বাসর রাত এ দীর্ঘ সময় সেক্স করার উপায়
বাসর রাত এ বেশিরভাগ পুরুষই নার্ভাস ফীল করে যে কারণে তারা যৌন মিলনে ভয় পায় এবং দ্রুত বীর্যপাত হয়ে যায়। আর বিয়ের প্রথম রাতেই যদি আপনি আপনার স্ত্রীর সাথে ভালো ভাবে যৌনমিলন করতে না পারেন, তাহলে প্রথমদিন থেকেই আপনার স্ত্রী র কাছে আপনার দুর্বলতা প্রকাশ পেয়ে যাবে। তাই সবার প্রথমে নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাস রাখুন।
যৌন মিলনের পুরুষদের একটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যে হাত ও পায়ে যেন বেশি ভর থাকে। সেক্স করার সময় যখন আপনার মনে হবে যে বীর্যপাত হয়ে যেতে পারে তখনই যৌন মিলন থামিয়ে পুরুষাঙ্গ বের করে নিন, তারপর কিছুক্ষণ পর আবার চেষ্টা করুন। এভাবে অন-অফ পদ্ধতিতে করলে বাসর রাত এ দীর্ঘ সময় সেক্স করতে পারবেন। আর প্রথমবার ভালো ফল না পেলেও অভ্যাস করতে করতে একসময় সফল হবেন ইনশাআল্লাহ্।
ইসলামের সকল বিধি-নিষেধ মেনে জীবন পরিচালনা করার মধ্যেই মানুষের কল্যাণ নিহিত। সুতরাং, প্রত্যেক স্বামী-স্ত্রী উচিত বাসর রাত এ নামাজ ও দোয়ার মাধ্যমে মহান আল্লাহর নিকট কল্যাণ কামনা করা এবং পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসাপূর্ণ সম্পর্ক তৈরী করা। আল্লাহ্ তায়ালা আমাদের সকলকেই উত্তম আমল করার তাওফিক দান করুন।
ইসলামে একজন মহিলার জন্য একই সময়ে একাধিক বিয়ে বা একাধিক স্বামী রাখার অনুমতি দেয়া হয়নি কেন! অবশেষে বিজ্ঞানও আল কুরআনের বিধানের নির্ভুল ব্যাখ্যা করতে সক্ষম হলো: ———————————————————————- একজন ইহুদি ভ্রূণ বিশেষজ্ঞ (যিনি একজন ধর্মীয় পণ্ডিতও ছিলেন) খোলাখুলি বলেছিলেন যে, পৃথিবীতে মুসলিম নারীর চেয়ে পবিত্র ও […]
ইসলামে একজন মহিলার জন্য একই সময়ে একাধিক বিয়ে বা একাধিক স্বামী রাখার অনুমতি দেয়া হয়নি কেন!
অবশেষে বিজ্ঞানও আল কুরআনের বিধানের নির্ভুল ব্যাখ্যা করতে সক্ষম হলো:
———————————————————————-
একজন ইহুদি ভ্রূণ বিশেষজ্ঞ (যিনি একজন ধর্মীয় পণ্ডিতও ছিলেন) খোলাখুলি বলেছিলেন যে, পৃথিবীতে মুসলিম নারীর চেয়ে পবিত্র ও বিশুদ্ধ নারী অন্য কোন ধর্মে নেই।
পুরো ঘটনাটি ঘটেছিল যখন আলবার্ট আইনস্টাইন ইনস্টিটিউটের (Albert Einstein Institution) সাথে যুক্ত একজন ভ্রূণ বিশেষজ্ঞ, ইহুদি পেশাদার রবার্ট, তার ইসলাম গ্রহণের ঘোষণা দেন। যার একমাত্র কারণ ছিল, কুরআনে উল্লেখিত তালাক প্রাপ্ত নারীর ইদ্দতের আদেশ সম্পর্কিত আয়াত এবং ইদ্দতের জন্য তিন মাসের সীমা নির্ধারণের পেছনের রহস্য ও হিকমত সম্পর্কে অবগতি।
আল্লাহ তায়ালা কোনো তালাক প্রাপ্ত নারীকে দ্বিতীয় বিয়ের পূর্বে তিন মাসের একটি গ্যাপ রাখতে বলেছেন। তিনি পবিত্র কুরআনে এরশাদ করেন,
অর্থাৎ ‘তালাকপ্রাপ্তা নারীরা তিন মাসিক পর্যন্ত অপেক্ষা করবে’ (সূরা আল-বাকারাহ ২২৮:২)
এই আয়াতটি একটি আধুনিক জ্ঞান ডিএনএ এর উদ্ভাবনের রাস্তা সুগম করেছে এবং দেখা গেছে যে একজন পুরুষের বীর্যে থাকা প্রোটিন অন্য পুরুষের থেকে ৬২% পৃথক ও ভিন্ন থাকে।
আর একজন নারীর শরীর একটি কম্পিউটারের মত। যখন একজন পুরুষ তার সাথে ইন্টারকোর্স করে তখন সেই নারীর শরীর সব ব্যাকটেরিয়াকে শোষণ করে এবং তার শরীরে তা ধারণ করে।
অতএব, বিবাহ বিচ্ছেদের পরপরই, যদি একজন মহিলা অন্য পুরুষকে বিয়ে করেন বা একই সাথে বেশ কয়েকজনের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে, তাহলে তার শরীরে বিভিন্ন ধরণের ডিএনএ জমা হয় যা বিপজ্জনক ভাইরাসের রূপ নেয় এবং মারাত্মক রোগ সৃষ্টির কারণ হয়।
সাইন্স গবেষণা করে দেখে যে, প্রথম মাসিক আসার পর একজন মহিলার শরীর থেকে ৩২% থেকে ৩৫% পর্যন্ত প্রোটিন শেষ হয়ে যায়, এবং দ্বিতীয় মাসিক আসার পর তার শরীর থেকে ৬৭ থেকে ৭২% ডিএনএ ধ্বংস হয়ে যায়। এবং তৃতীয় মাসিকের পর ৯৯.৯% পর্যন্ত প্রোটিন নির্মূল হয়ে যায়। এরপর জরায়ু আগের ডিএনএ থেকে সম্পন্নরূপে পরিষ্কার হয়ে যায় এবং কোন প্রকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই নতুন ডিএনএ গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুত থাকে।
একজন গণিকা অনেক মানুষের সাথে সঙ্গম করে, যার ফলে বিভিন্ন পুরুষের ব্যাকটেরিয়া তার জরায়ুতে প্রবেশ করে এবং বিভিন্ন ধরণের ডিএনএ তার মধ্যে জমা হয় এবং সে মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে।
বিধবা মহিলার ক্ষেত্রে শরীয়তের বিধান হলো, তার ইদ্দত তালাকপ্রাপ্ত মহিলার চেয়ে বেশি অর্থাৎ ৪ মাস ১০ দিন।
এর কারণ হলো দুঃখ ও দুশ্চিন্তার কারণে তার শরীর থেকে প্রাক্তন ডিএনএ দ্রুত শেষ হয় না, এটি শেষ হতে আগের চেয়ে বেশি সময় লাগে, আর এ জন্য মহিলাদের ইদ্দত চার মাস দশ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
অর্থাৎ ‘তোমাদের মধ্য হতে যারা স্ত্রীদেরকে রেখে মারা যাবে সে অবস্থায় স্ত্রীরা নিজেদেরকে চার মাস দশ দিন বিরত রাখবে।’ (আল-বাকারাহ, ২৩৪)
এই সত্যের মুখোমুখি হয়ে, একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার যুক্তরাষ্ট্রের দুটি ভিন্ন স্থানে গবেষণা পরিচালনা করেন।
এক. আফ্রিকান বংশোদ্ভূত মুসলমানরা যে মহল্লায় থাকেন, সেই সব নারীর ভ্রূণের মধ্যে মাত্র একজন স্বামীর ডিএনএ পাওয়া গেছে।
দুই. অন্য মহল্লা যেখানে আসল আমেরিকান মহিলারা থাকেন, তাদের ভ্রূণের মধ্যে একাধিক অর্থাৎ দুই বা তিন জনের বেশি পুরুষের ডিএনএ পাওয়া গেছে।
অতঃপর যখন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার তার নিজ স্ত্রীর ভ্রূণ পরীক্ষা করলেন, তখন তিনি একটি মর্মান্তিক সত্য দেখতে পান যে, তার স্ত্রীর মধ্যে তিনটি ভিন্ন ভিন্ন ডিএনএ আছে। যার অর্থ হলো তার স্ত্রী তার সাথে প্রতারণা করছিল এবং তার তিন সন্তানের মধ্যে কেবল মাত্র একজন ছিল তার নিজ সন্তান, বাকিরা ছিল অন্য পুরুষ থেকে।
ডাক্তার তখন নিশ্চিত হন যে ইসলামই একমাত্র ধর্ম যা নারীদের নিরাপত্তা এবং সমাজের সম্প্রীতির নিশ্চয়তা দেয়। এবং এই বিষয়েও নিশ্চিত হন যে, একমাত্র মুসলিম নারীরাই পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন, বিশুদ্ধ ও সতী।
Trust is like a delicate thread that holds a marriage together. Learn how to build trust. It is probably the most important ingredient in laying a strong foundation, and no relationship can survive in its absence. Building trust in a marriage is both a conscious […]
Trust is like a delicate thread that holds a marriage together. Learn how to build trust.
It is probably the most important ingredient in laying a strong foundation, and no relationship can survive in its absence. Building trust in a marriage is both a conscious and an unconscious process, which means that it is never too early or late to make deliberate efforts to strengthen the core of your relationship. Here are a few ways you can earn the trust of your partner and make your love bond rock solid.
Don’t hesitate to apologize
Saying “sorry” does not make you a lesser person but it goes a long way in healing the anger or hurt you may have knowingly or unknowingly caused to your partner. More than anything, it assures your partner that they are important to you and that you care about their feelings.
Be supportive in every sphere
Standing by your partner’s side in every situation is an important element in building everlasting trust. Whether your partner made a mistake or is flawed in his or her outlook, don’t be judgmental or reprimand in public. Always take your partner’s side and reserve any debates or arguments for later when you both are alone. Opposing your partner in public will only make them feel attacked and vulnerable.
Be forgiving
Practicing forgiveness in your relationship will prevent hurt, anger and resentment from building up. When you partner is sure than you do not harbour any bitter or negative feelings towards them, they will be more loving and supportive towards you. Resolve any issues as soon as you can and avoid playing the blame game.
Make marriage your priority
Take interest in your partner and give them all your love, care and attention. Do whatever is within your reach to make them happy and try to fulfill their needs and expectations. When your spouse knows that they are your priority, it becomes much easier for them to trust you.
Keep your promises
Even children in kindergarten know that a person who does not keep promises cannot be trusted. When you say something, mean it from you heart and follow through with your commitments if you wish your partner to perceive you as a reliable, trustworthy person.
Don’t leak secrets
Marriage is the most intimate relationship of all and your spouse will often share things with you, which they have never shared with anyone before. If your spouse has bared their vulnerabilities to you, respect that faith and refrain from discussing the same with anyone else, even your parents or in-laws. Even a slight breach of trust may lead to a situation where your spouse is wary of sharing things with you.
Be honest and truthful
Never keep secrets from your spouse, and never lie. Lack of honesty is often the most common reason for the loss of trust between couples. Be it mundane happenings of the day or your deepest feelings, share them openly with your spouse. Don’t be secretive about where you are going or who you are meeting, and don’t give your partner any reasons to doubt your loyalty.
গর্ভকালীন সময়টা গর্ভবতী মা ও শিশু উভয়ের জন্য অনেক গুরত্বপূর্ণ। সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগ পর্যন্ত গর্ভকালীন সময়ে একজন নারীর বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা এবং জটিলতা দেখা দেয়। এসময় সামান্য অসচেতনতা ও অবহেলা মা ও তার অনাগত সন্তানের ভয়াবহ ক্ষতি বয়ে আনতে পারে। তাই সন্তান গর্ভে […]
গর্ভকালীন সময়টা গর্ভবতী মা ও শিশু উভয়ের জন্য অনেক গুরত্বপূর্ণ। সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগ পর্যন্ত গর্ভকালীন সময়ে একজন নারীর বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা এবং জটিলতা দেখা দেয়। এসময় সামান্য অসচেতনতা ও অবহেলা মা ও তার অনাগত সন্তানের ভয়াবহ ক্ষতি বয়ে আনতে পারে। তাই সন্তান গর্ভে আসার পর থেকে ভূমিষ্ঠ হওয়া পর্যন্ত সময়টায় মা এর বিশেষ যত্ন নেয়া উচিত। যদি গর্ভবতী হওয়ার আগেই একজন মা এসব ঝুঁকি বা সমস্যার কথা জানতে পারে তহালে এসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা গুলো থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পাওয়া যায়। আপনিও কি একজন মা হতে চলেছেন? তাহলে আজকের এই ব্লগটি আপনার জন্যই।
গর্ভকালীন সময়ে সহবাস করা যাবে কি না?
বেশিরভাগ গর্ভবতী নারী তাদের স্বামীর মনেও খুবই কমন একটা প্রশ্ন থাকে যে “গর্ভবস্থায় সহবাস বা সেক্স করা যায় যাবে কি না? অথবা গর্ভবতী মা যৌন মিলন করলে কি ধরনের সমস্যা হতে পারে?” এর সহজ উত্তর হচ্ছে যদি গর্ভকালীন সময়ে যদি কোনো জটিল ধরনের শারীরিক সমস্যা না হয় তাহলে সন্তান গর্ভে থাকা অবস্থায়ও সহবাস করা যাবে। কিন্তু কিছু কারণ যখন শারীরিক মিলন বা যৌন মিলন করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
গর্ভকালীন সময়ে নিরাপদে সহবাস
অনেক দম্পতির জন্য গর্ভাবস্থায় সহবাস বা যৌন মিলন নিরাপদ হলেও সেক্স করাটা সহজ মনে হয় না। কারণ গর্ভকালীন সময়ে যৌন মিলনের জন্য আপনাকে অন্য ধরনের পজিশন চেষ্টা করে দেখতে হবে কোনটা আপনাদের দুজনের জন্যই সুবিধাজনক। এ সময়ে একটু অসাবধানতা আপনার বাচ্চার ক্ষতির কারণ হতে পারে।মনে রাখবেন, আপনার কিংবা আপনার স্বামীর কোন প্রকার যৌন ব্যাধি থাকলে গর্ভকালীন সময়ে সেক্স করা থেকে বিরত থাকতে হবে। গর্ভকালীন সময়ে অন্যান্য সময়কালের মত একই পজিশনে সেক্স করা যায় না।
কোন সময়ে সহবাস করা যাবে না
গর্ভবতী হওয়ার পর প্রথম ৩ মাস ও শেষ ৩ মাস অবশ্যই সেক্স করা থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকতে হবে। গর্ভাবস্থায় শুধু ৪র্থ, ৫ম, ও ৬ষ্ঠ মাস যৌনমিলন করা যবে। গর্ভাবস্থায় ছয় থেকে সাতমাসে নারীর মধ্যে যৌন কামনা বেড়ে যায়, তখন যৌন মিলন না হলে নারীর মানসিক ক্ষতি হতে পারে। তাই এ সময় সেক্স করা যেতে পারে তবে অবশ্যই কিছু নিয়ম মেনে।
গর্ভাবস্থায় সেক্সের সময় সঠিক পদ্ধতি জানা না থাকলে গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া গর্ভকালীন সময়ে সহবাসের ফলে পেটে ব্যথা ও মৃদু রক্তপাত হতেই থাকে। গর্ভকালীন সময়ে অল্প কিংবা বেশি রক্তক্ষরন পরিলক্ষিত হলে শাররীক মিলন থেকে বিরত থাকতে হবে। অনেক সময় অনিরাপদ যৌন মিলনের ফলে বিকলাঙ্গ শিশু জন্মাতে পারে।
হঠাৎ রক্তপাত হলে করণীয় কি?
প্রসবের সময় গর্ভবতী মায়ের রক্তপাত হওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু এছাড়া গর্ভকালীন যেকোনো সময় রক্তপাাত বা প্রসবের সময় বা প্রসবের পর খুব বেশি রক্তপাত গর্ভফুল না পড়াটা বিপদের লক্ষণ। এরকম অবস্থা বাচ্চা এবং মা দু’জনের জীবনের জন্যই হুমকীস্বরুপ। জরায়ু ছাড়া অন্যকোনো স্থানে ডিম্বাণুর অবস্থান, ছোটখাটো আভ্যন্তরীন জটিলতায় গর্ভপাত হয়ে যেতে পারে রক্তপাতের কারণে। তাই এ অবস্থায় দেরী না করে গর্ভবতী মাকে দ্রুত ডাক্তারের কাছে নিতে হবে।
গর্ভবতী মায়ের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা
আবার গর্ভাবস্থায় বা প্রসবের পর মায়ের রক্তচাপের দিকেও লক্ষ্য রাখাটা জরুরি। গর্ভবতী মায়ের উচ্চ রক্তচাপ থাকলে তারা একলামশিয়ার ঝুঁকিতে থাকেন। বিশেষ করে গর্ভধারণের ২০ সপ্তাহ পরে যে সব মায়েদের উচ্চ রক্তচাপ দেখা দেয় তাদের ঝুঁকি থাকে অনেক। এজন্য যারা আগে থেকেই উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের উচিত ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক ওষুধ সেবন করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং নিজ ও বাচ্চা উভয়ের সুস্থতা নিশ্চিত করা।
গর্ভকালীন সময়ে রক্তস্বল্পতা
হঠাৎ রক্তপাত এবং উচ্চ রক্তচাপের পাশাপাশি গর্ভাবস্থায় আরেকটি জটিলতা হলো রক্তস্বল্পতা। গর্ভবতী মায়ের রক্তে যদি হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ১০০ মিলিলিটারে ১০ গ্রাম থেকে কম থাকে অথবা রক্তে লোহিত রক্তকণিকার সংখ্যা কম থাকে, তবে তাকে গর্ভাবস্থায় রক্তাল্পতা বলে। রক্তস্বল্পতার কিছু লক্ষণ হলো সামান্য কিছু করলেই হাঁপিয়ে ওঠা, হার্টবিট বেড়ে যাওয়া এবং রক্তচাপ কমে যাওয়া। এছাড়া চেহারা নীলাভ হয়ে যাওয়া, নখ নীল বা সাদাটে হয়ে যাওয়া, শরীর ঝিমঝিম করা এসব গুলো হল রক্তস্বল্পতার লক্ষণ।
তলপেটে তীব্র ব্যথা
গর্ভকালীন সময় প্রথম তিন মাসে তলপেটে হালকা ব্যথা অনভূত হতে পারে। জরায়ু ধীরে ধীরে বড় হয়ে এর আশে পাশের লিগামেন্টে টান পড়ার জন্য তলপেটে ও কুঁচকিতে হালকা ব্যথা হতে পারে। এ ব্যথা স্বাভাবিক। কিন্তু যদি তলপেটে তীব্র ব্যথা হয় তাহলে দ্রুত ডাক্তারকে দেখানো উচিত। এ ক্ষেত্রে জরায়ু ছাড়া অন্যান্য স্থান যেমন পেটের ভেতর, ডিম্বাশয়ের মধ্যে ইত্যাদি অংশে গর্ভধারণ হয়ে থাকে এবং অনেক সময় এটি ফেটে গিয়ে গর্ভবতী মায়ের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩৬ সপ্তাহে নূন্যতম প্রতি মাসে একবার এবং ৩৬ সপ্তাহের পর প্রতি সপ্তাহে একবার করে মাকে স্বাস্থ্যকর্মী বা ডাক্তার দেখানো উচিত।
গর্ভবতী মায়ের পা ফুলে যাওয়া বা পায়ে পানি আসা
গর্ভকালীন সময়ে মায়ের পায়ে সামান্য পানি আসা খুব একটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। গর্ভাবস্থা শিশুর বৃদ্ধির কারণে মায়ের শরীরে প্রায় ৫০% বেশি রক্ত ও তরল উৎপন্ন হয়। এই অতিরিক্ত রক্ত ও তরলের কারনে শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে যায়। একটু বেশি হাঁটাহাঁটি করলে পায়ের পানি চলেও যায়। কিন্তু যদি এরসাথে হাতে মুখেও পানি চলে আসে এবং অস্বস্তি হয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত।
অনেকক্ষন একটানা কাজ করা, ভিটামিনযুক্ত খাবার কম খাওয়া, ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় খাওয়া বা অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার অভ্যাস থাকলে গর্ভকালীন সময়ে পায়ে পানি আসতে পারে। পায়ে পানি জমলে বা পা ফুলে গেলে শরীরে পানি জমলে বা শরীর ফুলে গেলে গর্ভবতীর রক্তচাপ, প্রস্রাব পরীক্ষা করা ও ওজন দেখা উচিত। প্রাথমিকভাবে পা উঁচুতে রেখে বিশ্রাম নেওয়ােএবং খাবারের সাথে বাড়তি লবণ এড়িয়ে চলতে হবে।
গর্ভকালীন সময়ে বমি ভাব ও অতিরিক্ত বমি হওয়া
সামান্য একটু বমিভাব বা না খেতে চাওয়ার প্রবণতা যে গর্ভবতী মায়েদের হয় এটা আমরা সবাই জানি। প্রায় ৫০ শতাংশ গর্ভবতী মায়ের মধ্যে সকাল বেলায় বমি করার প্রবণতা থাকে। বলা হয় যে, এটা গর্ভধারণের প্রথম লক্ষণ। গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাস এ সমস্যা দেখা দেয়। কিন্ত অতিরিক্ত বমি হওয়া সাধারণ লক্ষণ নয়। বমি ভাবের কারণে আপনি যদি কিছুই খেতে না পারেন তাহলে ড্রিহাইড্রেশনের সমস্যা হবে যেটা বাচ্চার জন্য ভীষণ ক্ষতিকারক। তাই এই সমস্যা দেখা দিলেই আপনার চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
অতিরিক্ত বমি করার প্রবণতা থাকলে তেলবিহীন শুকনো খাবার যেমন- মুড়ি, খই, রুটি, বিস্কুট ইত্যাদি খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। সকালে ভাজা বা শুকনো খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে। ৩ বেলায় ভারি খাবার না খেয়ে একটু পর পর খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
বাচ্চার নড়াচড়া বা মুভমেন্ট
গর্ভকালীন সময়ে বাচ্চার নড়াচড়া হবু মাকে সুন্দর অনুভূতি দেয়। গর্ভাবস্থায় সাধারণত ১৬ থেকে ২০ সপ্তাহের মধ্যে বাচ্চার নড়াচড়া অনুভব করা যায়। পেটের ভেতর বাচ্চা ঘুমায় বা খেলা করে, যার অনুভূতি মা বাইরে থেকে বুঝতে পারেন। বাচ্চা কতটুকু নড়াচড়া করবে সেটার নির্দিষ্ট কোনো পরিমাপ না থাকলেও এর একটা নির্দিষ্ট সীমা এবং সময় আছে যেটা শুধু মা-ই অনুভব করতে পারেন। বাচ্চার অধিক নড়াচড়া বা কম নড়াচড়া দু’টিই মায়ের জন্য ক্ষতিকর।
গর্ভে সন্তান ধারণকারী প্রতিটি মা ই পেটে সন্তানের নড়াচড়া অনুভব করেন। হুট করে যদি অনুভব করেন যে আপনার বাচ্চার মুভমেন্ট টের পাচ্ছেন না তাহলে এটা সত্যি আপনার গর্ভাবস্থার বড় ধরণের জটিলতা। বাচ্চা ঠিকঠাক আছে কিনা সেটা বোঝার খুব সুন্দর একটা উপায় আছে। এজন্য প্রথমে খানিকটা ঠান্ডা খাবার বা পানি পান করুন। তারপর চুপচাপ শুয়ে পড়ুন বিছানায়। বাচ্চা যদি পেটে লাথি মারে তাহলে বুঝতে হবে সবকিছু ঠিকঠাক আছে। ডাক্তাররা বলেন, বাচ্চা যদি দুই ঘন্টায় কমপক্ষে ১০ বার লাথি মারে তাহলে বাচ্চাকে সুস্থ বলে মনে করা যায়। তবে নড়াচড়া ১০ বারের কম হলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়াটাই ভালো।
বারবার প্রস্রাবের বেগ
প্রেগনেন্ট মহিলাদের মধ্যে বারবার প্রস্রাবের বেগ আরেকটি জটিলতা। ৮ থেকে ১২ তম সপ্তাহে বার বার প্রস্রাবের বেগ দেখা যায়। এ সময়টায় জরায়ুর আকার বড় হওয়ার কারণে মূত্রথলিতে চাপ দেয় বলে এমনটা হয়। আবার গর্ভকালীন সময়ে হরমোন ইস্ট্রোজেন ও রক্ত সরবরাহ বেড়ে যাওয়ার জন্য সাদা স্রাব বেড়ে যেতে পারে। গর্ভের প্রথম ৩ থেকে ৪ মাস এটি হওয়া স্বাভাবিক। তবে সাদা স্রাবের সাথে যদি দুর্গন্ধ থাকে বা চুলকানি হয় তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। গর্ভাবস্থায় যদি কেঁপে কেঁপে ভীষণ জ্বর আসে এবং প্রসাবের সময় জ্বালাপোড়া হয় তবে তা অনেক সময় মূত্রনালির সংক্রমণের ইঙ্গিত বহন করে।
গর্ভবতী মা নিজের মধ্যে যাকে ধারণ করেছেন তাকে সুস্থ ও সুন্দরভাবে পৃথিবীতে আনা শুধু হবু মায়েরই দায়িত্ব নয়, পরিবারের সবার। মনে রাখবেন, আমাদের দেশে প্রসবকালে মাতৃ ও শিশুমৃত্যুর হার কিন্তু অনেক বেশি। এজন্য স্বামী বা পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে আপনার উচিত গর্ভবতী মায়ের বাড়তি যত্ন নেয়া। সবাই সচেতন হলে তবেই তো পুরো ঘর আলো করে ফুটফুটে নতুন একজন নতুন সদস্য আসবে।
প্রাথমিক পর্যায়ে ছেলে ও মেয়ে নির্বাচন হলেই ছেলেপক্ষের এবং মেয়েপক্ষের নিকটতম লোকজন নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় বাগদান। বাগদান মানে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু। মেয়ের হাতের অনামিকা আঙ্গুলিতে বিয়ের কন্যা-নির্বাচন চিহ্ন হিসেবে আংটি অথবা গলায় সোনার চেইন পরিয়ে পাকা কথা শেষ করা হয়। বর্তমানে ছেলেকেও মেয়েপক্ষের একজন অভিভাবক […]
প্রাথমিক পর্যায়ে ছেলে ও মেয়ে নির্বাচন হলেই ছেলেপক্ষের এবং মেয়েপক্ষের নিকটতম লোকজন নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় বাগদান। বাগদান মানে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু।
মেয়ের হাতের অনামিকা আঙ্গুলিতে বিয়ের কন্যা-নির্বাচন চিহ্ন হিসেবে আংটি অথবা গলায় সোনার চেইন পরিয়ে পাকা কথা শেষ করা হয়। বর্তমানে ছেলেকেও মেয়েপক্ষের একজন অভিভাবক আংটি পরান।
এক্ষেত্রে ছেলের পক্ষ থেকে প্রধান ভূমিকায় মা-খালারা এবং মেয়ের পক্ষ থেকে বাবা-চাচারাই দায়িত্ব পালন করে থাকেন। দিন-ক্ষণ ঠিক করে পাকা কথা দিয়ে মিষ্টি মুখ করান একে অপরকে। মুখে সবার হাসি আর কুশলবিনিময় করে আনন্দ ভাগাভাগি করেন দুইপক্ষ।
বাঙালির সবচেয়ে আলোচিত অনুষ্ঠান বিবাহ। বর-কনেকে সাজিয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসানো হয়। কবুল কবুল কবুল সম্মতি উচ্চারণ, কাগজে কলমে লিপিবদ্ধ বিবাহ নিবন্ধন ও উপস্থিত সবার প্রাণখোলা দোয়া মোনাজাত- কিংবা যাজকের সামনে সম্মতি ধ্বনি বা, বৌদ্ধ ভিক্ষুর মঙ্গলবার্তা অথবা অগ্নিকুণ্ড প্রদক্ষিণ ও উলুধ্বনির আবহে মালাবদল এবং পাত্রের হাতে রঙিন হয়ে ওঠা কন্যার সিঁথি এভাবেই খুশির জোয়ারে বিয়ের রঙে রঙিন হয়ে ওঠে বাঙালি।
জমকালো উৎসবে আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধব মিলে পোশাকের জাঁকজমক আর পোলাও, রোস্ট, রেজালা, কাবাব, বোরহানি নিয়ে চলে বাঙালি ভোজন। কন্যাদান এ দিনই হয়। মা-বাবার আদুরে কন্যাকে অশ্রুজলে বিদায় দিয়ে রিক্ত মনে সবাই বাড়ি ফেরেন।
ওদিকে শুরু হয়ে যায় বরপক্ষের আনন্দ। নতুন বউ, আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশীর মুখরতায় বাড়ি হৈ হৈ রবে পূর্ণ হয়। এভাবে নানা আমোদে ও আয়োজনে দুই-একটি দিন পার হয় বরের বাড়িতে।
নতুন দিন শুরুতে বউভাতের ব্যস্ততা বেড়ে যায় বরের বাড়িতে। কনেপক্ষের সবাই এ দিন আমন্ত্রিত হন, পাশাপাশি বরপক্ষের এলাকার লোকজন, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়স্বজন সবাই মিলে ভোজন উৎসবে একত্রিত হন।
আনন্দ হাসি মশকরায় দিনটি শেষে বর ও কনেকে নিয়ে কনের বাবা-মা নিজ বাড়িতে নিয়ে আবার আনন্দের জোয়ার জাগিয়ে তোলেন। প্রতি বছর এমনইভাবে হাজারো বাঙালির বিয়ে সম্পন্ন হচ্ছে।
মুসলিম বিবাহ উৎসব
ধর্মের ব্যাখ্যাতে মুসলমানদের বিবাহ আর ওয়ালিমা ছাড়া আর তেমন কিছু খুঁজে পাওয়া যায় না। হাঁটি হাঁটি পা পা করে সময় এগোনোর সাথে সাথে নিকটবর্তী লোকাচার ও সংস্কৃতি যুক্ত হয়েছে। গ্রাম ও শহরের মানুষ এখন বেশ কয়েকটি উৎসব রীতিমতো পালন করে যাচ্ছেন। এগুলোর মধ্যে-
পাত্র-পাত্রী দেখা: মুসলিম সমাজে এখন রীতিমতো পাত্র-পাত্রী দেখা চলছে। সমাজ, সংস্কৃতি, অঞ্চল, শিক্ষা দেখে উভয় উভয়কে পছন্দ করছেন। এটি চলে আসছে আধুনিকের প্রারম্ভ থেকেই।
বাগদান: পাত্র-পাত্রীর পছন্দের চিহ্ন স্বরূপ স্বর্ণ পরিয়ে পরিবারের সম্মতিসাপেক্ষে দিন তারিখ নির্ধারণ করা হয় বাগদানের দিন।
মেহেদি সন্ধ্যা ও গায়েহলুদ: শহরের ঘরে ঘরে এখন মেহেদি সন্ধ্যা করা হয়। বন্ধু-বান্ধবের আনাগোনা, প্রতিবেশীর ফুর্তি আর স্বজনদের বিয়ে ব্যস্ততায় উদযাপিত হয় মেহেদি। হলুদে নাচ-গান আর অভিনয়ের মাঝে উৎসব আরও প্রফুল্ল হয়ে ওঠে।
আকদ: অনেক পরিবারই বিয়ের পর্বটা আগেভাগেই করে রাখেন। এটিই আকদ। পরে উপযুক্ত সময় বুঝে বিয়ের অনুষ্ঠান করে থাকেন।
বিয়ের অনুষ্ঠান: এটি প্রধান অনুষ্ঠান। শেরওয়ানি, শাড়ি বা লেহেঙ্গায় রাজা-রানীর বেশে কন্যাদানের মাধ্যমে পালিত হয় বিয়ের অনুষ্ঠান।
ওয়ালিমা: বরপক্ষের এই বড় আয়োজনের মাধ্যমে বন্ধু, স্বজন ও এলাকাবাসীকে দাওয়াত দিয়ে করা হয় ওয়ালিমা বা বউভাত অনুষ্ঠান।
হিন্দু বিবাহ উৎসব
আবহমানকাল থেকে হিন্দু বা সনাতন ধর্মীয় বিয়ের রীতিনীতি চলে আসছে। হিন্দু ধর্মের বিয়ে বেশ কয়েকটি আচার-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
পাটিপত্র: বাগদান অনুষ্ঠানে পাটিপত্র করা হয়। এই পাটিপত্র উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে পুরোহিত লেখেন। পাটিপত্রে বর-কনের স্বাক্ষর থাকে। এরপর কোনো পক্ষের অসম্মতি প্রকাশ করার সুযোগ থাকে না। তবে আধুনিক সময়ে অনেকে পাটিপত্র করছেন না।
এরপর আসে আশীর্বাদ আসর। এর প্রধান উপকরণ ধান, দুর্বা, প্রদীপ, চন্দন, পান, সুপারি ও বড় মাছ। পঞ্জিকা অনুসারে শুভদিন দেখে আশীর্বাদ করা হয়।
পানখিল, দধিমঙ্গল ও গায়েহলুদ: গায়েহলুদের অনুষ্ঠানের জন্যও দিনক্ষণ আছে। এখানেও শুভ দিনক্ষণ দেখে গায়ে হলুদের জন্য হলুদ কোটা হয়। পাঁচ-সাতজন সধবা স্ত্রীলোক মিলে হলুদ কোটেন। এই হলুদই পরে গায়ে হলুদের দিন গায়েহলুদ দেয়া হয়।
গায়েহলুদের আগের দিন আরশি দেখা হয়। সাধারণত পাত্র-পাত্রী জরুরি কোনো কাজ না থাকলে অমঙ্গলের কথা ভেবে বাহিরে যান না।
বরবরণ, সাতপাক, শুভদৃষ্টি, মালাবদল, সম্প্রদান ও অঞ্জলি: গোধূলির শেষ লগ্নে অর্থাৎ সন্ধ্যার পর যখন রাত গড়ায় তখন বর বরণ শুরু। অনুষ্ঠান দুই পর্বের। একটি সাজ বিয়ে, অন্যটি বাসি বিয়ে। দুটি আসরই কনের বাড়িতে বসে। তবে কোনো কোনো সময় বাসি বিয়ে বরের বাড়িতেও হয়ে থাকে। সাজ বিয়ে বিয়ের মূল পর্ব।
এই পর্বেই কনে আর বরকে সাতবার প্রদক্ষিণ করে বরণ করে নেয়। বরণ শেষে বর-কনে দুজনের দিকে শুভ দৃষ্টি দেয়, একই সময় মালা বদল করা হয়। পরে পুরোহিত মন্ত্র উচ্চারণ করে বর-কনের ডান হাত একত্রে করে কুশ দিয়ে বেঁধে দেন।
সিঁদুর দান: এরপর সিঁদুর দান বা বাসি বিয়ের পর্ব। বাসি বিয়েতে বিভিন্ন দেবদেবীর অর্চনা শেষে বর কনের কপালে সিঁদুর দিয়ে দেন। তারপর উভয় মিলে সাতবার অগ্নিদেবতা প্রদক্ষিণ করেন।
বউভাত: বউভাত অনুষ্ঠান বরপক্ষ অনেক ঘটা করে পালন করেন। বাড়ির বউকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয় এ অনুষ্ঠানে।
খ্রিস্টান বিবাহ উৎসব
খ্রিস্টান সমাজেও সাধারণত প্রথমে পাত্রী দেখা হয়। বরপক্ষ কনে নির্বাচন করে কনের চরিত্র, দোষ-গুণ, বংশ পরিচয় জেনে নেন। পরে শুভদিন দেখে শুভকাজ করা হয়।
কনে নির্বাচন ও বাগদান: বরপক্ষের প্রস্তাবে কনেপক্ষ রাজি হলে বাগদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কোনো কোনো জায়গায় এ অনুষ্ঠানকে পাকা দেখা-ও বলে। অনেকে এ অনুষ্ঠানকে পানগাছ অনুষ্ঠান বলেন। বাগদান উপলক্ষে পান, সুপারি, বিজোড় সংখ্যক মাছ নিয়ে যাওয়া হয় বলেই এ নাম ধারণা করা হয়।
বাইয়র ও নাম লেখা: এই অনুষ্ঠানে বরপক্ষের লোকজন কনের বাড়িতে যায়; যা আগেই কথা বলে ঠিক করে রাখা হয়। এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত বর-কনে সবার আশীর্বাদ গ্রহণ করেন। বিয়ের তিন সপ্তাহ আগে কনের বাড়িতে পুরোহিতের কাছে বর-কনে নাম লেখান। অনেকে এ অনুষ্ঠানে আতশবাজি ও বাজনার আয়োজন করেন।
বান প্রকাশ, অপদেবতার নজর ও কামানি বা গা-ধোয়ানী: এই অনুষ্ঠানে বর-কনে বিয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন। মণ্ডলীর বিধি অনুযায়ী এ সময় বিয়ের ক্লাস করতে হয়। এটি বিয়েপূর্ব বাধ্যতামূলক ক্লাস ব্যবস্থা।
নাম লেখা থেকে শুরু করে বিয়ের আগ পর্যন্ত বর ও কনেকে অতি সংযমী জীবন করতে হয়। অনেকে এ সময় ভূত-প্রেত ও অপশক্তির নজর থেকে রক্ষার জন্য জপমালা গলায় পরেন। বিয়ের আগের রাতের অনুষ্ঠানকে গা-ধোয়ানী বলে। অনেক খ্রিস্টান সমাজে এই দিন গায়েহলুদ মাখিয়ে জাঁকজমকের সঙ্গে অনুষ্ঠান করা হয়।
কনে তোলা: বিয়ের দিন ভোরে বাদক দলসহ বরের আত্মীয়-স্বজন কনের বাড়ি গিয়ে কনেকে নিয়ে আসেন। কনেকে ঘর থেকে আনার সময় তার হাতে পয়সা দেয়া হয়। কনে বাড়ি থেকে আসার সময় সেই পয়সা ঘরের মধ্যে ছুড়ে ফেলে। এর অর্থ হলো যদিও সে বাড়ি থেকে চলে যাচ্ছেন তারপরও বাড়ির লক্ষ্মী ঘর থেকে চলে যাচ্ছে না।
গির্জার অনুষ্ঠান: শুরুতে গির্জার প্রবেশ পথে যাজক বর-কনেকে বরণ করে নেন। তারপর বর-কনে দুজনের মধ্যে মালা বদল করা হয়। এরপর কনের সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে দেওয়া হয়।
ঘরে তোলা: এ অনুষ্ঠানে উঠানের দিকে মুখ করে বড় পিঁড়ির উপরে বর-কনেকে দাঁড় করানো হয়। এরপর বর-কনে সাদা-লাল পেড়ে শাড়ির উপর দিয়ে হেঁটে ঘরে ওঠে। এ সময় বর ও কনে একে অপরের কনিষ্ঠ আঙুল ধরে থাকেন।
বৌদ্ধ বিবাহ উৎসব
ধর্মীয় ও সামাজিক এই দুই দিকের প্রাধান্য দিয়ে বৌদ্ধ বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়ে থাকে।
পাকা-দেখা: পাকা দেখার মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয় বিয়ের কথা। পাত্র-পাত্রী উভয়কে দেখে অভিভাবকের মাধ্যমে পাকা কথা ও দিন ধার্য করা হয়।
গায়েহলুদ: বাঙালি সংস্কৃতির সব ধর্মেই এখন গায়েহলুদ অনুষ্ঠান দেখা যায়। বৌদ্ধ ধর্মেও গায়েহলুদ হয়।
বিবাহ অনুষ্ঠান: সামাজিকভাবে সবাইকে নিয়ে ধর্মীয় রীতি ঠিক রেখে বৌদ্ধ বিহারে পাত্র-পাত্রীকে নিয়ে আসা হয়। এখানে মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে বুদ্ধের পূজা করা হয়। ত্রি-স্মরণ পঞ্চশীল পূজার মাধ্যমে বৌদ্ধ ভিক্ষুকের আশীর্বাদ গ্রহণের মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন হয়।
ফুলশয্যা: নতুন বউকে ঘরে এনে বাড়ির সবাই মিলে পালন করেন ফুলশয্যা অনুষ্ঠান। নানা গল্প, তামাশা, খোলা গলায় গান আর নাচে চলে বর ও কনেকে নিয়ে আমোদ।
তরুণদের বিয়ে ভীতি। শুনতে নিশ্চয়ই অবাক করার মত কথা। হ্যাঁ, আজকাল তরুণদের একটা বড় অংশের বিয়ে ভীতি রয়েছে। আর এই বিয়ে ভীতির কারণ অর্থ-বিত্তের অভাব, বেকারত্ব, শারীরিক অসুস্থতা, পাত্রী অপছন্দ, নতুন জীবনে পদার্পণ বা দাম্পত্য আতংক এসব কিছুই নয়। বিয়ে ভীতিতে আক্রান্ত তরুণ-যুবকদের বৃহত্তর অংশ […]
তরুণদের বিয়ে ভীতি। শুনতে নিশ্চয়ই অবাক করার মত কথা। হ্যাঁ, আজকাল তরুণদের একটা বড় অংশের বিয়ে ভীতি রয়েছে। আর এই বিয়ে ভীতির কারণ অর্থ-বিত্তের অভাব, বেকারত্ব, শারীরিক অসুস্থতা, পাত্রী অপছন্দ, নতুন জীবনে পদার্পণ বা দাম্পত্য আতংক এসব কিছুই নয়। বিয়ে ভীতিতে আক্রান্ত তরুণ-যুবকদের বৃহত্তর অংশ মনে করে তাদের জীবন শেষ হয়ে গেছে। তারুণ্য-যৌবনে শরীরের ওপর অত্যাচার-অবিচার, ক্ষেত্রবিশেষে মাদক সেবন এবং নারীর সংস্পর্শে এলে নিজের নিষ্ক্রীয়তার অভিজ্ঞতা, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যৌনজীবন নিয়ে ভুল ধারণা এবং মানসিক সমস্যা এবং কিছু কিছু মেয়েদের অতিরিক্ত জ্ঞান তরুণদের বিয়ে ভীতির প্রধান কারণ। অবশ্য কিছু কিছু ক্ষেত্রে শারীরিক সমস্যা নেই তা বলা যাবে না। তবে ডাক্তারদের চেম্বারে আসা বিয়ে ভীতিতে আক্রান্ত তরুণদের শতকরা ৮০ থেকে ৯০ ভাগেরই কোন শারীরিক সমস্যা নেই। গত ছয়মাসে আমার চেম্বারে আসা বিয়ে ভীতিতে আক্রান্ত শতাধিক তরুণ ও যুবকের ওপর পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায় শতকরা ৮০ ভাগের কোন ধরনের শারীরিক সমস্যা নেই।
শতকরা ৫ ভাগের প্রয়োজনীয় কিছু হরমোনের ঘাটতি রয়েছে যা চিকিৎসাযোগ্য, শতকরা ১০ ভাগের শরীরে প্রয়োজনীয় শুক্রাণুর অভাব রয়েছে (আলগেস পাকিস), শতকরা ২/৩ ভাগের শরীরে কোন শুক্রাণু নেই (অ্যাজোসপারসিযঅ)। এছাড়া শতকরা যে ২০ ভাগের কিছু কিছু শারীরিক সমস্যা রয়েছে তাদের মধ্যে শতকরা অন্ততঃ ৫ ভাগের যৌন সমস্যা (ইম্পোর্টেন্স) রয়েছে। এ তথ্য আন্তর্জাতিক গবেষণা তথ্যের সঙ্গে সঙ্গাতিপূর্ণ। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে আমাদের দেশের তরুণরা অধিক সুঠাম ও সক্ষম। তবুও তরুণদের বিয়ে ভীতি কেন। এসব তরুণদের কাছে চেম্বারে আমি পাঁচটি প্রশ্ন করে থাকি। কেমন করে তারা বুঝতে পেয়েছে তারা ফুরিয়ে গেছে বা শারীরিক যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছে। তাদের এই ধারণার পিছনে কোন বাস্তব অভিজ্ঞতা রয়েছে কি? শারীরিক শক্তি ফিরিয়ে কোন ওষুধ সেবন করেছে কি, ইত্যাদি ইত্যাদি। তরুণ-যুবকদের বিচিত্র সব জবাব, অভিজ্ঞতা, এসব তুলে ধরার কোন ইচ্ছা আমার নেই। এছাড়া রোগীর গোপন তথ্য প্রকাশ মেডিক্যাল এথিকস অবমাননার পর্যায়ে পড়ে। তাই এসব নিয়ে দীর্ঘ বর্ণনার কোন ইচ্ছে নেই। তবে এ কথাটি সত্য, তরুণদের বিয়ে ভীতির কারণের পিছনে যেমন অজ্ঞতা, মানসিক সমস্যা এবং তরুণদের একটি বড় অংশের বাস্তব অভিজ্ঞতা নেতিবাচক হওয়ায় (যার শতকরা ৯৯ ভাগ বিয়ের পর ঠিক হয়ে যায়) বিভ্রান্তি বাড়ছে। পাশাপাশি একশ্রেণীর তথাকথিত যৌন সমস্যা চিকিৎসক নামধারীদের অজ্ঞতা এবং ভুল চিকিৎসার কারণে তরুণদের যৌন ভীতি বেড়ে যাচ্ছে। বিয়ে করেনি এমনসব তরুণদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেক্স স্টিমুল্যান্ট ট্যাবলেট দেয়া হয়। ফলে এসব তরুণরা মনে করে তাদের নিশ্চয়ই যৌন সমস্যা রয়েছে। এতে তরুণদের সাময়িক শারীরিক ফিটনেস বাড়লেও দীর্ঘমেয়াদি মানসিক সমস্যার সৃষ্টি করে। এমনকি একাধিক তরুণ অকপটে শিকার করেছেন ডাক্তারের দেয়া যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট সেবন করে অপকর্মে লিপ্ত হয়েছেন। এসব বিয়ে ভীতি বা যৌন ভীতিতে আক্রান্তদের বেশির ভাগের প্রায় একই মন্তব্য যতদিন ট্যাবলেট সেবন করেন ততদিন ভালো থাকেন। ওষুধ সেবন শেষ তো সবশেষ। অথচ এসব তরুণের শতকরা ৮০ থেকে ৯০ ভাগই শারীরিকভাবে সুস্থ এবং কেবলমাত্র যথাযথ কাউন্সিলিং করতে পারলে কোন প্রকার যৌন উত্তেজক ওষুধ ছাড়াই তরুণদের বিভ্রান্তি দূর করা সম্ভব।
