Advertisement
Google search engine

বিয়ের আগে বর ও কনের রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করা গর্ভধারণকালে সম্ভাব্য জটিলতা প্রতিরোধের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি প্রধানত Rh ফ্যাক্টর অমিলতার কারণে প্রয়োজন, যা নবজাতকের স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। নিম্নলিখিত কারণগুলোর জন্য এই পরীক্ষা জরুরি:

১. Rh ফ্যাক্টর অমিলতা (Rh Incompatibility):

  • যদি মায়ের রক্তের গ্রুপে Rh নেগেটিভ (যেমন: A-, B-, O-) থাকে এবং বাবার রক্ত Rh পজিটিভ হয়, তাহলে গর্ভের শিশুর রক্ত পজিটিভ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • প্রথম গর্ভাবস্থায় সাধারণত সমস্যা হয় না, কিন্তু প্রসবের সময় মায়ের শরীরে শিশুর Rh পজিটিভ রক্ত প্রবেশ করলে মায়ের রক্তে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়।
  • পরবর্তী গর্ভধারণে এই অ্যান্টিবডি শিশুর লোহিত কণিকা ভেঙে ফেলতে পারে, যার ফলে হিমোলাইটিক ডিজিজ অব দ্য নিউবর্ন (HDN) হতে পারে। এতে শিশু অ্যানিমিয়া, জন্ডিস, বা 심্নাতি ক্ষেত্রে মৃত্যুর ঝুঁকিতে পড়ে।

২. সমাধান:

  • Rh নেগেটিভ মায়েদের গর্ভাবস্থায় বা প্রসবের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে RhoGAM (Anti-D ইমিউনোগ্লোবুলিন) ইনজেকশন দেওয়া হয়। এটি অ্যান্টিবডি তৈরি রোধ করে পরবর্তী গর্ভধারণ নিরাপদ করে।

৩. ABO ব্লাড গ্রুপ অমিলতা:

  • ABO গ্রুপ অমিলতা (যেমন: মা O, শিশু A/B) নবজাতকের মৃদু জন্ডিস করতে পারে, তবে এটি সাধারণত গুরুতর নয় এবং আলোক চিকিৎসা (ফটোথেরাপি) দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

৪. জরুরি রক্তের প্রয়োজনে প্রস্তুতি:

  • রক্তের গ্রুপ জানা থাকলে জরুরি অবস্থায় (যেমন: প্রসবকালীন রক্তপাত) দ্রুত রক্ত সরবরাহ করা সহজ হয়।

৫. সাংস্কৃতিক ও সামাজিক ভ্রান্ত ধারণা:

  • কিছু সমাজে রক্তের গ্রুপকে ব্যক্তিত্ব বা সম্পর্কের সামঞ্জস্যের সাথে যুক্ত করা হয়, যদিও এর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। মূল উদ্বেগটি শুধুমাত্র চিকিৎসাগত।

উপসংহার:

রক্তের গ্রুপ পরীক্ষার মাধ্যমে Rh অমিলতা শনাক্ত করা গেলে সময়মতো চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব, যা নবজাতকের জীবন বাঁচাতে পারে। তবে এই অমিলতা বিয়েতে বাধা নয়—আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় এটি সহজেই নিয়ন্ত্রণযোগ্য। এছাড়াও, থ্যালাসেমিয়া বা অন্যান্য জেনেটিক পরীক্ষাও (যদি প্রয়োজন হয়) একসাথে করা যেতে পারে। তাই বিয়ের আগে রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করানো একটি দায়িত্বশীল সিদ্ধান্ত।

Google search engine

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here