Advertisement
Google search engine

প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে করা কি জায়েজ

প্রশ্নকারী জিজ্ঞাসা করছেন যে প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিবাহ করা জায়েজ কিনা? প্রশ্নকারী “জায়েজ” উল্লেখ করেছেন যা বাংলা প্রসঙ্গে সাধারণত ইসলামী আইনকে বোঝায়, তবে এখানে আমার নিশ্চিত হওয়া দরকার যে এটি সত্য কিনা।

প্রথমে, আমার বাংলাদেশের আইনি দৃষ্টিকোণ বিবেচনা করা উচিত। বাংলাদেশ একটি মিশ্র আইনি ব্যবস্থা অনুসরণ করে। মুসলমানদের জন্য, পারিবারিক বিষয়গুলি মুসলিম ব্যক্তিগত আইন দ্বারা পরিচালিত হয়। মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১ এর অধীনে, একজন পুরুষ সর্বোচ্চ চারজন স্ত্রীকে বিয়ে করতে পারেন, তবে বিদ্যমান স্ত্রী এবং স্থানীয় সালিশি পরিষদের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। তবে, বাস্তবে, অনেকেই এটি কঠোরভাবে অনুসরণ করেন না, তবে আইনত, সঠিকভাবে না করা হলে জরিমানা বা কারাদণ্ডের মতো পরিণতি হতে পারে।

তারপর ধর্মীয় দৃষ্টিকোণও রয়েছে। ইসলামে, একজন পুরুষ সর্বোচ্চ চারজন স্ত্রী রাখতে পারেন, তবে তাকে তাদের সকলের সাথে সমান আচরণ করতে হবে। কুরআন ন্যায়বিচারের উপর জোর দেয়, তাই যদি সে ন্যায্য আচরণ নিশ্চিত করতে না পারে, তবে তার কেবল একটি বিবাহ করা উচিত। তবে, ধ্রুপদী ইসলামী আইনশাস্ত্র স্পষ্টভাবে প্রথম স্ত্রীর সম্মতি প্রয়োজন বলে মনে করে না, যদিও কিছু আধুনিক পণ্ডিত যুক্তি দেন যে ন্যায়বিচার এবং ন্যায়বিচারের জন্য তার সম্মতি প্রয়োজনীয়।

তবে আমার সামাজিক এবং নৈতিক দিকগুলিও আলোচনা করা উচিত। আইনত বা ধর্মীয়ভাবে অনুমোদিত হলেও, এটি মানসিক যন্ত্রণা এবং পারিবারিক দ্বন্দ্বের দিকে পরিচালিত করতে পারে। প্রথম স্ত্রী অবহেলিত বোধ করতে পারেন, যার ফলে বিবাহ ভেঙে যায়। নীতিগতভাবে, স্বচ্ছতা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা গুরুত্বপূর্ণ।

দ্বিতীয় বিবাহ সম্পর্কে পূর্ববর্তী প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্নকারী বাংলাদেশের একজন মুসলিম হতে পারেন। তাই বাংলাদেশের আইন এবং ইসলামী বিধানের উপর মনোযোগ দেওয়া যুক্তিসঙ্গত। তবে আমার আরও উল্লেখ করা উচিত যে বাংলাদেশের অন্যান্য ধর্মের বিভিন্ন নিয়ম রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, হিন্দু বিবাহ আইন বহুবিবাহের অনুমতি দেয় না। তাই উত্তরটি ব্যক্তির ধর্মের উপর নির্ভর করে।

আমার উত্তরটি স্পষ্টভাবে গঠন করা দরকার: আইনি দৃষ্টিকোণ (মুসলিম, হিন্দু, ইত্যাদি), ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ (ইসলামী বিধান), এবং নীতিগত বিবেচনা। এছাড়াও, আইন বিশেষজ্ঞ এবং ধর্মীয় পণ্ডিতদের সাথে পরামর্শের গুরুত্বের উপর জোর দিন।