এ প্রসঙ্গে আমি আগেও বলেছি শুধু বাংলাদেশের তরুণদেরই বিয়ে ভীতি এবং যৌন ভীতি বেশি। এ ক্ষেত্রে একটি উদাহরণ দেবো। আমি সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে চর্ম ও যৌন রোগের ওপর পোস্ট গ্রাজুয়েশন করার সময় সিঙ্গাপুর ডিএসসি ক্লিনিকে কিছুদিন অবজারভার হিসেবে প্রশিক্ষণ নেই। প্রচুর বাংলাদেশী তরুণ আসতো এ ক্লিনিকে। সিঙ্গাপুর ডিএসসি ক্লিনিক বাংলাদেশের যেকোন প্রাইভেট হাসপাতালের চেয়ে বড় কেবলমাত্র যৌন রোগীদের চিকিৎসা করা হয় এই ক্লিনিকে। আমি দেখেছি সিঙ্গাপুরে চাকরিরত বাংলাদেশী তরুণরাও নানা ভুল ধারণার কারণে নানা ধরনের যৌন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এসব তরুণের অনেকেরই যৌন জীবন নিয়েও রয়েছে নানা বিভ্রান্তি। কয়েকমাস আগে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক জেনারেল হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। হাসপাতালের অন্যতম চিকিৎসক ডাঃ শক্তির সঙ্গে আমার পূর্ব নির্ধারিত মিটিং ছিল। তিনি একাধিকবার আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। যা হোক, ডাঃ শক্তি যৌন সমস্যার রোগীদের চিকিৎসা করেন। বাংলাদেশ থেকে বেশকিছু রোগী যায় ব্যাংকক হাসপাতালে। ডাঃ শক্তি আমাকে প্রায় একই রকম তথ্য দিলেন। বাংলাদেশী রোগীদের শারীরিক বা যৌন সমস্যার চেয়ে মানসিক সমস্যাই বেশি।
থাক এসব কথা। তরুণদের বিয়ে ভীতি আসলে মোটেও শারীরিক সমস্যার কারণে হয় না। যৌবনে অধিকাংশ পুরুষই কিছু অনাকাঙ্খিত অভ্যাসের শিকার হয়। এর জন্য শরীরের যৌন শক্তি শেষ হয়ে যাবে এটা নিতান্তই ভুল ধারণা। শরীরে যৌন শক্তি নামে আলাদা কোন শক্তি নেই। শারীরিক সুস্থতা, সুঠাম দেহ, মানসিক প্রশান্তি থাকলে এবং পরস্পরের সুন্দর সম্পর্কও সমঝোতা থাকলে প্রাত্যহিক জীবনের অন্যসব কাজের মত দাম্পত্য জীবনও সুখের হতে পারে। তাই বিয়ে ভীতির কারণে তরুণদের যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট সেবন করা উচিত নয়। এছাড়া এজন্য অযথা ডাক্তারের চেম্বারে যাবারও কোন দরকার নেই। তবে বিয়ের পর যদি কোন শারীরিক সমস্যা থাকে এবং এ কারণে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের অবনতি হওয়ার আশংকা তৈরি হয় তখন যেকোন সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন। যদি ছোটখাটো শারীরিক সমস্যা থেকে থাকে তা আবশ্যই চিকিৎসায় ভালো হয়। অনেক ক্ষেত্রে চিকিৎসা-ওষুধ ছাড়াই কাউন্সিলিং তরুণদের বিয়ে ভীতি দূর এবং বিবাহ পরবর্তী জীবন সুন্দর হতে পারে।
লেখকঃ ডাঃ মোড়ল নজরুল ইসলাম, চুলপড়া, যৌন সমস্যা ও চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ এবং লেজার এন্ড কসমেটিক্স সার্জন
বিয়ে সামজিক নিয়ম ও পারিবারিক বন্ধন। বিয়ের মাধ্যমে নর-নারী হৃদয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন। যুগলবন্দি হওয়ার এ প্রক্রিয়াকে বাংলায় ‘বিবাহ’ বা ‘বিয়ে’ বলা হয়। উর্দু ও ফারসি ভাষায় একে বলা হয় ‘শাদি’, আরবিতে বলা হয় ‘নিকাহ’। মুসলিম বিয়ের ক্ষেত্রে দেনমোহরের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে বিয়ের রেজিস্ট্রেশনের […]
বিয়ে সামজিক নিয়ম ও পারিবারিক বন্ধন। বিয়ের মাধ্যমে নর-নারী হৃদয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন। যুগলবন্দি হওয়ার এ প্রক্রিয়াকে বাংলায় ‘বিবাহ’ বা ‘বিয়ে’ বলা হয়। উর্দু ও ফারসি ভাষায় একে বলা হয় ‘শাদি’, আরবিতে বলা হয় ‘নিকাহ’।
মুসলিম বিয়ের ক্ষেত্রে দেনমোহরের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে বিয়ের রেজিস্ট্রেশনের ফি নির্ধারণ হয়ে থাকে।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার মুসলিম বিবাহ ও তালাক (নিবন্ধন) বিধিমালা-২০০৯; এপ্রিল ১০, ২০১১ তারিখে সংশোধন করেছে।
অত্র আইনের ১০ ধারা মোতাবেক নিকাহ রেজিস্টার বিবাহ রেজিস্ট্রিকরণের জন্য ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত দেনমোহরের ক্ষেত্রে এক হাজার বা উহার অংশ বিশেষের জন্য ১২.৫০ টাকা হারে ফি আদায় করতে পারবে।
দেনমোহর ৪ লাখ টাকার অধিক হলে পরবর্তী প্রতি লাখে ১০০ টাকা হারে আদায় করবেন। তবে দেনমোহরের পরিমান যাই হোক না কেন সর্বনিম্ন ফি ২০০ টাকার কম হবে না। সরকার সময়ে সময়ে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই ফি পরিবর্তন ও ধার্য করে থাকে।
রেজিস্ট্রেশন ফি জমা দিলে নিকাহ রেজিস্ট্রার একটি প্রাপ্তি রশিদ দেবেন। মুসলিম বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের পর নিকাহ রেজিস্ট্রার বাধ্যতামূলকভাবে বর ও কনেপক্ষকে বিয়ের কাবিননামার সত্যায়িত কপি দেবেন।
একটা সময় যখন আমাদের দেশে অনেক ঘটক ছিল। কিন্তু এখনকার সময়ে দেখা যায় মাসের পর মাস কেটে গেলেও ঘটকের মাধ্যমে বিয়ের জন্য পছন্দের পাত্র-পাত্রী পাওয়া যায় না। সে হিসেবে ম্যারেজ মিডিয়ার মাধ্যমে পাত্র-পাত্রী খোঁজাটা সহজ। ছেলেরা সাধারণত বিয়ের জন্য এমন কাউকে চায় যে আপন করে […]
একটা সময় যখন আমাদের দেশে অনেক ঘটক ছিল। কিন্তু এখনকার সময়ে দেখা যায় মাসের পর মাস কেটে গেলেও ঘটকের মাধ্যমে বিয়ের জন্য পছন্দের পাত্র-পাত্রী পাওয়া যায় না। সে হিসেবে ম্যারেজ মিডিয়ার মাধ্যমে পাত্র-পাত্রী খোঁজাটা সহজ।
ছেলেরা সাধারণত বিয়ের জন্য এমন কাউকে চায় যে আপন করে নেবে পুরো পরিবারকে, সুখ দুঃখে থাকবে পাশে আর পথচলাটা করে দেবে সহজ। আবার কথায় বলে, মেয়েরা বিয়ের স্বপ্ন দেখা শুরু করে অনেক ছোট বয়স থেকেই। আর জীবনসঙ্গী নিয়ে তাদের মনের গভীরে তৈরী হয় অনেক অনেক স্বপ্নের। তবে এমন মনের মানুষ খুঁজে পাওয়া নিয়ে যেমন মনে থাকে সংশয় তেমনি ভয়ও থাকে ভুল সিদ্ধান্তের। এসব দ্বিধাপূর্ন সিদ্ধান্তটি সহজ করে দিতে পাশে আছে অনলাইন ম্যারেজ মিডিয়া।
আগে দেখা যেত একজন ঘটকের কাছে সর্বোচ্চ ৮-১০ জন্য পাত্র-পাত্রীর ছবি পাওয়া যেত। আবার অনেক সময় ঘটক অনেক তথ্য গোপনও রাখতো। এতে করে পাত্র-পাত্রী দেখার জন্য প্রচুর টাকা খরচ হয়ে যেতো। কিন্তু ম্যারেজ সাইটে সাইটে খুবই কম খরচে ম্যাচমেকিং সেবা নেয়া যায়।
সাইটে পাত্র-পাত্রীর ছবি, জীবনবৃত্তান্ত, পছন্দ-অপছন্দ, ম্যাসেজিং, অডিও কিংবা ভিডিও কল করা যায়। আর অনলাইন ম্যাট্রিমনিয়াল সাইটে যেহেতু নিজের ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও ক্ষেত্র বিশেষে পেশাগত তথ্যগুলোর শতভাগ গোপনীয়তা বজায় থাকে।
বিবাহ হল একটি সামাজিক বন্ধন বা বৈধ চুক্তি যার মাধ্যমে দু’জন মানুষের মধ্যে দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপিত হয়। বিভিন্ন দেশে সংস্কৃতিভেদে বিবাহের সংজ্ঞার তারতম্য থাকলেও সাধারণ ভাবে বিবাহ এমন একটি প্রতিষ্ঠান যার মাধ্যমে দু’জন মানুষের মধ্যে ঘনিষ্ঠ ও যৌন সম্পর্ক সামাজিক স্বীকৃতি লাভ করে। সাধারণত আনুষ্ঠানিকভাবে […]
বিবাহ হল একটি সামাজিক বন্ধন বা বৈধ চুক্তি যার মাধ্যমে দু’জন মানুষের মধ্যে দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপিত হয়। বিভিন্ন দেশে সংস্কৃতিভেদে বিবাহের সংজ্ঞার তারতম্য থাকলেও সাধারণ ভাবে বিবাহ এমন একটি প্রতিষ্ঠান যার মাধ্যমে দু’জন মানুষের মধ্যে ঘনিষ্ঠ ও যৌন সম্পর্ক সামাজিক স্বীকৃতি লাভ করে। সাধারণত আনুষ্ঠানিকভাবে আচার অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বিবাহ সম্পন্ন করা হয়। বহু সংস্কৃতিতেই বিবাহ দু’জন বিপরীত লিঙ্গের মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও কিছু সংস্কৃতিতে বহুগামী বিবাহ ও কিছু সংস্কৃতিতে সমকামী বিবাহও স্বীকৃত। বিবাহের মাধ্যমে পরিবারের সূত্রপাত হয়। এছাড়া বিবাহের মাধ্যমে বংশবিস্তার ও উত্তরাধিকারের সুযোগ সৃষ্টি হয়।
বিবাহের মাধ্যমে পরস্পর সম্পর্কিত পুরুষকে স্বামী (পতি)এবং নারীকে স্ত্রী (পত্নী) হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। স্বামী ও স্ত্রীর যুক্ত জীবনকে “দাম্পত্য জীবন” হিসাবে অভিহিত করা হয়। বিভিন্ন ধর্মে বিবাহের বিভিন্ন রীতি প্রচলিত। একইভাবে বিভিন্ন সমাজে বিভিন্ন প্রথায় বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। বিবাহ মূলত একটি ধর্মীয় রীতি হলেও আধুনিক সভ্যতায় এটি একটি আইনী প্রথাও বটে। বিবাহবহির্ভুত যৌনসঙ্গম অবৈধ বলে স্বীকৃত এবং ব্যাভিচার হিসাবে অভিহিত একটি পাপ ও অপরাধ।
সুত্রঃ উইকিপিডিয়া
বাংলাদেশের বিয়ে বলতে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অনুষ্ঠিত বিয়ে ও এর আনুষঙ্গিক আচারকে বোঝানো হচ্ছে। বাংলাদেশের সর্বত্র বিয়েকে “বিয়ে” কিংবা “বিবাহ” নামে সম্বোধন করা হলেও অঞ্চলভেদে আঞ্চলিকভাবে আরো বিভিন্ন উচ্চারণভঙ্গিতে ডাকা হয়, যেমন: বিয়্যা বা বিয়া (বিআ) কিংবা বিহা, হিন্দী ভাষার প্রভাব বা অনুকরণে শাদী। সিলেট অঞ্চলে কখনও বিয়েকে কটাক্ষ করে ডাকা হয় হেঙ্গা। বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত বিয়ে একদিকে যেমন ধর্মীয় মিথস্ক্রীয়ায় পড়ে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষঙ্গ ধারণ করেছে, তেমনি এই নৃতাত্ত্বিক সার্বভৌম এলাকার লোকাচারও ধারণ করেছে। তবে সর্বক্ষেত্রেই বিয়ে মোটামুটি তিনটি মূল অংশ: গায়ে হলুদ, বিয়ে এবং বৌভাত বা ওয়ালিমা-তে বিভক্ত। তবে ধর্মভেদে এই অংশ বিভাজনে সামান্য পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।
মুসলমানদের বিয়েতে বাড়িতে কিংবা কমিউনিটি সেন্টারে কাজি ডেকে এনে বিয়ে পড়ানো হয়। দুপক্ষের উপস্থিতিতে কাজি, বর-কনের সম্মতি জানতে চান এবং উভয়ের সম্মতিতে বিয়ের মূল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিয়েতে পুরোহিত মন্ত্রপাঠের মাধ্যমে বিয়ে পড়ান, তারপর অগ্নিকে বায়ে রেখে তাকে ঘিরে সাতবার চক্কর দেয়ার মাধ্যমে বিয়ের মূল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। এছাড়া হিন্দুশাস্ত্রমতে “দৈব বিবাহ”ও হয়ে থাকে, যাতে কন্যার বাবা মন্দিরে গিয়ে ঈশ্বরকে সাক্ষী করে মেয়েকে তার জামাতার হাতে তুলে দেন। বৌদ্ধ ধর্মেও মন্ত্র আউড়ে বিয়ে পড়ান বৌদ্ধ ভিক্ষু। খ্রিস্টধর্মাবলম্বীদের বিয়ে হয় গির্জায়, ফাদারের উপস্থিতিতে। ফাদার, বাইবেল থেকে পাঠ করে দম্পতির সম্মতি জানেন, এবং উভয়ের সম্মতিতে বিয়ে সম্পন্ন হয়।
বিশ্বের অনেক দেশেই বিয়ের অনুষ্ঠান একদিনের মধ্যে শেষ হয়ে গেলেও বাংলাদেশের বিয়ে এক দিনেতো নয়ই, বরং কখনও এক মাসেও শেষ হয় না। বিয়ের মুখ্য আয়োজনই থাকে কমপক্ষে তিন কি চার দিনব্যাপী।
বাংলাদেশের বিয়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠানঃ
গায়ে হলুদঃ গায়ে হলুদ হলো বিয়ের মূল অনুষ্ঠান বহির্ভুত একটি অনুষ্ঠান, যা সাধারণত বিয়ের আগে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানটির সূচনালগ্নে যদিও বর বা কনের গায়ে হলুদ দেয়ার অনুষ্ঠানই ছিল, কিন্তু সময়ের আবর্তনে অনুষ্ঠানটি এখন অনেক ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। একইসাথে এই অনুষ্ঠান, দেশের বাইরের অনেক সংস্কৃতিও ধারণ করতে শুরু করেছে।
বিয়েঃ
বিয়ের অনুষ্ঠানটিই বাংলাদেশের বিয়ের মূল অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকেন কনেপক্ষ এবং বরপক্ষ এখানে অতিথির মতো উপস্থিত হোন। অনুষ্ঠানে বরপক্ষ পরিবার-পরিজন, নিকটাত্মীয়, বন্ধুবান্ধব ও প্রতিবেশীদের সমন্বয়ে গঠিত বরযাত্রী নিয়ে উপস্থিত হন। সাধারণত অনুষ্ঠানে বর ও কনের জন্য আলাদা আলাদা স্থান থাকে। বর গিয়ে তার জন্য নির্ধারিত আসনে আসীন হোন। মুসলমানদের বিয়েতে এসময় একজন কাজীর দ্বারা আক্বদ পড়ানো হয়। আক্বদ হলো বর ও কনের পারস্পরিক সম্মতি জানার সামাজিক প্রক্রিয়া। প্রথমে বর ও কনেপক্ষের মুরব্বিদের উপস্থিতিতে বিয়েতে কনের সম্মতি জানা হয় এবং পরে একই কাজীর দ্বারা বর ও কনেপক্ষের মুরব্বিদের উপস্থিতিতে বরের সম্মতি জানা হয়। এভাবে বিয়ের মূল অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। এরপর শুরু হয় ভোজনপর্ব। বিয়ের ভোজন শুরু করা হয় বরের ভোজন দিয়ে।
বরের জন্য এজন্য বিশেষভাবে আলাদা একটি বড় থালাতে খাবার সাজানো হয়, যাকে কোনো কোনো অঞ্চলে ছদরি (উচ্চারণ: সদ্রি) বলা হয়। এই থালাতে পরিবেশিত খাবার অধিকাংশ সময়েই অপচয় হয় এবং শ্রেফ সৌন্দর্যের জন্য পালন করা হয় এই রীতি। এছাড়া উপস্থিত বর ও কনেপক্ষের অতিথিদের জন্য আলাদাভাবে খাদ্য পরিবেশিত হয়। খাদ্য তালিকায় সাধারণত উচ্চক্যালরিযুক্ত খাবার থাকে, যেমন: পোলাও, মুরগির রোস্ট, কোরমা, কাবাব, রেজালা; মিষ্টিজাতীয় খাবারের মধ্যে থাকে: দই, পায়েশ, জর্দা; হজম সহায়ক খাদ্যের মধ্যে থাকে বোরহানী ইত্যাদি। এছাড়া কোনো কোনো বিয়েতে সাদা ভাত, এবং কোমল পানীয়েরও ব্যবস্থা থাকে। বিয়ের ভোজন পর্ব শেষ হলে বরকে নিয়ে যাওয়া হয় কনের কাছে এবং দুজনকে একত্র করে বসানো হয়। সেখানে আরো কিছু আচার পালন শেষে আসে বিদায় পর্ব। কনেকে বরের হাতে তুলে দেন কনেপক্ষ এবং বরপক্ষ, কনেকে নিয়ে বেরিয়ে আসেন অনুষ্ঠানস্থল থেকে স্বীয় বাড়ি অভিমুখে। এসময় কনেপক্ষের মধ্যে অশ্রুসজল মুহূর্তের সৃষ্টি হয়।
হিন্দুরীতির বিয়েতে অন্যান্য ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার পাশাপাশি মূল কার্যক্রম হয় সাতচক্কর বা সাতপাক। এজন্য মন্ডপের মধ্যিখানে একটি অগ্নিকুন্ড তৈরি করে বর ও কনে উভয়ের পরিধেয় কাপড়ের একটা অংশ একত্রে গিঁট দিয়ে নেন এবং আগুনকে ডানে রেখে সাতবার চক্কর দেন বা ঘুরে আসেন। এভাবেই বিয়ের মূল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।
বৌভাত বা ওয়ালিমাঃ বিয়ের অনুষ্ঠানের এক বা দুদিন পর বরপক্ষের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় বৌভাত বা ওয়ালিমার অনুষ্ঠান। বৌভাতে, কনেপক্ষ তাদের নিকটাত্মীয়-বন্ধুবান্ধব-পরিজনদের নিয়ে গঠিত দল নিয়ে অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। কনেপক্ষের দল হলেও এই দলকেও বরযাত্রী বলা হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] বৌভাতেও বরপক্ষের অতিথিদের দাওয়াত দেয়া হয়।
বাংলাদেশের বিয়ের বিভিন্ন প্রথাঃ
যৌতুক বা পণ
বাংলাদেশের বিয়েতে যৌতুক বা পণ প্রথা বহু প্রাচীণ। শার্লি লিন্ডেনবম পরিচালিত এক গবেষণা অনুসারে বিশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত বাংলাদেশের অর্থনীতি কৃষিভিত্তিক ছিল আর তাই বিবাহযোগ্য পাত্রের আয়ের উৎস সচ্ছল ছিল না, অপরদিকে বিবাহযোগ্যা ফর্সা গুণবতী পাত্রী পাওযা যেত হাতেগোণা। তাই সেসময় পাত্রপক্ষ পাত্রীপক্ষকে যৌতুক দিত। এই যৌতুক নগদ অর্থ কিংবা অলংকার কিংবা আসববাবপত্র যেকোনো রকম হতো। বিশ শতকের মাঝামাঝি থেকে কৃষিভিত্তিক মানুষ শহরমুখী হওয়া শুরু করে এবং পাত্ররা শহুরে হয়ে পড়ে কর্মক্ষেত্রে সচ্ছলতা অর্জন করতে শুরু করে। অপরদিকে পাত্রীরা আগের অবস্থানে থাকে, গ্রামেই থাকে। তাই পাত্রের কদর বেড়ে যাওয়ায় সেসময় থেকে পাত্রীপক্ষ পাত্রপক্ষকে পণ বা যৌতুক দেয়া শুরু হয়। কিন্তু একসময় শহরমুখী বিপুল জনগণের সবাই চাকরি পেলো না এবং মুষ্টিমেয় চাকরিপ্রাপ্ত পাত্রের দাম আরো বেড়ে গেলে যৌতুক প্রথা সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হযে পড়লো।
প্রথমদিকে যখন কনেপক্ষকে যৌতুক দেয়া হতো, তখন শীতল পাটির বয়ন জানা পাইটা কুমারীরা যে যত প্রকারের বুনন শৈলী জানত, সে তত কুড়ি টাকা পণ পেত তার বিয়ের সময়। মণিপুরি সম্প্রদায়ে বিয়ের যৌতুক হিসেবে কনেপক্ষের পক্ষ থেকে প্রতিযোগিতামূলক দামে তাঁত, ববিন এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য বয়নসামগ্রী যৌতুক হিসেবে দেয়া হয়ে থাকে, কেননা বংশানুক্রমে কোমরতাঁতের তাতী হচ্ছেন মেয়েরা।
পরবর্তিতে অবশ্য বাংলাদেশে ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দের যৌতুক নিষিদ্ধকরণ আইনে যৌতুক দেওয়া-নেওয়া একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যৌতুক প্রায় সর্বত্র যৌতুক বা পণ নামে পরিচিত হলেও রাজশাহী-পাবনা অঞ্চলে যৌতুককে নাচারি বলা হয়।
বিয়ের নাচঃ
বাংলাদেশের সিলেট, ময়মনসিংহ এবং রাজশাহী অঞ্চলের বিয়েতে বর-কনেকে গোসল করানোর সময় একপ্রকার বিশেষ নাচের প্রচলন দেখা যায়। বর-কনেকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশী নারীরা এ নাচের আয়োজন করে থাকেন। তারা ধান, দূর্বা, পান, কড়ি ইত্যাদি দিয়ে বিয়ের নাচে অংশগ্রহণ করেন। এধরণের নাচে বিশেষ গানও প্রচলিত রয়েছে:
গায়ে হলুদের পোষাকে বরের ঐতিহ্যবাহী পোষাক হলো পাঞ্জাবী। সুতি পাঞ্জাবির প্রচলন অতীতকাল থেকে চলে এলেও অধুনা (২০১১) সুতির পাশাপাশি খাদি বা অ্যান্ডির প্রচলনও দেখা যায়। অধুনা পুরুষেরা পাঞ্জাবীর সঙ্গে ওড়না বা উত্তরীয় পরার চলও দেখা যায়। অতীতে পাঞ্জাবীর সঙ্গে সাধারণ ঢোলা পাজামা পরার রীতি দেখা গেলেও অধুনা চুড়িদার পাজামা এমনকি জিন্স পরার রীতিও লক্ষণীয়। পায়ে থাকে চটি জুতা।
কনের গায়ে হলুদের ভূষণে হলুদ শাড়ি-লাল পাড়ের প্রচলন যুগ-যুগান্তরের। অধুনা (২০১১) গায়ে হলুদে হলুদ, লাল, সবুজ, নীল, সাদা, বেগুনি ইত্যাদি বৈচিত্র্যময় রঙের জামদানি শাড়ির প্রচলন লক্ষণীয়। কেউবা বৈচিত্র্য আনতে কাতান, গরদ কিংবা গ্রাফিক্যাল প্রিন্টের শাড়িও পরে থাকেন। চওড়া পাড়ের সুতি শাড়ি বহুযুগ থেকে আধুনিক যুগ অবধি বিরাজমান। কেউ কেউ সিল্ক এমনকি মসলিনও পরে থাকেন। অতীতে কুচি দেয়া ব্লাউজের প্রচলন থাকলেও অধুনা (২০১১) কামিজ কাটের ব্লাউজ, কন্ট্রাস্ট ব্লাউজের প্রচলন দেখা যায়। এছাড়াও শীতকালে অনুষ্ঠিত বিয়েতে ব্লাউজের সাথে কেউ কেউ লং জ্যাকেট পরে থাকেন। ব্লাউজের রং বিভিন্ন রকমের হতে পারে। অন্যান্য অনুষঙ্গের মধ্যে রয়েছে খোঁপার কাঁটা, বিছা, নুপুর; হাতে বটুয়া ইত্যাদি।
বিয়ের দিন বরের পোশাক সাধারণত হয় পাঞ্জাবি-পাজামা আর শেরওয়ানী। মাথায় একটা টুপি পরে তার উপর পাগড়ি পরে থাকেন বর। পায়ে থাকে মোজা আর নাগরা জুতা। পকেটে বা হাতে থাকে রুমাল। পাগড়ি কখনও পাঞ্জাবী ঢঙে বড় রঙীন কাপড় দিয়ে বানিয়ে নেয়া হয়, কখনও বাজার থেকে রেডিমেড পাগড়ি কিনে আনা হয়। পাগড়ি কখনও শ্রেফ সাদা কাপড়ের হয়, তবে অধিকাংশ সময়ই পাগড়ি হয় রঙীন, একাধিক রঙের সম্মিলন, আর থাকে চুমকি-জরির কারুকাজ। ইদানিং কোনো কোনো বিয়েতে বর, কাঁধে শাল কিংবা ওড়না রাখার রীতিও দেখা যায়। কনের বিয়ের পোষাক হলো রঙীন শাড়ি। বিয়ের দিন সাধারণত লাল শাড়ি পরিধান করা হয়, তবে ইদানিং লাল ছাড়াও বেগুনী, সবুজ, গোলাপী ইত্যাদি রঙের শাড়ি পরতেও দেখা যায়। শাড়ি হয় যথেষ্ট কারুকাজমন্ডিত: তার, কারচুপি, চুমকি, পুতি ইত্যাদির মিশ্রণে বেশ জমকালো হয়ে থাকে বিয়ের শাড়ি। শাড়ির সাথে মিলিয়ে ব্লাউজ, পেটিকোট এবং জুতা পরিধান করে থাকেন কনে। বিয়ের সময় সাধারণত হাই হিল, সেমি হিল, কিংবা ফ্ল্যাট জুতা পরিধান করেন, তবে জুতাও শাড়ির সাথে মিলিয়ে পরা হয়। অনেক সময়ই শাড়ির সাথে মিলিয়ে হাত-ব্যাগ হাতে রাখার প্রচলন দেখা যায়।
অলংকার
বিয়ের অলংকার মানেই স্বর্ণালংকার। কখনও স্বর্ণের দাম বেড়ে গেলে কুলিয়ে উঠতে না পারলে রূপা দিয়েও অলংকারের স্থান পূরণ করা হয়। অতিরিক্ত সামর্থের ভিত্তিতে কেউ ক্রিস্টাল বা হীরার অলংকারও ব্যবহার করে থাকেন। এছাড়াও সামর্থের অভাবে কেউ কেউ ইমিটেশনের অলংকার কিংবা স্বর্ণের প্রলেপ দেয়া অলংকারও ব্যবহার করে থাকেন। গহনার মধ্যে টিকলি, টায়রা, বালা, কানের দুল, নাকের দুল, নোলক, গলার চেইন, গলার বড় গহনা, নেকলেস, আংটি, পায়েল, নুপুর ইত্যাদির বহুল প্রচলন লক্ষণীয়। পুরুষের জন্য সাধারণত হাতের আংটি এবং গলার চেইনের ব্যবহার দেখা যায়।
এছাড়াও বিয়ের উৎসবে ব্যবহৃত হয় ফুলের অলংকার, বিশেষ করে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে নারীর ভূষণ হয় ফুলেল অলংকার। অতীতে ফুলের অলংকারে সাধারণত গাঁদা এবং রজনীগন্ধা ব্যবহৃত হতো, কিন্তু অধুনা (২০১১) সবুজ, বেগুনি, গোলাপি আর সাদা ফুল দিয়ে সাজার রীতি লক্ষ করা যায়। এ ধরণের অলংকার তৈরিতে কাঁচা ফুল যেমন ব্যবহৃত হয়, তেমনি ব্যবহৃত হয় শুকনো ফুলও। অলংকার তৈরিতে ব্যবহৃত হয় ক্রিসেনথিমাস আর বিভিন্ন রঙের অর্কিড। এছাড়া কোথাও ফুলের অলংকার তৈরিতে যোগ করা হচ্ছে মুক্তা, ক্রিস্টাল বা হীরা, পাথর আর বিভিন্ন ধরণের পুঁতি। ফুলের অলংকারের মধ্যে রয়েছে কানের দুল, মাথার টায়রা, টিকলি, রতনচুড়, আংটি, চেইন দিয়ে সংযুক্ত পায়ের পায়েল, গলার বিভিন্ন প্রকারের মালা, সীতাহার ইত্যাদি। এছাড়া তৈরি হয় কন্ঠ চিকও। ঢাকায় এধরণের ফরমায়েশি অংলকার তৈরি করার জন্য রয়েছে বিভিন্ন বিপণী বিতান।
ভূষণঃ
বিয়ে উপলক্ষে বর-কনে উভয়েরই বিভিন্ন প্রকারের সাজসজ্জার সংস্কৃতি বিদ্যমান। তবে স্বভাবতই কনের সাজ এখানে বেশি গুরুত্ব পায়। তাই এজাতীয় চাহিদা পূরণে শহরের পাশাপাশি মফস্বলেও গড়ে উঠেছে বিভিন্ন পার্লার, যেখানে অর্থের বিনিময়ে কনেকে সাজানো হয়ে থাকে। পার্লারগুলোও গায়ে হলুদ-বিয়েভেদে ফেয়ার পলিশ, ওয়্যাক্সিং, থ্রেডিং, অ্যারোমা থেরাপিসহ বিভিন্ন প্রকার ত্বকচর্চা ও রূপচর্চার বিবরণ দিয়ে বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে। এমনকি নামী-দামি পার্লারে সাজানোর জন্য অনেক সময় কনেকে আগে থেকে বুকিং দিয়ে রাখা লাগে। বিয়ের সাজ বিষয়ে পত্র-পত্রিকা বিশেষ ক্রোড়পত্রও প্রকাশ করে থাকে, যেখানে কনের সাজের বিভিন্ন ধরণ, সাজের বিভিন্ন অনুষঙ্গ এমনকি দরদামেরও উল্লেখ থাকে। অতীতে বিয়ের সাজ বলতেই বোঝানো হতো লাল রঙের মেকআপ। কিন্তু অধুনা মেকআপ আর্টিস্টরা বিয়ের সাজে অতীতের লাল, হলুদ আর সোনালির সংস্রব কমিয়ে বিভিন্ন রঙের শ্যাডো ব্যবহার করে সাজানোর পক্ষপাতি। তবে সব যুগেই কনের চুলের সাজে খোঁপাই বেশি প্রাধান্য পায়; যদিও কেউ কেউ চুল বেণী করে তাতে ফুল এঁটে নেয়ার পরামর্শও দিয়ে থাকেন।
অতীতে গায়ে হলুদের আগে কিংবা পরে মেহেদি পরার রীতি ছিল বর-কনে উভয়ের জন্যই। অধুনা (২০১১) ছেলেরা মেহেদি কম পরলেও কনেরা আগের মতই হাত ভরে মেহেদির অলংকরণ করে থাকে। অতীতে মেহেদির নকশায় তেমন বৈচিত্র্য থাকতো না, সাধারণত হাতের তুলতে গোল সূর্য, আর আঙ্গুলগুলোর অগ্রভাগ প্যাঁচিয়ে বেশ কিছু মেহেদি পরার রীতি ছিল, এবং মেহেদি দিয়ে শ্রেফ হাতের পাতাই রাঙানো হতো। কিন্তু অধুনা মেহেদি দিয়ে হাতে বিভিন্ন নকশা করা ছাড়াও হাতের পাতার বাইরে কব্জি পর্যন্ত মেহেদি পরার রীতিও দেখা যায়। এমনকি অনেকে পাও মেহেদি দিয়ে রাঙিয়ে থাকেন। অতীতে কনের পা আলতা দিয়ে রাঙানোর রীতি থাকলেও মাঝখানে তা কিছুটা স্থিমিত হয়ে পড়ে, তবে অধুনা (২০১১) আবারও এই রীতি কনে মহলে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
সাজসজ্জাঃ
বিয়ে বাড়ি সাজানোর জন্য অতীতে নানা প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করা হতো। সেসময় কলাগাছ দিয়ে বাড়ির প্রধান ফটকে বড় তোরণ নির্মাণ করা হতো। কখনও সৌখিনতার মাপকাঠি অনুযায়ী বাড়ির যুবক বয়সীরা বাঁশ কেটে তা দিয়ে সুন্দর করে বেড়া তৈরি করে নকশাদার ফটক তৈরি করতেন। এছাড়া বাড়ি সাজানোর উপকরণ হিসেবে কাগজের ফালি বানিয়ে তা দিয়ে রিং তৈরি করে একপ্রকার কাগুজে-শিকল তৈরি করে তা দিয়ে বাড়ি সাজানো হতো। কিন্তু ধীরে ধীরে এই আয়োজন বাড়ির গন্ডি ছাড়িয়ে ‘ডেকোরেটর’ নামক বাণিজ্যিক সংগঠনের হাতে ন্যাস্ত হয়েছে। সাধারণত ডেকোরেটর প্রতিষ্ঠানের লোকজন বাড়ির প্রধান ফটকে বাঁশ ও রঙিন কাপড় দিয়ে একটি গেট বা তোরণ নির্মাণ করেন।
অলংকরণ শৈলীঃ
বিয়ে বাড়ির বিভিন্ন উপাদানে অলংকরণের রেওয়াজ বাঙালি সমাজে বহু প্রাচীণকাল থেকে লালিত। হিন্দু সম্প্রদায়ের বিয়েতে ঢাকনি সরা অলংকরণ করার রীতি প্রচলিত ছিল, আর সেসব ঢাকনি সরার মূল উপজীব্য হতো পদ্ম ও বিয়ের দেবতা[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] প্রজাপতি। বিয়ে উপলক্ষে অলঙ্কৃত “এয়োসরা”র উপরের অলংকরণে থাকে পেখম ধরা নৃত্যরত ময়ূর আর চারদিকে থাকে বৃত্তাকারে নৃত্যরত চৌদ্দজন বা ষোলজন কুমারী নারী। এছাড়া বিয়ে বাড়িতে আলপনা আঁকার রীতি আজ অবধি প্রচলিত। বিয়ের আলপনার মধ্যে বেশিরভাগই হয় বৃত্তাকার আর কেন্দ্রে থাকে পদ্ম, আর এই বৃহদাকৃতির পদ্ম-কেন্দ্রীক বৃত্তাকার আলপনায় ভারতবর্ষের বাংলা অঞ্চল ছাড়া সারা বিশ্বে স্বতন্ত্র। অবশ্য ইদানিং আলপনায় যুক্ত হয়েছে নানা রকমের মোটিফ। এছাড়া অতীতে বিয়ের সময় যে পিঁড়ি ব্যবহৃত হতো, তাতে নারী প্রত্যঙ্গ তথা উর্বরতার প্রতীকস্বরূপ আঁকা হতো ‘শতদল পদ্ম’। বিয়ের সামগ্রী বহন করার কুলার অলংকরণে থাকে বিভিন্ন জ্যামিতিক নকশা কিংবা ফুল ও প্রতীকের নকশা। বিয়ের কাঁথার অলংকরণে কখনও রাধা-কৃষ্ণের কাহিনীর দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়, যেখানে গোপীরা প্রায়শই বিবস্ত্র কিংবা অর্ধ্বউলঙ্গ অবস্থায় চিত্রীত হতেন।
বাংলাদেশের বিয়ের পক্ষসমূহঃ
বরপক্ষ
বাংলাদেশের বিয়ের ক্ষেত্রে বরের পক্ষ থেকেই সাধারণত বিয়ের প্রস্তাব, কনেপক্ষের নিকট পেশ করা হয়, তাই বরপক্ষ, বাংলাদেশের বিয়েতে একটি সক্রীয় অংশ। বরপক্ষ, বিয়ের অনুষ্ঠানের মধ্যে বৌভাত বা ওয়ালিমার আয়োজন করে থাকে। সাধারণত বিয়ের পর বরপক্ষের বাড়িতেই কনেকে নিয়ে যাওয়া হয় এবং কনে ঐ বাড়িতেই আজীবনের জন্য বসত গড়েন।
কনেপক্ষ
কনেপক্ষ বা কন্যাপক্ষ, বাংলাদেশের বিয়েতে একটি নিষ্ক্রীয় অংশ। সাধারণত কনেপক্ষ থেকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়া হয় না। তবে দেয়ার প্রয়োজন হলে সাধারণত ‘ঘটক’ নামক তৃতীয়পক্ষের শরণাপন্ন হতে দেখা যায়। গ্রামেগঞ্জে, এমনকি শহরাঞ্চলেও কনেপক্ষ অনেকটা কন্যাদায়গ্রস্থ বলে মনে হয়। কারণ অনেকক্ষেত্রেই যৌতুক নামক আপাতবিলুপ্ত একটি সংস্কৃতির নতুন সংস্করণ হিসেবে কনেপক্ষকে, বিয়ের সময় বিপুল পরিমাণ আসবাব-সম্পদ কনের সাথে দিয়ে দিতে হয় বরের বাড়িতে। বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে কনেপক্ষ যথেষ্ট স্পর্শকাতর। কারণ কোনো কারণে নির্ধারিত বিয়ে ভেঙ্গে গেলে ঐ কনের জন্য, এমনকি ঐ পরিবারের অন্য মেয়ের জন্যও বর পাওয়া বা নতুন বিয়ে ঠিক করা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠে, অনেক ক্ষেত্রে প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। এমতাবস্থায় নিজেদের স্থান ত্যাগ করতে বাধ্য হয় অনেক কনেপক্ষ। শহরাঞ্চলে এই প্রকোপ কম হলেও একেবারে অপ্রতুল নয়।
ঘটক
ঘটক মূলত একজন ব্যক্তি, যিনি বর এবং কনেপক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতা করেন এবং বিয়েকে শেষাবধি সুসম্পন্ন করার জন্য পরিশ্রম করেন। ঘটকের এই কাজকে ঘটকালি বলা হয়। আঞ্চলিক ভাষায় অনেক সময় ঘটককে রায়বার বা আয়ভারও বলা হয়ে থাকে। ঘটকালি সবসময়ই একটা ব্যবসা নয়, বরং ক্ষেত্রবিশেষে একটি সামাজিক বা পারিবারিক দায়িত্বও হয়ে ওঠে। যদিও অনেকে একে ব্যবসা হিসেবে নিজের পেশা করে নিয়েছেন। ঘটকালির কাজটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে ঘুরে ঘুরে করতে হলেও তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নে অনেকেই ঘটকালির কাজটিকে ইন্টারনেটভিত্তিক করে নিচ্ছেন। যার ফলশ্রোতিতে এখন ঘরে বসেই নিদৃষ্ট ওয়েব সাইটে প্রোফাইল সাবমিট করে অন্যদের প্রোফাইল দেখে নিজেরাই সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে বিয়ের প্রাথমিক যোগাযোগ স্থাপন করছেন।
আমাদের সমাজে ১০-১২ জনের পাত্রপক্ষের একটা দল নিয়ে পাত্রী দেখার যে রীতি রয়েছে, তা ইসলাম সমর্থন করে না। পাত্রীকে সবার সামনে বসিয়ে মাথার কাপড় সরিয়ে, দাঁত বের করে, হাঁটিয়ে দেখা, পাত্রীর অহেতুক পরীক্ষা নেয়া ইত্যাদি পাত্রীপক্ষের জন্য বিব্রতকর। পাত্রী দেখার সময় আমাদেরকে অবশ্যই ইসলামিক নিয়মকানুন […]
আমাদের সমাজে ১০-১২ জনের পাত্রপক্ষের একটা দল নিয়ে পাত্রী দেখার যে রীতি রয়েছে, তা ইসলাম সমর্থন করে না। পাত্রীকে সবার সামনে বসিয়ে মাথার কাপড় সরিয়ে, দাঁত বের করে, হাঁটিয়ে দেখা, পাত্রীর অহেতুক পরীক্ষা নেয়া ইত্যাদি পাত্রীপক্ষের জন্য বিব্রতকর। পাত্রী দেখার সময় আমাদেরকে অবশ্যই ইসলামিক নিয়মকানুন মানতে হবে।
আগে বিয়ে করার সময় মেয়ে দেখতে গেলে মুরুব্বীরা থাকতেন । এখন ছেলেরা বন্ধুদের সাথে নিয়ে বা কাজিনদের সাথে মেয়ে দেখতে যায়। অনলাইনে ফেসবুকের গ্রুপগুলোতে ইদানিং অনেকেই প্রশ্ন করেন এরকম, ”ভাইয়ের জন্য বা বন্ধুর জন্য পাত্রী দেখতে যাচ্ছি, পাত্রীকে কি কি প্রশ্ন করতে পারি”?
এসব প্রশ্নের উত্তর নিয়েই আমাদের আজকের আলোচনা।
ইসলামের দৃষ্টিতে কেমন পাত্রী বিয়ে করা উচিত?
হজরত আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত, রাসূলে কারিম (সা.) বলেছেন-
’’নারীদেরকে চারটি জিনিসের জন্য বিয়ে করো। সম্পদের জন্য, বংশের জন্য, সৌন্দর্যের জন্য এবং দ্বীনদারীর জন্য। এর মধ্যে দ্বীনদারীকেই অগ্রাধিকার দাও।’’
আবু উমামাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী কারিম (সা.) বলতেন-
’’কোনো মুত্তাকি ব্যক্তি আল্লাহ্র ভীতির পর উত্তম যা লাভ করে তা হলো পুণ্যময়ী স্ত্রী। স্বামী তাকে কোনো নির্দেশ দিলে সে তা পালন করে, সে তার দিকে তাকালে (তার হাস্যোজ্জ্বল চেহারা ও প্রফুল্লতা) তাকে আনন্দিত করে এবং সে তাকে শপথ করে কিছু বললে সে তা পূর্ণ করে। আর স্বামীর অনুপস্থিতিতে সে তার সম্ভ্রম ও সম্পদের হেফাজত করে।’’ (সুনানে ইবনে মাজাহঃ ১৮৫৭)
পবিত্র কোরআন ও অনেক হাদিসের আলোকে সুখী জীবনের জন্য যে পরহেজগার ও মুত্তাকি মেয়েকে বিয়ে করা উচিত। বিয়ের জন্য এমন একজন নারীকে পছন্দ করা উচিত যার ঈমান ও আমলের প্রতি প্রবল ঝোঁক রয়েছে। এমন নারী, যে সর্বাবস্থায় মহান রাব্বুল আলামিনের উপর সন্তুষ্ট থাকে।
পাত্রী দেখার বিষয়ে সাহাবীদের কিছু ঘটনা
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন-
“তোমাদের কেউ যদি কোন মেয়েকে বিবাহের প্রস্তাব দেয় এবং তার এমন কিছু দেখতে পারে- যা তাকে আগ্রহশীল করবে, তবে সে যেন তা করে নেয়।”
একদিন মুগীরা ইবনে শু’বা (রা) জনৈক মেয়েকে বিবাহ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তখন রাসূল (সাঃ) বলেন-
“যাও, তাকে দেখে এসো। কারণ, এ দেখা তোমাদের মাঝে আগ্রহ সৃষ্টির ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে।”
হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, একদা আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। এমন সময় জনৈক ব্যক্তি এসে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে জানালেন যে, তিনি জনৈক আনসারী মেয়েকে বিবাহ করতে চান।
তখন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি তাকে দেখেছো?
উত্তরে তিনি বললেন, না, দেখিনি ।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, “যাও, দেখে এসো।
কারণ, আনসারদের চোখে কিছুটা ভিন্নতা আছে।
পাত্রী দেখার ব্যাপারে ইসলাম কি বলে?
বিয়ের আগে পাত্রীকে এক নজর দেখা জায়েজ আছে। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই শালীনতা বজায় রাখতে হবে। তবে এটাও মনে রাখতে হবে যে, কনে দেখা আবশ্যকীয় বিষয় নয়। মেয়ের পরিবার যদি পাত্রী দেখাতে রাজি না থাকে, তাহলে তাদের সঙ্গে জোরাজুরি, ঝগড়া-ঝাটি করা যাবে না। সেক্ষেত্রে মেয়ের পরিবারের কোনো অভিজ্ঞ নারী পাত্রীর বর্ণনা পাত্রপক্ষের কাছে বলবে। এতে যদি সে সন্তুষ্ট হয়, তাহলে বিয়ের দিকে আগাবেন। আর মেয়ে দেখার সময় পার্টির আয়োজন করা, মেয়েকে পার্লারে নিয়ে সুন্দর করে সাজানো এগুলো ইসলাম সমর্থন করে না।
ইসলামের নিয়ম অনুযায়ী কোনো মেয়ে যদি সাধারণ পরিচ্ছন্ন কাপড়, অলঙ্কারাদি পরিধান করেন, যেগুলো তিনি সবসময় ব্যবহার করেন সেভাবেই ছেলের সামনে হাজির হওয়া সবচেয়ে উত্তম। এছাড়া বিয়ের উদ্দেশ্যে মেয়ের কোনো ছবি ছেলের পরিবারকে দেয়া ঠিক নয়। কারণ ছবি দেয়ার ক্ষেত্রে ছেলে ছাড়াও অন্য কোনো গায়রে মাহরাম দেখে ফেলার আশঙ্কা থাকে।
পাত্রী দেখার ক্ষেত্রে মেয়ের কোন মাহরাম ব্যক্তি সেখানে উপস্থিত থাকা আবশ্যক। বলে উল্লেখ করা হয়েছে। পাত্রীকে শুধুমাত্র পাত্র দেখতে পারবে,পাত্র ছাড়া পাত্রের ভাই, পিতা, চাচা বা কোন গায়েরে মাহরাম পুরুষ পাত্রীকে দেখতে পারবে না।
পাত্রী দেখার ক্ষেত্রে শুধু মেয়ের চেহারা, হাতের কব্জি ও পায়ের পাতা দেখা যাবে। এছাড়া অন্য কোনো অঙ্গ এমনকি মাথাও চুলও দেখা যাবে না। আর পাত্র-পাত্রী বিয়ের আগে একে অন্যকে স্পর্শ করতে পারবে না।
পাত্রী দেখার সময় করণীয়
বিয়ের জন্য পাত্রী দেখতে গেলে এলাকার মানুষের মেয়ের বা মেয়ের পরিবার সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। তাদের থেকে মেয়ের চরিত্র, আদব-কায়দা এবং দ্বীনদারী সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবেন। যদি এতে ভালো মনে হয় তাহলে বাবা-মা, বড় ভাই-ভাবী বা বোনদের কনে দেখতে পাঠাবে। ইসলামের দৃষ্টিতে পাত্রী দেখতে গিয়ে বড়সর অনুষ্ঠান করে খাওয়া-দাওয়া, তাদের বাড়িতে বিভিন্ন জিনিস নেয়ার কোনো দরকার নেই।
বিয়ের আগে আংটি বদলের পরে বা বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রীদের ঘুরতে যাওয়া, শপিংয়ে যাওয়া অথবা একান্তে সময় কাটানোর প্রবণতা ইসলামে নিষিদ্ধ। বিয়ের আগে অবাধ মেলামেশা অনেক সময় বিয়ের সম্ভাবনা নষ্ট করে। রাসূল (সা) বলেন-
’’যখন কোনো নারী-পুরুষ নির্জনে একত্রিত হয়, তখন সেখানে তৃতীয়জন হয় শয়তান।’’ (সুনানে তিরমিজীঃ ২১৬৫)
পাত্রী পছন্দ না হলে কি করা উচিত?
পাত্রী দেখার পর কখনই পাত্রীপক্ষকে আপনাদের সিদ্ধান্ত জানাতে বেশী দেরী করবেন না। বিয়ের জন্য পাত্রী দেখতে গেলে পাত্রীকে পছন্দ হতেই হবে এমন কোনো কথা নেই। পাত্রী পছন্দ না হলে অপছন্দের বিষয়টট খুব শালীনতার সঙ্গে বুদ্ধি বিবেচনা করে পাত্রীপক্ষকে যতদ্রুত সম্ভব জানিয়ে দেয়া উচিত। রুঢ়ভাবে কখনই কাউকে প্রত্যাখান করবেন না। পাত্রীর মুখ দেখার সময় যদি কোনো উপহার দেয়া হয় সেটা আর ফেরত নেওয়া উচিত নয়। পাত্রীপক্ষের পরিবার অথবা খুবই বিশ্বস্ত লোক ছাড়া তৃতীয় পক্ষের কথায় কান দিয়ে বিয়ে ভেঙ্গে দেয়া উচিত নয়।
আজকাল দেখা যায়, মেয়ে পছন্দ না হলে মেয়ের বা তার পরিবারের দোষ আছে ইত্যাদি বলে পাত্রপক্ষ কেটে পড়ার চেষ্টা করে। মেয়ে পছন্দ না হলে তাকে দোষারূপ করা অনেক বড় গুনাহ। এসব নিন্দনীয় কাজ থেকে বেঁচে থাকতে হবে।
পাত্রী দেখার সময় কি কি প্রশ্ন করতে হয়?
আপনি যখন প্রথমে পাত্রীকে দেখবেন তার নাম কি, বাবার নাম কি, তার কি করতে ভালো লাগে ইত্যাদি বিষয়গুলো জেনে নিতে পারেন। এমন কোনো প্রশ্ন করবেন না যে সে উত্তর দিতে অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে ।
এরপর আপনি পাত্রীকে জিজ্ঞেস করতে পারেন যে – আপনাকে তার পছন্দ হয়েছে কিনা। সেই সাথে আপনার মতামতও জানাতে ভুলবেন না। অনেক ছেলে-মেয়ে শুধুমাত্র দেখতে সুন্দর হয় বলে বা টাকা পয়সা থাকে বলে তাদের পছন্দ করে নেয় । আসল জিনিস সেন্দর্য বা টাকা পয়সা নয়, মানুষের স্বভাব, আচার, ব্যবহার এগুলোই আসল। এজন্য যদি দেখেন আপনার টাকা পয়সা দেখে বা আপনি দেখতে ভাল বলে পছন্দ করেছে তাহলে তাদের থেকে দূরে থাকুন।
মেয়ে নিজের ইচ্ছায় বিয়ে করবে কিনা এটা নিশ্চিত হয়ে নেয়া ভালো। এক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যদের চাপে পড়ে সে বিয়ে করতে রাজি হয়েছে, সেটা জেনে নিন। মেয়ের অমতে জোর করে বিয়ে দিলে সে সংসার বেশিদিন টেকে না।
এখনকার মডার্ন ফ্যামিলির মেয়েরা চায় বিয়ের পর স্বামীর সাথে আলাদা থাকতে, তারা শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সাথে থাকতে চায় না। পাত্রী দেখার সময় মেয়ের কাছ থেকে জেনে যে– সে বিয়ের পরে সবার সাথে এক সংসারে থাকতে চায় নাকি আলাদা থাকতে চায় ।
আবার অনেক চাকুরীজীবী মেয়ে চায় বিয়ের পরও চাকরিটা কন্টিনিউ করতে। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির লোকজনেরা এটাকে ভালো চোখে দেখে না। পরবর্তীতে এটা নিয়ে সবচেয়ে বেশি ঝামেলার সৃষ্টি হয়। তাই বিয়ের আগেই এই বিষয়টা নিয়ে কথা বলবেন। মেয়ের কাছ থেকে তার বিয়ে পরবর্তী পরিকল্পনা জানবেন এবং আপনার মতামতও জানিয়ে দেবেন।
পাত্রী দেখার সময় যে প্রশ্নগুলো করবেন না
পাত্রী দেখার সময় যেমন কিছু বিষয়ে আলোচনা করার প্রয়োজন রয়েছে, তেমনি কিছু কিছু প্রশ্ন পাত্রীকে বিব্রত করতে পারে। এক্ষেত্রে কিছু কিছু প্রশ্ন এড়িয়ে চলাই উত্তম। যেমন আজকাল প্রায় সব ছেলেমেয়েই বিয়ের আগে প্রেমঘটিত ব্যাপারে জড়িয়ে থাকে। আপনি যদি বিষয়টাকে সিরিয়াসলি নিয়ে পাত্রীকে জিজ্ঞেস করেন, ‘’আপনি কখনো প্রেম করেছেন?” এই প্রশ্নে বিয়ে তো হবেই না বরং অপমানিত হতে পারেন আপনি। কারণ বিয়ের আগে সবাই প্রেম করবে এমন কোনো কথা নেই।
বিয়ের কতদিন পরে সন্তান চান। বা এছাড়া আপনি বাচ্চা কতটা পছন্দ করেন— এই প্রশ্নও এড়িয়ে যাবেন। পাত্রীর বন্ধুবান্ধবের বিষয়ে শুরুতেই খুব বেশি প্রশ্ন করবেন না। এতে মেয়ে বিরক্ত হয়ে ভাবতে পারে আপনি বিয়ের আগেই সব ব্যক্তিগত তথ্যগুলো জেনে নিতে চাচ্ছেন। মনে রাখবেন, যে কোনও সম্পর্কই দাঁড়িয়ে থাকে পারস্পরিক শ্রদ্ধার ওপরে।
বিয়ে অত্যন্ত সহজ একটি কাজ। কিন্ত আমরাই দিনকে দিন এই কাজটাকে জটিল করে ফেলেছি। মহান রাব্বুল আলামিন ইসলামি শরীয়ত মোতাবেক মুসলিম উম্মাহর সকল পুরুষকে বিয়ে করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
সাম্প্রতিক একটি ঘটনা। পঞ্চগড়ের দিনমজুর আয়নাল হক ও জামিরন বেগমের ৩৫ বছরের সংসার। গত ১৮ এপ্রিল পারিবারিক বিষয়ে ঝগড়া হয় এই দম্পতির। এ সময় রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাকের কথা বলেন আয়নাল হক। বিষয়টি স্থানীয় গ্রাম্য মাতবরদের কানে পৌঁছাতেই শুরু হয় বিপত্তি। মাতবররা জামিরনকে হিল্লা বিয়ে […]
সাম্প্রতিক একটি ঘটনা। পঞ্চগড়ের দিনমজুর আয়নাল হক ও জামিরন বেগমের ৩৫ বছরের সংসার। গত ১৮ এপ্রিল পারিবারিক বিষয়ে ঝগড়া হয় এই দম্পতির। এ সময় রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাকের কথা বলেন আয়নাল হক। বিষয়টি স্থানীয় গ্রাম্য মাতবরদের কানে পৌঁছাতেই শুরু হয় বিপত্তি। মাতবররা জামিরনকে হিল্লা বিয়ে দিতে বলেন। এতে রাজি না হওয়ায় ওই দম্পতিকে তাঁরা একঘরে করে রাখেন। ঘটনাটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর ১১ আগস্ট পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মতিউর রহমান বিষয়টি আমলে নেন এবং স্বপ্রণোদিত হয়ে আয়নাল হক ও জামিরন বেগম দম্পতিকে একঘরে করে রাখার ঘটনা পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেন। হিল্লা বিয়ে আইনে বৈধ নয়, আর মুখে বললেই তালাক হয়ে যায় না।
মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী, যেকোনো ব্যক্তি তালাক বা ডিভোর্স চাইতে হলে তাঁকে অবশ্যই আগে যথাযথ আইন মেনে বিবাহবিচ্ছেদ করতে হবে। রাগের মাথায় মুখে মুখে তালাক উচ্চারণ করলেই তালাক হয়ে যায় না। তালাক দেওয়ার বিষয়ে ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইনে বলা হয়েছে যে তালাক দিতে চাইলে তাঁকে যেকোনো পদ্ধতির তালাক ঘোষণার পর অপর পক্ষ যে এলাকায় বসবাস করছেন, সে এলাকার স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান/পৌর মেয়র/সিটি করপোরেশনের মেয়রকে লিখিতভাবে তালাকের নোটিশ দিতে হবে। সেই সঙ্গে তালাক গ্রহীতাকে ওই নোটিশের নকল প্রদান করতে হবে।
চেয়ারম্যান বা মেয়রের কাছে যে তারিখে নোটিশ পৌঁছাবে, সেদিন থেকে ৯০ দিন পর বিবাহবিচ্ছেদ বা তালাক কার্যকর হবে। এ নোটিশ পাওয়ার পর ৯০ দিনের মধ্যে সালিসি পরিষদ গঠন করতে হবে এবং সমঝোতার উদ্যোগ নিতে হবে। নোটিশ পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে সালিসের কোনো উদ্যোগ নেওয়া না হলে তবেই তালাক কার্যকর বলে গণ্য হবে। যে পক্ষই তালাক প্রদান করুক না কেন, তালাক কার্যকরের পর তালাকটি যে কাজির মাধ্যমে নোটিশ সম্পন্ন করা হয়েছে, সে কাজি অফিসে নিবন্ধন করাতে হবে। তালাক নিবন্ধন করা আইনত বাধ্যতামূলক।
মূলত হিল্লা বিয়ে বলতে বোঝায় কোনো স্বামী স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার পর আবার যদি ওই স্ত্রীকে নিয়ে সংসার করতে চান, তবে কুসংস্কার মতে, তালাকে দেওয়া স্ত্রীকে আগে অন্য পুরুষের সঙ্গে বিয়ে দিতে হবে। পরে আগের স্বামী যদি রাজি থাকেন, তবেই পুনরায় ওই স্ত্রীকে গ্রহণ করতে পারবেন।
রাগের মাথায় গ্রামাঞ্চলে অনেকে তালাক শব্দটি উচ্চারণ করে থাকেন। আসলে তাঁরা বিচ্ছেদ চান না। কিন্তু মৌখিক তিন তালাকেই এমন দম্পতির ‘বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গেছে’—এই যুক্তি দেখিয়ে যদি কেউ সেই স্ত্রীকে হিল্লা বিয়ে করার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন বা মুরব্বি ও সমাজপতিরা যদি কোনো ফতোয়া জারি করেন, তবে তা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। হিল্লা বিয়ে আইনে বৈধ নয়, এটি কুসংস্কার মাত্র।
এ সম্পর্কে মুসলিম আইনে যথাযথ বিধান থাকলেও তা অনেক ক্ষেত্রে মানা হচ্ছে না। ২০০১ সালে হাইকোর্ট একটি রায়ে ফতোয়াকে অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করেন। হিল্লা বিয়ে সম্পর্কে এই রায়ে বলা হয়, হিল্লা বিয়ের ফতোয়া ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের ধারা ৭ এবং বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৪৯৪, ৪৯৮, ৫০৮ ও ৫০৯ ধারা লঙ্ঘন করে এবং এই ধারাগুলোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক। মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১-তে হিল্লা বিয়েকে শুধু বেআইনি বলা হয়নি, বাংলাদেশের প্রচলিত দণ্ডবিধি ১৮৬০ সালের আইন অনুযায়ী হিল্লা বিয়ে একটি দণ্ডনীয় অপরাধ।
আইন অনুযায়ী তালাক না দিলে বিয়েটি বৈধ থাকবে। সুতরাং প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিয়ে বলবৎ থাকাবস্থায় স্ত্রী যদি অন্য কাউকে বিয়ে করেন, সে ক্ষেত্রে তা ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। সে ক্ষেত্রে ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ৪৯৪ ধারা অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং সেই সঙ্গে জরিমানাও হতে পারে। ৪৯৮ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যদি জানেন যে নারী বিবাহিত এবং তা জানা সত্ত্বেও বিবাহিত নারীকে অপরাধমূলক উদ্দেশ্যে প্রলুব্ধ করা বা অপহরণ বা আটক করেন, তাহলে তাঁর দুই বছর জেল ও জরিমানা হতে পারে।
কাজেই সমাজপতি ও ধর্মীয় নেতারা সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে যেসব মনগড়া ফতোয়া জারি করেন, তা গুরুতর অপরাধ এবং আইনত দণ্ডনীয়। সমাজজীবনে কুসংস্কার গভীরভাবে প্রোথিত। এ ধরনের কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সামাজিক আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার সময় এখনই।
লেখক: বাংলাদেশে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও কলামিস্ট
দেড় হাজার বছর আগে রাসূলুল্লাহ (সা.) জানিয়েছেন ৭ টি গুণ বা বৈশিষ্ট্য ইহুদি মেয়েদের মধ্যে আছে আর এই সাতটি গুন যদি কোন মুসলিম মেয়েদের মধ্যে থাকে তবে তাদের হাশর হবে ঐ সকল ইহুদি মেয়েদের সাথে। সেই সাতটি গুণ বা বৈশিষ্ট্য হলোঃ- ১. আন্নানা– এর অর্থ […]
দেড় হাজার বছর আগে রাসূলুল্লাহ (সা.) জানিয়েছেন ৭ টি গুণ বা বৈশিষ্ট্য ইহুদি মেয়েদের মধ্যে আছে আর এই সাতটি গুন যদি কোন মুসলিম মেয়েদের মধ্যে থাকে তবে তাদের হাশর হবে ঐ সকল ইহুদি মেয়েদের সাথে। সেই সাতটি গুণ বা বৈশিষ্ট্য হলোঃ-
১. আন্নানা– এর অর্থ হলো বেশি বেশি চাই । জিনিসপত্র অনেক আছে তবুও অনেক চাই। স্বামীকে বলে শুধু আমার জন্য দাও । নিজের মা-বাবা ভাই-বোন এদের জন্য কোন কিছু দিও না।
২. মান্নানা– এর অর্থ হল স্বামীকে শুধু সব সময় সকল ক্ষেত্রে খোটা দেয় অর্থাৎ খোটা দেওয়া এই স্বভাব ইহুদী মেয়েদের।
৩. হান্নানা– হান্নান এর অর্থ হচ্ছে স্বামীর খেদমত না করা ,উল্টো আরো স্বামীকে দিয়ে খেদমত করিয়ে নেয়া। হযরত খাদিজাতুল কুবরা আল্লাহর নিকট থেকে সালাম পাওয়ার একমাত্র কারণ ছিল স্বামীর খেদমত করা।
৪. কান্নানা– স্বামীকে মাঝে মাঝে বলে তুমি আমারে চেনো ? আমি অমুকের মেয়ে, তমুকের মেয়ে, চেয়ারম্যানের মেয়ে ইত্যাদি ইত্যাদি ।স্বামীর সামনে নিজেকে বড় করে দেখানো, স্বামীকে ছোট মনে করা এটা ইহুদি মেয়েদের গুণ।
৫. হাত্তকা্হ– হাত্তকাহ শব্দের অর্থ স্বামীর পছন্দের গুরুত্ব না দেওয়া । স্বামী যদি দুই টাকার জিনিস ও আপনাকে দেয় তবে তা আপনাকে আলহামদুলিল্লাহ ভালো গ্রহণ করতে হবে.। পরে মন ভালো হলে আরেকটা জিনিস আবদার করে নিয়ে নিবেন, স্বামীর মনে দুঃখ দেওয়া যাবে না।
৬. শাত্তকা্হ– এর অর্থ হচ্ছে স্বামীকে হারাম ইনকাম করতে বাধ্য করা। স্বামীর হালাল ইনকামে আপনাকে সন্তুষ্ট থাকতে হবে। যদি আপনার কারণে আপনার স্বামী হারাম ইনকাম করে তাহলে স্বামীর সাথে আপনাকেও জাহান্নামে যেতে হবে।
৭. বার্রকা্হ– এ অর্থ স্বামীকে মাঝে মাঝে ধরে মারা। অর্থাৎ স্বামীর গায়ে হাত তোলা এটা ইহুদি মেয়েদের স্বভাব।
উপরোক্ত এই সাতটি গুন যেই মেয়েদের মধ্যে থাকবে তারা নামায, রোযা এবং পর্দা করলেও তাদের হাশর কিন্তু হবে ইহুদি মেয়েদের সাথে।
সংসারে স্বামী স্ত্রীর চেয়ে বয়সে বড় হবে- সারা পৃথিবীতেই স্বামী-স্ত্রীর বয়স নিয়ে এরকম একটা অলিখিত নিয়ম চালু আছে। ’ভালোবাসা’ বয়স মানে না! কাউকে যখন ভালো লেগে যায়, তখন তার সাথে বয়সের পার্থক্যটা হিসেব করার অবকাশ থাকে না। প্রেম, ভালোবাসা বা বিয়ে যে কোনো বয়সেই হতে […]
সংসারে স্বামী স্ত্রীর চেয়ে বয়সে বড় হবে- সারা পৃথিবীতেই স্বামী-স্ত্রীর বয়স নিয়ে এরকম একটা অলিখিত নিয়ম চালু আছে। ’ভালোবাসা’ বয়স মানে না! কাউকে যখন ভালো লেগে যায়, তখন তার সাথে বয়সের পার্থক্যটা হিসেব করার অবকাশ থাকে না। প্রেম, ভালোবাসা বা বিয়ে যে কোনো বয়সেই হতে পারে। তবে এসব সম্পর্কের ক্ষেত্রে মেয়েরা ছেলেদের থেকে বয়সে ছোট হবে সবাই এমনটাই ভাবে। নিজের থেকে বয়সে বড় এমন একজন নারীকে যে কেউই বিয়ে করতে পারেন। কিন্তু আমাদের সমাজ এরকম ‘অসম’ বয়সের বিয়ের সম্পর্ক সহজে মেনে নিতে চায় না। অনেক সময় স্বামী-স্ত্রীর বয়স এর পার্থক্যের কারণে ভবিষ্যতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেও সমস্যা দেখা দেয়।
স্ত্রী যদি স্বামীর চেয়ে বয়সে বড় হয় তখন নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় তাদের। সেটা হতে পারে শারীরিক ও মানসিক দুটোই। আজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করবো স্ত্রী যদি স্বামীর চেয়ে বয়সে বড় হয় তাহলে কি রকম সমস্যা হতে পারে এবং স্বামী-স্ত্রীর বয়স এর কতো হওয়া উচিত তা নিয়ে।
স্ত্রী বয়সে বড় হলে কি সমস্যা হয়?
সমাজের নিন্দা
স্ত্রী যদি স্বামীর চেয়ে বয়সে বড় হন তাহলে আমাদের সমাজের লোকজনের নিন্দার মুখোমুখি হতে হয়। স্বামী-স্ত্রীর দিকে বাঁকা চোখে তাকান অনেকেই। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি কটুক্তি শুনতে হয় স্বামীকেই। বলা হয়, বয়সে বড় নারীর সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে বা বিয়ে করে ছেলেটি জীবনের সবচেয়ে বড় ভুলটি করেছে। তবে যে যাই বলুক না কেন, বিয়ের পর মনে রাখবেন যে আপনাদের দুজনের ভালোবাসাই সবচেয়ে বড় শক্তি যার সামনে লোকনিন্দা কিছুই নয়। তাই লোকের কথায় কান না দিয়ে একে অপরের প্রতি আস্থা রাখুন।
বন্ধুবান্ধবরাও পাশে থাকে না
স্ত্রী বয়সে বড় হলে কথা শুনতে হয় বন্ধুদের থেকেও। জামাই-বউয়ের বয়সের পার্থক্য নিয়ে অনেকে আড়ালে, এমনকি সামনাসামনিও হাসি-ঠাট্টা করে। বন্ধুদের এমন আচরণ মানসিক চাপ সৃষ্টি করার জন্য যথেষ্ট। বিশেষ করে মেয়েদের মনে এটা গভীর প্রভাব ফেলে। একটা সময়ে সে নিজেকে দোষী মনে করে। এই মানসিক চাপ যেমন দুজনের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করে, তেমনি এর কারণে সম্পর্ক ভেঙেও যেতে পারে। তাই এমন বন্ধুদের পাত্তা না দিয়ে বরং যারা আপনাদের সমস্যাগুলো বুঝবে তাদের সাথেই যোগাযোগ রাখুন। স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের সাথে সময় কাটান। প্রয়োজনে ম্যারেজ কাউন্সিলারের সহায়তা নিন।
ফ্যামিলির সাপোর্ট পাওয়া যায় না
স্ত্রীর বয়স বেশি হলে প্রধান সমস্যা শুরু হয় নিজের পরিবার থেকেই। খুব কম পরিবারই আছে যারা এমন বিয়ে সহজেই মেনে নেয়। এরকম সমস্যায় পড়লে আস্তে আস্তে তাদের বোঝানোর চেষ্টা করুন যে আপনাদের দুজনের মধ্যে কতটা বোঝাপড়া আর আন্তরিকতা আছে। দেখবেন এক সময় পরিবার মেনে নেবেই।
চেহারায় বয়সের ছাপ পড়ে যায়
স্ত্রী স্বামীর চেয়ে বয়সে বড় হলে স্বাভাবিক ভাবেই স্ত্রীর চেহারায় আগে বার্ধক্যের ছাপ পড়ে। অনেক স্বামীই এটা নিয়ে অস্বস্তিতে ভোগেন। অনেক পুরুষই তখন স্ত্রীকে লোকজনের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে সংকোচবোধ করেন। আবার স্বামী-স্ত্রীর বয়স এর পার্থক্য বেশি হলে মানসিক বয়সের পার্থক্য বেশি হয়। এ কারণে মাঝে মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়। অনেক সময় স্ত্রীকে মনে হতে পারে অনেক বেশি পরিপক্ব আর স্বামীকে মনে হতে পারে ছেলেমানুষ। আবার সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রেও নিজের মতামত প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা থাকে মেয়েদের মধ্যে। বিয়ের প্রথম দিকে তেমন কোনো সমস্যা না থাকলেও পরবর্তীতে এসব সমস্যা বাড়তে থাকে।
এই সমস্যা থেকে বের হতে চাইলে একে অপরের চিন্তাভাবনা, মতামত, সিদ্ধান্ত ইত্যাদিকে গুরুত্ব দিন। সমস্যা হলে খোলাখুলি আলোচনা করুন। আস্থা রাখলে আশা করা যায় সকল সমস্যা দূর হবে। মনে রাখবেন, স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কে ভালোবাসাটাই মুখ্য ব্যাপার, এখানে বয়স বা চেহারা কোনো বিষয়ই নয়।
যৌন মিলন এবং গর্ভধারণে সমস্যা
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বয়সের পার্থক্য খুব বেশি হলে জীবনের একটা সময়ে গিয়ে যৌনমিলনে সমস্যার সৃষ্টি হয়। কারণ নারী এবং পুরুষের শারীরিক চাহিদা সব সময় এক রকম থাকে না। বিশেষ করে নারীদের বয়স বেড়ে গেলে তাদের শারীরিক চাহিদা দিন দিন কমে যায়। অপরদিকে পুরুষদের শারীরিক চাহিদা অনেক দিন পর্যন্ত একই রকম থাকে। তাছাড়া স্ত্রীর বয়স বেশি হলে গর্ভধারণে সমস্যা হয়। ৩৫ বছরের পরেই গর্ভধারণের ব্যাপারটি মেয়েদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। তাই বিয়ের পরপরই এই বিষগুলো নিয়ে দুজনেই আলোচনা করে নিন। এসব ব্যাপারে ধৈর্য ও সহনশীলতার প্রয়োজন।
স্বামী-স্ত্রীর বয়স সম্পর্কে ইসলাম কি বলে?
আধুনিক যুগে এসেও দেখা যায়, বিয়ের ক্ষেত্রে মানুষ মেয়েদের অধিকারের ব্যাপারে অত্যন্ত অবহেলা করে। যেমন, এখনও অনেক জায়গায় কম বয়সী মেয়ের সাথে বেশী বয়স্ক পুরুষের বিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু বিয়ের ক্ষেত্রে বয়সের সমতা হলে স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের মাঝে ভালোবাসা ও আন্তরিকতার সম্পর্ক স্থাপিত হয়। এ কারণে স্বামী-স্ত্রীর বয়স এর সমতা রক্ষা করা আবশ্যক। বিয়ের সময় ছেলে-মেয়ে উভয়ের বয়স বিবেচনার ক্ষেত্রে ইসলামের শরিয়তের বিধানও লক্ষ্যণীয়। এ প্রসঙ্গে ইসলামের কিছু ঘটনা উল্লেখ করি।
হযরত আবু বকর (রা) এবং হযরত ওমর (রা) হযরত মুহাম্মাদ (সা) এর কন্যা হযরত ফাতেমা (রা) কে বিয়ের প্রস্তাব দেন। কারণ, এটুকু যোগ্যতা ও সম্মান তাঁদের অর্জিত ছিলো। কিন্তু বয়সের বিবেচনায় হযরত ফাতেমা (রা), হযরত আবু বকর (রা) এবং হযরত ওমর (রা) এর চেয়ে অনেক ছোট ছিলেন। রাসুল (সা) বয়সের কথা বিবেচনা করে তাঁদের বিয়ের আবেদন নাকচ করে দেন। এ ঘটনা থেকে বোঝা যায়, মেয়ের বয়স কম হলে স্বামীর বয়সও খুব বেশি হওয়া উচিৎ নয়। বয়সের অসমতায় বিয়ে দেয়াও ঠিক নয়।
হযরত ফাতেমা (রা) এর বিয়ের সময় তাঁর বয়স ছিলো মাত্র সাড়ে পনেরো বছর। অপরদিকে তার স্বামী হযরত আলী (রা) বয়স ছিলো একুশ বছর। এসব বর্ণনা থেকে বোঝা যায়, বর-কনের বয়সের সমতা ঠিক রাখা উচিৎ। সবচেয়ে উত্তম হলো স্বামী তার স্ত্রীর থেকে বয়সে একটু বড় হবে।
স্বামী-স্ত্রী সমবয়সী হলে কি হয়?
গবেষণায় দেখা গেছে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বয়সের পার্থক্য বেশি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিচ্ছেদ বা ডিভোর্সের হারও বেড়ে যায়। সমবয়সী স্বামী-স্ত্রীর চেয়ে দম্পতির বয়সের পার্থক্য ৫ বছর হলে তাদের বিচ্ছেদের আশঙ্কা ১৮% বেশি হয়। স্বামী-স্ত্রীর বয়স এর পার্থক্য ১০ বছর হলে তালাকের আশঙ্কা ৩৯% এবং ২০ বছর হলে ৯৫% বেড়ে যায়।
সমবয়সী মেয়েকে বিয়ে করলে ছেলেরা বৈবাহিক জীবনে সুখের সন্ধান পায়। মেয়েদের ক্ষেত্রেও একই লক্ষণ দেখা যায়। তাদের থেকে বেশি বয়সের কারো সঙ্গে বিয়ে হলে প্রথম প্রথম সবকিছু ভালো লাগে। কিন্তু কিছু বছর যাওয়ার পর সম্পর্কে ভাঙন ধরতে শুরু করে।
সমবয়সীদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করলে মনের মিল হওয়ার সম্ভাবনাটা অনের বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই কম-বেশি ম্যাচিওরড হন। মানসিকতায় মিল থাকার কারণে বিপদে একে অপরের বড় সাপোর্টার হয়ে দাঁড়াতে পারেন, সম্পর্কের বাঁধনটাও মজবুত হয়।
স্বামী-স্ত্রীর বয়স এর পার্থক্য কত হওয়া উচিত?
আপনি যদি অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ করেন তাহলে ছেলে-মেয়ে দুজনের উচ্চতা, বয়স, বেতন সব কিছুই একটা বিয়েতে বিশেষ বিশেষ ভূমিকা পালন করে। চলুন আমরা জেনে নিই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ব্যবধান ঠিক কতটা থাকা উচিত-
বয়সের ব্যবধান
স্বামী-স্ত্রীর বয়স এর আদর্শ ব্যবধান ধরা হয় ৩ বছরকে। আগেই বলেছি যে, মেয়েরা মনের দিক দিয়ে ছেলেদের তুলনায় একটু আগেই পরিপক্কতা লাভ করে। এজন্য মনে করা হয়, স্বামী যদি স্ত্রীর চেয়ে ৩ বছরের বড় হয় তবে দুজনের মানসিক পরিপক্কতা সমান হবে। তাছাড়া, স্বামী বয়সে বড় হলে পড়ালেখা আগে শেষ করে ক্যারিয়ারে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে পারেন।
উচ্চতার পার্থক্য
এরপর আসি স্বামী-স্ত্রীর উচ্চতার পার্থক্যে। বিজ্ঞানীরা বলেন, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে উচ্চতার সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ব্যবধান হচ্ছে ১২ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ স্বামীকে হতে হবে স্ত্রীর চেয়ে মোটামুটি ১২ সেন্টিমিটার বেশি লম্বা। এতে নাকি ভালোবাসা আর অন্তরঙ্গতা বাড়ে। আবার স্বামীর উচ্চতা বেশি হলে মেয়েরা নিজেকে বেশি নিরাপদ মনে করেন। আসলে ছেলেদের উচ্চতা সাধারণতভাবে মেয়েদের চেয়ে বেশি হয়ে থাকে। তবে স্বামী স্ত্রীরে উচ্চতার ব্যবধান অতিরিক্ত হলে দেখতে ভালো দেখায় না।
বেতনের অনুপাত
বিয়ের ক্ষেত্রে বর এবং কনের বেতন বা আয়ের ব্যাপারটা কিছুটা হলেও গুরুত্বপূর্ণ। অনেকে মনে করেন, স্বামীর বেতন স্ত্রীর আয়ের চেয়ে দেড়গুণ হলে ভালো হয়। এখন তো অনেক পরিবারে স্বামী এবং স্ত্রী দুজনই চাকরি করেন। তবে মুরুব্বীদের মতামত এমন যে, পরিবারে স্বামীকেই আর্থিক দায়িত্ব বহন করা উচিত। গুরুজনদের মতে, এতে পরিবারে সবসময় শান্তি বজায় থাকে এবং মেয়েরাও অনেকটা নিশ্চিন্তবোধ করেন।
দাম্পত্য জীবনে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মধুর সম্পর্ক বজায় রাখতে স্বামী-স্ত্রীর বয়স এর পার্থক্য কম হওয়াই উচিৎ! স্বামী এবং স্ত্রীর মধ্যে বয়সের পার্থক্য কম হলে একে অপরের মন বুঝে চলার ক্ষমতা জন্মায় একে-অপরের সঙ্গে।
মানবজীবনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো মানুষের যৌনজীবনকে সামাজিক প্রক্রিয়ার মধ্যে আবদ্ধ করা এবং বন্য পশুর সাদৃশ্য অবস্থা থেকে মানবসমাজকে রক্ষা করা। এই কঠিন সমস্যার লাগাম টেনে এবং জটিল চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে ইসলাম স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে একটি সম্পর্ক তৈরি করেছে এবং এটিকে একটি নিয়ম-পদ্ধতির আওতায় […]
মানবজীবনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো মানুষের যৌনজীবনকে সামাজিক প্রক্রিয়ার মধ্যে আবদ্ধ করা এবং বন্য পশুর সাদৃশ্য অবস্থা থেকে মানবসমাজকে রক্ষা করা। এই কঠিন সমস্যার লাগাম টেনে এবং জটিল চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে ইসলাম স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে একটি সম্পর্ক তৈরি করেছে এবং এটিকে একটি নিয়ম-পদ্ধতির আওতায় এনেছে। ইসলাম যৌনজীবনকে মেনে নিয়ে এর জন্য যুক্তিসংগত যাবতীয় আইন ও পদ্ধতি তৈরি করেছে এবং বিয়ের মতো একটি কল্যাণকর ব্যবস্থার প্রবর্তন করেছে। সামাজিক ব্যবস্থার উন্নয়ন ও বিকাশের জন্য পরিবার গঠনের উদ্দেশ্যে বিবাহবন্ধন হলো অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রথা।
ইসলামে বিবাহ ছাড়া যৌন জীবনযাপনের কোনো সুযোগ নেই। বিবাহ হচ্ছে একমাত্র উপায়, যার মাধ্যমে একজন নারী ও পুরুষ স্বামী-স্ত্রী হিসেবে স্থায়ী বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে। বিবাহ অনেক লোকের উপস্থিতি ও সাক্ষ্য-প্রমাণভিত্তিক একটি উন্মুক্ত ঘোষণা, যার মাধ্যমে নারী-পুরুষ নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক ও দায়িত্ব বরণ করে নেয়। মানব সৃষ্টির শুরু থেকে ইসলামের এই বিধান চালু ছিল এবং এখনো একই বিধান কার্যকর আছে। বিবাহ পদ্ধতির বিধান দিয়েই ইসলাম ছেড়ে দেয়নি, বরং কাকে বিয়ে করা বৈধ বা হালাল, কাকে বিয়ে করা অবৈধ বা নিষিদ্ধ তারও একটা তালিকা ঘোষণা করেছে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের ওপর হারাম করা হয়েছে তোমাদের মাতাদের, তোমাদের মেয়েদের, তোমাদের বোনদের, তোমাদের ফুফুদের, তোমাদের খালাদের, ভাতিজিদের, ভাগ্নিদের, তোমাদের সেসব মাতাকে যারা তোমাদের দুধ পান করিয়েছে, তোমাদের দুধবোনদের, তোমাদের শাশুড়িদের, তোমরা যেসব স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হয়েছ সেসব স্ত্রীর অন্য স্বামী থেকে যেসব কন্যা তোমাদের কোলে রয়েছে তাদের, আর যদি তোমরা তাদের সঙ্গে মিলিত না হয়ে থাকো, তাহলে তোমাদের ওপর কোনো পাপ নেই এবং তোমাদের ঔরসজাত পুত্রদের স্ত্রীদের এবং দুই বোনকে একত্রে বিবাহ করা (তোমাদের ওপর হারাম করা হয়েছে)।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ২৩)
বিবাহের বিধান দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, বিবাহের শর্তও বাতলে দিয়েছে ইসলাম। বিবাহের শর্ত দুটি—ইজাব ও কবুল। বিবাহের পক্ষদ্বয়, নারী ও পুরুষের বা তাদের অভিভাবক অথবা প্রতিনিধিদের ইজাব-কবুলের মাধ্যমে বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়। ইজাব অথবা কবুল যেকোনো পক্ষ থেকে হতে পারে। ইজাব-কবুল মৌখিক অথবা লিখিত আকারে হতে পারে। ইজাব-কবুলের শর্তাবলি সুস্পষ্ট অর্থজ্ঞাপক হতে হবে। বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার জন্য পাত্র ও পাত্রীকে (১) মুসলমান, বালিগ ও বুদ্ধিজ্ঞানসম্পন্ন হতে হবে। (২) তাদের স্বেচ্ছাসম্মতিতে বিবাহ অনুষ্ঠিত হতে হবে এবং ইজাব-কবুল নিজ কানে শুনতে হবে। তবে অভিভাবক বা প্রতিনিধির মাধ্যমে বিবাহ অনুষ্ঠিত হলে তা নিজ কানে শোনা আবশ্যক নয়। (৩) বিবাহের অন্তত দুজন বালিগ ও বুদ্ধিমান মুসলিম পুরুষ অথবা একজন বালিগ ও বুদ্ধিসম্পন্ন মুসলিম পুরুষ এবং দুজন বালিগা ও বুদ্ধিসম্পন্ন মুসলিম নারীকে সাক্ষী থাকতে হবে। বিবাহের এই শর্তগুলো মানার পরও অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো দেনমোহর। বিবাহবন্ধন উপলক্ষে স্বামী বাধ্যতামূলকভাবে স্ত্রীকে নগদ অর্থ, সোনা-রুপা বা স্থাবর সম্পত্তির আকারে যে মাল প্রদান করে তাকে মোহর বলে। দেনমোহর প্রদান স্বামীর ওপর বাধ্যতামূলক কর্তব্য। এটি স্ত্রীর অধিকার। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নারীদের তাদের মোহর প্রদান করো।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ৪)
মোহরের পরিমাণ সম্পর্কে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘১০ দিরহামের কম মোহর হতে পারে না।’ (দারা কুতনি, সূত্র : হিদায়া, ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩০৪)
এভাবে ইসলামী শরিয়া নানা শর্ত ও আইনের আওতায় বিবাহকে সামাজিক সুরক্ষার একটি বিধান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে এবং সব ধরনের যৌন অনাচারকে বিবাহের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করেছে। বিবাহই হচ্ছে একজন মানুষের সুশৃঙ্খল যৌন জীবনযাপনের একমাত্র হাতিয়ার। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন চান, বৈবাহিক জীবনযাপনের মাধ্যমে মানুষ তার দৈহিক ও মানসিক প্রশান্তি লাভ করবে। প্রশান্তচিত্তে সে আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগিতে নিয়োজিত থেকে একটি সুন্দর সমাজ গঠনে যথাযথ দায়িত্ব পালন করবে। এভাবে সমাজ হয়ে উঠবে সুন্দর ও কল্যাণের মহিমায় ভাস্বর।
বিবাহ মানবজীবনের এক অপরিহার্য অংশ। মানব প্রজন্মের সুরক্ষা, সুষ্ঠ ও সুস্থ পরিবার গঠন এবং সামাজিক শান্তি-শৃংখলার জন্য বিবাহ এক নির্বিকল্প ব্যবস্থা। সমাজের একক হচ্ছে পরিবার। বিবাহের মাধ্যমেই এই পরিবারের ভিত স্থাপিত হয় এবং তা সম্প্রসারিত হয়। ব্যক্তিজীবনের শৃংখলা, ব্যক্তির মানসিক ও দৈহিক সুস্থতা এবং ধৈর্য, […]
বিবাহ মানবজীবনের এক অপরিহার্য অংশ। মানব প্রজন্মের সুরক্ষা, সুষ্ঠ ও সুস্থ পরিবার গঠন এবং সামাজিক শান্তি-শৃংখলার জন্য বিবাহ এক নির্বিকল্প ব্যবস্থা। সমাজের একক হচ্ছে পরিবার। বিবাহের মাধ্যমেই এই পরিবারের ভিত স্থাপিত হয় এবং তা সম্প্রসারিত হয়। ব্যক্তিজীবনের শৃংখলা, ব্যক্তির মানসিক ও দৈহিক সুস্থতা এবং ধৈর্য, সাহসিকতা, সহমর্মিতা প্রভৃতি গুণাবলীসহ তার সুপ্ত প্রতিভার বিকাশসাধনে বিবাহের ভূমিকা অভাবনীয়। সুতরাং বিবাহ ইসলামের অন্যতম প্রধান সামাজিক বিধান এবং মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এক গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। ইসলামে বিবাহকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারের দেখা হয়েছে।
মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, “আর তােমরা তােমাদের মধ্যকার অবিবাহিত নারী-পুরুষ ও সৎকর্মশীল দাস দাসীদের বিবাহ দাও। তারা অভাবী হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময় ও মহাজ্ঞানী।” – (সূরা নূর – ৩২)।
আল্লাহ তায়ালা অন্য আয়াতে বলেন – “আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে যে, তিনি তােমাদের জন্য তােমাদের থেকেই স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তােমরা তাদের কাছে প্রশান্তি পাও। আর তিনি তােমাদের মধ্যে ভালবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এর মধ্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে সে কওমের জন্য, যারা চিন্তা করে।” -(সূরা রূম: ২১)
বিয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে কিছু হাদীস –
“বিবাহ করা আমার সুন্নাত। যে আমার সুন্নাত অনুসরণ করলাে না,সে আমার দলভুক্ত নয়।তােমরা বিয়ে করাে,কেননা (হাশরে) আমি তােমাদের নিয়ে অন্যান্য উম্মাতের উপর গর্ব করবাে।” (ইবনু মাজাহ – ১৮৪৬)
“দু’জনের পারস্পরিক ভালবাসার জন্য বিবাহের মত আর কিছু নেই।” (ইবনু মাজাহ – ১৮৪৭)
“হে যুবক সমাজ! তােমাদের মধ্যে যে বিয়ে করার সামর্থ রাখে, সে যেন বিয়ে করে। কেননা বিয়ে দৃষ্টি ও লজ্জাস্থান হিফাযাতের জন্য সবচেয়ে বেশি সহায়ক। আর যে সামর্থ রাখে না সে যেন সওম পালন করে, কেননা সওম যৌন উত্তেজনা প্রশমনকারী।” (মুসলিম – ৩৪৬৪)
“তিন ব্যক্তিকে সাহায্য করা আল্লাহর দায়িত্ব। আল্লাহর পথের মুজাহিদ, যে ধার গ্রহীতা তা পরিশােধের চেষ্টা করে এবং যে ব্যক্তি সততা বজায় রাখার জন্য (চরিত্র হিফাযাতের জন্য) বিয়ে করে।” (তিরমিযী ১৬৫৫)
জীবনসঙ্গী নির্বাচনে ইসলামের নির্দেশনা
পাত্র-পাত্রী নির্বাচন খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। যে মানুষটির সাথে সারা জীবন অতিবাহিত করতে হবে সেই মানুষটির চারিত্রিক ও নৈতিক বৈশিষ্ট্য তার জীবনসঙ্গীর উপর অনেক প্রভাব বিস্তার করে।
এ ব্যাপারে কয়েকটি হাদিস উল্লেখযোগ্য –
‘যার দ্বীনদারী ও চরিত্রে তোমরা সন্তুষ্ট, এমন কেউ বিবাহের প্রস্তাব দিলে তার সাথে তোমরা বিবাহ সম্পন্ন কর। তা না করলে পৃথিবীতে ফিৎনা দেখা দেবে ও ব্যাপক ফ্যাসাদ ছড়িয়ে পড়বে।’ (তিরমিযী: ১০৮৪)
‘নারীকে বিবাহ করা হয় চারটি জিনিস দেখে। তার সম্পদ দেখে, বংশমর্যাদা দেখে, রূপ দেখে এবং দ্বীনদারী দেখে। হে মুমিন! তুমি দ্বীনদার নারী বিবাহ করে ধন্য হয়ে যাও।’ (বুখারী : ৫০৯০ )
“সমগ্র দুনিয়াটাই সম্পদ। এর মধ্যে সবচাইতে উত্তম সম্পদ হলাে পরহেযগার স্ত্রী। “(মুসলিম – ৩৭১৬)
“তোমরা নারীদের (কেবল) রূপ দেখে বিবাহ করো না। হতে পারে রূপই তাদের বরবাদ করে দেবে। তাদের অর্থ-সম্পদ দেখেও বিবাহ করো না, হতে পারে অর্থ-সম্পদ তাকে উদ্ধত করে তুলবে। বরং দ্বীন দেখেই তাদের বিবাহ কর। একজন নাক-কান-কাটা অসুন্দর দাসীও (রূপসী ধনবতী স্বাধীন নারী অপেক্ষা) শ্রেয়, যদি সে দ্বীনদার হয়। “(ইবনে মাজাহ)
উপরিউক্ত হাদিস সমূহের শিক্ষা হল, পাত্র-পাত্রী নির্বাচনে দ্বীনদারী ও সচ্চরিত্রকে সর্বাগ্রে রাখতে হবে। সৌন্দর্য, অর্থ-সম্পদ ও বংশীয় সমতাও বিচার্য বটে, কিন্তু সবই দ্বীনদারীর পরবর্তী স্তরে। দ্বীনদারী ও চরিত্র সন্তোষজনক হলে বাকিগুলোতে ছাড় দেওয়া যায়, কিন্তু বাকিগুলো যতই আকর্ষণীয় হোক, তার খাতিরে দ্বীনদারীতে ছাড় দেওয়ার অবকাশ নেই। আর যদি দ্বীনদারীর সাথে অন্যগুলোও মিলে যায়, সে অতি সুন্দর মিলন বটে, কিন্তু তা খুব সহজলভ্যও নয়। তাই সে রকম আশার ক্ষেত্রে মাত্রাজ্ঞানের পরিচয় দেওয়া জরুরি। একজন দ্বীনদার জীবনসঙ্গী আল্লাহর নৈকট্যে যেতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে, অন্যথায় দ্বীনের উপর অবিচল থাকা অনেক কঠিন হয়ে যায়। তাই ইসলামে পাত্র-পাত্রী নির্বাচনে দ্বীনদারীকে প্রাধান্য দেয়ার নির্দেশনা পাওয়া যায়।
’দোয়া’ আরবি শব্দ। এর অর্থ- ডাকা, আহ্বান করা, প্রার্থনা করা, কোনো কিছু চাওয়া ইত্যাদি। দোয়া ইবাদতের মূল, দোয়া হলো মুমিনদের হাতিয়ার। রাব্বুল আলামিনের দরবারে দোয়া করার মাধ্যমে অসম্ভবকেও সম্ভব করা যায়। প্রার্থনা ছাড়া আর কোনো কিছুই আল্লাহ্র সিদ্ধান্তকে বদলাতে পারে না। সর্বাবস্থায় যারা মহান আল্লাহ্র […]
’দোয়া’ আরবি শব্দ। এর অর্থ- ডাকা, আহ্বান করা, প্রার্থনা করা, কোনো কিছু চাওয়া ইত্যাদি। দোয়া ইবাদতের মূল, দোয়া হলো মুমিনদের হাতিয়ার। রাব্বুল আলামিনের দরবারে দোয়া করার মাধ্যমে অসম্ভবকেও সম্ভব করা যায়। প্রার্থনা ছাড়া আর কোনো কিছুই আল্লাহ্র সিদ্ধান্তকে বদলাতে পারে না। সর্বাবস্থায় যারা মহান আল্লাহ্র কাছে প্রার্থনা করে, আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন। রাব্বুল আলামিন আমাদের সব দোয়াই কবুল করেন। কিন্তু কখনো কখনো আমাদের নিজস্ব কিছু ভুলের কারণে দোয়া কবুল হয় না। আজকে আমরা সেসব বিষয় নিয়েই আলোচনা করবো।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ্ পাক বলেন-
‘তোমরা আমার কাছে দোয়া করো, আমি তোমাদের দোয়া কবুল করবো’। (সুরা মুমিনঃ ৬০)
বিপদ-আপদ ও বিভিন্ন সমস্যায় আল্লাহ্ পাকের সাহায্য কামনা করতে তিনি নিজেই নির্দেশ দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে-
‘আমরা কেবল তোমারই ইবাদত করি এবং তোমারই সাহায্য চাই’ (সুরা ফাতিহাঃ ৪)
হজরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা) বলেছেন-
‘যে ব্যক্তি আল্লাহ্র নিকট কিছু চায় না, আল্লাহ্ তাআলা তার প্রতি অসন্তুষ্ট হন।’
হজরত সালমান ফারসি (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা) বলেছেন-
দোয়া ব্যতীত অন্য কোনো বস্তু তাকদিরের লিখনকে ফেরাতে পারে না এবং নেক আমল ছাড়া অন্য কোনো বস্তু হায়াত বৃদ্ধি করতে পারে না। তাকদিরের ফয়সালাকে কেবল দোয়াই পরিবর্তন করতে পারে।’
ইবাদতের সময় বা ইবাদতের বাইরে, চলতে-ফিরতে আমরা আল্লাহ্র কাছে অনেক দোয়া করি। রাব্বুল আলামিন ওয়াদা করেছেন, প্রার্থনা করলে তিনি তা গ্রহণ করবেন। কিন্তু দেখা যায়, অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের দোয়া কবুল হয় না। আজকের পোস্টে আমরা দোয়া কবুল না হওয়ার কারণগুলো নিয়ে আলোচনা করবো।
খাবার, পানীয় ও পোশাক হালাল না হওয়া
দোয়া কবুল হওয়ার প্রধান শর্ত হচ্ছে সবসময় হালাল খাদ্য, পানীয় এবং কাপড় পরিধান করা। যে ব্যক্তি হারাম উপার্জনে নিজেকে সম্পৃক্ত করে, সে যতই দোয়াই করুক না কেন, মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে তা কবুল হবে না। রাসুল (সা) বলেন-
’মানুষের ওপর এমন এক যুগ অবশ্যই আসবে, যখন মানুষ পরোয়া করবে না যে কিভাবে সে সম্পদ অর্জন করল, হালাল উপায়ে, নাকি হারাম উপায়ে!’