মুসলিম আইন অনুসারে কিছু শর্ত সাপেক্ষে আইনত সম্ভব হলেও, এর সামাজিক ও নৈতিক প্রভাব রয়েছে তা উল্লেখ করতে ভুলবেন না। পেশাদারদের সাথে পরামর্শ করুন এবং জড়িত সকল পক্ষের মঙ্গল বিবেচনা করুন।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ইসলামী শরীয়া ও দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে করার বিধান নিম্নরূপ:

১. ইসলামী শরীয়ার দৃষ্টিকোণ:

  • ইসলামে একজন পুরুষ সর্বোচ্চ ৪টি বিয়ে করার অনুমতি পেয়েছে, তবে শর্ত হলো ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা (সূরা আন-নিসা: ৩)।
  • প্রথম স্ত্রীর অনুমতি:
    • ক্লাসিক্যাল ফিকহে (ইসলামিক জুরিসপ্রুডেন্স) প্রথম স্ত্রীর অনুমতি বাধ্যতামূলক নয়। তবে তাকে অবহিত করা এবং ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা জরুরি।
    • অনেক আধুনিক ইসলামিক স্কলারদের মতে, সামাজিক শান্তি ও স্ত্রীর অধিকার রক্ষায় অনুমতি নেওয়া নৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। যদি প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে চুক্তিনামায় (কাবিননামায়) দ্বিতীয় বিয়েনিষেধ উল্লেখ থাকে, তাহলে শরীয়া ও আইন উভয়েই তা লঙ্ঘন করা অবৈধ।

২. বাংলাদেশের আইনী প্রেক্ষাপট:

  • মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১ অনুযায়ী:
    • কোনো পুরুষ যদি দ্বিতীয় বিয়ে করতে চান, তাহলে তাঁকে অনুমতি নিতে হবে স্থানীয় আর্কিটেক্ট কাউন্সিল (ইউনিয়ন পরিষদ/পৌরসভা) থেকে।
    • প্রথম স্ত্রীকে লিখিত নোটিশ পাঠাতে হবে, এবং তার আপত্তি থাকলে কাউন্সিল তা বিবেচনা করবে।
    • এই প্রক্রিয়া না মানলে জরিমানা বা কারাদণ্ড হতে পারে (ধারা ৬)।
  • কাবিননামায় শর্ত:
    • যদি বিয়ের সময় কাবিননামায় “দ্বিতীয় বিয়েনিষেধ” শর্ত যুক্ত থাকে, তাহলে প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে করা আইনত অবৈধ এবং তা ভঙ্গ করলে স্ত্রী তালাক বা ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারেন।

৩. সামাজিক ও নৈতিক দিক:

  • শরীয়া বা আইনী সুযোগ থাকলেও পরিবার ও সমাজে অশান্তি, প্রথম স্ত্রীর মানসিক যন্ত্রণা এবং সন্তানদের ভবিষ্যৎ বিবেচনা করা জরুরি।
  • অনেক ইসলামিক স্কলার দ্বিতীয় বিয়ের আগে স্ত্রীর সাথে আলোচনা এবং তার সম্মতি নেওয়াকে নৈতিক দায়িত্ব হিসেবে উল্লেখ করেন।

সিদ্ধান্ত:

  • শরীয়া: প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে জায়েজ (যদি ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়), তবে কাবিননামায় শর্ত থাকলে তা অবৈধ।
  • আইন: বাংলাদেশে আর্কিটেক্ট কাউন্সিলের অনুমতি বাধ্যতামূলক, অন্যথায় শাস্তিযোগ্য।
  • নৈতিকতা: পারিবারিক সম্প্রীতি রক্ষায় স্বামীর উচিত প্রথম স্ত্রীর সাথে খোলামেলা আলোচনা করা।

পরামর্শ:
যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ইসলামিক স্কলারআইনজীবী-এর পরামর্শ নিন। এ ধরনের স্পর্শকাতর বিষয়ে ধর্মীয় ও আইনী জটিলতা এড়াতে সচেতন হোন।

বাঁধন ম্যাট্রিমনি

marriage media

Google search engine

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here