অন্য একটি হাদিসে রাসুল (সা) ইরশাদ করেন-
’হে মানব সকল! আল্লাহ পবিত্র, তিনি পবিত্র বস্তু ছাড়া কোনো কিছু গ্রহণ করেন না।’
এ প্রসঙ্গে ইমাম জাফর সাদিক (আ) বলেন-
’তোমাদের মধ্য থেকে যদি কেউ চায় যে আল্লাহ তার দোয়া কবুল করুন, তাহলে সে যেন হালাল অর্থ উপার্জন করে এবং নিজকে ঋণ মুক্ত করে।’
সুতরাং কোনো ব্যক্তি দোয়া করলে তা কবুল না হওয়ার পিছনের একটি কারণ হতে পারে সেই ব্যক্তি হয়তো এমন কোন কাজ করছেন যা আল্লাহ্ তায়ালা নিষেধ করেছেন। হতে পারে তার উপার্জিত সম্পদ হারাম, তিনি হারাম চাকরি করেছেন, এবং হারাম পোশাক বা বাসস্থান ব্যবহার করছেন। অথবা তিনি বিদআত অনুসরণ করেন।
দোয়া কবুলের জন্য তাড়াহুড়া করা
যে ব্যক্তি পূর্ণ মনোযোগ না দিয়ে দোয়া করে বা উদাসীনভাবে আল্লাহ্র কাছে দোয়া করে, তার দোয়া কবুল হয় না। যিনি দোয়া করছেন তার অন্তরের সাথে নিয়তের মিল থাকতে হবে। এ প্রসঙ্গে ইমাম জাফর সাদিক (আ) বলেন-
‘মহান রাব্বুল আলামিন কখনো অন্যমনস্ক অন্তরের প্রার্থনা কবুল করেন না। তাই যখন তোমরা কোনো দোয়া করবে, অন্তর থেকে তা বের করবে, অতঃপর কবুল হওয়ার প্রতি আস্থাবান হবে।’
রাসুল (সা) বলেছেন-
’যখন তুমি দোয়া করবে, দোয়া কবুল হবে এমন দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে দোয়া করবে। জেনে রাখো, আল্লাহ কোনো অমনোযোগীর দোয়া কবুল করেন না।’
অনেকে আছে যারা দোয়া করার পর ফলাফল লাভের জন্য তাড়াহুড়া শুরু করে। আবার দ্রুত ফলাফল না পেলে হতাশ হয়ে পড়ে। এমনকি এ রকমও অভিযোগ করা শুরু করে দেয়, ”এতো দোয়া করলাম, কই আল্লাহ্ তো দোয়া কবুল করলেন না। আল্লাহ মনে হয় আমাদের কথা শুনেন না।” রাসুল (সা) বলেন-
‘তোমাদের প্রত্যেক ব্যক্তির দোয়া কবুল হয়ে থাকে। যদি সে তাড়াহুড়া না করে এবং এ কথা না বলে যে আমি দোয়া করলাম, কিন্তু আমার দোয়া তো কবুল হলো না।’
কেউ যদি এমন কথা বলে তাহলে শাস্তিস্বরূপ সত্যিই আল্লাহ্ তাআলা তার দোয়া কবুল করেন না। এইজন্য ধৈর্য ধরে দোয়া করতে হবে। দোয়া করার ক্ষেত্রে কখনো ফলাফল পাওয়ার জন্য তাড়াহুড়া করা যাবে না এবং ফলাফল পেতে দেরি হলে আল্লাহ্র সাথে নাফরমানি করা যাবে না।
আত্মীয়দের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলে দোয়া কবুল হবে না
আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা একটি জঘন্য পাপ। এই পাপের শাস্তি দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জায়গাতেই ভোগ করতে হবে বলে কুরআন ও হাদীসে বলা হয়েছে। রাসুল (সা) বলেন-
’কোনো মুসলিম দোয়া করার সময় কোনো গুনাহের অথবা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নের দোয়া না করলে অবশ্যই রাব্বুল আলামিন হয়তো তাকে তার কাঙ্ক্ষিত সুপারিশ দুনিয়ায় দান করবেন, অথবা তা তার পরকালের জন্য জমা রাখেন, অথবা তার কোনো অকল্যাণ বা বিপদাপদ তার থেকে দূরে রাখেন।’
আল্লাহ্ পাক দোয়া করলে সাথে সাথে কবুল না করে প্রার্থিত বস্তুর চেয়েও অধিক দেওয়ার জন্য রেখে দেন।
পাপকাজ থেকে বিরত না থাকা
দোয়া কবুল না হওযার আরেকটি কারণ হলো পাপকাজ থেকে বিরত না থাকা এবং শরীয়তসম্মতভাবে জীবনযাপন না করা। গুনাহের কারণে অনেক মানুষের দোয়া মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে পৌঁছায় না। আপনি ক্রমাগত আল্লাহ্ পাকের দরবারে দোয়া করছেন কিন্তু সাথে সাথে ক্রমাগত পাপ করে যাচ্ছেন। গুনাহ করার পর তওবা না করলে রাব্বুল আলামিন দোয়া কবুল করেন না। আর দোয়া করার সময় অবশ্যই শিরকমুক্ত হয়ে দোয়া করতে হবে।
দোয়া কবুল হওয়ার জন্য মানুষকে ইসলামের দাওয়াত দেওয়া, সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ হতে নিষেধ করতে হবে। রাসুল (সা) বলেন-
‘‘শপথ সেই সত্তার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! তোমরা অবশ্যই ভালো কাজের আদেশ দিবে ও অন্যায় কাজ হতে বাধা প্রদান করবে। নতুবা, অচিরেই এর ফলে আল্লাহ্ তোমাদের উপর শাস্তি পাঠাবেন। এরপর তোমরা তাঁর কাছে দোয়া করবে, কিন্তু তোমাদের দোয়ায় সাড়া দেওয়া হবে না।’’
শুধুমাত্র বিপদে-আপদের সময় দোয়া করা
দোয়ার মাধ্যমে যেমন বিপদ-আপদ দূর হয়, তেমনি ভবিষ্যতে বিপদ-আপদ আসাও বন্ধ হয়। এজন্য শুধুমাত্র বিপদ-আপদের সময় নয় বরং সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের সময়ও দোয়া করা উচিত। অর্থাৎ বিপদ-আপদ দূর হলে রাব্বুল আলামিনের দরবারে শুকরিয়া জানানো উচিত। সুখের সময়ে প্রচুর সময় নিয়ে দোয়া করা ভালো। রাসুল (সা) আল্লাহ্কে সুসময়ে স্মরণ করতে বলেছেন। এতে করে রাব্বুল আলামিন আমাদের কষ্টের সময় দোয়া কবুল করবেন ইনশাআল্লাহ্। প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা) বলেন-
‘যে ব্যক্তি চায় যে দুঃখের সময় যেন আল্লাহ তাআলা তার দোয়া কবুল করেন, তবে সে যেন সুখের সময় অধিক পরিমাণে দোয়া করে।’
মহান রাব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআনে এমন এক শ্রেণীর মানুষের পরিচয় দিয়েছেন যারা শুধুমাত্র বিপদে পড়লেই তাঁর দরবারে দোয়ার হাত তোলে। মহান আল্লাহ্ বলেন-
’আর যখন মানুষ কষ্টের সম্মুখীন হয়, শুয়ে, বসে, দাঁড়িয়ে আমাকে ডাকতে থাকে। তারপর আমি যখন তা থেকে মুক্ত করে দেই, সে কষ্ট যখন চলে যায়, তখন মনে হয়, কখনো কোন কষ্টেরই সম্মুখীন হয়ে যেন আমাকে ডাকেইনি।’ (সুরা ইউনুসঃ ১২)
অতএব আরেকটি কারণ হচ্ছে সুসময়ে আল্লাহ্ তাআলার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করা।
দোয়ার সাথে কর্ম ও প্রচেষ্টার সংযোগ না থাকা
প্রার্থনা একটি ইবাদত। ইবাদত করতে হয় একমাত্র আল্লাহর জন্য। আর ইবাদত করতে হয় ইখলাসের সঙ্গে। ইখলাস না থাকলে মহান আল্লাহ্র কাছে সে ইবাদত মূল্যহীন। তাই পরিপূর্ণ ইখলাস না থাকলে অর্থাৎ আল্লাহর সন্তুষ্টি ছাড়া অন্য কোনো দুনিয়াবি স্বার্থ বিবেচনায় প্রার্থনা করলে সে তা কবুল হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন ইখলাসের সঙ্গে ইবাদত করার আদেশ করেছেন।
আর দোয়া কবুল হওয়ার অন্যতম শর্ত হলো, সমস্ত ছোট-বড় গুনাহের জন্য আল্লাহ্ পাকের নিকট তওবা করে তার দরবারে আত্মসমর্পণ করা। অতএব, দোয়া কবুল হওয়ার জন্য গুনাহ ত্যাগ করে মহান আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করা উচিত। প্রার্থনা করেই ফলাফলের আশায় বসে থাকলে চলবে না। বরং ঐ লক্ষ্য প্রতিফলিত হওয়ার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। তাই কেউ যদি প্রার্থনা করেই অলসভাবে বসে থাকে তাহলে আল্লাহ্ তার দোয়া কবুল করবেন না। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে-
’নিশ্চয়ই আল্লাহ্ কোনো সম্প্রদায়ের অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেদের অবস্থা নিজেরা পরিবর্তন করে।’ (সুরা রাদঃ ১১)
মহান রাব্বুল আলামিন সর্বশক্তিমান, সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী
আল্লাহ্ পাক সব জানেন, সব দেখেন এবং সবই শোনেন। তিনি জানেন মুমিনের জন্য কোনটি উত্তম এবং কোনটি ক্ষতিকর। হতে পারে আমরা আল্লাহর কাছে অনেক সময় যে জিনিস চাচ্ছি তা হয়তো আমাদের জন্য মঙ্গলজনক নয়। যেসব দোয়ার মধ্যে বান্দার কল্যাণ থাকেনা সেসব প্রার্থনা আল্লাহ্ তাআলা কবুল করেন না। আল্লাহ তাআলা তাঁর মনোনীত ও অমনোনীত উভয় বান্দাদের পার্থিব কল্যাণ দান করেন। কিন্তু আখেরাতের কল্যাণ শুধুমাত্র মনোনীত বান্দাদের দান করেন। অর্থাৎ আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন আপনার দোয়াকে দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী জীবনের জন্য পূরণ না করে আখিরাতের চিরস্থায়ী জীবনের জন্য পুরস্কার হিসেবে জমা রাখছেন।
আল্লাহ যদি কাউকে ভালোবাসেন, তবে তাকে পরীক্ষা করেন। হতে পারে রাব্বুল আলামিন বিভিন্ন প্রতিকূল অবস্থা দিয়ে আপনাকে পরীক্ষা করছেন। যার ফলে আপনার দোয়া কবুল হতে বেশী সময় লাগছে। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার মাধ্যমে আপনি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে আপনার দোয়া কবুল করিয়ে নিতে পারেন।
যাদের দোয়া কবুল হবে না
অনেক মানুষ আছে যাদের দোয়া কবুল হবে না বলে আল্লাহ্ তায়ালা জানিয়ে দিয়েছেন। রাসুল (সা) বলেছেন-
’তিন ব্যক্তির নামাজ কবুল হয় না।’
পলায়নকারী দাস যে পর্যন্ত তার মালিকের কাছে ফিরে আসে না
যে মহিলা তার স্বামীর বিরাগ নিয়ে রাত কাটায় এবং
যে ইমামকে তার সম্প্রদায়ের লোকেরা পছন্দ করে না।
মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের সবার ভুলত্রুটি ক্ষমা করুন। কোরআন ও হাদীসের ওপর আমল করে সঠিকভাবে দোয়া করার তাওফিক দিন।
আজকে আমরা সবসময় খুশি থাকার ১০ টি উপায় সম্পর্কে জানব। ”আমি সবসময় খুশি থাকতে চাই” এটি আমাদের সকলেরই কামনা। পৃথিবীতে এমন কেউ নেই যে খুশি থাকতে চায় না। সবাই চায় যে সে খুশি থাকুক। কিন্তু পরিবেশ পরিস্থিতির নানা জটিলতার মাঝে পড়ে আমরা অনেক সময় হাসতে […]
আজকে আমরা সবসময় খুশি থাকার ১০ টি উপায় সম্পর্কে জানব। ”আমি সবসময় খুশি থাকতে চাই” এটি আমাদের সকলেরই কামনা। পৃথিবীতে এমন কেউ নেই যে খুশি থাকতে চায় না। সবাই চায় যে সে খুশি থাকুক। কিন্তু পরিবেশ পরিস্থিতির নানা জটিলতার মাঝে পড়ে আমরা অনেক সময় হাসতে ভুলে যাই। মানুষ সুখের জন্য তাদের কাঙ্ক্ষিত বিষয়গুলি পেতে চায়। সারাদিন ছুটতে থাকে সেগুলো পাবার জন্য।
কিন্তু দিন শেষে তারা তাদের অন্তরে গ্লানি, শূন্যতা আর হতাশা খুঁজে পায়। কারণ তারা খুশি আর সুখ পাবার জন্য ভুল জায়গায় সন্ধান করছে। বাইরের বস্তু সর্বদা ক্ষণস্থায়ী। আজ আছে তো কাল নেই। সেই বস্তুগুলির সাথে যদি আমরা আমাদের খুশি বা সুখী থাকাকে সংযুক্ত করি তাহলে সেই খুশিও বেশিদিন স্থায়ী হবে না। তাহলে কী এমন জিনিস আছে যা আমাদের সর্বদা খুশি অনুভব করাতে সাহায্য করতে পারে? এমন কী অনুশীলন করা যেতে পারে আজ সেটাই জানব –
১. নিজেকে ভালবাসতে শিখুন:-
জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো নিজেকে ভালোবাসতে শেখা। বলা হয়ে থাকে, ”যদি নিজেকে ভালোবাসতে না পারেন, তাহলে অন্যকেও ভালোবাসতে পারবে না।” সুখী বা খুশি থাকতে আমরা প্রায়শই নিজেদেরকে ভালোবাসতে বা সন্মান করতে ভুলে যাই। যারা আপনাকে ভালোবাসতে পারে না, মর্যাদা দিতে পারে না তাদের থেকে দূরে থাকুন। সেই সঙ্গে নিজের ভুল ও দূর্বলতাগুলি আলিঙ্গন করতে শিখুন। মনে রাখুন, প্রত্যেকের জীবনেই কম বা বেশি ভুল রয়েছে। এই পৃথিবীতে কেউ ভুলের উর্ধ্বে নয়। নিজেকে ছোট বা অপমান করবেন না।
মনে করুন, এই পৃথিবীটা একটা বড় ইউনিভার্সিটি আর আপনার জীবন একটা ক্লাসরুম। যেখান থেকে আপনি প্রতিনিয়ত নতুন নতুন কিছু শিখতে পাচ্ছেন। ভুল করেছেন বলে চিন্তা করবেন না। নিজেকে ক্ষমা করে দিন বা যাদের নিকট ভুল বা অপরাধ করেছেন তদের নিকট ক্ষমা চেয়ে নিন। নতুন করে আবার শিখুন, নিজেকে ভালবাসুন । শারীরিকভাবে, মানসিকভাবে ও আধ্যাত্মিকভাবে সর্বদা নিজের যত্ন নিন। কারন আজকের আপনিই পারবেন আগামী দিনের জন্য সেরা ও সকলের নিকট প্রশংসিত আপনাকে গড়ে তুলতে।
২. নিজেকে নিয়ে সময় কাটান:-
সারাদিন ব্যস্ত? নিজের সাথে সময় ব্যয় করবার সময় নেই? এক্ষুনি কিছুটা সময় খুঁজে বের করুন। দিনের কিছুটা সময় আমাদের নিজেদের জন্য একান্তই কাটানো উচিত। দিনের খানিকটা সময় চারপাশের ক্রমাগত নেতিবাচকতা থেকে নিজেকে বের করে আনার জন্য নিজের সাথে ভালো বোঝাপড়া থাকাটা খুব দরকার।
আমাদের মনই আমাদের চালিকাশক্তি। একটা পূর্ণ দিন বা একটা পূর্ণ সপ্তাহ হতে হবে না। শুধু কয়েকটা উষ্ণ মিনিট কাটান, সুন্দর কোনো প্রাকৃতিক জায়গায় গিয়ে কিছুক্ষণের জন্য সবকিছু ভুলে প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যান। দেখবেন নিজের ভিতরে একটা সুন্দর অনুভূতির ঝর্ণাধারা প্রবাহিত হবে। নিজের জীবন সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পেয়ে যাবেন। নিজের অবস্থান কোথায় রয়েছে, নিজেকে কতটুকু উন্নয়ন করতে হবে, নিজের জন্য কি প্রয়োজন? ইত্যাদি সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন শুধুমাত্র কিছু সময়ের বিনিময়ে।
৩. অল্পতে সন্তুষ্ট থাকুন:-
অন্যের কি কি আছে তা দেখে দুঃখ না পেয়ে বা Jealous Feel না করে আপনার যা আছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকুন। আপনি যখন অন্যের কাছে থাকা ভাল বা তুচ্ছ বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন তখন আপনার নিকট যা যা আছে তা মনে পড়বে না। নিজের নিকট এর চেয়ে আরও মূল্যবান বস্তু থাকা স্বত্তেও।
রাস্তার পাশে অনাহারে পড়ে থাকা শিশু, বৃদ্ধ মানুষগুলোকে দেখুন, যাদের মা বাবা নেই যারা ছোট থেকে অক্লান্ত পরিশ্রম করে দু-মুঠো খাবার জোগাড় করে পেট চালায় তাদের কথা একটু ভাবুন। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকা মানুষগুলোর কথা ভাবুন। যাদের হাত পা নেই চলতে পারে না তাদের কথা ভাবুন। কিছু কিছু মানুষ আছে যারা আপনার দিকে তাকিয়ে আফসোস করে ইশ্ আমার জীবনটা যদি এরকম হতো তাহলে কতইনা ভালো হতো! এসকল বিষয় নিয়ে গভীরভাবে ভাবুন। একটা সময় বুঝতে পারবেন আপনার জীবনটা কত সুন্দর, আপনার জীবনে আপনি কত সুখী।
৪. চাহিদা বা প্রত্যাশা কমিয়ে ফেলুন:-
আমরা প্রায়ই আমাদের চাহিদাগুলোকে আমাদের অবস্থানের বাইরে নিয়ে যাই। যেটার ফল পরিশেষে আমাদের জন্য বেদনাদায়ক হয়। আর এইটাই তো স্বাভাবিক। কেননা কষ্ট মানুষ তখনই পায় যখন নিজের ভাবনার সাথে বাস্তবতর মিল থকে না। নিজের সক্ষমতার অতিরিক্ত আশা করাটা ভুল। আর জেনে শুনে আমরা বার বার এই ভুলটাই করে বসি।
মনে করুন, আপনার নিকট ৫০০ টাকা আছে অপরদিকে আপনি ১০০০ টাকা মূল্যের কাপড় বা কোনো কিছু কিনতে চাচ্ছেন। কিন্তু এটা সম্ভবও নয়। তাই বলে কি আপনি কষ্ট পাবেন? যদি কষ্ট পেয়ে থাকেন তাহলে আমি বলব আপনি ভুল করছেন। আপনার উচিৎ হবে ৫০০ টাকা দিয়েই ভাল কোন কিছু কিনে নেওয়া। সহজ সমীকরণ! আর এই সমীকরণটি মাথায় গেঁথে ফেলুন তাহলেই আপনার জীবন আনন্দে ভড়ে উঠবে।
৫. জীবনে অফসোস করবেন না:-
আফসোস করাই হতাশার প্রধান কারন। আর আফসোসই আমাদের জীবনের সুখগুলোকে মুছে দিয়ে আমাদেরকে কষ্টের বন্যায় ফেলে দেয়। আমরা সাধারণত অনেকেই আফসোস করি। আফসোস নানা রকমের হয়ে থাকে যেমন- আমার ভাল চেহারা নেই, আমার ভাল মোবাইল নেই, আমি কেন ভাল স্টুডেন্ট নই, আমি কেন মোটা নই, আমার কেনো টাকা নেই, আমার কেনো এটা নেই, সেটা নেই ইত্যাদি ইত্যাদি….।
তবে আফসোস যে কারনেই হোক না কেন মনে রাখবেন, আফসোস কখনো আপনাকে ভালো থাকতে দিবে না। বার বার আপনাকে নিজের নিকট ছোট করে আবিষ্কার করবে। তাই আফসোস না করে আপনার সমস্যাগুলোকে ইতিবাচকভাবে নিন্তা করুন। আপনার হয়ত ভাল মোবাইল নেই কিন্তু আপনার ভাল একটি পরিবার রয়েছে, আপনার ভাল কিছু বন্ধু রয়েছে, আপনার ভাল বিষয়গুলোকে বার বার মনে করার চেষ্টা করুন। এভাবেই আফসোস গুলোকে ইতিবাচকে পরিণত করুন তাহলেই আপনি সুখি হতে পারবেন।
৬. নেতিবাচক মানুষ থেকে দূরে থাকুন:-
আপনি সকলকে একসাথে খুশি করতে পারবেন না, আপনি শুধুমাত্র আপনার সেরাটা দিয়ে যান। যদি আপনি মনে করেন যে, সকলকে আপনার উপর সন্তুষ্ট রাখবেন তাহলে আপনি ভুল ভাবছেন। মহামানব হযরত মুহাম্মদ (স.) সত্যের বাণী প্রচার করা স্বত্তেও সকলকে সত্যরে পথে নিয়ে আসতে পারেন নি। অতএব, আপনি যে কাজই করেন না কেনো আপনার বিপক্ষে কিছু মানুষ থাকবেই।
যদি আপনার জীবনে এমন কেউ থাকে যে, প্রতিনিয়ত আপনার কর্মকান্ডে নেতিবাচক দিক খুঁজে বেড়ায়। সর্বদা আপনাকে মানসিক টেনশনে রাখে। তাহলে তাকে এড়িয়ে চলুন। যারা আপনার চলার পথে বাঁধা দেয়, আপনার বিশ্বাসকে অমর্যাদা করে, আপনাকে অন্যের সামনে হেয় প্রতিপন্ন করে, তাদের থেকে সর্বদা দূরত্ব বজায় রাখুন। তবে তাদের কোনোরকম ক্ষতি করার প্রয়োজন নেই, সর্বদা তাদের জন্য মঙ্গল কামনা করুন।
৭. অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল হোন:-
একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল হলে তা আমাদের স্বাভাবিক হার্টবিট এবং দেহের কার্যকর প্রতিরক্ষা ক্ষমতা বজায় রাখতে ভীষনভাবে সাহায্য করে। প্রিয় খাবার খেলে কিংবা পছন্দের জায়গায় বেড়াতে গেলে আমরা আমাদের ভেতর যেমন আনন্দ খুঁজে পাই ঠিক তেমনই আনন্দ খুঁজে পাওয়া যায় অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ার মাধ্যমে।
যাদের পাশে কেউ নেই, যারা অসহায়, ঘর ছাড়া, যারা মৃত্যুমুখে শয্যাশায়ী কিংবা সব হারিয়ে যে জীবনের প্রতি বিমুখ তাদের সাথে কথা বলুন। যারা আপনাকে কিছু বলতে চায় তাদের কথা শুনুন । তাদের সমস্যার সমাধান যদি নাও করতে পারেন তবুও তাদের মানসকি শান্তি জোগাতে আপনি যথেষ্ট।
৮. অন্যকে সাহায্য করুন:-
নিজের মন থেকে স্বার্থহীনভাবে যখন আপনি অন্য কাউকে সাহায্য করবেন তখন অদ্ভুত এক ভাললাগা ও প্রশান্তি আপনার ভিতরে কাজ করবে। আমরা মূলত অন্যদের সাহায্য করার মাধ্যমে নিজেকেই সাহায্য করি। নিজের ভিতরে সুপ্ত থাকা সুন্দর অনুভূতিগুলিকে বের করে আনি। হতে পারে একজন বয়স্ক লোক রাস্তা পার হতে পারছে না। আপনি তার হাতটা ধরে রাস্তা পার করে দিলেন। কাজটি ছোট হলেও বয়স্ক লোকটির জন্য অনেক উপকার হবে আর এর প্রভাবে আপনার নিজের মনে আপনি প্রশান্তির ছোয়া পাবেন।
আপনার বাড়িতে যে লোকটা সারাদিন কাজ করে তার জন্য ছোট্ট কিছু উপহার কিনে দিলেন। আপনার আশেপাশে এরকম অনেক অভাবী ব্যাক্তি রয়েছে যাদের চাহিদা খুব বড় কিছু নয়। সামান্য কিছুর বিনিময়েই তাদের চাহিদা পূরণ হতে পারে। আর অপরদিকে আপনার নিকট সেই সামর্থ্যও রয়েছে। তাদের এইসকল চাহিদা পূরণের জন্য দরকার শুধু একটু সাহায্যের হাত। একটু-আধটু সাহায্য, দুটো ভালোমন্দ কথা, অন্যের মুখে হাসি ফোটালে আপনার মুখেও হাসি থাকবে সর্বক্ষণ।
৯. অতিমাত্রায় না ভেবে করে ফেলুন:-
আমরা নিজেদের মনের ভেতর অনেক বিতর্কের সৃষ্টি করে মূল্যবান সময়গুলি নষ্ট করি শুধু এটা ভেবে যেটা আমি সবসময় করতে চেয়েছিলাম, সেটা করবো কী করবো না? এতোকিছু না ভেবে করে ফেলাই অতি উত্তম। যার যেটা ভালো লাগে, যেটা এতদিন স্বপ্নে পুষে রেখেছেন তা আজ করে ফেলুন। জীবন খুবই ছোট। এজীবনে কখন কী হবে তা কেউ বলতে পারে না। তাই যে কাজগুলো নিজেকে ভিতর থেকে খুশি রাখতে পারে তা আজই করে ফেলুন।
১০. Social Media থেকে কিছুটা সময় সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকুন:-
ব্যাস্ত এ জীবনের ক্লান্তি দূর করতে কাজের ফাকে একটু সময় পেলেই আমরা ইউটিউবে ভিডিও দেখা, ফেসবুক, ট্যুইটার, ইন্সটাগ্রাম ইত্যাদিতে ডুবে পরি। এসবের পিছনে আমরা যতটা সময় ব্যায় করি সেই সময়টা যদি আমরা নিজেদের প্রতি ব্যায় করতাম তাহলে জীবন আরও সুন্দর হয়ে উঠতে পারত।
অন্যের স্ট্যাটাস, অন্যের বেড়াতে যাওয়ার ছবি, পোষ্ট আমাদের মধ্যে অনেকের মনে নেতিবাচক ভাবনার জন্ম দেয়। প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে সহজ করেছে ঠিকই কিন্তু এর লাগাম ছাড়া ব্যাবহার কেড়ে নিয়েছে সামাজিক মূল্যবোধ, সৌন্দর্য ও সৌহার্দ্য। তাই যতটা ব্যবহার না করলেই নয় ততটা ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। জীবনকে আনন্দময় করে গড়ে তুলন।
বিয়ে যদি দেরিতে করা হয় তাহলে নারী ও পুরুষ উভয়েরই কিছু শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। মানব দেহের অনেক জটিলতা রয়েছে, যার কারণে মানব যৌবন বেশিদিন স্থায়ী হয় না। দেরিতে বিয়ে হলে যৌন মিলন ঠিকভাবে না হওয়া, বাচ্চা না হওয়া, বাচ্চা মিসক্যারেজ বা […]
বিয়ে যদি দেরিতে করা হয় তাহলে নারী ও পুরুষ উভয়েরই কিছু শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। মানব দেহের অনেক জটিলতা রয়েছে, যার কারণে মানব যৌবন বেশিদিন স্থায়ী হয় না। দেরিতে বিয়ে হলে যৌন মিলন ঠিকভাবে না হওয়া, বাচ্চা না হওয়া, বাচ্চা মিসক্যারেজ বা গর্ভপাত হওয়া ইত্যাদি সমস্যা বেশি হয়। বিয়ের বয়স পার হয়ে গেলেও বিয়ে হচ্ছে না আমাদের দেশের অধিকাংশ যুবক-যুবতীদের। এখনকার মেয়েদের বিয়ের গড় বয়স বাড়তে-বাড়তে ৩০-এ গিয়ে ঠেকেছে। আর ছেলেরা এখন বিয়ে করছে ৩২-৩৫ বছর বয়সে।
আজকে আলোচনা করবো দেরিতে বিয়ে হওয়ার মূল কারণ আসলে কি এবং দেরিতে বিয়ে হলে ছেলে ও মেয়েদের কি ধরনের সমস্যা হয়।
দেরিতে বিয়ে হওয়ার কারণ কি?
পারিবারিক ও সামাজিক কারণ
বর্তমানে নারী ও পুরুষ উভয়েই দেরিতে বিয়ে করার পক্ষে। কেননা তারা তাদের ক্যারিয়ার নিয়ে অনেক বেশি সচেতন। ছেলেদের পাশাপাশি অনেক মেয়েই এখন পড়ালেখা শেষ করে চাকরী বা ব্যবসা করতে চান। ক্যারিয়ারমুখী হওয়ার কারণে অনেক মেয়েই পড়াশুনা শেষ হওয়ার আগে বা চাকরি হওয়ার আগে বিয়ে করতে চায় না। তারা মনে করেন বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে পড়াশুনা বা চাকরি করা নিয়ে অনেক বাধ্যবাধকতা থাকে। এজন্য তারা দেরিতে বিয়ে করতে চান। কিন্তু তারা দেরিতে বিয়ে করার অসুবিধাগুলো নিয়ে চিন্তা করেন না।
দেরিতে বিয়ে করার বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। যদিও এখনকার আধুনিক সমাজের মানুষেরা উন্নত মন মানসিকতার, তারপরও দেরিতে বিয়ে করলে কিছু না কিছু সামাজিক জটিলতা থাকে। মেয়ের অনেক বয়স হয়ে গেলে হয়ে গেলে তার জন্য উপযুক্ত পাত্র খুঁজে পেতেও বেশ জটিলতা তৈরি হয়। কেননা ছেলেরা বিয়ে করতে গেলে একটু কম বয়সের মেয়েদেরই খুঁজে থাকেন। ফলে মেয়ে যদি অনার্স বা মাস্টার্স পাস করে ফেলে তাহলে তার জন্য ভালো এবং উপযুক্ত ছেলে পাওয়া বেশ কষ্টকর যায়। আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী ছেলেরা থাকে তুলনামূলক কম শিক্ষিত মেয়েদের পছন্দ করে। ছেলেদের ধারণা, স্ত্রী বেশি শিক্ষিত হলে তাদের উপর সহজে নিজের মতামত প্রতিষ্ঠা করা যায় না।
আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী না হওয়া
আমরা অনেকেই মনে করি, ছেলেদের দেরিতে বিয়ে করা ভালো। অবশ্য বেশীরভাগ ছেলেরা নিজেরাই দেরিতে বিয়ে করতে চায়। কারণ বিয়ে শুধু জমজমাট একটি অনুষ্ঠান নয়, বিয়ে একটি দায়িত্ব। সঙ্গীর প্রতি দায়িত্ব, সম্পর্কের প্রতি দায়িত্ব এবং পরিবারের প্রতি দায়িত্ব। এসব দায়িত্ব ভালোভাবে পালন করার জন্য শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতি প্রয়োজন। অনেক ছেলের আয়-উপার্জন কম থাকে। তাই তারা তাড়াতাড়ি বিয়ে করতে ভয় পায়। বিয়ের পর যেহেতু খরচ অনেক বেড়ে যায়, তাই তারা যতদিন না আয় বাড়ে, ততদিন বিয়ে করতে চায় না।
ছেলেদের স্বাধীনচেতা মনোভাব
ছেলেরা সবকিছুতেই স্বাধীনতা পছন্দ করে। তারা মনে করে, বিয়ে করলে তারা স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলবে । তারা তাদের মনমতো কিছুই করতে পারবে না। এ কারণেই ছেলেরা মনে করে বিয়ে যত দেরিতে করা যায়, ততই ভালো। আবার অনেক ছেলেরাই মনে করে, বিয়ে করলেই স্ত্রীর দায়িত্ব ঘাড়ে চেপে বসবে। তারা এই বাড়তি ঝামেলা নিতে চায় না। এ কারণে বিভিন্ন সমস্যা দেখিয়ে তারা বিয়ে পেছাতে চায়। অনেকে নিজের পছন্দে বিয়ে করতে চায়। যতদিন না কাউকে বিয়ে করার মত মনে হয়, ততদিন তারা বিয়ে করতে চায় না।
দেরিতে বিয়ে হলে মেয়েদের কি সমস্যা হয়?
সন্তান জন্মদানে অক্ষমতা
মেয়েদের দেরিতে বিয়ে হলে যে সমস্যা সবচেয়ে বেশি হয় সেটা হলো গর্ভপাত। একটি গবেষণায় দেখা যায়, যাদের বয়স ২০-২৫ তাদের গর্ভপাতের ঝুঁকি হলো ১০%, আর যাদের বয়স ২৬-৩০ তাদের গর্ভপাতের ঝুঁকি হলো ২০%। অর্থাৎ মেয়েদের বয়স যত বেশি হয়, গর্ভপাতের ঝুঁকি ততই বাড়ে। তাছাড়া বয়স বাড়ার সাথে সাথে মেয়েদের সন্তান জন্ম দানের ক্ষমতা কমে যায়। মেয়েদের সন্তান জন্ম দেয়ার ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি থাকে ১৭-২৪ বছর বয়সে। আর এই সময় নারীদের কনসিভ করাও সহজ কারণ এই সময়ে তাদের ব্লাড প্রেশারের ঝামেলা ,ডায়বেটিস ইত্যাদি সমস্যা কম থাকে। বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে নারীদের ডিম্বাণুর কোয়ালিটি খারাপ হতে থাকে।
দেরিতে বিয়ে হলে সন্তান জন্মদানে সমস্যা
মেয়েদের দেরিতে বিয়ে হলে মা এবং সন্তানের অনেক ধরনের শারীরিক সমস্যা হতে পারে। মেয়েদের বেশি বয়সে বিয়ে হলে দেরিতে বাচ্চা নিতে অসুবিধা হয় আর ডেলিভারির পর অনেক সময় রক্ত বন্ধ হতে চায় না। এখনকার বেশীরভাগ মেয়েই বিয়ে করে ২৬-২৭ বছরে এবং কনসিভ করতে করতে বয়স গিয়ে দাঁড়ায় ত্রিশের কোঠায়। বেশি বয়সে বিয়ে হলে সন্তান নষ্ট হওয়ার বা পঙ্গু ও বিকলাঙ্গ সন্তান জন্মানোর আশঙ্কা থাকে। বিশেষ করে বেশি বয়স্ক বাবা-মায়ের সন্তানদের মধ্যে ডাউন সিনড্রোমের মতো রোগের আশঙ্কা বেশি থাকে।
বিয়ের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলা
সাধারণত মেয়েদের বয়স বেশি হয়ে গেলে চেহারার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন আসে। অনেকের চেহারার লাবন্যতা কমে যায়। নির্দিষ্ট একটি সময় পার হওয়ার পর ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে শারীরিক বিভিন্ন জৈবিক চাহিদা সংক্রান্ত ব্যাপারে পরিবর্তন আসে। বিয়ে হতে দেরি হলে এক পর্যায়ে তারা বিয়ের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। আমাদের সমাজের রীতি অনুযায়ী, একজন মেয়ের সফলতা ও ব্যর্থতা বা নির্ভর করে তার স্বামী ও সংসারের অবস্থার উপর। তাই এই সমাজে বিয়েতে দেরি হলে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে যাওয়াই স্বাভাবিক। যখন ক্রমাগত নিজের কাছের মানুষ এবং প্রতিবেশীরা খোঁটা দিতে থাকেন তখন অনেক মেয়েই নিজের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেন আর নিজেকে আস্তে আস্তে একাকী করে ফেলেন।
বিষণ্ণতায় ভোগা
সমবয়সী বোন বা সব বান্ধবীরা নিজেদের জামাই পেয়ে গেছে, আপনি হয়তো বারবার চেষ্টা করেও পাচ্ছেন না। অথবা অনেকেই হয়তো আপনাকে এসে শুধু দেখেই যাচ্ছে, বিয়েটা আর হচ্ছে না। এরকম হলে বেশীরভাগ মেয়েরাই নিজেদেরকে বিয়ের অযোগ্য মনে করতে শুরু করেন। মনে করেন, তারা এতোটাই অযোগ্য যে কোনো ছেলেরই তাকে পছন্দ হচ্ছে না। এভাবে মেয়েরা হতাশ হয়ে পড়েন। তাছাড়া বন্ধু-বান্ধবীদের সবার বিয়ে হলে গেলে মেয়েরা একলা হয়ে পড়েন। বিয়ের পর সবাই নিজের ফ্যামিলি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। সুতরাং যার বিয়ে হয়নি তিনি হয়ে পড়েন একলা। বন্ধু-বান্ধব কাউকে কাছে না পেয়ে মেয়েরা বিষণ্ণ হয়ে পড়ে, আর সেই বিষণ্ণতা থেকেই মনের মাঝে জন্ম নেয় হতাশা ও শূন্যতা। সুতরাং দেরিতে বিয়ে না করাটাই সঠিক সমাধান।
বেশি অস্থির হয়ে পড়া
দেরিতে বিয়ে হলে অনেক মেয়েই খুব তাড়াতাড়ি একটা বিয়ের জন্য অস্থির হয়ে পড়েন। অবিশ্বাস্য হলেও এটা সত্যি যে অস্বাভাবিক হলেও এটা সত্যি যে দেরিতে বিয়ে হলে বাবা-মায়ের চেয়ে প্রতিবেশীদের মাথা ব্যথা বেশি হয়। তারা ভাবতে শুরু করে যে, মেয়ের মধ্যে হয়তো কোনো দোষ আছে যার জন্য ছেলে পক্ষ তাকে পছন্দ করছে না। আর এসব মানসিক চাপ থেকেই মেয়েদের মনের মাঝে ক্রমাগত ঘুরতে থাকে যে ‘বয়স পার হয়ে যাচ্ছে, তাড়াতাড়ি বিয়ে করতে হবে!’ আর এই পার হয়ে যাওয়া বয়সকে টেক্কা দিতে একজন জীবনসঙ্গীর জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন অনেকেই।
ভুল মানুষটিকে বিয়ে করা
ক্রমাগত পারিবারিক ও সামাজিক চাপের কারণে অনেক মেয়ে যে ভুলটি করেন সেটা হচ্ছে, ‘অনেক হয়েছে, আর দেরি করতে পারবো না, এখন সামনে যাকে পাবো তাকেই বিয়ে করবো।’ এভাবে একজনকে পছন্দ না হলেও তাকে বিয়ে করে নিজেকে সান্ত্বনা দিতে চান। আবার অনেকে পরিবারকে খুশি করার জন্য নিজের অমতেই বিয়ে করতে বাধ্য হন। দেরিতে বিয়ে হলেও এই ভুলটি কখনো করবেন না। ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও স্বামী হিসেবে এমন একজনকে হয়তো পছন্দ করলেন, যার ফলে আপনার দাম্পত্য জীবনে সর্বদা ঝগড়া আর অশান্তি লেগে থাকলো। সুতরাং একটি ভুল সিদ্ধান্ত আপনার জীবনের অশান্তি কমাবে না বরং আরও বাড়বে।
দেরিতে বিয়ে হলে ছেলেদের কি সমস্যা হয়?
স্পার্ম বা শুক্রাণু কমে যায়
বেশিরভাগ ছেলেরাই এখন ক্যারিয়ারে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে ৩০-৩৭ বছরে বিয়ে করছে। দেরিতে বিয়ে করার ফলে অনেকেই বিবাহিত জীবনে নানান ধরনের ঝামেলার মুখে পড়ছে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে ছেলেদের স্পার্ম বা শুক্রাণু কমে যায় এবং দুর্বল হতে থাকে। এছাড়া বয়স যত বাড়ে, পুরুষের যৌনাঙ্গও তত দুর্বল হয়। আমাদের সমাজে নারীদের বয়স বৃদ্ধি পাবার সাথে সাথে সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা হ্রাস পাবার বিষয়টাকে যতটা গুরুত্বের সাথে দেখা হয়,পুরুষদের ক্ষেত্রে ততটা গুরুত্ব দেয়া হয় না। এখনকার ছেলেরা বিয়ের অনেক আগে থেকেই হস্তমৈথুনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। আবার দেরিতে বিয়ে হবার কারণে অনেকেই বিকল্প হিসেবে নিয়মিতভাবে হস্তমৈথুন করে। অনিয়ন্ত্রিত হস্তমৈথুনের কারণে পুরুষের বন্ধ্যাত্ব বৃদ্ধি পায়।
দেরিতে বিয়ে হলে যৌন ক্ষমতা কমে যায়
পুরুষের যৌন ক্ষমতা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে এবং এক পর্যায়ে তা সর্বোচ্চ হয়ে আবার কমতে শুরু করে। ৩০ এর পর পুরুষের দেহে যৌন হরমোন টেস্টোস্টেরনের উৎপাদন প্রতি বছরে ২% হারে কমতে থাকে। ২০-২৫ বছরের একজন প্রথমবার সেক্স করার পর মাত্র আধ ঘন্টার মধ্যেই পুনরায় যৌন মিলন করার জন্য প্রস্তুত হয়। অর্থাৎ একজন ২৫ বছরের পুরুষ একদিনে যতবার সেক্স করতে পারে, একজন ৩০ বছরের পুরুষ ততবার যৌন মিলন করতে পারে না।
বিয়ের পরে অশান্তি
৩০ পার করে বিয়ে করলে স্বাভাবিকভাবেই বয়সের কারণে যে গাম্ভীর্য চলে আসে তার জন্য দাম্পত্য সম্পর্ক খুব বেশি মধুর ও ঘনিষ্ঠ হয় না। বেশি বয়সে বিয়ে হলে ছেলে-মেয়ে উভয়ের মধ্যে অ্যাডজাস্টমেন্ট, স্যাক্রিফাইস বা মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা কমে যায়, ধৈর্যক্ষমতাও কমে যায়। তাই দেরিতে বিয়ে করলে সংসারে অশান্তি বেশি হয়। আগেকার দিনে শারীরিক চাহিদা পূরণ করা ছিল তাড়াতাড়ি বিয়ের বড় একটি কারণ। প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের যৌনসক্ষমতা বেশী হয়। দেরিতে বিয়ের কারণে বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্ক এবং ব্যভিচার বেড়েই চলেছে।
হতাশ হয়ে পড়া
দেরিতে বিয়ে হলে অনেক ছেলেরাই বিবাহিত বন্ধু-বান্ধব বা সামাজিক অনুষ্ঠানগুলো এড়িয়ে চলতে চান। কারণ সামাজিক অনুষ্ঠান মানেই ‘বয়স তো অনেক হলো, বিয়ে করছো কবে’- এ ধরনের একগাদা প্রশ্নের সম্মুখীন হওয়া। এমন অবস্থায় একজন পুরুষ মনের মানুষ পাবার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। ছেলেরা মনে করেন বিয়ে না হওয়াটা একটা দোষ এবং সেই দোষ ঢাকতে তারা কিছুটা বাড়াবাড়ি করেন। কারো কারো মধ্যে নিজেকে অহেতুক শো-অফ করার প্রবণতা বেড়ে যায়।
বিয়ে করার সঠিক সময় কখন?
প্রতিটি পরিবারের একটি ভবিষ্যতের পরিকল্পনা থাকা উচিত। এ কারণে দেরিতে বিয়ে করা উচিত না। বাবা-মা যদি বেশি বয়সে বিয়ে করেন তাহলে তারা তাদের সন্তানদের বড় করার পেছনে যথেষ্ট সময় দিতে পারেন না। তাই সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে হলেও দেরিতে বিয়ে করা ঠিক নয়। বলা হয়ে থাকে ৩০ এর মাঝেই নারী পুরুষ উভয়েরই বিয়ে করে ফেলা উচিৎ তবে সেটা নারীদের ক্ষেত্রে আরও কিছুটা আগে হলে ভালো। মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৯ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে হওয়া উচিত।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, বিয়ে করার আদর্শ বয়স ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। এ সময়ের মধ্যে যারা বিয়ে করেন, তাদের দাম্পত্য জীবন অনেক সুখের হয় এবং তাদের ডিভোর্সের ঝুঁকি অনেক কম থাকে। একটি গবেষণায় দেখা যায়, যারা ২৮ থেকে ৩২ বছর বয়সের মধ্যে বিয়ে করেন, তাদের মধ্যে ডিভোর্সের প্রবণতা বেশি থাকে। গবেষকরা মনে করেন, যারা দেরিতে বিয়ে করে, তাদের জীবনে সাফল্যও দেরিতে আসে।
এটা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত যে, ৩০ এর পর থেকে মেয়েদের সন্তানধারণ ক্ষমতা কমতে থাকে। ৩৫ বছরের পর থেকে এই ক্ষমতা আরো দ্রুত কমতে থাকে এবং ৪০ বছরে গিয়ে এই ক্ষমতা অর্ধেকে নেমে আসে। আর বয়স বাড়ার সাথে সাথে অস্বাভাবিক বা বিকলাঙ্গ বাচ্চা হওয়ার হারও বাড়তে থাকে। তাছাড়া ত্রিশের পর প্রথম বাচ্চা নিলে ব্রেস্ট ক্যান্সার বা স্তনের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পায়। পুরুষদের ক্ষেত্রে বয়স ৪৫ বছর পার হয়ে গেলে বাবা হওয়ার ক্ষমতা পাঁচগুণ কমে যায়।
ছেলেদের ক্ষেত্রে বিয়ের সময়ের ব্যাপারটা একটু বেশি গুরুত্বপুর্ণ কারণ শুধুমাত্র যৌবন প্রাপ্ত হলেই একটি ছেলে বিয়ের জন্য উপযুক্ত হননা। বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রী উভয়ের খরচ সাধারণত পুরুষকেই বহন করতে হয়। নিজের স্ত্রীর পাশাপাশি বাবা-মা এর প্রতিও দায়িত্ব পালন করতে হয়। সুতরাং ছেলেকে বিয়ের জন্য যেমন শারিরীক ভাবে ও আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হতে হবে ঠিক তেমনিভাবে বুদ্ধিমান ও বিচক্ষণও হতে হবে।
দেরিতে বিয়ে- শেষ কথা
নিজের ক্যারিয়ার, আর্থিক অবস্থার পাশাপাশি বিয়ের বয়সটাকেও গুরুত্ব দিতে হবে। তবে বিয়ে না হওয়াটা কোনো দোষের কিছু নয়। বলা হয়, বিয়ে সম্পূর্ণভাবে মহান রাব্বুল আলামিন এবং ভাগ্যের উপর নির্ভর করে। তবে শুধু ভাগ্যের উপর নির্ভরশীল না হয়ে সময় মত বিয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে নিজের জীবনকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন এবং পরিচিতদের মাধ্যমে পাত্র-পাত্রীর অনুসন্ধান করতে হবে। পাশাপাশি ভালো পাত্র-পাত্রীর জন্য অনলাইন ঘটক বা ভালো ম্যারেজ মিডিয়ার সাথে যোগাযোগ করতে হবে।
ভারতবর্ষে মুসলিম আইন সৃষ্টি হয়েছে মূলতঃ কোরানের নির্দেশ থেকে। তবে নির্দেশগুলি সংশোধিত হয়েছে বিধানসভা ও লোকসভায় গৃহীত বিল এবং কোর্টের বিভিন্ন রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে। মুসলিম আইন (শরিয়ত) অনুসারে বিবাহ বা নিকা হল পরস্পরের উপভোগের জন্য এবং বৈধ সন্তান উত্পাদনের জন্য স্বেচ্ছায় চুক্তিবদ্ধ হওয়া। এর প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি […]
ভারতবর্ষে মুসলিম আইন সৃষ্টি হয়েছে মূলতঃ কোরানের নির্দেশ থেকে। তবে নির্দেশগুলি সংশোধিত হয়েছে বিধানসভা ও লোকসভায় গৃহীত বিল এবং কোর্টের বিভিন্ন রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে।
মুসলিম আইন (শরিয়ত) অনুসারে বিবাহ বা নিকা হল পরস্পরের উপভোগের জন্য এবং বৈধ সন্তান উত্পাদনের জন্য স্বেচ্ছায় চুক্তিবদ্ধ হওয়া। এর প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল:
মুসলিম বিবাহ হতে গেলে এক পক্ষ থেকে বিবাহের প্রস্তাব (ইজাব) আসতে হবে এবং অন্য পক্ষকে তাতে সন্মতি (কবুল) জানাতে হবে। সন্মতি ছাড়া বিবাহ বৈধ হবে না এবং এই সন্মতি কোনও শর্ত-সাপেক্ষ হওয়া চলবে না। উপরোন্তু এই সন্মতি আদায় করার জন্য কোনও রকম চাপ সৃষ্টি, মিথ্যার প্রশ্রয় নেওয়া বা কোনোরূপ প্রভাব খাটানো চলবে না। একই বৈঠকে প্রস্তাব ও সন্মতিদান সম্পন্ন করতে হবে এবং এগুলি করতে হবে সুস্পষ্টভাবে উচ্চারণ করে। সাক্ষী থাকবে দুই জন পুরুষ অথবা একজন পুরুষ ও দুই জন নারী (সুন্নি আইন অনুসারে)। নারীসাক্ষীদের ক্ষেত্রে সাক্ষীদের হতে হবে প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থমনা ও মুসলিম।
শিয়া আইনে বিবাহের সময় সাক্ষীর প্রয়োজনীয়তা নেই।
মুসলিম বিবাহ আইনে নাবালক ও অসুস্থমনা ব্যক্তিদের বিবাহ হওয়া সম্ভব, কিন্তু সেই ক্ষেত্রে অভিভাবক বা কোনও প্রতিনিধি কর্তৃক এই বিবাহ-চুক্তি সম্পাদিত হবে। নাবালকরা প্রাপ্ত-বয়স্ক হবার পর চাইলে এই চুক্তি বাতিল করতে পারবে।
এই বিবাহের অধিকার ও দায়ের মধ্যে রয়েছে বিবাহের আগে, বিবাহের সময়ে অথবা বিবাহের পরে উভয়পক্ষের মধ্যে যে বোঝাপড়া (শর্ত) হবে, তা যদি মুসলিম আইন বা সাধারণ নীতির পরিপন্থী না হয়, তাহলে সেই শর্ত বাধ্যতামূলক হবে।
মুসলিম বিবাহ আইনে দেনমোহরের ব্যবস্থা আছে। দেনমোহরে একটি অর্থের পরিমান নির্দিষ্ট করা হয়, যেই পরিমান অর্থ স্ত্রীকে দিতে স্বামী বাধ্য থাকবে। বিবাহের সময়ে বা পূর্বে এই দেনমোহর স্থির হয়। অবশ্য পরেও করা যেতে পারে। দেনমোহরকে বিবাহ-চুক্তির মূল্য বা শর্ত বলা চলে না (মুসলিম বিবাহে কোনও শর্ত থাকে না)। লাহোর ও এলাহাবাদ হাইকোর্ট দেনমোহরকে স্ত্রীর মর্যাদাস্বরূপ বলে বিচার করেছেন – অর্থাত্ এটি হল আইনগত স্ত্রীর প্রাপ্য মার্যাদা। বিবাহ-চুক্তিতে যদি লেখাও থাকে দেনমোহর দিতে হবে না – সেক্ষেত্রেও দেনমোহর স্ত্রীর প্রাপ্য। অন্যপক্ষে কলকাতা হাইকোর্টের মতে, দেনমোহর হল সম্পত্তির মূল্য।
মুসলিম বিবাহ আইনে নিকট আত্মীয়দের মধ্যে বিবাহ নিষিদ্ধ। সেই আত্মীয়তা রক্ত-সম্পর্কিত হতে পারে (যেমন, পুরুষের ক্ষেত্রে তার মাতা, মাতামহী, কন্যা, পৌত্রী, ইত্যাদি), কিংবা অন্য কোন নিকট আত্মীয় হতে পারে (যেমন, পুরুষের ক্ষেত্রে শাশুড়ি, স্ত্রীর পূর্ববিবাহজাত কন্যা, বিমাতা, ইত্যাদি)।
এই আইন অনুসারে পুরুষরা একসঙ্গে চারটি বিবাহ করতে পারে। কিন্তু নারীদের পক্ষে একই সঙ্গে একাধিক স্বামী থাকা নিষিদ্ধ।
মুসলিম বিবাহ আইনে অনেক অবৈধ বিবাহ বৈধ হয়ে যায় যখন অবৈধতার কারণ লুপ্ত হয়। যেমন, চারটি স্ত্রী বর্তমান থাকলেও কেউ যদি আবার বিবাহ করে, তাহলে সেই বিবাহ অবৈধ। কিন্তু সে যদি একজন স্ত্রীকে তালাক দেয় (বা পরিত্যাগ করে), তাহলে তার অবৈধ বিবাহটি বৈধ হয়ে যায়। কোনও নারীর ইদ্দতের সময়কালে তাকে বিবাহ করলে সেই বিবাহ অবৈধ, আবার ইদ্দতের সময়ে পার হয়ে গেলেই সেটি বৈধ বলে গণ্য হবে।
(ইদ্দত: স্বামীর মৃত্যুর পর বা বিবাহ-বিচ্ছেদের পর মুসলিম নারী যে-সময়ের জন্য [মোটামুটিভাবে তিনমাস বা তার অধিক] একা থাকে)।
সুন্নি পুরুষ যদি কোনও মুসলিম নারী বা কিতাবিয়াকে (অর্থাত্, যে-ধর্মে ঈশ্বর-প্রদত্ত বাণী পুস্তকাকারে [বাইবেল, কোরান, ইত্যাদি] আছে – সেই ধর্মাবলম্বীকে) বিবাহ করে – তাহলে সুন্নি আইন অনুসারে সেটি বৈধ হবে। কিন্তু যে ধর্মে পৌত্তলিকতা আছে (যেমন, হিন্দু ধর্ম) – সেই ধর্মাবলম্বী নারীকে বিবাহ করতে পারে না। করলে, সেটিকে নিয়ম-বহির্ভূত বা অনিয়মিত বলে গণ্য করা হবে। শিয়া আইনে এটি শুধু অনিয়মিত নয়, এটি হবে অবৈধ। সুন্নি ও শিয়া – কোন আইনেই মুসলিম নারী কোনও অমুসলিম পুরুষকে (সে কিতাবিয়া হলেও) বৈধভাবে বিবাহ করতে পারে না। সুন্নি আইন অনুসারে সেটি হবে নিয়ম-বহির্ভূত বিবাহ। শিয়া আইন অনুসারে সেটি হবে অবৈধ।
যদিও কোরান ও হাদিছে এ-বিষয়ে সমর্থন নেই, তবুও অন্যান্য চুক্তির মত বিবাহ-চুক্তিও যাতে ভঙ্গ করা যায় – তার ব্যবস্থা ভারতবর্ষের মুসলিম আইনে রয়েছে।
The Dissolution of Muslim Marriage Act, ১৯৩৯ অনুসারে মুসলিম বিবাহ বিচ্ছেদ আইনে নারীর পক্ষে বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য আদালতে যাবার কয়েকটি শর্ত আছে:
১) চার বছর ধরে স্বামী নিখোঁজ;
২) দুই বছর ধরে স্বামী তাকে অবহেলা করছে বা ভরণপোষণ দেয় নি;
৩) স্বামী সাত বছর বা তার অধিক কালের জন্য কারাদণ্ড পেয়েছে;
৪) তিন বছর ধরে কোনও যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া দাম্পত্য কর্তব্য করে নি;
৫)দুই বছর ধরে স্বামীর মাথা খারাপ কিংবা কুষ্ঠরোগগ্রস্থ বা বাজে যৌনব্যাধিতে আক্রান্ত;
৬) বিবাহের সময় স্বামী অক্ষম ছিল এবং এখনও আছে;
৭) ১৫ বছর বয়স হবার আগে যে বিবাহ হয়েছিল, ১৮ বছর বয়সের আগেই সে বিবাহকে স্বামী অস্বীকার করেছে এবং দাম্পত্য সম্পর্ক ঘটে নি;
৮) স্বামী নিষ্ঠুর আচরণ করছে, যেমন, তাকে প্রহার করছে বা মানসিক ভাবে পীড়ন করছে, অসত্রমণীর সঙ্গে সংসর্গ করছে, স্ত্রীকে জোর করে অসামাজিক অবৈধ জীবনযাপন করতে বাধ্য করছে, ধর্মীয় আচরণে হস্তক্ষেপ করছে, স্ত্রীর আইনসঙ্গত অধিকারে বাধা দিচ্ছে, কোরানের অনুশাসন অনুযায়ী সকল স্ত্রীদের সঙ্গে সম-আচরণ করছে না, ইত্যাদি।
পুরুষদের ক্ষেত্রে বিবাহ-বিচ্ছেদের একক ইচ্ছার আইন আছে। যে কোনও পুরুষ তিনবার তালাক উচ্চারণ করে স্ত্রীকে পরিত্যাগ করতে পারে। যার উদ্দেশ্যে তালাক দেওয়া হল, সে সেখানে না থাকলেও এই বিচ্ছেদ স্বীকৃতি পাবে। তবে তালাক দেওয়া স্ত্রীকে সেই পুরুষ আবার বিবাহ করতে পারবে না। তালাক-প্রাপ্তা সেই মুসলিম নারী যদি অন্য কোনও পুরুষকে বিবাহ করে এবং সেই বিবাহ ভেঙ্গে যায়, তখনই আবার তাকে বিবাহ করা যাবে।
শরিয়ত আইনে স্ত্রীকে বিবাহবিচ্ছেদের অধিকার দেওয়া হয়েছে দুটি ক্ষেত্রে। এক হল জিহার, অর্থাত্ স্বামী যদি নিষিদ্ধ সম্পর্কের কোনও স্ত্রীর প্রতি আসক্ত হয় এবং তার জন্য প্রায়শ্চিত্ত করতে রাজি না হয়। সেক্ষেত্রে স্ত্রী আবেদন করলে আদালত বিবাহবিচ্ছেদের আদেশ দেবে।
স্ত্রী স্বামীকে মুক্তিমূল্য (স্বামীর শর্ত অনুযায়ী খুলা) দিয়ে বিবাহ-বিচ্ছেদ করিয়ে নিতে পারে। স্বামী-স্ত্রীর উভয়ের সন্মতিতেই বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়, একে বলা হয় মুবারাত।
মহম্মদ আহমেদ খান ও শাহবানো বেগমের মামলায় সুপ্রীম কোর্ট রায় দিয়েছিল যে, বিবাহ বিচ্ছেদের পরে যদি মুসলিম নারী নিজের ভরণপোষণ চালাতে পারে, তাহলে পুরুষের দায়িত্ব ইদ্দতের পরেই শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু সেই নারী যদি নিজের ভরণপোষণ চালাতে সক্ষম না হয়, তাহলে ক্রিমিনাল কোডের ১২৫ ধারা অনুযায়ী তার ভরণপোষণের দায়িত্ব থাকবে প্রাক্তন স্বামীর। এর পর মুসলিম স্বামীদের প্রাক্তন স্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে নানান বাদ-প্রতিবাদ শুরু হয়। মুসলিম নারী (বিবাহবিচ্ছেদের পর অধিকার রক্ষা আইন), ১৯৮৬ পাশ করানো হয় সুপ্রীম কোর্টের এই রায়ের প্রযোজ্যতা সীমিত করার জন্য। সাধারণভাবে
ফৌজদারী আইনের ১২৫ ধারা মুসলিম নারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না, যদি না সেই নারী ও তার প্রাক্তন স্বামী যৌথভাবে বা আলাদা ভাবে কোর্টে ঘোষণা করে বা স্বীকৃতি দেয় যে তারা ফৌজদারী আইনের ১২৫ থেকে ১২৮ ধারা মেনে চলবে।
এই আইনে স্বামীর দায়িত্ব থাকলো:
(১) শুধু ইদ্দতকাল পর্যন্ত। ইদ্দতকাল হল বিবাহ বিচ্ছেদের পর তিনটি ঋতুকালের পর্যন্ত আর যদি ঋতুর অবস্থা না থাকে তাহলে তিনটি চান্দ্রমাস পর্যন্ত। যদি সন্তান সম্ভবা অবস্থায় বিবাহবিচ্ছেদ হয় তাহলে সন্তানের জন্ম বা গর্ভপাতের সময়ের মধ্যে স্বামীর কাছ থেকে ন্যায্য ও উপযুক্ত ব্যবস্থা ও খোরপোষ পাবে।
(২) যদি বিবাহবিচ্ছেদের আগে বা পরে জাত সন্তানের ভরণপোষণ সে নিজেই বহন করে, তাহলে তার প্রাক্তন স্বামী সন্তান জন্মের দুবছর পর্যন্ত ভরণপোষণ দেবে।
(৩) দেন মোহরের দেয় সমান অর্থ দেবে।
(৪) বিয়ের সময় আগে বা পরে স্বামী, আত্মীয় বা বন্ধুদের দেওয়া সমস্ত সম্পত্তি স্বামী দিয়ে দেবে।
উল্লেখিত সমস্ত দেয় সম্পত্তি না দিলে বিবাহবিচ্ছিন্না স্ত্রী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন জানাবে এবং ম্যাজিস্ট্রেট একমাসের মধ্যে তার রায় দেবে।
এই আইন অনুসারে ইদ্দতকালের দেয় অর্থের পর যে স্ত্রী নিজের ভরণপোষণ চালাতে না পারে, তার আত্মীয়স্বজন (যারা তার সম্পত্তির অধিকারী) তারা দায়িত্ব নেবে। তারাও যদি অক্ষম হয়, তাহলে রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডকে সেই দায়িত্ব নিতে হবে।
প্রসঙ্গতঃ ১২৫ ধারার প্রযোজ্যতা সম্পর্কে বিতর্ক এখনও শেষ হয় নি। কলকাতা হাইকোর্ট ২০০১ সালে রায় দিয়েছে যে, মুসলিম মেয়েদের ১২৫ ধারায় আবেদনের পথ খোলাই রয়েছে, কারণ ১২৫ ধারা একটি ধর্ম নিরপেক্ষ আইন। তাঁরা ইচ্ছে করলে এই আইনের সুযোগ নিতে পারবেন। ১২৫ ধারা বেশ কঠোর আইন। এই ধারায় টাকা দেবার আদেশ দেওয়া হলে, সেই টাকা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে না দিলে, ম্যাজিস্ট্রেট ওয়ারেণ্ট জারি করতে পারবে। সময়মত টাকা না দিলে একমাসের বা যতদিন টাকা না দেওয়া হচ্ছে ততদিন কারাদণ্ডের আদেশ দিতে পারবে।
Are you sure you are in a relationship with a keeper? Read on to know. Everyone expects their partner to be a certain type but wants the same things from a relationship like love and respect, care and trust. A keeper is someone who gives […]
Are you sure you are in a relationship with a keeper? Read on to know.
Everyone expects their partner to be a certain type but wants the same things from a relationship like love and respect, care and trust. A keeper is someone who gives all these things and makes their partner feel valued, a person one intends on keeping all their life. A keeper is someone who isn’t afraid of what comes after the honeymoon period, someone who understands their partner and is willing to deal with the ups and downs in a relationship, someone with whom one can share anything and everything without the fear of being judged and who actively wants to work on the relationship instead of just being a passive member of it.
They say dating is easy and relationships are hard but with a keeper, a relationship becomes smooth sailing. A keeper will not just listen to what you say but will make efforts to understand you. Both the partners become a team instead of competing with each other and the main objective of the relationship becomes growing with the other, exploring each other and the relationship. The achievements and losses are shared and nothing is kept from the other. This ensures a stable relationship that does not stagnate and has no place for secrets. Both partners support each other through thick and thin, and become each other’s best friend before anything else.
Instead of avoiding each other in a fight, they communicate effectively to sort out their issues with mutual respect. The fights are kept clean and fair, and a common ground can be found rather than just shoving the issue under the rug. This makes room for a secured relationship where each partner can communicate freely and there is a lot of room for understanding and negotiation. It is important to be in such a relationship for a healthy and balanced life.
There are a lot of times when people believe that they might be in a relationship where their partner is a keeper because they earn well, come from a decent family or are well educated but they must ask themselves if this is enough. They might not realize that keeping their partner on a pedestal for the above reasons will not save them from the consequences of dating someone who isn’t right for them.
If one is in a relationship with someone who is not a keeper i.e. isn’t the right fit for the person, they might end up spending their whole lives trying to find happiness in a shallow pit. They will be in a relationship where they are not nurtured and there is no real understanding between the partners. They won’t be able to rely on each other in times of crisis.
Both the partners would spend their time, efforts and resources in a meaningless relationship which probably has no future and might leave both partners emotionally and mentally strained and exhausted.
Therefore, in order to have a fulfilling relationship one must know how to spot a keeper and have a meaningful relationship with them. If one feels that they are respected and cared for in a relationship, they must constantly try to build and nurture their existing relationship, giving each other room to grow. One should always try and have better communication with their partner and must ensure that their partner feels comfortable and valued with them. An insecure relationship is never healthy for either of the partners, and hence one must always work on eliminating the doubts and insecurities the other partner has by speaking to each other, without keeping secrets, and laying their cards on the table. It is important to not just hear each other out but respect each other’s feelings and concerns and understand them.
An unwilling partner makes for a lousy relationship. It is essential to keep making efforts in order to have a healthy, nurturing and stable relationship.
Hence, if one spots if their partner is not a keeper early in a relationship, it saves both partners tremendous amount of time, energy and efforts, and keeps them from getting devastated later in the relationship. On spotting a keeper, one starts valuing the relationship and gains trust in each other. Love can only flourish when both the partners enjoy each other’s company and enable each other to grow emotionally, mentally and spiritually.
বিয়ের পর সংসার জীবনকে সুখী করা প্রত্যেক যুগলের প্রত্যাশা। অনেক সময় সেই প্রত্যাশা সবাইর ক্ষেত্রে পূরণ হয় না। সংসার জীবনে অমিলের কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তিক্ততা থেকে পৃথক বসবাসের পর তালাক বা বিয়ে ভেঙে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত নিতে হয়। যাকে আমরা তালাক নামে অবহিত করি। আগের […]
বিয়ের পর সংসার জীবনকে সুখী করা প্রত্যেক যুগলের প্রত্যাশা। অনেক সময় সেই প্রত্যাশা সবাইর ক্ষেত্রে পূরণ হয় না। সংসার জীবনে অমিলের কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তিক্ততা থেকে পৃথক বসবাসের পর তালাক বা বিয়ে ভেঙে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত নিতে হয়। যাকে আমরা তালাক নামে অবহিত করি। আগের তুলনায় বর্তমান সময়ে বিয়ে বিচ্ছেদের হার অনেক বেশি। কিন্তু অনেকের এ বিষয়ে সঠিক ধারণা না থাকায় তারা বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটানোর সময় বিভিন্ন সমস্যায় পড়ে। বিশেষত মেয়েদের ক্ষেত্রে তাদের দেনমোহর ও ভরণ-পোষণ থেকে বঞ্চিত করা হয়।
তালাক কী
মুসলিম পারিবারিক আইনে বিয়ের মাধ্যমে স্থাপিত সম্পর্ককে আইনগত উপায়ে ভেঙে দেওয়াকে তালাক বা বিয়ে বিচ্ছেদ বলে। আইন অনুযায়ী যে কোনো পক্ষ বিয়ে ভেঙে দিতে পারে। যাকে আমরা বিবাহ বিচ্ছেদ বলি। বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী সবার সমান অধিকার রয়েছে। মানুষের প্রচলিত ধারণা, স্বামী যে কয়দিন চাইবে সে কয়দিন স্ত্রী ঘর সংসার করবে। স্বামী না চাইলেই বিদায়। এই ধারণা সমাজে প্রচলিত থাকলেও তা আইন ও ধর্মীয় দৃষ্টিতে বেআইনি। আইনের দৃষ্টিতে তালাকের ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের অধিকার রয়েছে। অর্থাৎ স্ত্রীও তার স্বামীকে তালাক প্রদান করতে পারে।
তালাকের নিয়মাবলি
মুখে পরপর তিনবার ‘তালাক’ উচ্চারণ করলে তালাক কার্যকর হয় না। ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের ৭ (১) ধারা অনুযায়ী, স্বামী তালাক দেওয়ার পর পরই তালাক দেওয়ার সংবাদটি একটি নোটিশের মাধ্যমে চেয়ারম্যানকে (যে চেয়ারম্যানের এলাকায় স্ত্রী বাস করছেন) জানাতে হবে। সেই নোটিশের একটি কপি স্ত্রীকে পাঠাতে স্বামী বাধ্য থাকবেন।
এ আইনের ৭ ধারায় বলা হয়, কোনো ব্যক্তি তার স্ত্রীকে তালাক দিতে চাইলে, সে যেকোনো পদ্ধতির তালাক ঘোষণার পর দ্রুত চেয়ারম্যানকে লিখিতভাবে নোটিশ দেবে এবং স্ত্রীকে নোটিশের একটি কপি প্রদান করবে। কোনো ব্যক্তি যদি নোটিশ না দেয় তাহলে সে এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড অথবা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় প্রকার দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। কোনো তালাক যদি প্রত্যাহার করা না হয়, তাহলে চেয়ারম্যানের কাছে নোটিশ প্রদানের তারিখের নব্বই দিন পর তা কার্যকর হবে।
তবে তার আগে নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে চেয়ারম্যান সংশ্লিষ্ট পক্ষদ্বয়ের মধ্যে পুনর্মিলন ঘটানোর উদ্দেশে একটি সালিশি পরিষদ গঠন করবে এবং উক্ত সালিশি পরিষদ এই জাতীয় পুনর্মিলনীর জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। বিষয়টি যদি সমাধানযোগ্য হয়, তবে তার সমাধান করতে হবে। এটিই মূলত চেয়ারম্যান বা কমিটির কাজ। চেয়ারম্যানকে নোটিশ প্রদানের কারণ এটাই।
একই আইনের ৯ ধারায় আছে, কোনো স্বামী তার স্ত্রীকে পর্যাপ্ত ভরণ-পোষণ বা খোরপোষ দানে ব্যর্থ হলে বা একাধিক স্ত্রীর ক্ষেত্রে তাদের সমান খোরপোষ না দিলে, স্ত্রীরা চেয়ারম্যানের কাছে দরখাস্ত করতে পারে। এ ক্ষেত্রে চেয়ারম্যান বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য সালিশি পরিষদ গঠন করবে এবং ওই পরিষদ স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে ভরণ-পোষণ প্রদানের জন্য টাকার পরিমাণ নির্দিষ্ট করে সার্টিফিকট জারি করবে। স্বামী যদি ভরণ পোষণের কোনো টাকা যথা সময়ে বা সময়মতো পরিশোধ না করে তাহলে তা বকেয়া ভূমি রাজস্ব হিসেবে তার কাছ থেকে আদায় করা হবে।
যেসব কারণে স্ত্রীও তালাক দিতে পারে
১৯৩৯ সালের মুসলিম বিবাহ বিচ্ছেদ আইন অনুযায়ী একজন স্ত্রী কী কী কারণে স্বামীকে তালাক দিতে পারে তা উল্লেখ করা হয়েছে । কারণগুলো হলো-
১. যদি চার বছর পর্যন্ত স্বামী নিরুদ্দেশ থাকে,
২. দুই বছর স্বামী স্ত্রীর খোরপোষ দিতে ব্যর্থ হয়।
৩. স্বামীর সাত বৎসর কিংবা তার চেয়েও বেশি কারাদণ্ডাদেশ হলে।
৪. স্বামী কোনো যুক্তিসংগত কারণ ছাড়াই নির্দিষ্ট সময় ধরে (তিন বছর) দাম্পত্য দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে।
৫. বিয়ের সময় স্বামী পুরুষত্বহীন থাকলে
৬. স্বামী যদি দুই বছর পাগল থাকে অথবা কোনো গুরুতর ব্যাধিতে আক্রান্ত থাকে
৭. স্বামীর ধারাবাহিক নিষ্ঠুরতার কারণেও স্ত্রী তালাক দিতে পারে।
মানব-মানবীর মিলনে যে সুখময় সংসার, এর রয়েছে অনেকগুলো পূর্বশর্ত। নিছক ভোগচাহিদা পূরণের জন্য তো বিয়ে নয়, বরং এ এক অমূল বাঁধন। বিয়ে পরবর্তী জীবনে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার মধুময় সম্পর্ক অটুট রাখার ক্ষেত্রে বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রীর পরস্পরকে দেখে নেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। জীবনের এ অমূল্য অধ্যায় সম্পর্কে […]
মানব-মানবীর মিলনে যে সুখময় সংসার, এর রয়েছে অনেকগুলো পূর্বশর্ত। নিছক ভোগচাহিদা পূরণের জন্য তো বিয়ে নয়, বরং এ এক অমূল বাঁধন।
বিয়ে পরবর্তী জীবনে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার মধুময় সম্পর্ক অটুট রাখার ক্ষেত্রে বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রীর পরস্পরকে দেখে নেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
জীবনের এ অমূল্য অধ্যায় সম্পর্কে মানবতার ধর্ম ইসলাম উদাসীন নয়। এর প্রমাণ- স্বয়ং প্রিয়নবী (সা.) আমাদের উৎসাহ দিয়েছেন বিয়ের আগে নিজের জীবনসঙ্গীকে দেখে নেওয়ার জন্য, বেছে নেওয়ার জন্য।
রাসূল (সা.) বলেছেন, নারীর চারটি বিষয় দেখে মানুষ বিয়েতে আগ্রহী হয়। তার ধন-সম্পদ, তার মর্যাদা ও আভিজাত্য, তার রূপ-সৌন্দর্য, তার দ্বীন। তবে তোমরা নারীর দ্বীনকে প্রাধান্য দিও। (বুখারী ও মুসলিম)
তাই সবচেয়ে উত্তম হল, বিয়ের আগে প্রথমে পাত্রীর দ্বীনদারি জীবনযাপন সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া। এ ব্যাপারে আশাব্যঞ্জক সংবাদ পাওয়া গেলে তারপর মহান আল্লাহ পাকের কাছে সাহায্য চেয়ে কনে দেখার পয়গাম পাঠানো। যদি পাত্রী পক্ষ এ ছেলের ব্যাপারে নিজেদের সম্মতি প্রকাশ করে তখন দেখতে যাওয়া। নিজের বিশ্বস্ত কোনো নারী যেমন মা অথবা বোনের মাধ্যমে ওই মেয়ের চরিত্র এবং গঠন সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়া ভালো। তারপর উভয়ে উভয়ের পছন্দ হলে বিয়ের প্রস্তাব এবং অতঃপর শুভ বিবাহ।
বুখারী, মুসলিম, তিরমিযীসহ অন্যান্য বর্ণনায় হযরত মুগিরা বিন শোবা (রা.) বলেন, আমি রাসূলের (সা.) কাছে গিয়ে এক নারীকে বিয়ে করার আগ্রহ প্রকাশ করলাম। তিনি আমাকে বললেন, আগে যাও, তাকে দেখে নাও। কারণ এ দেখাদেখি তোমাদের বন্ধনকে অটুট রাখতে সহায়ক। (বুখারী-৪৮৩৩, তিরমিযী-১০৮৭, মুসলিম-১৪৩৪)
ইবনে মাজাহ এবং আহমদের বর্ণনায় মুহাম্মদ বিন মাসলামাহ (রা.) বলেন, আমি রাসূলকে (সা.) বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আল্লাহ পাক যখন কারো মনে কোনো নারীকে বিয়ের জন্য ইচ্ছা ঢেলে দেন, তখন ওই পুরুষের জন্য তার পাত্রীকে দেখে নেওয়ায় কোনো ক্ষতি নেই।
ইসলামী শরীয়তের বিশেষজ্ঞ উলামায়ে কেরাম পাত্রী দেখাকে মুস্তাহাব বলেছেন। তবে কনের কোন কোন অংশ দেখা যাবে, তা নিয়ে সামান্য মতভেদ থাকলেও প্রায় সবাই একমত যে, পাত্রের জন্য পাত্রীর শুধু চেহারা এবং দু’হাত দেখা যাবে। একাকী মেয়ে এবং ওই ছেলেকে কথা বলার সুযোগ দেওয়ার বৈধতা ইসলামে নেই। কারণ তখনও তারা একে অপরের জন্য বেগানা (গায়ের মাহরাম)। বরং দেখাদেখির সময় সঙ্গে মুরব্বি অথবা অল্পবয়সী কেউ উপস্থিত থাকা প্রয়োজন।
ইমাম আহমদের বর্ণনায় একটি হাদীস থেকে জানা যায়, বিশেষ প্রয়োজনে পাত্রীকে না জানিয়ে তাকে দেখে নেওয়া যাবে। তবে অগোচরে হোক কিংবা পাত্রীর সামনাসামনি হোক- সবসময় কয়েকটি বিষয়ের প্রতি সবার সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
পাত্র-পাত্রী দু’জনই দু’জনের জন্য উপযুক্ত এবং তাদের মধ্যে সম্পর্ক হতে পারে- এমন সম্ভাবনা থাকলে তখনই কেবল পাত্রীকে দেখার প্রস্তাব দেওয়া যাবে। পাত্র কিংবা পাত্রী- কারো পক্ষ থেকে যদি কোনোই সম্ভাবনা না থাকে, তবে এমন ক্ষেত্রে পাত্রী দেখার আয়োজন করা উচিত নয়।
পাত্রী দেখার সময় পাত্র বা ছেলের মনে যেন কোনো কুধারণা কিংবা কামনা না থাকে। ছেলেরও এ ব্যাপারে মানসিক প্রস্তুতি থাকা দরকার যে, মেয়েটিকে পছন্দ হলে সে তাকেই বিয়ে করবে। শুধু দেখার জন্য দেখা নয়। দেখার মজলিসে অন্য কোনো পুরুষ যার সঙ্গে মেয়ের দেখা সাক্ষাত জায়েজ নেই, এমন কেউ থাকা যাবে না। চাই সে ছেলের বাবা কিংবা মামা-চাচা যেই হোন না কেন।
পাত্রী মাথা নিচু করে বসে থাকবে আর পাত্র তাকে দেখবে- মুরব্বিরা তাকে প্রশ্নবানে জর্জরিত করবে, পাত্রীকে হাঁটতে বলা হবে, হাসতে বলা হবে- এসব কাম্য নয়। নারী বিয়ের পণ্য নয় যে তাকে এভাবে সবার সামনে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে হবে। ইসলামের নির্দেশনা হচ্ছে, পাত্রীও তার পাত্রকে দেখে নিতে পারবে। তাই ছেলের চেহারা এবং গঠন দেখার অধিকার রয়েছে পাত্রীর। হযরত উমর (রা.) বলতেন, বিয়ের আগে পুরুষের যেমন নারীর কিছু বিষয় দেখে নেওয়ার রয়েছে, তেমনি নারীরও অধিকার রয়েছে তার সঙ্গীকে দেখে বেছে নেওয়ার।
মনে রাখতে হবে, মেয়ের গুণাগুণ ও মেজাজ মর্জি সম্পর্কে জানতে হলে অন্দরমহলের নারীদের মাধ্যমে আগে থেকেই খোঁজখবর নেওয়া ভালো। সবকিছু ঠিকঠাক হলে তারপর পাত্রী দেখার আয়োজন। এর আগে নয়। কারণ মেয়ে দেখা তো আর ছেলেখেলা নয়। তবে প্রথমবার দেখে আসার পরও যদি কোনো সন্দেহ কিংবা সংশয় অথবা গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয়ে সুরাহা করার প্রয়োজন দেখা দেয়, তবে আবারও পাত্রীকে সামনাসামনি দেখার অবকাশ ইসলামে রয়েছে।
পাশাপাশি পাত্রীর আসল রং আড়াল করার উদ্দেশে অথবা অন্য কোনো দোষ ঢেকে রাখার জন্য ছল-চাতুরীর আশ্রয় নেওয়া উচিত নয়। মানুষ হিসেবে স্রষ্টা যেভাবে যাকে সৃষ্টি করেছেন, সেটিই তার জন্য মঙ্গলময়। বিয়ের মজলিসে সামান্য লুকোচুরি পরবর্তী জীবনে অসামান্য বিবাদ ও অসহনীয় দ্বন্দ্ব বয়ে আনার কারণ হয়ে থাকে। এমনটি কারো কাম্য নয়।
আরেকটি বিষয়ে রাসূল (সা.) আমাদের সতর্ক করেছেন। ধরুন কোনো ছেলের সঙ্গে একটি মেয়ের বিয়ের কথাবার্তা চলছে কিংবা প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, এমন সময়ে অন্য কেউ যেন সেখানে প্রস্তাব না পাঠায়। যখন নিশ্চিত জানা যাবে যে ওই প্রস্তাবটি ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে কিংবা প্রত্যাহার করা হয়েছে, তখনই নতুন কেউ সেখানে পয়গাম পাঠাবে। বুখারী, মুসলিমসহ অন্যান্য হাদীসের গ্রন্থে বিখ্যাত সাহাবি আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, তোমাদের কেউ যেন অন্যের বিয়ের কথাবার্তা চলার সময় নতুন করে প্রস্তাব না পাঠায়।
পাত্রীকে দেখতে আসা উপলক্ষে মিষ্টিমুখ কিংবা খাবারের আয়োজন করা যেতে পারে। তবে একে উপলক্ষ করে যেন নারী-পুরুষের বেপর্দা সমাগম না হয়, সেদিকেও সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
পবিত্র কুরআনের একটি বৃহৎ এবং পূর্ণাঙ্গ সূরার নাম আল্লাহ পাক নারীদের (সূরা নিসা) নামে রেখেছেন। ইসলামই সর্বপ্রথম শিখিয়েছে, নারী কোনো পণ্য নয়। ভোগের বৃত্ত থেকে নারীকে মুক্ত করেছে ইসলাম। করুণার দৃষ্টি থেকে রেহাই দিয়ে প্রিয়নবী (সা.) নারীদের সবচেয়ে সম্মানিত অবস্থানে বসিয়েছেন। কাজেই পাত্রী দেখার আয়োজনে যেন কোনোভাবেই তার অধিকার ক্ষুণ্ন না হয়, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা সচেতন মুসলমানের কর্তব্য।
বরপক্ষের সম্পদের প্রভাবে মোহগ্রস্ত হয়ে যে বাবারা নিজের মেয়ের সম্মতি ছাড়াই তাকে তুলে দেয়, তারপর জীবনভর দু’জনের সংসারে লেগে থাকা মনোমালিন্যের দায়ভার তিনি কীভাবে এড়িয়ে যাবেন! মেয়ের মুখ বুঁজে সব সয়ে যাওয়া মানে আল্লাহ পাকের কাছে পার পাওয়া নয়। সে হিসেব বড়ই কঠিন।
শিশুরা তাদের বাবা-মাকে দেখেই তাদের জীবনে উন্নতি লাভ করে । বাবা-মায়েরা সবসময় তাদের শিশুদের জন্য রেফারেন্স বা প্রসঙ্গের বিশিষ্ট হন । তাঁরা এমন একজন, শিশুরা কোন সমস্যায় পড়লে যাদের কাছেই যায়, তাঁদের স্বভাব ও অভ্যাসগুলিই শিশুরা তাদের জীবনে প্রাথমিকভাবে গ্রহণ করে । বড় হয়ে শিশুরা […]
শিশুরা তাদের বাবা-মাকে দেখেই তাদের জীবনে উন্নতি লাভ করে । বাবা-মায়েরা সবসময় তাদের শিশুদের জন্য রেফারেন্স বা প্রসঙ্গের বিশিষ্ট হন । তাঁরা এমন একজন, শিশুরা কোন সমস্যায় পড়লে যাদের কাছেই যায়, তাঁদের স্বভাব ও অভ্যাসগুলিই শিশুরা তাদের জীবনে প্রাথমিকভাবে গ্রহণ করে । বড় হয়ে শিশুরা তাদের বাবা-মায়ের আচরণ এবং কাজকর্মকে অনুকরণ করে এবং বাবা-মায়েরাই তাঁদের সন্তানদের জন্য রোল মডেল হন । তাঁদের জ্ঞান ও অভ্যাসগুলি তাঁদের বাচ্চাদের মধ্যে অগ্রসর হয় । সুতরাং, ভালো এবং খারাপ অভ্যাসগুলির মধ্যে পাথক্য করতে এবং সেগুলির মধ্যে থেকে ভালোটিকে বেছে নিতে শিশুকে শিক্ষা দেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ ।
স্বাস্থ্যকর অভ্যাস, যা শিশুদের মধ্যে থাকা বাধ্যতামূলক
শিশুদের জন্য সঠিক আচরণ এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলা যেন যুদ্ধের মতো মনে হয় । কিন্তু আপনাকে ধৈর্যশীল হতে হবে এবং সঠিকভাবে তাদের নেতৃত্ব দিতে হবে । নীচে স্বাস্থ্যকর অভ্যাস হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে এমন কিছু পয়েন্ট বর্ণনা করা হলঃ
১) স্বাস্থ্যকর খাদ্যগ্রহণ
প্রো টিপঃ খাবারকে রঙিন করে তুলুন ।
বাচ্চারা বেশিরভাগ সময়েই ফাস্ট ফুড, চিপস, মিষ্টি, বিস্কুট এবং চকলেট চাওয়ার দিকেই বেশি আগ্রহী হয় । আপনাকে তাদের বিশ্বাস করাতে হবে যে, স্বাস্থ্যকর খাবারও একইরকম সুস্বাদু হতে পারে । তাদের ঘরোয়া নুডলস, পাস্তা, কেক, কুকিজ এবং পিজ্জাও পরিবেশন করা যেতে পারে ।
বাচ্চাদের এই স্বাস্থ্যকর অভ্যাস বিকাশ করার জন্য, রঙিন উপায় অবলম্বন করুন- সপ্তাহে একবার করে যেন রামধনুর এক একটি রঙের খাবার খাওয়া হয়, তার দিকে নজর রাখুন, অর্থাৎ নানা রঙের খাবার খাওয়া । এর শুধুমাত্র যে স্বাস্থ্য-সুবিধা আছে তাই নয়, বাচ্চারা যেন মজা করে খায়, তাও নিশ্চিত করে । নিয়মিত, পুষ্টিকর এবং সুষম খাবার খাওয়ার মাধ্যমে বাবা-মায়েদের একটি সুস্থ উদাহরণ স্থাপন করতে হবে ।
২) শারীরিক কার্যকলাপ
প্রো টিপঃ বসে থাকতে উৎসাহিত করবেন না, প্রায়ই স্থানান্তরিত করুন ।
আপনার বাচ্চাদের সোফায় বসতে এবং আরাআম করে টেলিভিশন দেখতে অনুমতি দেওয়া বাবা-মা হিসাবে আপনার দিক থেকে একটি বড় ভুল হবে । আপনার বাচ্চাদের একটি নিস্তেজ জীবনধারা পেতে দেবেন না । তাদের বাইরে যেতে উৎসাহিত করুন, যেমন- তাদের হাঁটতে বা ব্যায়াম করতে অথবা বাইরে খেলতে পাঠান । একটি পারিবারিক কার্যকলাপ পরিকল্পনা করুন, এতিকে বেশ মজার করে তুলুন এবং আপনার বাচ্চাদেরও এতে লিপ্ত করুন । বাচ্চাদের শেখান যে, আলুভাতে হয়ে থাকলে স্বাস্থ্যের উপর প্রতিকূল প্রভাব ফেলে । নিম্নোক্ত স্বাস্থ্যের সমস্যাগুলি জীবনধারার ভঙ্গির জন্য হয়ে থাকেঃ
স্থূলতা
ঘুমের সমস্যা
মনোযোগের সমস্যা
মানসিক এবং সামাজিক সমস্যা
৩) খাবারের ডিজাইনের উপর বেশি গুরুত্ব না দিয়ে পুষ্টির লেবেলের উপর গুরুত্ব দিন
একটি নির্দিষ্ট বয়সে, বিশেষ করে তার কৈশোরের বছরগুলিতে, বাচ্চারা তাদের জামাকাপড়ের লেবেলের দিকে আগ্রহী হয় । আপনার বাআচাদের আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ লেবেলগুলি সম্পর্কে শিক্ষাদান করা শুরু করুন, যাতে তারা অল্প বয়স থেকেই খাদ্য লেবেলগুলিকে লক্ষ্য করতে পারে । যখন তাদের এই অভ্যাস তৈরি হবে, একইভাবে তাদের খাবারের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানতে উৎসাহিত করুন ।
তাদেরকে তাদের পছন্দের প্যাকেজগুলি দেখান এবং পুষ্টি লেবেলগুলির গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নির্দেশ করুন । ওই লেবেলগুলি পড়া, পুষ্টিমান নির্ধারণ করা এবং তারপর তাদের মূল্য নির্ধারণ করাকে তাদের অভ্যাস হিসাবে গড়ে তুলুন । স্যাচুরেটেড ও আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, চিনি, ক্যালোরি এবং কার্ব জাতীয় মূল উপাদানগুলির উপর তাদের গুরুত্ব দিতে পরামর্শ দিন । আপনার সচেতন প্রচেষ্টা স্বাস্থ্যকর অভ্যাস তৈরি করতে সাহায্য করবে, যেগুলি তারা সারাজীবন বহন করবে ।
৪) একসঙ্গে পারিবারিক খাবার উপভোগ করুন
প্রো টিপঃ সবাই মিলে একসাথে ডিনার করাকে অগ্রাধিকার দিন ।
সবাই মিলে একসাথে খাবার খাওয়াকে অগ্রাধিকার দিন
আজকাল আমরা যে অস্থির জীবনযাপন করি, সেখানে আমাদের পরিবার ও বড়দের সঙ্গে কাটানোর জন্য ভালো সময় খুব কমই বেঁচে থাকে । একটি কর্মব্যস্ত জীবন মানেই আপনি বাচ্চাদের সঙ্গে বসতে এবং তাদের গল্প শোনাতে ও অন্যান্য ব্যক্তিগড় বিষয়ে অক্ষম হতে পারেন । আপনার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে একসাথে উপভোগ করাটাকে অগ্রাধিকার দিন । আপনারা বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করতে এবং একে অপরের সাথে মতামত ভাগ করতে পারেন; এটি আপনার সন্তানদের উপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলবে । একসাথে খাওয়ার অন্যান্য সুবিধাগুলিতে নিম্নলিখিতগুলি অন্তর্ভুক্তঃ
বাচ্চারা পরিবারের সঙ্গে ভালো সমন্বয় তৈরি করতে এবং আরামদায়ক অনুভব করতে শুরু করবে ।
বাচ্চাদের ভালো খাদ্যাভ্যাস বিকাশ হবে এবং বড়দের সঙ্গে জাঙ্কফুড এড়াতে শুরু করবে ।
সম্পর্ক শক্তিশালী হয় ।
৫) স্বাস্থ্যকর হাইড্রেশন
প্রো টিপঃ সোডা নয়, জল পান করুন ।
বড়দের থেকে নকল করা সবথেকে সাধারণ বিশিষ্ট, যা শিশুরা সহজেই নিয়ে নেয়, তা হল নরম পানীয় পান করা । আপনাকে আপনার শিশুদের পথপ্রদর্শক হতে হবে দেবং তাদে সোডার বদলে জল পান করার গুরুত্ব সম্পর্কে ভালোভাবে সচেতন করতে হবে ।
বাচ্চাদের বলুন যে, জল স্বাস্থ্যকর এবং বেশ কিছু রোগ থেকে পরিত্রাণ পেতে সাহায্য কররে; অন্যদিকে নরম পানীয়গুলি অস্বাস্থ্যকর, কারণ এগুলিতে প্রচুর পরিমাণে চিনি ও ক্যালোরি যোগ করা হয়, যার কারণে ওজনে সমস্যা হয় । তাদের শিক্ষা দিন যে, জল একটি অত্যাবশ্যক সম্পদ এবং সঠিক হাইড্রেশন বজায় রাখার জন্য ভালো পরিমাণে পান করা উচিত । যখন আপনার বাচ্চারা বুঝতে পারবে যে, জল তাদের শরীরের জন্য কতোটা গুরুত্বপূর্ণ, তারা নিশ্চয়ই অস্বাস্থ্যকর বায়ুযুক্ত পানীয়গুলির থেকে এটাকেই নির্বাচন করবে ।
৬) অগোছাল জিনিস গুছিয়ে রাখা
প্রো টিপঃ আপনার বাড়তে থাকা শিশুদের জন্য একটি পরিষ্কার এবং গোছানো পরিবেশ প্রদান করুন ।
শিশুদের জীবনের প্রথমদিকে তাদের পরিচ্ছন্নতা শেখানোটা বাধ্যতামূলক । শিশুদের চারপাশের পরিবেশ গুছিয়ে রাখার মধ্যে দিয়ে শুরু করুন । যখন তারা সুশৃঙ্খলভাবে থাকা জিনিসপত্র দেখতে অভ্যস্ত হয়ে যাবে, তখন তারা নিজেরাও জিনিসপত্র ওইভাবে রাখতে চাইবে । যখন তাদের যথেষ্ট বয়স হয়, আপনি তাদের বিভিন্ন সময়ে অগোছাল জিনিসপত্র পরিষ্কার করতে এবং সঠিক জায়গায় রাখতে শেখান ও সাহায্য করুন । নিয়মিত এটি করলে, তারা শীঘ্রই নিজেদের জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখতে শিখবে ও সেইভাবে রাখার চেষ্টা করবে ।
৭) টাকার পয়সার ব্যাপারে দায়িত্বশীল হতে হবে
প্রো টিপঃ তাদের একটি বাজেট দিন ।
যত তাড়াতাড়ি আপনার সন্তানরা জিনিসপত্র কিনতে যেতে এবং টাকাপয়সা ব্যবহার করতে শিখবে, আপনি আপনার কষ্ট করে অর্জিত টাকার মূল্য সম্পর্কে তাদের শিক্ষা দিতে শুরু করতে পারেন । আপনি মাঝেমধ্যে আপনার শিশুকে হাতখরচ দিয়ে, তাকে টাকা জমানোর অভ্যাস করাতে পারেন ।
আপনি মাঝেমধ্যে আপনার শিশুকে হাতখরচ দিয়ে, তাকে টাকা জমানোর অভ্যাস করাতে পারেন
তাদের একটি বাজেট দিন এবং তাদের সঠিকভাবে খরচ করতে এবং টাকা জমাতে উৎসাহিত করুন । এইভাবে, আপনার বাচ্চারা টাকার মূল্য বুঝবে এবং সঞ্চয় করতে শুরু করবে ।
৮) সবার সঙ্গে ভাগ করে নিতে হয়
প্রো টিপঃ বাড়িতেই ভাগ করে নেওয়ায় উৎসাহিত করার মাধ্যমে শুরু করুন ।
বাচ্চাদের কিছু নির্দিষ্ট জিনিসের মূল্য জানতে হবে, কৃতজ্ঞ হতে শিখতে হবে এবং যাদের সামর্থ্য নেই তাদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার মতো বিনয়ী হতে হবে । এছাড়াও, তাদের আবেগ, অনুভূতি এবং গল্প ইত্যাদি অত্যাবশ্যক জিনিস ভাগ করে নেওয়া সম্পর্কেও শেখান । শিশুরা তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই প্রথমে ভাগ করে নিতে শিখবে- বাবা-মা, ঠাকুরদা-ঠাকুমা, ভাই-বোন, যৌথ পরিবার এবং এরপর অন্য মানুষজনদের সঙ্গে । ভাগ করে নেওয়ার এই মনোভাব তাকে একজন ভালো মানুষ হিসাবে গড়ে তুলবে ।
৯) জনসমক্ষে জঞ্জাল ছড়াবে না
প্রো টিপঃ নিজেদের আবর্জনা রাখার জন্য একটি প্ল্যাস্টিকের ব্যাগ সঙ্গে নিয়ে চলুন; এটি বাড়ি নিয়ে আসুন এবং জমে থাকা আবর্জনা ডাস্টবিনে ফেলে দিন ।
আপনার সন্তানকে সভ্য এবং দায়িত্ববান নাগরিক হিসাবে বড় করুন । তাদের বোঝান যে, জনসমক্ষে আবর্জনা ছড়ানো উচিত নয় এবং কাছাকাছি ডাস্টবিনে আবর্জনা ফেলতে হয় । তাদের এই সাধারণ অভ্যাসটি বিকাশ করতে সাহায্য করুন এবং সব জায়গায় এই অভ্যাস মেনে চলতে বলুন, কারণ এটা তাদের আরো ভালো মানুষ হয়ে উঠতে সাহায্য করবে । আবর্জনামুক্ত রাখাটাকে তার অভ্যাস করে তুলিন, এবং তাহলে আপনার সন্তান নিশ্চয়ই আপনার উদাহরণ অনুসরণ করবে । বাড়ির বাইরে জিনিসপত্র ফেলার জন্য সবসময় ডাস্টবিন ব্যবহার করুন । সমস্ত আবর্জনা রাখার জন্য আপনি বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় সঙ্গে একটি প্ল্যাস্টিক ব্যাগ নিয়ে যেতে পারেন; যেমন- খালি জলের বোতল, কাগজের ন্যাপকিন প্রভৃতি । রেস্টুরেন্টের টেবিলে রাখা অথবা রাস্তার পাশে ফেলে দেওয়া বা গাড়ির দরজার বাইরে ফেলে না দিয়ে এটি বাড়িতে নিয়ে এসে ডাস্টবিনে ফেলে দিন ।
১০) নম্র হওয়া উচিত
প্রো টিপঃ অন্য মানুষদের সঙ্গে তেমন আচরণ করুন, যেটা আপনি চান যে আপনার বাচ্চারা করুক- সম্মান দিয়ে এবং বিনীতভাবে ।
বিনীত বা নম্র হওয়াটা প্রত্যেকের দেওারা প্রশংসনীয় একটি মহৎ গুণ । আপনার বাচ্চাদের মানুষজনকে শ্রদ্ধা করতে শেখান, তা সে বড়ই হোক বা ছোট । তাদের কাছে ব্যাখ্যা করুন যে, যদি তারা এমন কারোর সম্মুখীন হয় যাদের তারা পছন্দ করে না, তখনও তাদের শালীনভাবে ও বিনীতভাবে আচরণ করতে হবে । সবার সঙ্গে শান্ত এবং আন্তরিক হতে হবে তাদের । এই গুণগুলি সারাজীবন তাদের সঙ্গে থাকবে, তাদের সবসময় সম্মানের চোখে দেখা হবে । প্রথমে আপনার সন্তানদের সম্মান করুন, তাহলেই আপনি লক্ষ্য করবেন যে তারা নিজেরাই এই অভ্যাস নিজেদের মধ্যে নিয়ে নেবে । বাড়ির কাজের লোকেদের সঙ্গে নম্র আচরণ করুন । শিশুরা যা দেখে তাই করে ।
১১) নিরপেক্ষ হতে হবে
প্রো টিপঃ বিভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে উতসাহ দিন ।
শিশুরা জন্ম থেকেই নিষ্পাপ ও নিরপেক্ষ হয়, এবং সমাজের সতর্কীকরণের একটি অংশ পার্থক্যবোধ । বাবা-মা হিসাবে আপনাকে আপনার শিশুদের বৈষম্যের প্রবণতা থেকে দূরে রাখতে হবে । তাদের নিরপেক্ষ হতে এবং সমস্ত মানুষের সঙ্গে সমানভাবে আচরণ করতে শেখান, সে ধনী হোক বা গরিব, বন্ধু হোক বা শত্রু । আপনি তাদের যেকোন ধর্ম ও বর্ণের শিশুদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে উতসাহ দিতে পারেন ।
১২) পশুপাখিদের ক্ষতি করো না
প্রো টিপঃ শিশুদের টিভিতে পশুপাখিদের শো এবং তথ্যচিত্র দেখান ।
শিশুরা সাধারণত পশুপাখিদের কাছাকাছি গেলে উত্তেজিত হয়ে পড়ে । কেউ কেউ আকৃষ্ট বোধ করে, কেউ কেউ ভয় পায়, কেউ আবার আত্মরক্ষার চেষ্টা করে, আবার কেউ শান্ত থাকে । তাদের এই শিক্ষা পাওয়া উচিত যে, পশুপাখিরাও জীবন্ত প্রাণী, তারা নিজস্ব উপায়ে যোগাযোগ করে এবং বন্ধুত্ব করে । ক্ষতিকর পশু এবং যারা ক্ষতিকর নয়, তাদের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে হবে তাদের । ক্ষতিকর পশুদের থেকে দূরে থাকতে এবং পোষা প্রাণীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে পরামর্শ দিন । তাদের টিভিতে পশুপাখিদের শো এবং ডকুমেন্টারি দেখানোর মাধ্যমে আপনি এটা করতে পারেন ।
১৩) নিয়মিত ব্যায়াম করা
প্রো টিপঃ আপনার সন্তানদের কিছু খেলাধুলার জন্য তালিকাভুক্ত করুন ।
সবাই মিলে একসাথে সময় কাটানোর জন্য আপনার নিজের এবং আপনার পরিবারের হাঁটা, জগিং, সাঁতার, ব্যায়াম অথবা বাড়িতেই যোগচর্চা প্রভৃতি শারীরিক ক্রিয়াকলাপের একটি রুটিন স্থির করুন । পুরো পরিবারের ক্ষেত্রেই এই ব্যায়াম দীর্ঘ সময়ের জন্য উপকারী হবে । শিশুদের রুটিনে এগুলি দ্রুত শুরু করলে এগুলি তাদের সক্রিয়, ফিট এবং নমনীয় রাখবে । এটি আপনার শিশুদের সুস্থ জীবনযাপন করতে সহায়তা করবে । সঙ্গীত যোগ করে আপনাদের ওয়ার্কআউটকে আরও উত্তেজক করুন । এটা করার সবথেকে ভালো উপায় হয়, আপনার শিশুকে কিছু খেলার তালিকায় নথিভুক্ত করান । এটা তাদের জীবনের মূল্যবান শিক্ষাও শেখাবে, এটাই খেলাধুলা করার সবথেকে বড় বিষয় ।
হাঁটা, জগিং, সাঁতার, ব্যায়াম অথবা বাড়িতেই যোগচর্চা প্রভৃতি শারীরিক ক্রিয়াকলাপের একটি রুটিন স্থির করুন
১৪) কাউকে সমালোচনা বা ঠাট্টা করবেন না
প্রো টিপঃ সবসময় গঠনমূলকভাবে ভুলত্রুটি নির্দেশ করুন ।
সমালোচনা ছোট বাচ্চাদের গড়তেও পারে বা ভাঙতেও পারে । অল্প বয়সে, সবাই সমালোচনামূলক মন্তব্যকে সঠিকভাবে গ্রহণ করতে সমর্থ হয় না । বাবা-মায়েদের তাদের সন্তানদের উপর নজর রাখতে এবং তাদের মিথস্ক্রিয়া ও অন্যান্য পদ্ধতিতে নির্দেশনা করতে হবে । শিশুদের বোঝাতে হবে যে, সমালোচনা অন্যদের কষ্ট দিতে পারে, সেই কারণে অন্যদের সম্পর্কে খারাপ মন্তব্য করা তাদের উচিত নয় । শুধু মাত্র মজা পাওয়ার জন্য, অযথা এমন কাউকে উত্যক্ত করা বা ঠাট্টা করা, যাকে আপনি খুব কমই জানেন, ভুল কাজ, এটি কখনই গ্রহণযোগ্য নয় ।
১৫) মহৎ হওয়া
প্রো টিপঃ বাচ্চাদের সাথে মিথ্যা কথা বলবেন না । অপরকে আঘাত না দেবার জন্য যে সামান্য মিথ্যা কথা, তাও মিথ্যাই । সব সময়ে যতটা সম্ভব সৎ হওয়ার চেষ্টা করুন ।
সততা একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ গুণ এবং শৈশব থেকে বাচ্চাদের মধ্যে প্রয়োগ করা প্রয়োজন । একজন বাবা-মা হওয়ার কারণে, আপনি আপনার সন্তানদের জন্য রোল মডেল । আপনার কাজকর্ম এবং কথা তাদের উপর সবথেকে বেশি প্রভাব ফেলে, সেটা ইতিবাচকও হতে পারে, আবার নেতিবাচকও হতে পারে । সব সময়ে সৎ হয়ে থাকুন, বিশেষ করে বাচ্চাদের উপস্থিতিতে । সব পরিস্থিতিতে তাদের সত্যি কথা বলতে অনুপ্রাণিত করুন ।
১৬) ধৈর্য এবং অধ্যবসায়
প্রো টিপঃ বাগান পরিচর্যা বা রান্না শুরু করতে তাদের উৎসাহিত করুন ।
বলা হয় ‘ধৈর্য হল একটি বিশুদ্ধ গুণ’, এটি সঠিক বলা হয়, কারণ যারা ধৈর্যশীল হয়, তারা শান্তিতে থাকতে পারে এবং আজকের চাপপূর্ণ জগতে সকলেই শান্তি চায় । আপনার শিশুর জীবনের প্রাথমিক পর্যায়ে তার মধ্যে ধৈর্যশীল হওয়ার বৈশিষ্ট্য বজায় রাখুন, যাতে তারা প্রশান্ত এবং শান্তিপূর্ণ হতে পারে । তাদের আরাম করা, শান্তি রাখতে শেখান এবং তাদের নিজস্ব গতিভঙ্গিতে কিছু নির্দিষ্ট কিছু ঘটতে অথবা তাদের পালার জন্য অপেক্ষা করুন । তাদের নিশ্চিত করুন যে, ধৈর্য কোন প্রতিকূল পরিস্থিতির সাথে মোকাবিলা করে বা সেই পরিস্থিতি থেকে বের করে দেয় । বাগান পরিচর্যা অথবা রান্নার মতো কাজকর্মে অংশগ্রহণ করার জন্য তাদের উৎসাহ দিন, যেসব কাজে ফলাফল তাৎক্ষণিক নয়, ধৈর্যের প্রয়োজন হয় ।
১৭) কৃতজ্ঞতা প্রদান করা
প্রো টিপঃ দিনে দুইবার প্রার্থনা করার অভ্যাস গড়ে তুলুন ।
আপনার শিশুদের মধ্যে নম্র মনোভাব গড়ে তুলতে উৎসাহিত করুন এবং বড়-ছোট সব কিছুর জন্য কৃতজ্ঞ হতে শেখান । সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর এবং রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে, দিনে দুইবার প্রার্থনা করার অভ্যাস গড়ে তুলুন । এটি আপনি নিজেও অনুসরণ করুন এবং বাচ্চারা আপনার কাছ থেকেই শিখবে ।
১৮) হাত ধোয়া
প্রো টিপঃ নোংরা হাত থেকে হতে পারে এমন জীবাণু ও রোগগুলি সম্পর্কে তাদের শেখান ।
নোংরা হাত থেকে হতে পারে এমন জীবাণু ও রোগগুলি সম্পর্কে তাদের শেখান
কিন্ডারগার্টেন থেকে ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা দেওয়া সবচেয়ে সাধারণ শিষ্টাচার হল খাওয়ার আগে ও পরে হাত ধোয়া । তাদের জানতে দিন যে, হাত ধোয়া ফ্লু, ঠান্ডা এবং অন্যান্য সংক্রমণের মতো সাধারণ রোগ প্রতিরোধ করতে পারে । আপনাকে তাদের নিম্নলিখিত প্রাথমিক নিয়মগুলি শেখাতে হবেঃ
খাওয়ার আগে এবং পরে অথবা মাটি বা বালিতে খেলার পর তোমার হাত ধোবে ।
হাত মোছার জন্য পরিষ্কার শুকনো তোয়ালে অথবা টিস্যু ব্যবহার করো ।
অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল হ্যান্ড ওয়াস ব্যবহার করো ।
মুখের ভিতরের স্বাস্থ্যবিধি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং শৈশবের প্রথম দিন থেকেই এই বিষয়ে যত্ন নিতে হবে । যে অভ্যাস প্রথমদিকে গড়ে তোলা হয়, তা দীর্ঘদিন স্থায়ী হয় । দাঁত মাজার ক্ষেত্রে শিশুরা প্রায়শই অলস হয়ে যায়, এই রুটিন কাজকে হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয় । পুরষ্কার হিসাবে, আপনি মাঝে মাঝে তাদের প্রিয় মিষ্টি তাদের দিতে পারেন । দাঁত মাজার সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে তাদের শিক্ষা দিনঃ
প্রতিদিন এবং দিনে দু’বার দাঁত মাজো
খাবার পর কুলকুচি করো- এটি ক্যাভেটি এবং ,মুখে দুর্গন্ধ এড়িয়ে যেতে সাহায্য করবে
উপযুক্ত সময়ে দাঁতে ফ্লস করো
জিভছোলা দিয়ে জিভ পরিষ্কার করো
দাঁত মাজার ব্রাশ কারো সাথে ভাগ করো না ।
২০) কান পরিষ্কার করা
প্রো টিপঃ স্নান করে গা মোছার একটি অংশ হিসাবে এটা করুন ।
আপনার শরীরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এক অঙ্গ হল কান । আপনার কানের পরিচ্ছন্নতাকে অবহেলা অনেক অস্বস্তি এমনকি সংক্রমণের কারণ হতে পারে । শিশুর ক্ষেত্রে নিয়মিত কান পরিষ্কার করতে এবং অতিরিক্ত যত্ন নিতে হবে । কানের বাইরের অংশ প্রতিদিন জল ও শুকনো তোয়ালে দিয়ে পরিষ্কার করা উচিত । শিশু বড় হলে, আপনি তাদের নিজে নিজে কান পরিষ্কার করা শেখাতে পারেন ।
২১) রোজ স্নান করা
প্রো টিপঃ গ্রীষ্মকালে দিনে দু’বার করে স্নান করা উচিত ।
স্নান করা একটি সাধারণ প্রয়োজনীয়তা এবং সকল বয়সের সমস্ত মানুষদের জন্যই এটা সুপারিশ করা হয় । ঘুম থেকে ওঠার পর সকালে প্রথমেই এই জিনিসটি করা প্রয়োজন । গ্রীষ্মকালে আপনি আপনার বাচ্চাকে দিনে দু’বার স্নান করাতে পারেন । বিকল্পভাবে, বাইরে খেলাধুলা করে বাড়ি ফেরার পর আপনার বাচ্চাদের স্নান করা উচিত । স্নান করলে চামড়া আবার নরম ও তরুন হয় এবং তাদের তাজা অনুভব করায়, সারা দিনের জন্য প্রস্তুত করে, পাশাপাশি রাতে ভালো ঘুম নিয়ে আসে ।
স্নান করলে চামড়া আবার নরম ও তরুন হয় এবং তাদের তাজা অনুভব করায়, সারা দিনের জন্য প্রস্তুত করে
২২) চুল পরিষ্কার করা
প্রো টিপঃ শিশুদের সঠিকভাবে চুল আঁচড়ানো শেখান ।
বাচ্চাদের তাদের চুল পরিষ্কার রাখা উচিত । বাইরে ঘুরতে গেলে অথবা খেললে প্রায়ি স্কাল্প এবং চুল নোংরা হয়ে যায় । তাদের প্রায়ই চুল ধোয়া উচিত, অন্তত দুই তিন দিনে একবার । এটা তাদের নিরাপদ এবং উকুনের সংক্রমণ, খুশকি এবং অতিরিক্ত চুল পড়া দূরে রাখবে । চুল ধোয়ার আগে তাদের স্কাল্পে তেল দেওয়াটা অভ্যাস তৈরি করে ফেলুন । এছাড়াও, নিশ্চিত করুন যে, আপনি এমন একটি চিরুনি ব্যবহার করেন, যেটা আঁচড়ানোর সময় স্কাল্পকে স্পর্শ করে । এটা স্কাল্পে রক্তসঞ্চালন বাড়ায় এবং সুস্থ চুল বৃদ্ধিতে ত্বরান্বিত করে ।
২৩) নখ ছোতো রাখা
প্রো টিপঃ কীভাবে তাদের নখ থেকে শরীরে জীবাণু প্রবেশ করে, তা তাদের ব্যাখ্যা করুন ।
বাচ্চাদের প্রায়ই তাদের মুখের মধ্যে তাদের আঙ্গুল রাখা ঝোঁক থাকে, তাই নখ পরিষ্কার এবং ময়লা থেকে মুক্ত রাখা প্রয়োজন । শিশুরা বড় হয়ে গেলে, আপনি তাদের নখ ছোট এবং পরিষ্কার রাখার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে শিক্ষা দিতে পারেন । কীভাবে তাদের নখ থেকে চুলকানোর মাধ্যমে অথবা মুখের মাধ্যমে জীবাণু শরীরের ভিতরে প্রবেশ করতে পারে, যেগুলি তাদের অসুস্থ করে তোলে, তা তাদের কাছে ব্যাখ্যা করতে পারেন ।
যখন আপনার বাচ্চারা স্কুলে যাওয়ার মতো যথেষ্ট বড় হয়ে যায়, আপনাকে তাদের ভালো স্বাস্থ্য এবং ভালো অভ্যাসের মূল্য সম্পর্কে শিক্ষা দিতে হবে । উপরে তালিকাভুক্ত স্বাস্থ্যকর অভ্যাসের পাশাপাশি, এখানে স্কুলে যাওয়া বাচ্চাদের অনুসরণের জন্য কিছু প্রয়োজনীয় বিষয় রয়েছে:
২৪) “দয়া করে”, “ধন্যবাদ” এবং “দুঃখিত”
প্রো টিপঃ আপনার বাচ্চাদের সঙ্গে এবং সামনে যত ঘনঘন পারবেন এই শব্দগুলি ব্যবহার করুন ।
আপনাকে আপনার বাচ্চাদের তিনটি যাদুকর শব্দ “দয়া করে”, “ধন্যবাদ” এবং “দুঃখিত” শেখানো উচিত, যা তাদের অনেক সমস্যা সহজে মোকাবেলা করতে সহায়তা করবে । এই সোনালী শব্দগুলি ব্যবহার করার অভ্যাস একজনকে সমাজে সম্মানিত এবং প্রশংসিত করে তোলে । আপনার সন্তানরা নম্র এবং উষ্ণ হৃদয়গ্রাহী মানুষ হিসাবে গন্য হবে । আপনার বাচ্চাদের সাথে এই শব্দগুলি ব্যবহার করা অনুশীলন করুন এবং শীঘ্রই তারা এই অভিবাদনগুলি ঘনঘন ব্যবহার করা শুরু করবে ।
২৫) অন্যদের সাহায্য করা
প্রো টিপঃ বাচ্চাদের প্রত্যেকদিন একজন করে মানুষকে সাহায্য করতে উৎসাহ দিন ।
আপনার বাচ্চাকে এমন ভাবে বড় করুন, যাতে তারা একটি উপকারী প্রকৃতির মানুষ হয়ে ওঠে । তাদের নম্রতা এবং উদারতার পথ প্রদর্শন করুন । যখন এবং যেখানেই প্রয়োজন হবে, তাদের সাহায্যের হাত বাড়াতে উত্সাহিত করুন । আপনার অংশের কাজ করুন; বন্ধুই হোক বা অচেনা ব্যক্তি, আপনার বাচ্চাদের উপস্থিতিতে মানুষদের সাহায্য করুন, কিন্তু একই সময়ে, তাদের অপরিচিতদের সাথে সতর্ক হওয়ার জন্য সাবধান করুন ।
যখন এবং যেখানেই প্রয়োজন হবে, তাদের সাহায্যের হাত বাড়াতে উত্সাহিত করুন
২৬) একটি স্বাস্থ্যকর এবং ইতিবাচক ব্যক্তিত্ব থাকা
প্রো টিপঃ আশাবাদ স্থাপন করুন ।
বাচ্চারা খুব সংবেদনশীল এবং সহজে ছোট জিনিসে অথবা যখন কিছু তাদের অনুযায়ী না হয়, তারা নিরুৎসাহিত হয়ে পড়ে । তাদের সাথে কী ঘটছে এবং তারা কি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছে তা সম্পর্কে অবগত হওয়ার জন্য, আপনার তাদের সাথে জড়িত হওয়ার এবং তাদের সঙ্গে কথা বলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যাতে তারা কোনও নেতিবাচক স্ব-কথোপকথনে লিপ্ত না হয় । মিথ্যা প্রশংসা এড়িয়ে চলুন; পরিবর্তে, তাদের কৃতিত্ব এবং প্রচেষ্টার সময়মত স্বীকৃতি দিন । আপনি বাচ্চাদের তাদের ক্ষমতা এবং অনন্য গুণাবলী সম্পর্কে আশ্বাস দিয়ে তাদের আত্মসম্মানের বিকাশ ঘটাতে পারেন এবং এই বিষয়ের উপর জোর দিন যে, যাই হোক না কেন তাদের ভালোবাসা হবে । যৌক্তিক এবং ব্যবহারিক হতে তাদের চিন্তাভাবনা বিকাশ করার চেষ্টা করুন, যাতে তাদের একটি ইতিবাচক চিন্তাভাবনা তৈরি হয় এবং তাদের জীবন জুড়ে চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার সাথে সাথে সেগুলি অনুযায়ী ভাবতে পারে ।
২৭) বন্ধুদের সাথে সময় কাটানো
প্রো টিপঃ সপ্তাহান্তে খেলার জন্য প্লে-ডেটের ব্যবস্থা করুন ।
বলা হয় যে, স্কুলে তৈরি হওয়া বন্ধুত্ব দীর্ঘ সময়ের জন্য থাকতে পারে, এমনকি সারা জীবনের জন্য । কারণ শিশুদের মন নির্দোষ হয়; তারা কোন স্বার্থপর উদ্দেশ্য ছাড়াই বন্ধুত্ব করে । অল্প বয়সে, আপনার সন্তানদের সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বন্ধুরা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে । শিশুরা মূল্যবান জীবন দক্ষতা শিখতে পারে; যেমন- যোগাযোগ, সামাজিকীকরণ, সহযোগিতা, সমস্যা সমাধান, এবং বন্ধুদের সাথে থাকা ও একসাথে কাজ করা ।
কিশোর এবং প্রাপ্তবয়স্ক সময়ে, ভাল বন্ধুরা আপনার বাচ্চাদের সমর্থন সংগঠনের অংশ হয়ে ওঠে । আপনার সন্তানদের বন্ধুত্ব করতে এবং তাদের সঙ্গে সময় কাটাতে ও আরাম করতে উত্সাহিত করুন ।
২৮) ব্রেকফাস্ট এড়িয়ে যাবে না
প্রো টিপঃ তাদের একটি পুষ্টিকর, স্বাস্থ্যকর দিনের শুরু করা নিশ্চিত করুন ।
ব্রেকফাস্ট সব বয়সের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার । এটি বিশেষ করে শিশুদের এবং স্কুলে যাওয়া বাচ্চাদের জন্য বাধ্যতামূলক, কারণ এটি মস্তিষ্ক, বিপাক এবং শরীরের অন্যান্য কাজগুলিকে চালিত করে এবং সারাদিনের জন্য শক্তি সরবরাহ করে । আপনি আপনার বাচ্চাদের উচ্চ-ফাইবারযুক্ত সিরিয়াল তাদের ব্রেকফাস্টে দিতে পারেন, কারণ এটি ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাসে সহায়তা করে । ব্রেকফাস্ট করার অভ্যাস তাদের প্রাপ্তবয়স্ক সময়ে উপকারী প্রমাণিত হবে । ব্রেকফাস্ট না করার ক্ষতিকারক পরিণতিগুলি তাদের জানতে দিন, এবং এটাও বোঝান যে, প্রায়ই সকালের খাওয়া না খেলে মোটা হয়ে যেতে পারে ।
একটি পুষ্টিকর, স্বাস্থ্যকর দিনের শুরু করা নিশ্চিত করুন
২৯) টেবিলের (খাবার সময়ের) রীতিনীতি
প্রো টিপঃ দ্রুত শুরু করুন এবং তাদের স্বাধীনতাকে উৎসাহিত করুন ।
নির্দিষ্ট বয়সের পরে, শিশুরা খাবার খাওয়ার বিষয়ে নিজেরাই জোর দেয় । যদিও তারা কাঁটা-চামচ ধরে রাখতে পারে, তবুও তারা ঠিকমত খেতে ব্যর্থ হয় এবং উল্টে জগাখিচুড়ি তৈরি করে । সঠিক রীতিনীতি মেনে নিজে নিজে খাওয়ার জন্য তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া দরকার । আপনি তাদের সঙ্গে বড়দের মতো আচরণ করতে পারেন এবং উপযুক্ত ভাবে খাবার খাওয়ার শিষ্টাচার দেখানো শুরু করতে পারেন ।
৩০) নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ জড়িত হওয়া
প্রো টিপঃ দৈনিক দীর্ঘ ৪০ মিনিট শারীরিক কার্যকলাপের জন্য রাখুন ।
বাচ্চাদের শারীরিকভাবে সক্রিয় করা উচিত তাদের আকর্ষণীয় লাগে এমন কার্যকলাপে যুক্ত রাখা উচিত, খেলাধুলা করা, বাদ্যযন্ত্র বাজানো, সাঁতার বা জিমন্যাস্টিক্স খেলা হতে পারে । এই অভ্যাস আপনার সন্তানের বিভিন্ন দিকে বিকাশকে উন্নত করবে । বাচ্চারা সুস্থ এবং সতর্ক থাকবে; তারা দৃঢ় হতে শিখবে এবং সম্ভবত পরবর্তীকালে প্রাপ্তবয়স্ক সময়েও এই কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারে । যদি আপনার সন্তানরা খেলাধুলা বা জিম ক্লাসে ভীত হয় বা আগ্রহী না হয়, তবে তাদের নতুন কিছু চেষ্টা করার এবং তাদেরকে অন্যান্য ক্রিয়াকলাপগুলিতে উৎসাহিত রাখুন । শীঘ্রই বা পরে, তারা স্পষ্টভাবে চ্যালেঞ্জিং, আনন্দদায়ক, এবং মজার কিছু খুঁজে পাবে ।
৩১) প্রত্যেকদিন কিছু (গল্প বা বই) পড়া উচিত
প্রো টিপঃ এটি আপনার বাচ্চাদের ঘুমনোর সময়কার রুটিনের একটি অংশ করে তুলতে হবে ।
আপনার বাচ্চাদের পড়াশোনার প্রতি ভালোবাসা গড়ে তোলার সর্বোত্তম উপায় হল এটিকে আপনার বাচ্চাদের খেলার সময় এবং ঘুমানোর সময়ের রুটিন করে তোলা । এমন একটি বই নির্বাচন করুন, যার কারণে আপনার সন্তানদের কাছে পড়াশোনা একটি উপহারের মতো লাগে । এটিকে একটি দৈনিক অভ্যাস হসাবে তৈরি করুন এবং বজায় রাখুন, এটি শিশুদের আত্মসম্মানের বিকাশ, তাদের পড়ার দক্ষতা বৃদ্ধি এবং তাদের কল্পনা, শব্দভান্ডার এবং সৃজনশীলতা বিকাশে সহায়তা করবে । এটা বাবা-মায়ের সঙ্গে সম্পর্ক এবং যোগাযোগ উন্নতিতে উপকারী প্রমাণিত হবে ।
আপনার বাচ্চাদের খেলার সময় এবং ঘুমানোর সময়ের রুটিন করে তুলুন
৩২) সময়ের মূল্য দেওয়া
প্রো টিপঃ সময়নিষ্ঠা বিষয়ে উৎসাহিত করুন ।
আমরা “সময়ই হল অর্থ” কথাটি সম্পর্কে সচেতন এবং টাকাপয়সার মতো সময়েরও মূল্য দিতে জানি । শিশুদের সময়ের যথাযথ ব্যবহার করা শেখানো দরকার, সময়মত প্রস্তুত হওয়া, দৈনিক সময়সূচী অনুসরণ করা এবং সময়নিষ্ঠ হওয়া শেখানো উচিত ।
তাদের সময়মতো স্কুলে যাওয়ার প্রয়োজন বুঝতে হবে, কারণ তারা সময়নিষ্ঠ না হওয়ার কারণে শাস্তি পেতে পারে । একটি পরিবার হিসাবে, আপনাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠান বা পার্টিতে উপস্থিত থাকতে হতে পারে । প্রতিটি অনুষ্ঠানে আপনি সময়ের আগে বা সময়মত পৌঁছান, কারণ সন্তানরা বড় হওয়ার পর একই অভ্যাস গড়ে তুলবে ।
৩৩) ঠিক সময়ে ঘুমনো
প্রো টিপঃ নিয়মিত ঘুমোতে যাওয়ার একটি রুটিন তৈরি করুন ।
ঘুম সদ্যজাত শিশুর পাশাপাশি উন্নয়নশীল শিশুর জন্যও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ । আপনার শিশুদের শৈশবকালেই প্রাথমিকভাবে “তাড়াতাড়ি ঘুমোতে যাওয়া, তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠা”-কে রুটিনে উত্থাপন করতে হবে । স্কুলে যাওয়া বাচ্চাদের প্রতিদিন সক্রিয় এবং অনলস হতে হবে, যার জন্য তাদের যথেষ্ট ঘুম প্রয়োজন । ঘুম সারাদিনে হারিয়ে যাওয়া শরীরের সব শক্তি ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে । তাড়াতাড়ি ঘুমানো আপনার বাচ্চাদের যথেষ্ট বিশ্রাম নিতে সহায়তা করবে, যাতে বাচ্চারা পরের দিন তাজা এবং সক্রিয় বোধ করে ।
ঘুমোতে যাওয়া, তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠা”-কে রুটিন করে তুলুন
আপনার সন্তানদের তাড়াতাড়ি ঘুমাতে দিন এবং তাদের নিজের পাশে ঘুমোতে দিন । আপনার সাথে ঘনিষ্ঠ থাকার ফলে আপনার সন্তানরা নিরাপদ বোধ করবে এবং একটি ভালো ঘুম পাবে ।
প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যান; এটি শিশুদের জন্য একটি প্যাটার্ন সেট করতে সাহায্য করবে, এবং তারা নিজেই ঘুমোতে শিখবে ।
আপনার বাচ্চাদের একটি নির্দিষ্ট প্রয়োজনীয় সময়ের থেকে বেশি সময় ঘুমোতে দেওয়া এড়িয়ে চলুন । প্রয়োজন হলে, বিকেলের সময় বাচ্চারা অল্প সময়ের জন্য ঘুমিয়ে নিতে পারে ।
৩৪) পরাজয় গ্রহণ করা
প্রো টিপঃ তাদের ব্যর্থতায় তাদের সমর্থন করুন ।
শিশু ব্যর্থ হলে বিরক্ত বোধ করতে পারে । বাবা-মা হিসাবে তাদের সমর্থন করা এবং অনুপ্রাণিত করা আপনাদের দায়িত্ব, যাতে তারা ইতিবাচকভাবে পরাজয়কে মেনে নেয় এবং পরের বার তাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করে । তাদের জীবনযাত্রার উন্নতি ও অবনতি সম্পর্কে অবগত থাকা দরকার এবং বুঝতে হবে যে, কোন পরাজয়ই স্থায়ী নয় । জেতা বা হারাই সবকিছু নয় । তুমি যে প্রচেষ্টাটি করেছো এবং যে অগ্রগতি অর্জন করেছো তাও গুরুত্বপূর্ণ ।
৩৫) কঠিন পরিশ্রম করা
প্রো টিপঃ আপনার বাচ্চাদের শেখান যে, জীবনে কোন শর্টকাট হয় না ।
কঠোর পরিশ্রমের উপর গুরুত্ব দিয়ে আপনার বাচ্চাদের আলোকিত করুন । যাই হোক না কেন তারা তাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করবে, তা সে পড়া, লেখা, বা কোনো গঠনমূলক কাজ যাই হোক না কেন, এটার অভ্যাস করান । তারা এই সত্যটি শিখতে পারে যে, সফলতা শুধুমাত্র সৌভাগ্য থেকেই হয় না; এতে দৃঢ় সংকল্প এবং কঠোর পরিশ্রম প্রয়োজন । আপনি জীবিকা উপার্জন করতে কতটা কঠিন পরিশ্রম করেন, তা ব্যাখ্যা করার মাধ্যমে আপনি আপনার বাচ্চাদের কাছে উদাহরণ হতে পারেন ।
আপনার বাচ্চাদের শেখান যে, জীবনে কোন শর্টকাট হয় না
৩৬) ধূমপান, মদ্যপান এবং ড্রাগের নেশা কখনই না
প্রো টিপঃ নিজে এইসব অভ্যাস ত্যাগ করুন এবং আপনার সন্তান সেটা অনুসরণ করবে ।
মদ্যপান, ধূমপান ও মাদকাসক্তির মতো অভ্যাসগুলি মূলত পারিবারিক পটভূমিতে এবং বৃদ্ধির উপর নির্ভর করে ।অবহেলা এবং যোগাযোগের অভাবের কারণে তারা আপনার বাচ্চাদের আঘাত করে এবং বহিরাগত প্রভাব তাদের উপর পড়তে শুরু করে, নিশ্চিত করুন যে আপনি তাদের জীবনে সম্পূর্ণরূপে জড়িত, তাদের প্রতিটি স্তরে তাদের সমর্থন করেন । আপনার বাচ্চাদের এ ধরনের অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস সম্পর্কে শিক্ষা দিতে হবে এবং তাদেরকে সব পরিস্থিতিতেই এইসব থেকে দূরে রাখতে হবে । এছাড়াও, বন্ধুদের প্রভাবে পড়ে যাতে তারা এইসব না করে, সেই বিসয়েও বাচ্চাদের সতর্ক করতে হবে । বাবা-মা হিসাবে, আপনি প্রথমত মদ্যপান ও ধূমপান না করেই সাহায্য করতে পারেন ।
আপনি আপনার সন্তানদের শৃঙ্খলার শিক্ষা দিতে পারেন, তবে আপনার বাচ্চা এটি প্রয়োগ করে কিনা , তা দৈনন্দিন জীবনে বাবা-মা হিসাবে আপনি কতটা ভাল তার উপর নির্ভর করবে । তাদের সঠিক পথ দেখান এবং ইতিবাচক শক্তিবৃদ্ধি ও প্রশংসা সহকারে এটি বজায় রাখার জন্য উত্সাহিত করুন ।
পরকীয়া বা অবৈধ সম্পর্ক- বাঙালির মনে এক আশ্চর্য অনুভূতি জাগানো সম্পর্কের নাম। পরকীয়া শব্দটি শুনলেই মনটা এক অন্যরকম অনুভূতিতে জেগে ওঠে। পরকীয়া সম্পর্ক কিন্তু নতুন কোনো বিষয় নয়! বর্তমান বিশ্বের পাশাপাশি আমাদের দেশেও এখন এর প্রবণতা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। পরকীয়ার গোপন বাসনা হৃদয়ে পোষণ […]
পরকীয়া বা অবৈধ সম্পর্ক- বাঙালির মনে এক আশ্চর্য অনুভূতি জাগানো সম্পর্কের নাম। পরকীয়া শব্দটি শুনলেই মনটা এক অন্যরকম অনুভূতিতে জেগে ওঠে। পরকীয়া সম্পর্ক কিন্তু নতুন কোনো বিষয় নয়! বর্তমান বিশ্বের পাশাপাশি আমাদের দেশেও এখন এর প্রবণতা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। পরকীয়ার গোপন বাসনা হৃদয়ে পোষণ করে না, এমন মানুষ হয়তো বিরল। কিন্তু কেন এই পরকীয়া সম্পর্ক? কেন এটি গড়ে উঠছে? এটাকে রোধ করার উপায়ই বা কি?
কেন পরকীয়া প্রেম দিন দিন বাড়ছে?
পরকীয়া প্রেম হচ্ছে, বিবাহিত জীবন থাকা স্বত্ত্বেও অন্য কোনো নারী বা পুরুষের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত প্রেম, যৌন সম্পর্ক ও যৌন কর্মকাণ্ড। বেশির ভাগ পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে উঠে নারী বা পুরুষের শারীরিক ও মানসিক চাহিদা মেটানোর জন্য। এই পরকীয়ার ছোবলে একটি সুন্দর সংসার তছনছ হয়ে যাচ্ছে নিমষেই, এর ফলাফল, কোন সন্তান হারায় তার প্রিয় মা/বাবাকে, কোন স্বামী হারায় তার স্ত্রীকে এবং কোন মা হারায় তার সন্তানকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা একটি পরিবার। আমাদের সমাজ এবং ধর্মেও এই পরকীয়া সম্পর্ককে অবৈধ সম্পর্ক হিসেবে বলা হয়েছে।
পরকীয়ার কারণ কম বয়সে বিয়ে
এটি সাধারণত লাভ ম্যারেজের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে।দেখা যায়, পরিবারের মতামতকে উপেক্ষা করে শুধুমাত্র আবেগের বশবর্তী হয়ে অনেক ছেলে-মেয়ে কম বয়সেই বিয়ে করে ফেলে। এই সময়ে ছেলে বা মেয়ের মধ্যে যুক্তির চেয়ে আবেগই বড় হয়ে দেখা দেয়। যার ফলে বিয়ের কিছুদিন পরই স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিভিন্ন রকমের মতবিরোধ সৃষ্টি হয় এবং এই সময়েই সেই তারা পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে।
বেশিরভাগ মানুষই লাভ ম্যারেজের সম্পর্ক বেশিদিন আঁকড়ে ধরে রাখতে পারে না, খুবই সামান্য বিষয়ে দাম্পত্য কলহ দেখা দিলেই স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের প্রতি মনোযোগ বা আকর্ষণ হারিয়ে ফেলে। দাম্পত্য সম্পর্ক সুন্দর না হলে একই ছাদের তলায় থাকলেও একসময় মন হাঁপিয়ে ওঠে যার ফলাফল হয় পরকীয়া।
পরকীয়ার কারণ দৈহিক চাহিদা
বিবাহিত জীবনে শারীরীক চাহিদা প্রধান। শারীরিক সম্পর্ক মানুষের একটি স্বাভাবিক চাহিদা। কিন্তু সবসময় প্রত্যাশা অনুযায়ী সবার শারীরিক সক্ষমতা এক থাকে না। ফলে সেখানে স্বামী-স্ত্রীর যৌন সম্পর্কে অতৃপ্তি থাকে। আবার যদি স্বামী ও স্ত্রী সমবয়সী হয় অথবা স্বামীর থেকে স্ত্রী যদি বয়সে বড় হয় তখনও সমস্যা দেখা দেয়। এ কারণে স্বামী বা স্ত্রী বাইরের অন্য কারো সাথে পরকীয়া তে আসক্ত হয়ে পড়ে।
সঙ্গীর প্রতি আকর্ষণ হারিয়ে ফেলা
বিয়ের পর প্রত্যেকেই সঙ্গীর কাছ থেকে অনেক কিছু আশা করেন। অনেকেই এমন অনেক আশা নিয়ে বিয়ে করেন যা দাম্পত্য জীবনে পূরণ হয় না। অনেক পুরুষ নিজের জীবনে একজন নারী থাকা সত্ত্বেও অন্য নারীর মধ্যে নতুন স্বাদের সন্ধান করে। তাছাড়া অনেক সময় সঙ্গীর উদাসীনতার কারণে পরকীয়া তে আগ্রহ বাড়ে।
অনেকই আছেন যারা একঘেয়ে জীবন-যাপন করতে পছন্দ করে না। প্রতিদিন একই চেহারা, একই আচরণ দেখে তারা একসময় বিরক্তবোধ করেন, অনেকেই নিজের সঙ্গীর প্রতি আকর্ষণ হারিয়ে ফেলেন। অনেক স্বামীই চাকরিসূত্রে স্ত্রীর থেকে দূরে থাকেন। তখন শুধু যৌনসম্পর্ক নয় বরং তাদের মধ্যে শুধু যোগাযোগটাও ঠিক মত হয়ে ওঠে না। আবার সন্তান হওয়ার পর অনেক মেয়ে মোটা হয়ে যায়। এতে স্ত্রীর প্রতি আগ্রহ কমে যেতে পারে অনেক স্বামীর। সংসার নামক বন্দিজীবনে একটুখানি বৈচিত্র্যের ছোঁয়া পেতে তখনই তারা পরকীয়া এর পথে পা বাড়ান।
পরকীয়া সম্পর্কের পেছনে মানসিক কারণ
প্রিয় মানুষ প্রচণ্ড কষ্ট দিলে মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়ে। এই খারাপ অবস্থায় তারা একটা সাহায্যের হাতের সন্ধান করে হয়ে পড়ে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই সাহায্যের হাতটা আসে তৃতীয় পক্ষ থেকে যে কারণে সঙ্গীর অগোচরেই পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে যায় আরেকজন। কখনো দেখা যায় স্বামী বা স্ত্রী রেগে গিয়ে জেদের বশে অথবা শুধু সঙ্গীকে কষ্ট দেওয়ার উদ্দেশ্যে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। মনোবিদরা বলেন, যাদের মধ্যে বাইপোলার মুড ডিজঅর্ডার আছে, তাদের পরকীয়া সম্পর্কে জড়ানোর প্রবণতা সবচেয়ে বেশী দেখা যায় কারণ তারা কোনো কিছুর মধ্যে স্থিরতা খুঁজে পায় না।
পরকীয়ার কারণ দাম্পত্য কলহ
পরকীয়া সম্পর্কের ক্ষেত্রে সংসারে ঝগড়া-বিবাদ অন্যতম। সংসারজীবন সব সময় মধুর হয় না। দাম্পত্য জীবনে ছোট ছোট ভুল বোঝাবুঝি হয়েই থাকে, কিন্তু সেজন্যে ভালোবাসা কমিয়ে দেওয়া বা কেয়ার না করা মোটেও ভাল কথা না। সামান্য ঝগড়া থেকে শুরু করে মাঝে মধ্যে যখন গায়ে হাত তোলার ঘটনা ঘটে তখনই সম্পর্কের অবনতি ঘটে। মানসিক শান্তির জন্য অনেক সময় স্বামী বা স্ত্রী চেষ্টা করেন অন্য পুরুষ বা নারীকে নিজের প্রতি আকর্ষণ করানোর। পরকীয়া প্রেমের সবচেয়ে বড় সুবিধাটা হলো সেখানে কোনো দায় দায়িত্ব থাকে না বা কোনও কমিটমেন্ট করতে হয় না।
যথেষ্ট সময় না দেওয়া
নিজের পরিবারের অর্থনৈতিক চাকা সচল রাখতে পরিবারের একজন বা দুজনেই ছোটাছুটি করেন। দিনশেষে দেখা যায় অর্থনৈতিক চাকা সচল রাখতে গিয়ে নিজেদেরকে সময় দিতে পারেন না তারা। পর্যাপ্ত সময় না পাওয়ায় দাম্পত্য জীবনে অনেক অশান্তি সৃষ্টি হয়। আর আমাদের দেশে তো একটি কথা ব্যাপক ভাবে প্রচলিত আছেই- স্বামী বিদেশে থাকলে স্ত্রীরা পরকিয়া করে। কথাটি পুরোপুরি সত্য না হলেও এটা মানতেই হবে যে, দূরত্ব একটা মজবুত সম্পর্ককে দুর্বল করে দিতে পারে। এই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে অনেক সময় তৃতীয় পক্ষ এসে থাকে। আর অবস্থা বেশি খারাপ দিকে যেতে থাকলে পরকীয়া থেকে মাঝে মাঝে বিচ্ছেদের পথেও মোড় নেয়।
পরকীয়ার কারণ পুরানো অভ্যাস
বিয়ের আগে অনেকর অভ্যেস থাকে একাধিক সম্পর্ক বয়ে চলার। অনেকের মধ্যে এই বদ অভ্যাস বিয়ের পরও থেকে যায়। তখন তারা অভ্যাসবশত বা অনেকে শখ থেকেও পরকীয়া সম্পর্কে জড়ায়। অনেকের মধ্যে শখ থাকে আরেকটা শরীর কেমন সেটা জানার। যেমন- একটি মেয়ের মধ্যে কি এমন আছে যে সে তার পুরুষ সঙ্গী তাকে নিয়ে এত সুখী। এই ধরনের লিপ্সা থেকে পুরুষের মনে আসে অন্যের স্ত্রীর প্রতি, অন্য নারীর প্রতি আসক্তি।
বিয়ে পরবর্তী জটিলতা
অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ এ অনেক সময় অভিভাবকরা ভাল-মন্দ কোনো কিছু না দেখে-শুনে তাড়াহুড়ো করেই তাদের সন্তানদের বিয়ে দিয়ে দেন। যার ফলে ভবিষ্যতে তাদের ছেলে-মেয়েদের বিবাহিত জীবন সুখের হয় না। বিয়ের পর একটা সন্তান পরিবারে আসার পর মূলত সন্তানদের দিকেই বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। সন্তানদের নিয়ে অতি ব্যস্ত থাকার কারণে স্বামী-স্ত্রী কেউই একে অপরকে সময় দিতে পারেন না যার কারণে আগের মত সেই ভালবাসা থাকে না। আর তখন মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে পরবর্তীতে তারা পরকীয়ার দিকে অগ্রসর হতে থাকে।
কিছু পুরুষ বা নারী তার ক্যারিয়ারে দ্রুত প্রমোশনের জন্য তাদের অফিসের কর্মকর্তাদের সাথে পরকীয়া সম্পর্কে লিপ্ত হন। তারা মনে করেন এতে করে তারা চাকরিতে অনেক সুযোগ সুবিধা পাবেন। কিন্তু এটা সম্পূর্ণই ভুল চিন্তা!
পরকীয়া সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার উপায়
অন্যান্য দেশের মত আমাদের দেশেও যেহেতু এই সমস্যা ব্যাপকভাবে বেড়ে গিয়েছে, সুতরাং এগুলো দ্রুত প্রতিকার করতে হবে। একমাত্র কেবল মানুষ নিজেই পারেন এই সমস্যার সমাধান করতে। আবেগ দিয়ে নয়, বরং বিবেক দিয়ে প্রতিটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিন
পরকীয়া ভেঙে বেরিয়ে আসতে হলে সবার আগে ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিন। আপনাকে দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যদি সত্যিই সম্পর্ক শেষ করতে চান তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তা করুন। চাইছেন, অথচ বার বার ফিরে এসে সময় নষ্ট করছেন এমনটা হলে কিন্তু পরিস্থিতি আরও জটিল হবে। দেরি না করে তাই আপনার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিন।
সম্পর্ক ছিন্ন করুন
পরকীয়া সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলে প্রথমেই সেই পুরুষ বা মহিলার সাথে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করুন। যে কোনও সম্পর্ক শেষ করার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো সরাসরি কথা বলা। যদি সরাসরি জানাতে না পারেন তাহলে ফোনে বা ম্যাসেজে লিখে বিনীত ভাবে জানান। তাকে বুঝিয়ে বলুন যাতে সে পরে ও আপনার সাথে সম্পর্ক না রাখার চেষ্টা করে। পালিয়ে গিয়ে বা দোষারোপ করে সম্পর্ক শেষ করতে গেলে ফলাফর উল্টো হতে পারে।
পরকীয়া থেকে দূরে থাকতে আলোচনা করুন
কেন পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন আগে সেই কারণটা বোঝার চেষ্টা করুন। এরপর দু’জনে আলোচনার মাধ্যমে ঠান্ডা মাথায় বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে সেই বিশেষ সমস্যাটি মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করুন। আপনার আচরণ, কথা সব কিছুতেই যেন ভালোবাসার প্রকাশ ঘটে । কারণ অনেকই আছেন যে মুখে বলে ভালোবাসে কিন্তু কাজের সময় দেখা যায় সঙ্গীর কথার কোন মূল্যায়ন করে না। কাজেই স্ত্রীকে সত্যিকার অর্থে ভালবাসুন। স্ত্রীকে পরকীয়া থেকে বাঁচতে এবং একটি সুন্দর ও সুষ্ঠু দাম্পত্য জীবন এবং শান্তিপূর্ণ সংসার পেতে সঙ্গীর চাহিদার মূল্যায়ন করুন।
সঙ্গীকে নতুনভাবে ভালোবাসুন
নিজেদের মধ্যে কথা বলে সম্পর্ক ঠিক করার চেষ্টা করুন। যেই কারণেই আপনি পরকীয়া তে জড়িয়ে পড়েন না কেন তা শুধরাবার চেষ্টা করুন। সঙ্গীর বিশ্বাস অর্জন করার চেষ্টা করুন। তার জন্য সবসময় সত্য কথা বলুন ও সৎ থাকুন। আপনার স্বামী বা স্ত্রীর আপনার জন্য কী করেছেন ভাবুন। পরিবারে নিজের গুরুত্ব বোঝার চেষ্টা করুন। নতুন দায়িত্ব নিন। এতে আপনাদের সম্পর্ক আবার আগের মত ভালো হয়ে যাবে।
পরকীয়া সম্পর্কের শেষ কথা
স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক প্রেম-ভালোবাসা ও বোঝাপড়ার সম্পর্ক । কাজেই বিয়ের মাধ্যমে বন্ধনে আটকে গেছে বলেই যে ভালোবাসার বন্ধন সবসময় থাকবে এমনটা ভাবা বোকামি । একবার বিয়ে করেই এই সম্পর্ককে শুধু স্রোতের দিকে ছেড়ে দিলেই হবে না বরং একে লালন করতে হবে স্বামী-স্ত্রী দুজনকেই।
মহান রাব্বুল আলামিনের সকল নিয়ামতের মধ্যে সবচাইতে তীব্র আনন্দের নিয়ামত স্বামী-স্ত্রীর যৌন মিলন। বৈধ ও ইসলামিক নিয়মে যৌন মিলন পার্থিব জীবন উপভোগ ও সন্তান-সন্ততি লাভের সাথে সাথে পরকালীন পাথেয় হাসিল করার মাধ্যম। কিন্তু আমরা অনেকেই ইসলামিক শরীয়ত মোতাবেক সহবাসের নিয়ম বা পন্থা সম্পর্কে জানি না। […]
মহান রাব্বুল আলামিনের সকল নিয়ামতের মধ্যে সবচাইতে তীব্র আনন্দের নিয়ামত স্বামী-স্ত্রীর যৌন মিলন। বৈধ ও ইসলামিক নিয়মে যৌন মিলন পার্থিব জীবন উপভোগ ও সন্তান-সন্ততি লাভের সাথে সাথে পরকালীন পাথেয় হাসিল করার মাধ্যম। কিন্তু আমরা অনেকেই ইসলামিক শরীয়ত মোতাবেক সহবাসের নিয়ম বা পন্থা সম্পর্কে জানি না। আজকের পোস্টে আমরা স্বামী-স্ত্রী সহবাস এর এর দোয়া, সহবাসের ইসলামিক নিয়ম ও কিছু প্রচলিত কুসংস্কার নিয়ে আলোচনা করবো।
সহবাস এর আগে পূর্ব প্রস্তুতি
দাম্পত্য সম্পর্কে সবচেয়ে মধুর কাজটি হলো স্বামী-স্ত্রীর যৌন মিলন। স্বামী-স্ত্রীর ভালবাসার তীব্রতম প্রকাশ হচ্ছে শারীরিক সম্পর্ক। সহবাসের মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের যত সান্নিধ্য লাভ করতে পারে, তা অন্য কোনভাবে সম্ভব নয়। তবে সহবাসের আগে স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই কিছু করণীয় রয়েছে।
সহবাসের আগে স্বামী-স্ত্রী দুজনকেই ভালোভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হতে হবে। স্বভাবগতভাবে মানুষ পরিচ্ছন্নতা প্রিয়। তাই সহবাসের আগে পরিচ্ছন্ন হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। শরীরের অবাঞ্চিত অংশ যেমন বগল ও নাভির নিচের লোম, নখ ইত্যাদি কেটে রাখতে হবে। সহবাসের আগে ভালো সুগন্ধিময় পারফিউম ব্যবহার করা। সুগন্ধি আপনার সঙ্গীকে মানসিকভাবে প্রফুল্ল রাখবে এবং তা সহবাস করার আগ্রহ জন্মাবে। হযরত আয়িশা (রা) বলেন-
‘আমি রাসূল (সা)- কে সুগন্ধি লাগিয়ে দিতাম। অতপর তিনি তাঁর স্ত্রীদের কাছে গমন করতেন।’
যৌন মিলন করার সময় সঙ্গীর সাথে অন্য কোনো পুরুষ বা মহিলার রূপ সৌন্দর্যের প্রশংসা করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কেননা এটা সঙ্গীর জন্য বিরক্তির কারণ হতে পারে। মানুষ তার প্রিয়জন থেকে নিজের প্রশংসা শুনতে ভালোবাসে। তাই বিশেষ মুহূর্তে স্ত্রীর প্রশংসা করলে তা স্ত্রীকে বহুগুণ বেশি প্রভাবিত করবে। তার মন ও শরীরকে প্রফুল্ল করে তুলবে।
সহবাসের আগে মুখে দুর্গন্ধ থাকলে সেটা দূর করতে হবে। এজন্য যৌন মিলনের আগে দাঁত ও মুখ পরিস্কার করে নিতে হবে। সামান্য পরিমাণ হালকা মিষ্টি ও ঝাঁঝালো ফ্লেভারযুক্ত খাবার যেমন দারুচিনি, লবাঙ্গ, খেজেুর ইত্যাদি খাওয়া ভালো। এ ধরণের খাবার কণ্ঠ ও জিহবাকে সতেজ করবে। আর স্ত্রীর উচিত সহবাসের রাতে সাজসজ্জা ও পোশাকের ব্যাপারে স্বামীর পছন্দের গুরুত্ব দেয়া। এজন্য অন্যান্য দিনে অন্তর্বাস পরিধান না করলেও সহবাসের রাতে অন্তর্বাস পরিধান করলে স্বামী মিলনের সময়ে বাড়তি উত্তেজনা অনুভব করে।
সহবাস করার ইসলামিক নিয়ম
মহান রাব্বুল আলামিন বিয়ের মাধ্যমে নারী-পুরুষের যৌন মিলন তথা বংশবৃদ্ধিকে কল্যাণের কাজে পরিণত করেছেন। বংশবৃদ্ধির একমাত্র মাধ্যমে হচ্ছে স্বামী-স্ত্রীর সহবাস। আর ইসলামে সহবাসের রয়েছে কিছু নিয়ম-নীতি ও দোয়া যা সুস্থ যৌন মিলন এবং বংশবৃদ্ধিতে সহায়ক। স্বামী-স্ত্রী সহবাসের আগে নিচের দোয়াটি পড়ে নিবেন-
‘বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শায়ত্বানা ওয়া জান্নিবিশ শায়ত্বানা মা রাযাক্বতানা।’
যে ব্যক্তি সহবাসের ইচ্ছা করে, তার নিয়ত হতে হবে ব্যভিচার থেকে দূরে থাকা। এই নিয়তে সহবাস করলে স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই সওয়াব তো হবে এবং নেক উদ্দেশ্যও পূরণ হবে। দোয়া পড়ার পর স্বামী-স্ত্রী একে অন্যকে আলিঙ্গন করবেন। স্ত্রীকে আস্তে আস্তে চুম্বন এবং স্পর্শকাতর স্থানে হাত বুলানোর মাধ্যমে উত্তেজিত করে তুলতে হবে। এটা সহজে স্ত্রীর অরগ্যাজম হতে সহায়তা করবে। উভয়ের মনের সহবাসের পূর্ণ আকাঙ্ক্ষা তৈরি হলে তখন বিসমিল্লাহ বলে শুরু করবেন।
বেশীরভাগ সময়ে স্বামী উত্তেজিত হয়ে পড়লে তার একমাত্র লক্ষ্য থাকে স্ত্রীর যোনিপথে প্রবেশ, অন্য কিছুর ধৈর্য্য তার তখন থাকে না। কিন্তু এতে স্ত্রী পরিপূর্ণ সুখ পায় না। এজন্য স্বামীরও উচিত ধৈর্য ধরে স্ত্রীকে চিৎ স্বামীকে আলিঙ্গন ও চুম্বনের মাধ্যমে তার ভেতরের সত্তাকে জাগ্রত করে তোলা। আর স্ত্রীর উচিত স্বামীর সর্বাঙ্গে হাত বুলানো, চুম্বন করে, গলার নিচে, বুকে, বাহুতে ও পিঠে চুম্বন করা।
সহবাসের পজিশনের ক্ষেত্রে ইসলাম কোনো বিধি নিষেধ আরোপ করেনি। এ ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী তাদের সুবিধা ও ইচ্ছাকে প্রধান্য দিতে পারবে। তবে স্ত্রী নিচে থাকবে এবং স্বামী তার উপরে থাকবে এই পন্থাই সবচেয়ে বেশী আরামদায়ক। এতে স্ত্রীরও কষ্ট সহ্য করতে হয় না এবং গর্ভধারণের জন্যেও তা উপকারী।
যৌন মিলনের পর দুজনের বীর্য বের হওয়ার পর কিছু সময় নড়াচড়া না করে মিলিত অবস্থায় থাকতে হবে। এতে বীর্য জরায়ুতে ঠিক মত প্রবেশ করতে সুবিধা হয়। স্বামীর যদি অরগ্যাজম আগে হয়ে যায় তাহলে সে স্ত্রীর অরগ্যাজম হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। দিনে বা রাতে স্বামী স্ত্রীর যখনই সুযোগ হয়, তখনই সহবাস করা যাবে। তবে কোনো আলেমের মতে, জুমআর দিন সহবাস করা মুস্তাহাব।
সহবাস এর পরে করণীয়
সহবাসের পর স্বামী-স্ত্রী দুজনের যৌনাঙ্গ হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। ঠাণ্ডা পানিতে ধোয়া উচিত নয়। তারপর স্বামী-স্ত্রী দুইজনে কিছু মধু সেবন করে নিবেন। সহবাস শেষ করে দেরি না করে গোসল করে নিতে হবে। তবে কেউ যদি গোসল করতে না চায় তাহলে ওযু করে ঘুমানোর অনুমতি আছে। সহবাসের পর স্বামী যদি বেশীক্ষণ ঘুমিয়ে থাকে তাহলে স্ত্রীর দায়িত্ব হলো ফজরের নামাযের জন্য স্বামীকে জাগিয়ে দেয়া। যদি স্বামী অবহেলা করে নামাজ না পড়ে তাহলে স্বামীর গুনাহ হবে।
প্রথমবার সহবাস শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয়বার সহবাস করতে ইচ্ছা হলে তার আগে ওযু করে নেওয়া মুস্তাহাব। রাসূল (সা) বলেছেন-
‘তোমাদের কেউ সহবাস করার পর যদি দ্বিতীয়বার সহবাস শুরু করতে চায় তাহলে সে যেন ওযু করে নেয়। এটা তার দ্বিতীয় সহবাসকে স্বাদময় করবে।’
সহবাসের কিছু নিষিদ্ধতা
শরীয়তসম্মত ভাবে স্ত্রীর সাথে সহবাস করা সওয়াবের কাজ। মহান রাব্বুল আলামিন এতে অনেক খুশি হন। কিন্তু সহবাসের কিছু নিষিদ্ধ সময় ও পন্থা রয়েছে যা প্রত্যেক বিবাহিত নর-নারীর জানা অত্যন্ত জরুরী। প্রথমত মাসিক বা পিরিয়ডকালীন সময়ে সহবাস করা সম্পূর্ণ হারাম। মহান রাব্বুল আলামিন বলেছেন-
“তোমরা ঋতু বা মাসিক কালে স্ত্রী সঙ্গম বর্জন কর। এবং যতদিন না তারা পবিত্র হয়, (সহবাসের জন্য) তাঁদের নিকটবর্তী হয়ো না। অতঃপর যখন তারা পবিত্র হয়, তখন তাঁদের নিকট ঠিক সেই ভাবে গমন কর, যেভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে আদেশ দিয়েছেন। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাপ্রার্থীগণকে এবং যারা পবিত্র থাকে, তাঁদেরকে পছন্দ করেন।” (সূরা বাকারাঃ ২২২)
এছাড়া পায়ুপথ বা মলদ্বার দিয়ে স্ত্রীর সাথে যৌন মিলন করা হারাম। নবীজি হযরত মুহাম্মাদ (সা) বলেছেন-
“যে ব্যক্তি তার স্ত্রীর সাথে মলদ্বারে সঙ্গম করে, রাব্বুল আলামিন তার দিকে দয়ার দৃষ্টিতে তাকান না।”
স্ত্রী সহবাস করার সময় নিজের স্ত্রীর রূপ-লাবণ্য, স্পর্শ-চুম্বন ছাড়া অন্য কোনো স্ত্রীলোকের বা অন্য সুন্দরী মহিলার রুপের কল্পনা করা বা তার সাথে যৌন মিলন করার চিন্তাও করা যাবে না। এতে স্বামীকে গুণাহগার হতে হবে। দিনের বেলায় রোজা রেখে সহবাস করা নিষিদ্ধ। তবে ভুলবশত করে ফেললে তার কাফফারা দিতে হবে। কাফফারা হলো একটানা দুইমাস রোযা রাখতে হবে অথবা ষাট জন মিসকীনকে খাওয়াতে হবে।
অসুস্থ থাকাকালীন সময়ে সহবাস করা যাবে না। কারণ এতে অসুখ আরো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাছাড়া হজ্জ্ব বা ওমরার ইহরাম অবস্থায় যৌন মিলন করা যাবে না। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন বলেন-
“সুবিদিত মাসে (শাওয়াল, যিলক্বদ ও যিলহজ্জে) হজ্জ হয়। যে কেউ এই মাস গুলোতে হজ্জ করার সংকল্প করে, সে যেন হজ্জ্ব এর সময় স্ত্রী সহবাস (কোন প্রকার যৌনাচার), পাপ কাজ এবং ঝগড়া বিবাদ না করে।” (সুরা বাকারাঃ ১৯৭)
গর্ভকালীন সময়ে সহবাস করা যাবে কি-না?
ইসলামে গর্ভাকালীন সময়ে সহবাস করতে নিষেধ করে নি। তবে গর্ভাবস্থায় সহবাস করতে অনেকে ইতস্তবোধ করে থাকেন। আবার অনেক নারী সহবাসের কারণে তার গর্ভের সন্তান কোনো ক্ষতির সম্মুখিন হয় কি না সে চিন্তাও করেন। কিস্তু গর্ভবতী নারী যদি কোনো ক্ষতির সম্মুখিন না হয় তাহলে তার সাথে সহবাস করতে অসুবিধা নেই।
গর্ভকালীন সময়ে তলপেটে ব্যথা এবং গর্ভাশয় থেকে রক্ত পড়া স্বাভাবিক বিষয়। তাই এই বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখতে হবে। তাছাড়া এ সময় অনেক নারীর সহবাসের ইচ্ছা কমে যায়। তাই স্ত্রীর ইচ্ছা ছাড়া জোরপূর্বক যৌন মিলন করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
রমজান মাসে সহবাসের নিয়ম
রোজা রেখে দিনের বেলায় যৌন মিলন করলে রোজা ভেঙ্গে যায়, এ কারণে ইফতারির পর থেকে শুরু করে সেহরির আগ পর্যন্ত যে কোন সময় যৌন মিলন করা যায়। তবে রমযানের দিনের বেলায় স্বামী স্ত্রী পাশাপাশি ঘুমানো, আদর সোহাগ, চুমু দেয়া, স্তন মর্দন ইত্যাদি জায়েয। কিন্তু তা অবশ্যই হতে হবে বীর্যপাত ব্যতীত। ফরজ রোযা পালনকারী স্বামী-স্ত্রীর এমন কিছু করা জায়েয হবে না যাতে করে বীর্যপাত হয়ে যায়। কিছু লোক আছে যাদের বীর্যপাত দ্রুত হয়ে যায়। এমন ব্যক্তির ক্ষেত্রে ফরজ রোযা পালনকালে স্ত্রীকে চুম্বন করা, আলিঙ্গন করা ইত্যাদি থেকে তাকে সাবধান থাকতে হবে।
সহবাস সম্পর্কিত কিছু ভুল ধারণা ও কুসংস্কার
আমাদের সমাজে সহবাস সম্পর্কিত কিছু ভুল ধারণা প্রচলিত আছে। অনেকে আবার এই ধারণাগুলোকে শরীয়তসম্মত বলে প্রচার করে মানুষের মধ্যে ফিতনা সৃষ্টির চেষ্টা করেন। তাই ফিতনা থেকে বাঁচতে যৌন মিলন সম্পর্কিত এইসব ভুল ধারণা ও কুসংস্কার সম্পর্কে জানা প্রয়োজন-
সহবাস সম্পর্কিত প্রথম ভুল ধারণা হলো রাত্রি দ্বি-প্রহরের আগে সহবাস করা যাবে না
ফলবান গাছের নিচে সহবাস করা যাবে না
রবিবারে সহবাস করা যাবে না
বুধবারের রাত্রে স্ত্রীর সহবাস করা যাবে না
চন্দ্র মাসের প্রথম এবং পনের তারিখ রাতে স্ত্রী সহবাস করা যাবে না
স্ত্রীর জরায়ুর দিকে চেয়ে সহবাস করলে চোখের জ্যোতি নষ্ট হয়ে যায়। এটা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত একটি ধারণা
বিদেশ যাওয়ার আগের রাতে স্ত্রী সহবাস করা যাবে না। এই কথার কোনো ভিত্তি নেই
উলঙ্গ হয়ে সহবাস করা যাবে না
জোহরের নামাজের পরে স্ত্রী সহবাস করা যাবে না
ভরা পেটে যৌন মিলন করা যাবে না
উল্টাভাবে সহবাস করা যাবে না
স্বপ্নদোষের পর গোসল না করে স্ত্রী সহবাস করা যাবে না
পূর্ব-পশ্চিম দিকে শুয়ে সহবাস করা যাবে না
এছাড়া সহবাস সম্পর্কে আরও অনেক ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত আছে যেগুলোর কোনো ভিত্তি নেই এবং এগুলো কুরআন-হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়। মহান রাব্বুল আলামিন এই সমস্ত কুসংস্কার থেকে আমাদেরকে বেঁচে থাকার তৌফিক দিন।
বিয়ে করা একটি সুন্নতি আমল। তবে সবার ক্ষেত্রে বিয়ের হুকুম এক নয়। বিয়ে করা যুবক-যুবতীদের জন্য ক্ষেত্র ভেদে ফরজ আবার কখনো সুন্নত। তবে কার কখন বিয়ে হবে সেটা নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। কিছু যুবক-যুবতী আছে যাদের বিয়ের বয়স হওয়ার সাথে সাথে ভালো বিয়ের প্রস্তাব পায় […]
বিয়ে করা একটি সুন্নতি আমল। তবে সবার ক্ষেত্রে বিয়ের হুকুম এক নয়। বিয়ে করা যুবক-যুবতীদের জন্য ক্ষেত্র ভেদে ফরজ আবার কখনো সুন্নত। তবে কার কখন বিয়ে হবে সেটা নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। কিছু যুবক-যুবতী আছে যাদের বিয়ের বয়স হওয়ার সাথে সাথে ভালো বিয়ের প্রস্তাব পায় আর তাড়াতাড়ি তাদের বিয়ে হয়ে যায়। তবে অনেকেই আছে যারা অনেক বিয়ের প্রস্তাব পায় কিন্তু বিয়ে হয় না। আর কেউ কেউ বিয়ের প্রস্তাব না পেয়ে হতাশ হয়ে যায়। যাদের বিয়ের বয়স পেরিয়ে যাচ্ছে তাদের জন্য দ্রুত বিয়ে হওয়ার আমল ও দোয়া রয়েছে। যে আমলগুলো করলে দ্রুত বিয়ে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
দ্রুত বিয়ে হওয়ার আমল কেন করতে হবে?
দ্রুত বিয়ে হওয়ার জন্য মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে দোয়া করতে হবে। আল্লাহ্ তাআলা যদি ইচ্ছা না করেন, তাহলে তা কখনোই ঘটবে না। আবার তিনি ইচ্ছা করলে কেউই তা আটকাতে পারবে না। রাসূল (সা) বলেছেন-
’তিন ব্যক্তিকে সাহায্য করা আল্লাহ্ তাআলার জন্য কর্তব্য হয়ে যায়। আল্লাহ্ তাআলার রাস্তায় জিহাদকারী, চুক্তিবদ্ধ গোলাম যে তার মনিবকে চুক্তি অনুযায়ী সম্পদ আদায় করে মুক্ত হতে চায় এবং ওই ব্যক্তি যে বিবাহ করার মাধ্যমে পবিত্র থাকতে চায়’
যারা তাড়াতাড়ি বিয়ে করতে চান তারা নিচে উল্লেখিত ১০টি আমল নিয়মিত করুন। রাব্বুল আলামিন আপনার জন্য একজন উত্তম জীবনসঙ্গীর ব্যবস্থা করে দিবেন ইনশাআল্লাহ্
১. দ্রুত বিয়ে হওয়ার আমল- ইস্তেগফার করা
দ্রুত বিয়ে হওয়ার আমল হলো সবসময় ইস্তেগফার করা। অর্থাৎ যতটা বেশী সম্ভব ‘আস্তাগফিরুল্লাহ্, আস্তাগফিরুল্লাহ্’ পড়া। যে ব্যক্তি বেশি বেশি ইস্তেগফার করে, তার দোয়া আল্লাহ্ তাআলা কখনো ফেরত দেন না। পুরো দোয়াটি হলো-
মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা) বলেছেন, যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার করবে আল্লাহ্ তাআলা তার সব সংকট থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন, সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে তার রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন।
২. সূরা ইয়াসিন পাঠ করা
সূরা ইয়াসিনের সীমাহীন মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যাদের অনেক বিয়ের প্রস্তাব আসে কিন্তু বিয়ে হয় না তারা সূরা ইয়াসিন পাঠ করলে দ্রুত ফলাফল পাবেন। বিয়ে হওয়ার আমল বিবাহ ও বিবাহ বিচ্ছেদ সংক্রান্ত সব সমস্যার সমাধান করে দেয়। সূরা ইয়াসিনে ৭টি মুবিন রয়েছে। আমল করার নিয়ম হলো প্রতিদিন সকালে সূর্য যখন পূর্ব আকাশে লাল হয়ে উঠে তখন পশ্চিমমুখী হয়ে সূরা ইয়াসিন পাঠ করা। আর যখনই ‘মুবিন’ শব্দ তেলাওয়াত করা হবে তখনই শাহাদাত আঙুল দিয়ে পেছনের দিকে অর্থাৎ সূর্যের দিকে ইশারা করা।
৩. সূরা আদ-দোহা ও সুরা কাসাসের আয়াত পাঠ করা
অনেক আলেমরাই বিয়ে হওয়ার আমল হিসেবে সূরা আদ-দোহা ও সুরা কাসাসের কয়েকটি আয়াত পাঠ করতে বলেন। ওলামায়ে কেরামদের মতে, যদি কোনো ছেলে আয়াতটি ১০০ বার পাঠ করে তাহলে শীঘ্রই মহান রাব্বুল আলামিন তার জন্য ভালো পাত্রীর ব্যবস্থা করে দেবেন। আর মেয়েরা যদি নিয়মিত সূরা আদ-দোহা ১১ বার পাঠ করে তাহলে তাদের জন্য আল্লাহ্ তাআলা সৎ পাত্রের ব্যবস্থা করে দেন। আয়াতটি হলো-
বলা হয় হজরত মুসা (আ) যখন খুব একাকি ও বিষন্নতা অনুভব করতেন তখন তিনি এ আয়াতটি বেশি বেশি পাঠ করতেন। এবং মহান রাব্বুল আলামিন এ আয়াতটি পাঠ করার জন্য মুসা (আ) এর একাকিত্ব ও বিষন্নতা দূর করে দিয়েছিলেন।
৪. সূরা তাওবার ১২৯ নম্বর আয়াতটি পাঠ করা
বিয়ে হওয়ার আমল হিসেবে সূরা তাওবার ১২৯ নম্বর আয়াতটি পাঠ করলে কাজে দেয়। যাদের বিয়ে হতে দেরী হচ্ছে তারা প্রতিদিন নামাজ আদায় করার পরপর নিয়মিত এ আমলটি করতে পারেন। আয়াতটি পাঠ করার সঠিক নিয়ম হচ্ছে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পরে ১৯ বার বিসমিল্লাহ্, ১১০০ বার সুরা তাওবার ১২৯ নং আয়াত, ১০০ বার দুরূদ শরীফ ও শেষে আবার ১৯ বার বিসমিল্লাহ পড়া। ছেলে-মেয়ে যদি না পারে তাহলে তাদের পিতা-মাতাও এই আমলটি করতে পারেন। আয়াতটি হচ্ছে-
দ্রুত বিয়ে হওয়ার আরেকটি দোয়া হচ্ছে প্রতিদিন যে কোনো ওয়াক্তের নামাজ আদায় করার পর সূরা মরিয়ম তেলাওয়াত করা। যারা বিয়ে করবেন অর্থাৎ ছেলে বা মেয়ে এই আমলটি করতে পারেন। যদি ছেলে- মেয়েরা না পড়ে কিংবা পড়তে না পারে তাদের বাবা-মা বা অভিভাবকরাও পড়তে পারবে।
৬. দ্রুত বিয়ে হওয়ার আমল- তাসবিহে ফাতেমি পড়া
তাড়াতাড়ি বিয়ে হওয়ার জন্য নিয়মিত নামাজের পর তাসবিহে ফাতেমি পাঠ করা উত্তম। তাসবিহে ফাতেমি পড়ার আগে কুরআন তেলাওয়াত ও দরূদ পাঠ করা ভালো। তাসবিহে ফাতেমি হলো-
’৩৩ বার সুবহানআল্লাহ্, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ্ এবং ৩৪ বার আল্লাহু আকবার পাঠ করা’
দিনের যেকোনো সময় দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করেও তাসবিহে ফাতেমি পড়া যায়। টানা ৪১ দিন বাদ না দিয়ে এ আমলটি করতে হবে। নিয়মিত তাসবিহে ফাতেমি পাঠ করলে বিয়ে তাড়াতাড়ি বিয়ে হওয়া, বিয়ের প্রস্তাব পাওয়াসহ বিবাহ সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যা অতিদ্রুত সমাধান হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ্।
৭. বিয়ে হওয়ার দোয়া- সূরা মুজাম্মিল পড়া
কোনো মেয়ে যদি বিয়ের বয়স হওয়া সত্ত্বেও বিয়ে না হয় কিংবা বিয়ের জন্য ভালো প্রস্তাব না পায় তাহলে মা-বাবা অথবা অভিভাবকদের যেকোনো একজন শুক্রবার জুমআর নামাজের পর ২ রাকাআত নামাজ আদায় করে ২১ বার সূরা মুজাম্মিল তেলাওয়াত করতে পারেন। সবসময় নিয়ম মত এ আমল করলে আল্লাহ্ চাহে তো খুব শীঘ্রই বিয়ের প্রস্তাব পাওয়া যাবে।
৮. বিয়ে হওয়ার দোয়া- ইয়া ফাত্তাহু পাঠ করা
বিবাহযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও যেসব যুবক-যুবতীদের বিয়ে হচ্ছে না, তাদের মধ্যে ছেলেরা ডান হাত দিয়ে বাম হাতের কব্জি চেপে ধরে এবং বিবাহযোগ্য মেয়েরা বাম হাত দিয়ে ডান হাতের কব্জি চেপে ধরে প্রতিদিন ফজরের নামাজের পর সূর্য ওঠার আগে ৪০ বার করে ৪০ দিন পর্যন্ত ’ইয়া ফাত্তাহু’ পাঠ করবেন।
ইয়া ফাত্তাহু মহান রাব্বুল আলামিনের একটি পবিত্র নাম। এই পবিত্র নামটি প্রতিদিন ফজরের নামাজের পর দুই হাত বুকের উপর রেখে ৭১ বার পাঠ করলে অভাব দূর হয়, মনোবল বৃদ্ধি পায় এবং আল্লাহ্র রহমতে সকল কাজ সহজ হয়ে যায়। এছাড়া কিছু আলেম বলেছেন, চল্লিশ দিন সূরা মুমতাহিনা তেলাওয়াত করলে দ্রত বিয়ে হয়।
৯. সূরা আল-ফুরকান পাঠ করা
বিয়ের জন্য দ্বীনদার, সৎ ও যোগ্য পাত্র-পাত্রীর জন্য দোয়া করতে হবে। যাদের সময়মত বিয়ে হচ্ছেনা তারা প্রত্যেক নামাজের শেষ বৈঠকে দোয়া মাছূরা পড়ার পর সূরা আল-ফুরকানের এই আয়াতটি পাঠ করে সালাম ফিরাবেন। আয়াতটি হলো-
বিয়ের ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত নিয়মিত এ আমলটি করলে আল্লাহভক্ত, দ্বীনদার, পরহেজগার ও আদর্শ পাত্র-পাত্রী পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ্। বিবাহিত দম্পতিরাও এই দোয়াটি করতে পারেন। এতে দাম্পত্যজীবন হবে আরও সুখের হবে।
১০. বিশেষ কিছু বিয়ে হওয়ার আমল ও দোয়া
পছন্দের মানুষটির সাথে বিয়ে হওয়ার জন্য বেশী বেশী সালাতুল হাজত পড়ে মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে দোয়া করুন। সালাতুল হাজত দ্রুত বিয়ে হওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল। মনে রাখবেন আপনি যদি কোনো মুসলিম ভাইয়ের জন্য দোয়া করেন তাহলে ফেরেশতারাও আপনার জন্য দোয়া করবেন। এজন্য বিয়ের বয়স হওয়া সত্ত্বেও যাদের বিয়ে হচ্ছেনা এমন মুসলিম ভাই-বোনদের জন্যও দোয়া করুন। তাদের জন্য দোয়া করলে রাব্বুল আলামিনও আপনাকে সাহায্য করবেন। পবিত্র ও দ্বীনদার স্বামী-স্ত্রী পেতে হলে নিজেকেও পবিত্র রাখা জরুরী।
ধৈর্য সহকারে নিয়মিত সূরা নূর, সূরা মুমিনুন, সুরা ওয়াকিয়াহ্, সূরা লোকমান, সূরা মুলক, সুরা শুআরা, এবং সুরা আল বাকারাহ্ সাধ্যনুযায়ী পড়তে থাকুন। তাড়াতাড়ি বিয়ে হওয়ার জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ুন, মিথ্যা বলা ও হারাম খাদ্য খাওয়া থেকে বিরত থাকুন, বেশি বেশি নফল নামাজ পড়ুন এবং গোপনে দান-সাদকাহ করুন। সাদকাহ দ্বারা বিপদাপদ দূর হয়। বিশেষভাবে যাকে বিয়ে করতে চান তার জন্য, নিজের ও তার পরিবার এবং সকল মুসলমানদের জন্য মহান আল্লাহ্ তায়ালার দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করুন।
কিভাবে বিয়ে হওয়ার আমল করবেন
পবিত্র কোরআনে মহান রাব্বুল আলামীন বলেন-
’হে মুমিনগন! তোমরা নামাজ ও ধৈর্যধারণের মাধ্যমে আল্লাহ্ তাআলার কাছে সাহায্য চাও। নিশ্চয় তিনি ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন’ (সুরা বাকারাঃ ১৫৩)
আমাদের সবারই উচিত নেককার সঙ্গী পাওয়ার দোয়া করা। তবে পছন্দের মানুষটিকে স্বামী বা স্ত্রী হিসেবে পাবার জন্য মহান রাব্বুল আলামিনের নিকট দোয়া করতে কোনো বাধা নেই। বিয়ে হওয়ার আমল করার সময় কিছু বিষয় খেয়াল করার খুবই জরুরী। বিয়ে হওয়ার দোয়া করার সময় একান্ত বিনয়, নম্রতা এবং কান্নাকাটি সহকারে দোয়া করবেন। দোয়া করার সবচেয়ে ভালো সময় হলো ভোররাতে তাহাজ্জুদ সালাতের পরে, আযান ও একামতের মধ্যবর্তী সময়, জুমার দিন আসর থেকে মাগরিব নামাযের মধ্যবর্তী সময়, শবে কদরের রাতে, সেজদা অবস্থায়, রোযা রাখা অবস্থায় এবং সফররত অবস্থায়।
বিয়ে হওয়ার জন্য অবশ্যই ধৈর্য ধরে বিয়ে হওয়ার আমল করতে হবে। তাছাড়া বিয়ে হওয়ার দোয়া করার সময় বিবাহের সাথে সম্পৃক্ত বিষয়েও দোয়া করতে হবে। আপনার ভালোবাসার মানুষটিও যেন আপনাকে ভালোবাসে, আপনাকে ছাড়া অন্য কারো দিকে না তাকায়, বিয়ের পর দাম্পত্য জীবনে যাতে মহান রাব্বুল আলামিন রহমত ও বরকত দান করেন এজন্য দোয়া করবেন।
শেষ কথা
বিয়ে সংক্রান্ত সকল সমস্যার সমাধানের ভালো উপায় হল, বিয়ে হওয়ার আমল ও দোয়া করার পাশাপাশি সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা। বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন এবং পরিচিতদের মাধ্যমে পাত্র-পাত্রীর অনুসন্ধান করতে হবে। পাশাপাশি অনলাইন ঘটক বা ম্যারেজ মিডিয়ার সাথে যোগাযোগ করা যেতে পারে। আল্লাহ্ তাআলার প্রতি দৃঢ় আস্থা ও বিশ্বাস রাখুন। শীঘ্রই বিয়ের ব্যবস্থা হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ! আল্লাহ্ তাআলা আমাদের সকল সমস্যা দূর করে দিন আর যাদের বিয়েতে দেরি হচ্ছে, তিনি সবাইকে দ্বীনদার পাত্র-পাত্রী মিলিয় দিন। (আমীন)
সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভালো মিল থাকার পাশাপাশি দরকার নিয়মিত যৌন মিলন। সুখী যৌন জীবন সবাই চায়। কিন্তু প্রায়ই দেখা যায় যৌন সমস্যার কারণে সংসারে অশান্তি যা অনেকসময় ডিভোর্স পর্যন্ত গড়ায়। তাই সাংসারিক ঝামেলা এড়াতে আগে থেকে সতর্ক হওয়া জরুরী। যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধির […]
সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভালো মিল থাকার পাশাপাশি দরকার নিয়মিত যৌন মিলন। সুখী যৌন জীবন সবাই চায়। কিন্তু প্রায়ই দেখা যায় যৌন সমস্যার কারণে সংসারে অশান্তি যা অনেকসময় ডিভোর্স পর্যন্ত গড়ায়। তাই সাংসারিক ঝামেলা এড়াতে আগে থেকে সতর্ক হওয়া জরুরী। যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কোনো ধরনের ঔষধের প্রয়োজন নেই, প্রতিদিন কিছু পুষ্টিকর খাবার খাওয়াই যথেষ্ট। বিবাহিত জীবনে হেলদি সেক্স লাইফের জন্য আপনাকে দৈনন্দিন খাবার দাবারের প্রতি পূর্ণ মনোযোগী হতে হবে।
অনেকেই রয়েছেন যারা নিজেদের যৌন জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট নয়। অনিয়মিত ঘুম, দুশ্চিন্তা, মানসিক চাপ, বাজে খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি কারণে যৌন সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রায় সবার মধ্যেই কৌতুহল থাকে প্রাকৃতিক উপায়ে কিভাবে যৌন ক্ষমতা বাড়ানোর যায় তা নিয়ে। সংসার জীবন সুখময় করে তুলতে সেক্স বৃদ্ধি করার খাবার খেতে হবে। নিয়মিত এই খাদ্যগুলি খেলে আপনার যৌন শক্তি কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে। আজকে সেক্স পাওয়ার বাড়ানোর খাদ্যগুলি নিয়ে আলোচনা করা হলো।
সেক্স বাড়ানোর প্রাকৃতিক উপায়
আজকাল যৌন জীবন নিয়ে প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৭ জনই চিন্তিত থাকেন। অনেক পুরুষ আছেন যারা ইরেকটাইল ডিশফাংশন এ ভোগেন। যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কোন প্রকার ওষুধের প্রয়োজন নেই, তার জন্য দৈনন্দিন পুষ্টিকর খাবারদাবারই যথেষ্ট। দেখে নিন কি কি সেই খাবার গুলো-
যৌন ক্ষমতা বাড়াবে রসুন
যৌন ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য অত্যন্ত কার্যকরী একটি উপাদান হলো রসুন। রসুনে অ্যালিসিন নামের উপাদান থাকে যা যৌনাঙ্গে রক্ত সঞ্চালনের হার বাড়ায়। ফলে যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি ছাড়াও রসুনের রয়েছে অনেক গুণ। রসুন কে বলা হয় প্রাকৃতিক এন্টিবায়োটিক। নিয়মিত সকালে খালি পেটে রসুন খেলে অনেক রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। যৌন সমস্যা সমাধানে রসুন তো কাজ করেই এছাড়া রসুন ফোঁড়া, প্রদহ ভালো করে, ঋতুস্রাব চালু করে, প্রস্রাব স্বাভাবিক করে, পাকস্থলী থেকে গ্যাস নির্গত করে, নিস্তেজ লোকদের মধ্যে সেক্স পাওয়ার বৃদ্ধি করে এবং বীর্য বৃদ্ধি করে।
অ্যালিসিন ছাড়াও রসুনে রয়েছে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস , রিবোফ্লাভিন, থিয়ামিনসহ আরো অনেক উপাদান। যৌন শক্তি বৃদ্ধির জন্য প্রতিদিন ১-২ কোয়া রসুন কাঁচা অবস্থায় চিবিয়ে খেতে হবে। এছাড়া গমের তৈরি রুটির সঙ্গে রসুন মিশিয়ে খেলে যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
সেক্স পাওয়ার বৃদ্ধিতে মধুর ভূমিকা
যৌন অক্ষমতার সমাধানের জন্য মধুর গুণের কথা আমরা সবাই জানি। মধুতে রয়েছে গুকোজ ও ফ্রুকটোজ যাতে সেক্স হরমোন দ্রুত কাজ করে। এছাড়া নিয়ম করে মধু খেলে পাকস্থলী পরিষ্কার হয়, মস্তিষ্ক অতিরিক্ত শক্তি লাভ করে, শরীরের স্বাভাবিক তাপশক্তি বজায় থাকে, প্রস্রাব স্বাভাবিক হয়, গ্যাসের সমস্যা দূর হয় এবং খিদে বাড়ায়। এছাড়া প্যারালাইসিসে আক্রান্ত রোগীর জন্যও মধু খুব উপকারী। যৌন ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য প্রতিদিন সকালে ও রাতে ঘুমানোর আগে ১ গ্লাস গরম জলে ১ চামচ খাঁটি মধু মিশিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। যৌন শক্তি বৃদ্ধিতে খাঁটি কালোজিরা ফুলের মধু বিশেষ উপকারী।
যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে দুধ
দীর্ঘ সময় যৌন ক্ষমতা অটুট রাখতে দুধের ভূমিকা অপরিসীম। দুধের প্রাণীজ যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। প্রাণীজ ফ্যাট শরীরে সেক্স হরমোন বৃদ্ধি করে। খাঁটি দুধ দেহের শুষ্কতা দূর করে, দ্রুত খাবার হজম হয়, রতিশক্তি সৃষ্টি করে এবং বীর্য উৎপাদন করে, দেহের অপ্রয়োজনীয় দূষিত পদার্থ বের করে দেয় এবং মস্তিষ্ক শক্তিশালী করে। দুধ ছাড়াও দুধের সর, মাখন ইত্যাদি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। যৌন ক্ষমতা বাড়াতে প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে ১ গ্লাস উষ্ণ গরম দুধ খাওয়া উচিত।
নিয়মিত কলা খেতে হবে
নিয়মিত কলা খেলে আপনার যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবেই। কলার মধ্যে আছে ভিটামিন এ, বি, সি, পটাশিয়াম, ব্রোমেলিয়ান ও শর্করা। কলা শুধু পুষ্টি বাড়ায় না, যৌন ইচ্ছা তীব্র করতেও কাজে দেয়। কলা মানবদেহে যৌনরস উৎপাদন বাড়ায়। কলা খেলে দেহের শক্তি বাড়ে, এতে আপনি সঙ্গীর সাথে দীর্ঘসময় ধরে সেক্স করতে পারবেন।
ডিম খাওয়ার উপকারিতা
ডিমের উপকারিতা কে না জানে? সেক্স পাওয়ার বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি খাবার হলো ডিম। ডিমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি-৫ ও বি-৬ আছে যা শরীরে হরমোনের মাত্রা ঠিক রাখে এবং মেন্টাল স্ট্রেস কমায়। সুতরাং সেদ্ধ হোক বা ভাজা, প্রতিদিনের সকালের নাস্তায় একটি করে ডিম খাবেন। ডিম খেলে আপনার শরীর শক্তি পাবে, আপনি সহজে ক্লান্ত হবেন না এবং যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
যৌন ক্ষমতা বাড়াতে মাংস ও কলিজা
সবজি বা ফলের চেয়ে অনেকেই মাংস বেশি পছন্দ করেন। খাবারে নানা রকমের সবজি ও সালাদের সাথে প্রোটিনের জন্য নিয়মিত মাংস খেতে হবে। চর্বি ছাড়া মাংস খাওয়া মানেই সুস্বাস্থ্যের দিকে এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া। মাংস খাওয়ার ফলে শরীরে পেশির পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। অতিরিক্ত চর্বি কমে দেহের শক্তি বৃদ্ধি পায়। প্রোটিন শরীরে অন্যান্য অঙ্গের মতো যৌনাঙ্গে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে। সেক্স লাইফ ভালো রাখতে কলিজার গুরুত্ব অপরিসীম। কলিজায় প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক থাকে যা শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা বাড়ায়। তাই যৌন ক্ষমতা বাড়াতে খাদ্য তালিকায় যোগ করতে পারেন কলিজা ও গরুর মাংস।
সেক্স পাওয়ার বৃদ্ধিতে বাদাম ও বিভিন্ন বীজ
বাদাম, আখরোট, কিসমিস, কিংবা পেস্তার মতো শুকনো ফলগুলো শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগান দেয়। বাদামে রয়েছে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট যা শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক রাখে। এছাড়া বাদামের আর্জিনিন নামক অ্যামাইনো অ্যাসিড শরীরে উন্নত শুক্রাণু তৈরী করে ও টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন অল্প করে হলেও চীনা বাদাম,কাজু বাদাম, কাঠ বাদাম,আখরোট ইত্যাদি খাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে আপনার যৌন স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। এছাড়া বীজ জাতীয় খাবার যেমন কুমড়োর বীজ, শিম, সূর্যমূখীর বীজ ইত্যাদিতে প্রচুর ফাইটোস্ট্রোজেন থাকে যা যৌন ইচ্ছা এবং যৌন ক্ষমতা বাড়ায়। দেহের পুষ্টিযোগাতে কিসমিস দারুণভাবে কাজ করে। এটি খেলে প্রচুর পরিমানে ক্যালরি পাওয়া যায়। কিসমিস যৌন সমস্যা দূর করে দেয়, হজম শক্তি ভালো করে ফলে শরীরের ভারসাম্য ঠিক থাকে। তাই প্রতিদিন বিকালে ৫ থেকে ৭টি কিসমিস খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে কালোজিরা
কালোজিরা যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধির একটি অব্যর্থ উপাদান। কালোজিরাতে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, জিংক, ম্যাগনেশিয়াম, সেলেনিয়াম, ভিটামিন-এ,-বি, -বি২, নিয়াসিন সহ আরো অসংখ্য উপাদান আছে। এজন্য নিয়মিত কালোজিরা খেলে স্পার্ম সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং স্পার্মের গুনাগুণ বাড়ে৷ এছাড়া কালোজিরা যৌনতার ভারসাম্য ধরে রাখার পাশাপাশি শিশুর জন্য মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি ও স্তন্যকে সুগঠিত করে। সর্দি, কাশি, বুকের ব্যাথা, শ্লেষ্মা ও ব্রনের জন্য অত্যন্ত উপকারী ঔষধ।
চকোলেট খাওয়ার উপকারিতা
চকোলেট খেতে ভালোবাসেন? তাহলে জেনে রাখুন চকোলেট খাওয়ার ফলে যৌন ইচ্ছা ও যৌন ক্ষমতা দুটোই বাড়ে। চকোলেটে আছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফেনিলেথ্যালামাইন যা শরীরে বাড়তি যৌন উদ্দীপনা তৈরী করে। চকোলেট শরীরের চেয়ে মনের উপর বেশি প্রভাব ফেলে যা কামশক্তি বাড়ায়। গবেষণায় দেখা গেছে যারা অল্প করে হলেও চকোলেট খায় তাদের যৌন ক্ষমতা অন্যদের তুলনায় বেশি। চকোলেট খেলে সঙ্গীর প্রতি আকর্ষণবোধও বেড়ে যায়। এছাড়াও ডার্ক চকোলেটে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে। তাই সেক্স করার আগে চকোলেট খেতে ভুলবেন না যেন!
যৌন ক্ষমতা ঠিক রাখতে রঙিন ফলমূল
স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং তারুণ্য ধরে রাখতে চাইলে প্রতিদিন খাবারের তালিকায় মৌসুমি ও রঙিন ফল যেমন আঙুর, আপেল, কমলা লেবু, তরমুজ ইত্যাদি খেতে হবে। তাজা ফলমূল যৌবন ধরে রাখতে ও যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অত্যন্ত উপকারী। এছাড়া প্রতিদিন বিকালে ৪ থেকে ৫টি খেজুর খাওয়ার অভ্যাস করুন। খেজুরের কিন্তু গুণের শেষ নেই। এই ফল বলদায়ক ও শক্তিবৃদ্ধিতে দুর্দান্ত কাজ করে। শুকনা খেজুর অথবা যেকোন ধরনের খেজুর খেলে আপনি উপকৃত হবেন। মাখনের সাথে খেজুর মিলিয়ে খেলে যৌন শক্তি বৃদ্ধি পায়। খেজুর দেহের শিরা কোমল করে এবং মেয়েদের মধ্যে যৌন আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি করে।
টাটকা শাক ও নানান সবজি
গবেষকরা জানিয়েছেন, শরীরে রক্ত চলাচল বাড়লে যৌন উদ্দীপনাও বাড়ে। তরতাজা ও ফরমালিনমুক্ত শাক সবজিতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ও ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায় যা শরীরে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে। এছাড়া বিভিন্ন রকম শাক, ব্রকলি, লেটুস, ফুলকপি, বাঁধাকপি এগুলোতে রয়েছে ফলেট, ভিটামিন বি সহ অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এছাড়া মিষ্টি আলু খুব ভালো একটি সেক্স ফুড। এটি নারীদের যোনি এবং ইউটেরাসের আকার ভালো রাখে। তাছাড়া এটা সেক্স হরমোন তৈরিতেও সাহায্য করে।
যৌন ক্ষমতা বাড়াতে প্রতিদিন গাজর খাবেন
এগুলোর পাশাপাশি প্রতিদিন গাজর খাবেন। গাজরে ভিটামিন ‘এ’ আছে যা পুরুষদের হরমোন তৈরিতে সাহায্য করে। ১৫০ গ্রাম গাজর কুঁচি এক টেবিল চামচ মধু এবং হাফ-বয়েল ডিমের সঙ্গে মিশিয়ে দুমাস খেলে যৌন অক্ষমতা দূর হবে এবং সেক্স পাওয়ার বাড়বে। আর প্রাকৃতিক উপায়ে জননাঙ্গের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে প্রতিদিন সালাদের সঙ্গে বিট খেতে হবে। বিট খাওয়ার ফলে রক্তের সঙ্গে বিশুদ্ধ অক্সিজেন জননাঙ্গে প্রবেশ করে যৌনশক্তি বৃদ্ধি পায়।
যৌন ক্ষমতা বাড়াতে সামুদ্রিক মাছ
সামুদ্রিক ও তৈলাক্ত মাছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড থাকে যা সুস্থ যৌন মিলনের জন্য অত্যন্ত উপকারী। ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড শরীরে ডোপামিন বাড়িয়ে দেয় এবং যৌন কামনা জাগিয়ে তোলে। তৈলাক্ত মাছ খেলে শরীরের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায় ফলে যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
নিয়মিত ব্যায়াম করা
যৌন ক্ষমতা কমে যাওয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে, শরীরের ওজন বেশি হওয়া এবং ব্যায়াম না করা। বেশি ওজনের পুরুষ বা মহিলার যৌন সঙ্গমের ইচ্ছা কম থাকে। এজন্য নিয়মিত ফ্রি-হ্যান্ড এক্সারসাইজ করতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরের রক্ত সঞ্চালনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় যা যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
যৌন উত্তেজনা ও যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বাজারে নানা রকম ঔষধ ও ভায়াগ্রা পাওয়া যায়। এখন পত্র-পত্রিকায় বা টিভিতে অনেক চটকদার বিজ্ঞাপন দেখা যায় পুরুষের যৌন উত্তেজনা ও যৌন শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক ওষুধ নিয়ে। তবে সেগুলো অবশ্যই সেবন করতে হবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী। অসাধু হারবাল মেডিকেল সেন্টারের খপ্পরে পড়ে আজেবাজে হারবাল ঔষধ সেবন করতে যাবেন না। এতে লাভ তো হবেই না, উল্টো ক্ষতি হবে স্বাস্থ্যের!
What Is Premarital Counseling? Premarital counseling is a type of therapy that helps couples prepare for marriage and the challenges, benefits, rules, and everything that comes with it. The counseling helps to ensure that you and your soulmate have a strong, non-toxic, and healthy relationship, […]
Premarital counseling is a type of therapy that helps couples prepare for marriage and the challenges, benefits, rules, and everything that comes with it. The counseling helps to ensure that you and your soulmate have a strong, non-toxic, and healthy relationship, which gives you a better chance for a satisfying and stable marriage. It can also help you and your partner identify your weaknesses that could become problems during marriage and also tries to proffer a solution.
Most couples think they should start premarital counseling one or two weeks before their marriage. But, this sort of mentality should be changed. Premarital counseling should be started as early as possible. It would be best if you started going for counseling sessions as soon as you are sure of your stand in the relationship. It would help if you also remembered that premarital counseling is not for couples who are planning to get married in a month or two; it is also for couples who are into a new relationship.
Premarital counseling gives the couples in the new relationship a chance to identify their weaknesses that could become problems in a relationship. It also ensures partners have a strong, non-toxic, and healthy relationship, which gives them a better chance for a stable and satisfying marriage.
Starting a premarital therapy session with a certified therapist or marriage counselor gives you an edge over those beginning a few weeks into their marriage. Some of the advantages of starting pre marriage counseling early in a relationship over starting late are:
1. It Enhances Communication Between Couples
It is very well known that there is no relationship without communication. And as it is known, one of the most important aspects of any marriage is effective communication with your partner. Early premarital counseling therapy sessions help you learn how to be an excellent listener and talk to your partner; therefore, you know how to talk to your partner and what the other person wants and needs.
When you stay with someone day in and day out, it is straightforward to take each other for granted, but keeping an open line of communication and expressing love to one another builds a relationship that can withstand storms and the test of time. This can only be enhanced if you start premarital counseling early.
2. It Helps in Planning for the Future
Premarital therapists do more than just helping couples talk through their current issues. They also allow teams to plan for the Future. A therapist can help partners set financial, physical, or family planning goals and can proffer them a reliable way to accomplish those goals. Therefore, starting premarital counseling early in a relationship goes a long way in planning for the partners’ Future.
3. Better Absorption of the Counselor’s Wisdom
Sharing issues with someone who has been married for a while is another significant benefit of seeking premarital counseling early. When you talk to a marriage counselor, you get a firsthand or primary voice of wisdom on the subject of marriage. It will be great if the marriage counselor should share their experiences and the sacrifices they’ve made to keep the marriage healthy.
As it is known that the more time you spend on something, the more knowledge you gain on it. The more time you go for premarital counseling sessions, the more experience and wisdom you gain from the therapist. This can be done by starting premarital counseling as early as possible once you are in a relationship.
4. It Helps Partners to Discover New Things about Themselves
As it is being said – you cannot know all about your partner. Many people think they know everything about their partner; meanwhile, there is a lot that their partner does not feel comfortable and relaxed to tell them.
Early premarital counseling sessions give you the opportunity and freedom to discuss things that do not come up in everyday conversations between you and your partner, like his or her dark secrets, hurtful past experiences, sex, and expectations. Marriage therapists and counselors ask many questions when they are working with couples that are considering long term commitment, such as marriage.
5. It Serves As An Intervention to Help Relationships
It’s important not to let getting married the primary goal of premarital counseling, but the main goal should be to build a loving, lasting, healthy, strong marriage. Therefore, early premarital counseling is mandatory, and I consider it as early intervention to help you improve your relationship, teaches you how to manage conflict & arguments effectively & positively, and last but not least, help you set realistic goals and expectations,
It also allows you to discuss and express your values and beliefs about essential matters in a relationship, such as family, finances, children, parenting, and you and your partner think, believe and value about being married and what it takes to make a marriage strong, healthy, and last.
Badhon Matrimony is one of the most successful and reliable marriage sites which is currently working across the globe. The online matrimony is the fastest growing matrimonial site in Bangladesh. Making happy matches happen since 1995, the company specializes in online matrimonial and understand the importance of selecting the perfect life mate for marriage. The online portal allows the members to search, communicate, interact, and finally choose the right person. It features an exhaustive and authentic database of eligible brides and grooms. The online matrimonial portal also has calls, live chats, and email facilities to make the matchmaking fun.
You will find brides and grooms of all religions and castes, including Muslims, Hindus, Buddhists, Christians on Badhon Matrimony. On the website, you will get more than 80 professions including established businessmen, industrialists, doctors, engineers, doctorates, BCS cadres, defense officers, officials of multinational companies, bankers, professors, pharmacists, and chartered accountants.
There are also settled expatriates and citizens in Australia, Canada, the United States, and the United Kingdom. While Badhon Matrimony connects thousands of people directly, it also has a dedicated 24/7 customer support team and offers both online and offline services.
Wrapping Up
Marriages are made in paradise, no doubt. But we need to put in a bit of effort from our side, too. Quit imagining about your soulmate, your fantasy partner won’t come and knock at your door himself or herself. Rather go on the web and search for reliable marriage sites. Online matchmaking sites are a true blessing for the eligible bachelors, spinsters, and also for the divorcees. Online matrimony sites have replaced the matchmaker aunties of next door. So, if you are also on the hunt for a soulmate then you should consider visiting Badhon Matrimony. Your soulmate is just a click away!
নিজের পছন্দ হোক কিংবা পারিবারিক পছন্দে, বিয়ের ক্ষেত্রে তাড়াহুড়া করবেন না মোটেই। বিয়ে কোনো ছেলেখেলা নয়, আজীবনের বন্ধন। তাই জীবনসঙ্গী এমন একজন মানুষ হতে হবে, যার সাথে আপনার ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়া গুলো মেলে। জীবনের পথে দুজনের ভাবনা খাপে খাপে মিলে না গেলে দাম্পত্যে ভালোবাসা খুঁজে পাওয়াটা […]
নিজের পছন্দ হোক কিংবা পারিবারিক পছন্দে, বিয়ের ক্ষেত্রে তাড়াহুড়া করবেন না মোটেই। বিয়ে কোনো ছেলেখেলা নয়, আজীবনের বন্ধন। তাই জীবনসঙ্গী এমন একজন মানুষ হতে হবে, যার সাথে আপনার ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়া গুলো মেলে। জীবনের পথে দুজনের ভাবনা খাপে খাপে মিলে না গেলে দাম্পত্যে ভালোবাসা খুঁজে পাওয়াটা খুব কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। সুখী দাম্পত্যের জন্য অর্থ-বিত্ত বা অন্য কিছুর চাইতে পছন্দের একটি মানুষ সবচাইতে বেশি জরুরী।
সকলেই তো আর প্রেম করে বিয়ে করেন না। অনেকেরই বিয়ে হয় পারিবারিকভাবে, যাকে আমরা “অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ” বলি। শুনতে খুব সহজ মনে হলেও বিষয়টা আসলে খুব একটা সহজ নয়। অনেকেই হয়তো বিয়ে করার কথা ভাবছেন, কিন্তু পছন্দের সঙ্গী কিভাবে খুঁজবেন বুঝতে পারেন না। আবার খুঁজে পেলেও আপনার সাথে মনের মিল হবে কিনা তা নিয়েও আছে দ্বিধা-দ্বন্দ। জীবনসঙ্গী খোঁজাটা যেন এক বিশাল পরীক্ষা। “অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ” এর জন্য সঠিক জীবন সঙ্গী খুঁজে পেতে কিছু বিশেষ প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে চেষ্টা করাই ভালো। পরিকল্পিতভাবে এগিয়ে গেলে খুব বেশি কাঠ-খড় পোড়ানো ছাড়াই মিলবে মনের মানুষের দেখা। আসুন তাহলে জেনে নেয়া যাক জীবন সঙ্গী খোঁজার ধাপ গুলো।
নিজের পছন্দ-অপছন্দ নির্ধারণ করুন
মনে মনে ভেবে নিন আপনি কেমন সঙ্গী চাইছেন। সঙ্গীর পারিবারিক অবস্থা, দেশের বাড়ি, শিক্ষাগত যোগ্যতা, চাকরী সব মিলিয়ে কেমন সঙ্গী আপনার পছন্দ সেটা মনে মনে ঠিক করে ফেলুন। নিজের পছন্দের সাথে সবসময়েই পরিবারের পছন্দের সামঞ্জস্য রাখুন। তাহলে বিয়ের পরে মানিয়ে নিতে সুবিধা হবে।
পরিচিতদের মধ্যে দেখুন
প্রথমে ভালো করে চিন্তা করে নিন আপনার কাউকে পছন্দ ছিল বা আছে কিনা। অথবা ভালো করে জানা শোনা আছে এমন কাউকে সঙ্গী বানানো যায় কিনা। স্কুল, কলেজ অথবা ভার্সিটির কাউকে পছন্দ থেকে থাকলে তার খোঁজ নিতে পারেন। অথবা কাছের কোনো বন্ধুর সাথেও যদি পছন্দ-অপছন্দ মিলে যায় তাহলে তাকে জীবনসঙ্গী বানানোর কথাও ভেবে দেখতে পারেন।
কাছের মানুষদের বলে রাখুন
আপনার পরিচিতের গন্ডির মধ্যে কাউকে পছন্দ না হলে পরিবার, বন্ধু-বান্ধব অথবা কলিগদেরকে সঙ্গী খুঁজতে বলে রাখতে পারেন। অনেকেরই জানাশোনার মধ্যে ভালো পাত্র/পাত্রী থাকে। আপনার পছন্দের ধরণের সাথে মিলে গেলে তারা আপনাকে সাহায্য করতে পারে। লজ্জা পেয়ে কাউকেই কিছু না বললে সঙ্গী যোগাড় করা কষ্টের ব্যাপার হয়ে যাবে। কারণ আপনি কাউকে মুখ ফুটে না বলা পর্যন্ত কেউ জানবে না যে আপনি জীবনসঙ্গী খুঁজছেন।
ম্যারেজ মিডিয়া
পরিচিতদের বলার পরেও যদি সঙ্গীর খোঁজ না মিলে তাহলে ম্যারেজ মিডিয়া গুলোর শরণাপন্ন হতে পারেন। আজকাল অনেক অনলাইন ম্যারেজ মিডিয়া আছে। নিজের পছন্দ অপছন্দ বলে দিলে তারা সেই অনুসারে পাত্র/পাত্রী খুজে দিতে সহায়তা করে এবং তার বিনিময়ে টাকা নেয়। তবে অনেক ভূয়া ম্যারেজ মিডিয়াও আছে এখন। তাই সুনাম আছে এমন কোনো ম্যারেজ মিডিয়ায় যাওয়াই ভালো। নাহলে সঙ্গী খুজতে এসে উল্টা বিপদে পড়তে হতে পারে।
যোগাযোগ করুন
পাত্র/পাত্রীর কাঙ্খিত যোগ্যতা মিলে গেলে যোগাযোগের ঠিকানা নিন। আপনি যদি লাজুক হন তাহলে পরিবারকে বলুন যোগাযোগ করতে। যদি অপর পক্ষেরও সম্মতি পাওয়া যায় তাহলে পাত্র/পাত্রীর ফোন নম্বর নিন এবং দুজন কিছুদিন কথা বলে নেয়ার অনুমতি নিন। পূর্ব পরিচিত হলেও কথাবার্তা বলে নেয়া জরুরী কারণ বিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। আপনি জীবন সঙ্গীর মাঝে চান, কি পছন্দ, কি অপছন্দ, ভবিষ্যত পরিকল্পনা সব আগেই খোলাখুলি ভাবে আলাপ করে নিন। দুজনেই দুজনের কাছে সমস্যা গুলো খুলে বলে নেবেন। কিছুদিন মেলামেশা করে দেখে নিন সে আপনার মনের মানুষ হওয়ার যোগ্য কিনা।
পছন্দ হয়ে গেলে
সব দিক মিলিয়ে যদি আপনার মন সায় দেয় তাহলে আপনার পরিবারকে সব কিছু জানিয়ে প্রস্তাব পাঠাতে বলুন। এই সময়ে দুই পরিবার কথা বার্তা বলে পরিচিত হবে এবং সব কিছু পছন্দ হলে সামাজিক প্রথা অনুযায়ী ধাপে ধাপে এগিয়ে যাবে।
পছন্দ না হলে
কিছুদিন কথা বার্তা বলে যদি দেখেন মনের মিল হচ্ছে না তাহলে ভদ্রতার সাথে বলুন যে আপনি আর এগোতে চাইছেন না। কেন পছন্দ হয়নি সেটা খোলাখুলি বলে কারো মনে আঘাত দেয়ার দরকার নেই। বলুন আপনার সাথে মনের মিল হচ্ছে না, তাই আপনার মন সায় দিচ্ছে না। মন সায় না দিলে এতো গুরুত্বপূর্ণ একটি সম্পর্কে না যাওয়াই দুজনের জন্য ভালো। সিদ্ধান্ত যাই হোক ভেঙ্গে না পরে ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করুন। কারণ জীবনসঙ্গী নির্বাচনের ক্ষেত্রে তাড়াহুড়া করে কোনো ভুল করে ফেললে সারা জীবন সেই ভুলের মাশুল দিতে হবে। নিজের পছন্দ হোক কিংবা পারিবারিক পছন্দে, বিয়ের ক্ষেত্রে তাড়াহুড়া করবেন না মোটেই। বিয়ে কোনো ছেলেখেলা নয়, আজীবনের বন্ধন। তাই জীবনসঙ্গী এমন একজন মানুষ হতে হবে, যার সাথে আপনার ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়া গুলো মেলে। জীবনের পথে দুজনের ভাবনা খাপে খাপে মিলে না গেলে দাম্পত্যে ভালোবাসা খুঁজে পাওয়াটা খুব কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। সুখী দাম্পত্যের জন্য অর্থ-বিত্ত বা অন্য কিছুর চাইতে পছন্দের একটি মানুষ সবচাইতে বেশি জরুরী।
✅ আমাদের সার্ভিস সম্পর্কে কোন পরামর্শ বা অভিযোগ থাকলে অনুগ্রহপূর্বক কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
✅ আমাদের হেল্পলাইন নম্বরঃ 📞 ০১৭১১৪৬৮৫৯৯ 📞 ০১৭৩০১৮৭৪৪৪
“Marriage is half of your Deen,” but it is on the person to search for a bride or a groom. With the advancement in technology and overseas relationships and connectivity, matrimony sites come as saviors. You create a matrimonial profile, search according to your likes […]
“Marriage is half of your Deen,” but it is on the person to search for a bride or a groom. With the advancement in technology and overseas relationships and connectivity, matrimony sites come as saviors. You create a matrimonial profile, search according to your likes and dislikes, match a person, get to know each other and select the “perfect match” to marry him/her.
These sites being easy to use can undoubtedly be gotten to by both the young and the older folks in a family. There are a ton of highlights that draw in individuals to peacefully set up their profiles on these sites.
The benefits of these matrimonial websites are numerous, for example, the individual decision and increase in alternatives being worldwide social stages with a particular and target motivation behind marriage.
However, one has to also take care of how a profile should look to have the perfect match, fulfilling all the requirements that one looks for in his/her future life-partner. Some tips to create an creative and beautiful matrimony profile are as follows:
1) One Should Be Honest With the Information Provided: The data you give must be right and complete. One should regularly straight cut while giving data about oneself as wrong data can get you a statement of enthusiasm from someone else, at the end of the day, it is the originality of data that causes you to get the ideal match.
2) Pictures Are the Heart of a Profile: Pictures are an undoubtedly requirement as they make the most urgent piece of wedding profiles. Photographs make a feeling that draws in watchers. One should transfer the same number of pictures, in various profiles and situations, as possible as they help the other individual to know your character and above all, what you look like. It should not be a bunch of pictures, and ideally, the foundation is natural to be your home or office as it makes a trust factor with the individual who is settling on a decision. Photographs should not frame a feeling that they have been clicked for the sole reason for putting them on the site.
3) Make Sure Your Profile Is Acceptable: The greater the profile, the better it is! One should include all the basic insights regarding oneself including the connections to their web-based media profiles (Facebook, Twitter, LinkedIn, and so forth.) as it adds up to vagueness and the other individual can experience the profiles to realize you better.
4) Being Self-center Is A Big No: It’s true that a matrimonial profile is all about you. However, don’t be excessively direct. For instance, while making a Muslim or Hindu matrimonial profile, don’t be too explicit about the social attitude, anyhow, whether you are looking for a Bride or a groom. Be flexible so an individual can start a connection as the wedding profile is on a worldwide stage, and there should consistently be a degree for collaboration with others to settle on an educated decision.
5) Mentioning the Family Background: This is one basic part that must be remembered for your matrimonial profile. Matrimonial site, not being a dating site, should include data about your family, who all are a view of your family, what they do, and so on. This helps the other individual and his/her family to know a tad about the status and foundation you have a place with. It likewise frames a significant view of your character on occasion.
6) No Scope of Errors: The holiness of marriage depends on truth and confidence. As a result, one must be valid and right about the data given in the profile to the next individual. This is on the grounds that, at the hour of the individual meet, it tends to be shameful to get some answers about the fake data you set up on the profile. It likewise includes being structurally right as it shapes an impact on the other person.
7) Partner Preferences: A matrimonial profile comprises two sections – individual data and partner liking. From one point of view, while recording the individual data, speak the truth about it and don’t tell more yourself. Then again, while referencing the partner expectations, don’t be stupid about it by communicating high level requirements. Be adjusted about it. One should be reasonable and unnoticeable enough with the words while referring to them.
8) Get A Second Opinion About The Profile: It is completely a smart thought to get your matrimonial profile examined by somebody who is near you. It may very well be a relative or a friend as they are additionally the ones who know you closely and have an alternate point of view than you. They can encourage you on some adjustment in the profile or about your character (as per them), which could be a positive change to the profile.
9) Browse Through the Profiles of Other People: It is an amazing method to make your profile interesting. One can look through some top profiles on the site to know how they reasonably present the data in a more respectable way. However, don’t duplicate a similar data or example out of a profile as it can be caught by some talented individual. Be creative and legal enough to get advice for yourself to remember for your profile.
10) Don’t Lose Hope and Heart: There is always somebody, some place who is made for you in heaven. In this manner, don’t lose trust over delay reactions or no matches. There will be times when your interest or happiness would be not accepted, or you won’t get your preferred ideal match. Be patient and confident as at some point or another, you will discover your perfect partner who matches your point of view, and you match theirs.
So, what are you waiting for? With these tips in your pocket, get cracking on Badhon Matrimony matrimonial profile today and have an awesome experience of matrimonial services! We wish you will find your loved one soon!
নিজের পছন্দ হোক কিংবা পরিবারের পছন্দ – বিয়ের ক্ষেত্রে তাড়াহুড়া করবেন না মোটেই। বিয়ে কোনো ছেলে খেলা নয়, আজীবনের বন্ধন। তাই জীবনসঙ্গী এমন একজন মানুষ হতে হবে, যার সাথে আপনার ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়া গুলো মেলে। সকলেই তো আর প্রেম করে বিয়ে করেন না। অনেকেরই বিয়ে হয় […]
বিয়ের ক্ষেত্রে তাড়াহুড়া করবেন না মোটেই। বিয়ে কোনো ছেলে খেলা নয়, আজীবনের বন্ধন। তাই জীবনসঙ্গী এমন একজন মানুষ হতে হবে, যার সাথে আপনার ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়া গুলো মেলে।
সকলেই তো আর প্রেম করে বিয়ে করেন না। অনেকেরই বিয়ে হয় পারিবারিকভাবে, যাকে আমরা “অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ” বলি। শুনতে খুব সহজ মনে হলেও বিষয়টা আসলে খুব একটা সহজ নয়। অনেকেই হয়তো বিয়ে করার কথা ভাবছেন, কিন্তু পছন্দের সঙ্গী কিভাবে খুঁজবেন বুঝতে পারেন না। আবার খুঁজে পেলেও আপনার সাথে মনের মিল হবে কিনা তা নিয়েও আছে দ্বিধা-দ্বন্দ।
জীবনসঙ্গী খোঁজাটা যেন এক বিশাল পরীক্ষা। “অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ” এর জন্য সঠিক জীবন সঙ্গী খুঁজে পেতে কিছু বিশেষ প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে চেষ্টা করাই ভালো। পরিকল্পিতভাবে এগিয়ে গেলে খুব বেশি কাঠ-খড় পোড়ানো ছাড়াই মিলবে মনের মানুষের দেখা। আসুন তাহলে জেনে নেয়া যাক জীবনসঙ্গী খোঁজার ধাপ গুলো।
নিজের পছন্দ চুড়ান্ত করুনঃ
আপনি কেমন সঙ্গী চাইছেন কেমন হবে সঙ্গীর পারিবারিক অবস্থা, দেশের বাড়ি, শিক্ষাগত যোগ্যতা, চাকরী সব মিলিয়ে যেমন সঙ্গী আপনার পছন্দ সেটা মনে মনে ঠিক করে ফেলুন। নিজের পছন্দের সাথে সবসময়েই পরিবারের পছন্দের সামঞ্জস্য রাখুন। তাহলে বিয়ের পরে মানিয়ে নিতে সুবিধা হবে।
বয়সের পার্থক্য ও পেশাঃ
যাকে জীবনসঙ্গী বানাবেন ভাবছেন তার সাথে বয়সের পার্থক্য যেন খুব বেশী না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। সেই সাথে সঙ্গীর আয় বা পেশার দিকটি অবশ্যই মূল্যায়ন করতে হবে কেননা জীবন চালাতে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা জরুরী।
পারিবারিক ও আঞ্চলিক সংস্কৃতিঃ
পারিবারিক ও আঞ্চলিক সংস্কৃতির বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা বিয়ে মানে দুজন ব্যাক্তি নয় বরং দুটি পরিবারের মধ্যে সম্পর্ক। যদি দুটি পারিবারের মধ্যে কালচারগত বিষয়ে সামঞ্জস্যতা থাকে তবে নতুন পরিবারে গিয়ে সহজেই মানিয়ে নেয়া যায়।
ব্যক্তির আচরণঃ
যাকে জীবনসঙ্গী বানাবেন ভাবছেন শুধু তার গুনের প্রশংসা বা সৌন্দর্য না দেখে তার আচরনের প্রতিও খেয়াল রাখুন। আপনি একজন ব্যক্তির সাথে কিছুক্ষণ কথা বললেই বুজতে পারবেন তার আচরণগত কোন সমস্যা আছে কিনা বা তার কোন অভ্যাস যা আপনার পছন্দ নাও হতে পারে।
দায়িত্ববান ও কর্মক্ষমঃ
একটি নতুন সংসার শুরু করতে নারী-পুরুষ দুজনের ভূমিকা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে একজন দায়িত্ববান ও কর্মঠ হবেন আরেকজন উদাসীন তা হলে সংসার শুরু হবে অশান্তি দিয়ে। তাই জীবনসঙ্গী বাছাইয়ে এ গুনাবলি গুলো আছে কিনা যাচাই করে নিন।
শারীরিক বিষয়ঃ
যাকে বিয়ে করবেন তার শারীরিক গঠন আপনার সাথে মানায় কি না খেয়াল রাখুন। ব্যক্তি স্বাস্থ্যগত দিক থেকে ঠিক আছে কিনা যাচাই করে নিন।
মানসিক প্রস্তুতিঃ
যাকে বিয়ে করতে চাচ্ছেন সে কি বিয়ের জন্য মানসিকভাবে তৈরি কিনা তা বোঝার চেষ্টা করুন। যদি সে বিয়ের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকে তাহলে ভাবতে পারেন।
জীবনসঙ্গী খুঁজার ক্ষেত্রে গুণবতী, সুন্দরী বা ছেলের অবস্থান যাচাই করা ছাড়াও অনেক বিষয় রয়েছে যা আমরা দেখা প্রয়োজন মনে করি না। ফলে বিয়ের পর সংসারের অধ্যায় শুরু হয় ঝামেলা দিয়ে। তাই জীবনসঙ্গী খোঁজার ক্ষেত্রে অবশ্যই এ বিষয়গুলো প্রত্যেকের খেয়াল রাখা উচিত।
বিসিএস ক্যাডারের মন ভাল নেই!!! কাজের অনেক চাপ, নড়াচড়ার সময় পর্যন্ত নেই। এদিকে নন-ক্যাডারের আফসোসের শেষ নেই! অল্পের জন্য ক্যাডারটা মিস হয়ে গেল। ক্যাডারই হতে পারলাম না জীবনে!! এডমিন ক্যাডার ভাবতেছে পুলিশ ক্যাডার ভাল আছে! আর পুলিশ ক্যাডার ভাবছে ধ্যাত্তারি! নিজের জীবন বলতে কিছু নেই! […]
এদিকে নন-ক্যাডারের আফসোসের শেষ নেই! অল্পের জন্য ক্যাডারটা মিস হয়ে গেল। ক্যাডারই হতে পারলাম না জীবনে!!
এডমিন ক্যাডার ভাবতেছে পুলিশ ক্যাডার ভাল আছে! আর পুলিশ ক্যাডার ভাবছে ধ্যাত্তারি! নিজের জীবন বলতে কিছু নেই! যখন তখন ডিউটি!
ডাক্তার ভাবছে ইঞ্জিনিয়ার হতে পারলাম না। জীবনটা হয়তো আরও সুন্দর হতো! এই কাঁটাছেড়া করতে করতে জীবনটা শেষ! ইঞ্জিনিয়ারের মনটাও বেজায় খারাপ! একটা প্রেসক্রিপশন লিখেই ডাক্তার বন্ধু মাসে লাখ টাকা বসে থেকে কামিয়ে নিচ্ছে!
এদিকে আবার বেসরকারি কর্মকর্তার হতাশার শেষ নেই! মাসে ৬ ডিজিট ব্যাংক একাউন্টে ঢুকলেও ব্যাংকারদের মতো চাকরীর নিশ্চয়তা নেই!
গাড়ি বাড়ির নাম মাত্র ইন্টারেস্টে লোন নেই!
ব্যাংক কর্মকতার আহাজারি আবার আকাশ সমান!
সকালে বের হবার সময় বউ ঘুমিয়ে থাকে, বাসায় যাবার পরও দেখে বউ আবার ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে! সময়ই মিলছে না জীবনে নতুন বউকে দেবার মতো!
জুনিয়র কর্মকতা ভাবছে এসব আনস্মার্ট লোকজন কিভাবে একটা অফিসের বস হয়! বসের বেজায় মেজাজ খারাপ কি সব লোকজন অফিসে কাজ করে কাজের কোন আউটপুট নাই!
ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া বন্ধুটারও ভীষণ মন খারাপ! ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্সটা পেলামই না!
এদিকে আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুটিও ভাল নেই! বন্ধুরা মন মতো ডিপার্টমেন্টে ভর্তি হয়েছে! কিন্তু আমি পছন্দের ডিপার্টমেন্টটা পেলাম না!
যাক গে! অন্যদিকেও একই কান্ড!
জ্যামে বসে বাসের হেল্পার ভাবছে ড্রাইভার হতে না পরলে এই জীবনে আর কোন সুখ আসবেনা! হুদায় সিটে বসে ড্রাইভার ফালপাড়ে! বাসের ড্রাইভারও হতাশ! এতো বছর ড্রাইভারি করে আর কি হলো! পরের গাড়ি চালিয়ে দিন যাচ্ছে! নিজের যদি একটা বাস থাকতো!!
এদিকে বাসের মালিকও ভাল নেই!
তার মাত্র ৩ টা বাস চলে ঢাকা আরিচা মহাসড়কে!
অথচ রহিম ভাইয়ের ১৫ টা চলছে দিব্বি! কত সুখে আছে তিনি!
সাংবাদিক ভাইয়ের মনটাও খারাপ! এই পেশায় কি আর জীবন চলে! নিজের যদি একটা পত্রিকা থাকতো তাও না হয় একটা দাপুটে জীবন হতো! পত্রিকওয়ালা ভাইয়ের দিন ভাল যাচ্ছেনা, এই পত্রিকা নাকি মানুষ এখন আর পড়েনা! লাভ নাই!
যাকগে টিভিওয়ালা হয়তো ভাল আছে! সেকি! তারও মনটাও ভীষণ খারাপ! শুধু টিভি চ্যানেল দিয়ে কি আর হয়রে ভাই! একটা শিল্প প্রতিষ্ঠান করতে না পারলে হচ্ছে কই? অন্তত একটা শপিং মলও তো করা লাগে!
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকও ভাল নেই। অভাব অনটনে অবস্থা নাকি খুবই খারাপ! এই কয়টাকা বেতনে কি আর দিন চলে! তার থেকে পিএইচডি করতে গিয়ে বিদেশ পাড়ি দেওয়াই ভাল ছিল!
ওদিকে পিএইচডি করতে যাওয়া ভাই-ব্রাদার স্বপ্নে বিভোর! পিএইচডি শেষ করেই নেক্সট সার্কুলারে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হতে না পারলে এই জীবন বৃথা!
নাহ ভাই!
বহু বড় মানুষের মন খারাপ নিয়ে মেলা কথা হয়ে গেছে! থাকগে, যাকগে!
কিন্তু এদিকে আবার করিমেরও মন খারাপ! সুন্দরী একটা বউ পেয়েছে ঠিকই কিন্তু মাথায় কোন বুদ্ধিশুদ্ধি নাই! মফিজ বেচারাও মহাচিন্তায়! কোটিপতি বাপের একমাত্র মেয়ে বিয়ে করলাম কিন্তু করিমের মতো সুন্দরী বউ পেলাম না!
সাদিয়া খুব চাপে আছে! পাশের বাসার ভাবি গতকালই একসেট নতুন গহনা কিনেছে! অথচ তার হাসবেন্ড সেই কবে একটা হোয়াইট গোল্ডের গলার হার কিনে দিয়েই শেষ! এই জীবন রেখে আর কি হবে!
তানিয়ার মেজাজ বড্ড গরম! একসেট গহনা কিনে দিলেই হয়ে গেল? বাসায় ৪ জন সদস্য অথচ গাড়ি মাত্র একটা। এত কষ্ট করে জীবন চলে!?
নাহ! কোন ভাবেই চলেনা। এতো কষ্ট করে কারোরই আসলে বেঁচে থাকারই দরকার নেই!
সমাজে যাদের কিছুই নেই,
বড় কোন আশা নেই,
তাই আশাহত হবার সুযোগ নেই,
জীবন যাবার ভয় নেই,
জীবনে হতাশার বালাই নেই,
বন্ধুর উন্নতিতে মন খারাপ নেই,
রেষারেষি নেই,
হেঁটে বা রিক্সায় অফিস যেতে আফসোস নেই, এসির জন্য কষ্ট নেই,
রোদে পুড়তে ভয় নেই,
ত্বক হারাবার টেনশন নেই,
জীবনযুদ্ধে পরাজয়ের ভয়-ডর নেই
বরং মায়ের মুখে এক চিলতে হাসি ফুটানোর সাহস আছে,
বাবার হাতে মাসের শুরুতে হাত খরচ গুজে দেবার কলিজা আছে,
বন্ধুর ভরসা হয়ে থাকার সুযোগ আছে,
সুস্থ সবল শরীর মন আছে,
এবং দিনশেষে জীবনের সকল সিচুয়েশানে আলহামদুলিল্লাহ ভাল আছি বলে তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলার সাহস আছে!!!
জীবনটা ছোট্ট জটিল এবং সুন্দর বলে মুহূর্তগুলোকে উপভোগ করার কৌশল জানা আছে তারাই বরং ভাল আছে!!!
জীবনে কাজে লাগে এমন যে ১০টি বিষয় শিশুদের শেখাতে পারেন জীবনের বিভিন্ন প্রতিকূলতা, দ্বন্দ্ব ও ব্যর্থতাকে কার্যকরভাবে সামাল দেয়ার জন্য সন্তানকে যথার্থভাবে প্রস্তুত করে তোলা বাবা-মা’র দায়িত্ব। তারা নিজেদের জীবনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান সন্তানদের সাথে শেয়ার করে তাদেরকে জীবন সম্পর্কে অনেক কিছু শেখাতে পারেন। […]
জীবনের বিভিন্ন প্রতিকূলতা, দ্বন্দ্ব ও ব্যর্থতাকে কার্যকরভাবে সামাল দেয়ার জন্য সন্তানকে যথার্থভাবে প্রস্তুত করে তোলা বাবা-মা’র দায়িত্ব। তারা নিজেদের জীবনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান সন্তানদের সাথে শেয়ার করে তাদেরকে জীবন সম্পর্কে অনেক কিছু শেখাতে পারেন। এতে তাদের মধ্যে পরবর্তী জীবনে সব বিষয় আত্মবিশ্বাসের সাথে সামাল দেয়ার সামর্থ্য তৈরি হবে।
জীবনমুখী শিক্ষা আপনার সন্তানকে কেবল শক্তিই যোগাবে না, বরং ভালোভাবে পৃথিবীর সামনে দাঁড়াতেও সাহায্য করবে। শিশুদের নিচের জীবনমুখী শিক্ষাগুলো দিতে পারেন:
বাচ্চারা সাধারণত বাবা-মাকে দেখে অনেক কিছু শিখে। তাই ব্যক্তিগতভাবে সততা অবলম্বনের মাধ্যমে বাচ্চাদেরকে এই গুণের শিক্ষা দিতে পারেন। অর্থাৎ যত ছোট বা নিরীহই হোক না কেন, অসততা কিংবা প্রতারণা থেকে বিরত থাকতে হবে। আপনি অন্যদের সাথে সত্যি কথা বলছেন, সেটাও তাকে দেখতে দিন। বাচ্চা মিথ্যা বলছে বুঝতে পারলে রিঅ্যাক্ট করবেন না। তাকে মিথ্যা বলার ফলাফল বুঝিয়ে বলুন ও তার ভুল স্বীকার করতে উৎসাহিত করুন।
সন্তানের সাথে কথা বলার সময় নিয়মিত ‘প্লিজ’ ও ‘থ্যাংক ইউ’ ধরনের শব্দ বা বাংলায় এমন ভঙ্গী ব্যবহার করুন। যেমন, আদেশ না করে কোনো কাজ করতে অনুরোধ করা, “একটু আমার ফোনটা নিয়ে আসবে বাবা”, এরকম। একজন শিশু যখন নিয়মিতভাবে তার চারপাশের মানুষদের অন্যের সাথে ভালো ব্যবহার করতে দেখবে, তখন সেটা তার নিজের মধ্যে সহজেই ধারণ করতে পারবে।
ছোটবেলা থেকেই বাচ্চাদের স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ ও স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনের গুরুত্ব বুঝিয়ে দিতে হবে। নিয়মিত স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেলে তারা রোগমুক্ত সুস্থ জীবন যাপন করতে পারবে। ছোটবেলা থেকেই বাচ্চাদের পুষ্টিকর খাবার দেয়ার পাশাপাশি নিজেও পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
একজন ভালো মানুষ হওয়ার জন্য বড়দের, অন্যদের, কর্তৃপক্ষের ও নিজের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতা থেকেই একজন ব্যক্তির মধ্যে আত্মসম্মান ও অন্যের প্রতি সহমর্মিতা তৈরি হয়। এর ফলে শিশুরা জাতি-বর্ণ-ধর্ম নির্বিশেষে সবার সাথে সহাবস্থান করা শিখবে। অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতা থেকেই শিশুদের মধ্যে উদারতা, দৃঢ়তা ইত্যাদি গুণ তৈরি হবে।
বাবা-মায়েরা তাদের সন্তানদের খেলাধুলায় ভালো হওয়া ও জয়-পরাজয় উভয়ই হাসিমুখে মেনে নেয়ার শিক্ষা দিতে পারেন। তাহলে তাদের সন্তানরা হেরে গেলেও থেমে যাবে না এবং নিজেদের ভুলগুলি থেকে শিখবে। খেলার মাঠে যে শিশুরা জয়-পরাজয়কে হাসিমুখে মেনে নিতে পারে, জীবনের অন্যান্য ব্যর্থতাকেও তারা ভালোভাবে সামাল দিতে পারে।
যে শিশুরা কাজকে অগ্রাধিকার দিয়ে প্ল্যান বানিয়ে গুছিয়ে নিতে পারে তাদেরই জীবনে সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। টাইম ম্যানেজমেন্ট শেখার মাধ্যমে শিশুরা তাদের প্রোডাক্টিভিটি ও কার্যক্ষমতা বাড়াতে পারে। ভালো টাইম ম্যানেজমেন্ট কাজে মনোযোগ বাড়ায় ও দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে।
শিশুদের মধ্যে দায়িত্ববোধ তৈরি করা খুবই প্রয়োজনীয়। একজন মানুষের সঠিক ভাবে নিজ দায়িত্ব পালন ও তার ফলাফল মেনে নেয়া শিশুরা তাদের বাবা-মাকে দেখে শিখতে পারে। এতে শিশুদের মধ্যে কাজের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হবে এবং তারা নিজেদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবে।
আপনার সন্তানকে অন্যের সাহায্যে হাত বাড়িয়ে দেয়ার শিক্ষা দিন। গাছে পানি দেয়ার মতো ছোট কাজ, বয়স্ক প্রতিবেশীদের বাজারের ব্যাগ বহনে সাহায্য, কাউকে রাস্তা চিনিয়ে দেয়া, অন্যের যত্ন নেয়া এবং প্রয়োজনে অনুরোধ করা ইত্যাদির মাধ্যমে শিশুদের মধ্যে সহমর্মিতা ও উদারতা তৈরি হয়। আপনার সন্তানকে অন্যের প্রতি ক্ষমাশীল হওয়ার শিক্ষা দিন।
আপনার সন্তানকে নিয়মিত বিভিন্ন বিষয় শেখার সুযোগ করে দিন, যাতে শেখার প্রতি তার ভালোবাসা জন্মায়। তার আগ্রহের বিষয় খুঁজে বের করতে সাহায্য করুন এবং সে বিষয় নিয়ে কাজ করতে উৎসাহিত করুন। এতে শিশুরা নতুন বিষয় ও দক্ষতা শিখে নেয়ার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠবে। নিয়মিত নতুন জিনিস শিখলে সহজেই তাদের আত্মবিশ্বাস ও আত্মসম্মান বাড়বে এবং তারা বিভিন্ন পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিতে সক্ষম হবে।
যখন থেকে বাচ্চাদের পকেটমানি বা হাতখরচ দিবেন, তখনই তাকে টাকা পয়সা সামাল দেয়া, সঞ্চয় করা ও মিতব্যয়িতার সুফল শিখিয়ে দিন। ছোটবেলা থেকেই তাদের বাজেটিং করা শেখান। বিচক্ষণভাবে অর্থব্যয় ও সন্তুষ্টির জন্য ছোটবেলা থেকেই এসব অভ্যাস গড়ে তোলা দরকার।
* * *
নিজের সন্তানকে প্রয়োজনীয় জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও তথ্য দিয়ে জীবনে সঠিকভাবে চলার শিক্ষা দেয়াটা বাবা মায়ের দায়িত্ব। এইসব জীবনমুখী শিক্ষা একজন শিশুকে ভালো, দায়িত্বশীল ও সফল মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।
স্বামী এবং স্ত্রী দুজনে মিলে তবেই একটি দাম্পত্য সংসার পরিপূর্ণ হয়। স্ত্রীকে বলা হয় স্বামীর অর্ধাঙ্গিনী। কারো জীবনের অর্ধেক অংশ জুড়ে থাকা কিন্তু খুব সহজ কথা না। সংসারকে শান্তিপূর্ণ করে তুলতে স্বামী-স্ত্রী দুজনের ভূমিকাই বেশ গুরুত্বপূর্ণ। প্রকৃত ভালোবাসা থাকলে সবার স্ত্রীর চেয়ে নিজের স্ত্রীকে সবচেয়ে […]
স্বামী এবং স্ত্রী দুজনে মিলে তবেই একটি দাম্পত্য সংসার পরিপূর্ণ হয়। স্ত্রীকে বলা হয় স্বামীর অর্ধাঙ্গিনী। কারো জীবনের অর্ধেক অংশ জুড়ে থাকা কিন্তু খুব সহজ কথা না। সংসারকে শান্তিপূর্ণ করে তুলতে স্বামী-স্ত্রী দুজনের ভূমিকাই বেশ গুরুত্বপূর্ণ। প্রকৃত ভালোবাসা থাকলে সবার স্ত্রীর চেয়ে নিজের স্ত্রীকে সবচেয়ে বেশী গুণবতী নারী বলে মনে হয়। তবে স্ত্রীর কিছু কিছু গুণ থাকে যেগুলো স্বামীরা ভীষণ পছন্দ করে থাকে-
ইসলামের আলোকে জীবনযাপন করুন
স্ত্রীর উচিত সবসময় গোমরা মুখে না থেকে হাস্যোজ্জ্বল থাকা। আপনার স্বামী দরিদ্র হলেও তার দরিদ্রতার ওপর ধৈর্য ধারণ করুন এবং সম্পদশালী হলে অবশ্যই তার সম্পদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। সত্য কথা বলার মাধ্যমে নিজেকে সুশোভিত একজন আদর্শ স্ত্রীর সর্বোত্তম গুণ। একই ভুল বারবার না করা এবং ভুল করে ফেললে যাতে সে ভুল যাতে সংঘটিত না হয় সে ক্ষেত্রে সতর্ক থাকবেন।
সংসারের কাজগুলো মন দিয়ে করুন
একজন সংসারী মেয়েকে স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির পরিবারের সবাই খুব পছন্দ করে। সত্যি বলতে কি, মেয়েরা যত নিখুঁতভাবে সংসার গুছিয়ে রাখতে পারেন, ছেলেরা ততটা পারেন না। মনে রাখবেন, আপনি কাজগুলো যত দক্ষতার সঙ্গে সামলাতে পারবেন, আপনার সংসারে তত সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি বিরাজ করবে। আপনার এই দক্ষতার জন্য আপনার স্বামীর জীবন হয়ে উঠবে পরিপূর্ণ, সেই সাথে আপনিও সমাজ-সংসারে বিশেষ সম্মান লাভ করবেন।
সারাদিন সংসারের কাজ শেষ করে আপনার স্বামী বাসায় ফেরার আগে নিজেকে কিছুটা সময় নিয়ে সুন্দরভাবে রেডি করুন। স্বাভাবিকভাবেই আপনার স্বামী ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফেরার পর চাইবেন একটু ভালো থাকতে। তাই আপনি যদি সুন্দরভাবে থাকেন তাহলে দেখবেন জামাইয়ের মন এমনিতেই ভালো হয়ে যাবে আপনাকে দেখে।
মিষ্টি ভাষায় কথা বলুন
মুখের কথা দিয়ে কেবল সংসার কেন, পুরো বিশ্বটাই জয় করে নেয়া যায়। সবসময় চেষ্টা করুন সবার সঙ্গে খুব ভালোভাবে কথা বলতে আর কারো সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করবেন না। তাই বলে অপ্রয়োজনীয় কোন কথা বা কাজ মোটেই করবেন না। স্বামী যখন পাশে থাকবেন তখন নিজের সম্পূর্ণ সময় ও মনোযোগ তাঁকে দিন। আপনার স্বামী যদি কম কথা বলেন তাহলে তার পুরো কথা না শুনেই রিঅ্যাক্ট করবেন না। শান্ত মাথায় স্বামীর মনের কথা শুনুন, তার সাথে সুখ-দুঃখ শেয়ার করে নিন।
স্বামী ও তার পরিবারকে আপন করে নিন
বিয়ের পর আপনি নতুন একটি পরিবারে যাবেন। নতুন বাড়িতে এসে নতুন পরিবারের সবকিছুর সঙ্গে মিলেমিশে থাকার চেষ্টা করন। লাভ ম্যারেজ হোক বা অ্যারেঞ্জ, সবসময় স্বামীকে শ্রদ্ধা করবেন এবং রাখেন এবং তার নির্দেশ মেনে চলার চেষ্টা করবেন। স্বামী কে অযথা সন্দেহ করবেন না এবং ভুল ছাড়া অকারণে ঝগড়া করবেন না। শ্বশুরবাড়ির মানুষগুলোর কোনো দোষ-ত্রুটি স্বামীর সাথে আলাপ না করাই ভালো। নিজের সংসারটাকে গুছিয়ে রাখুন, দুজনেই ভালো থাকবেন, নিজেদের মধ্যেও ভালোবাসা বাড়বে।
স্বামীর পছন্দের খাবার রান্না করুন
বেশীরভাগ স্বামীরাই ভোজনরসিক হয়ে থাকেন, নিজের স্ত্রীর হাতের রান্না খেতে তারা খুব ভালোবাসেন। তাই আপনি যখন স্বামীর পছন্দের খাবার রান্না করবেন, তখন দেখেবেন প্রিয় মানুষটি কত খুশি হয়েছেন আপনার উপর। রান্নার পাশাপাশি আপনার দায়িত্ব হল ঘর-দোর খুব সুন্দর করে গুছিয়ে রাখা। বাইরে থেকে কেউ আসার পর যদি সব কিছু পরিপাটি আর গোছানো দেখে তখন এমনিতেই মন ভালো হয়ে যায়।